নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখক ও তালিবুল ইলম।

ররুহুল্লাহ নোমানী

রুহুল্লাহ নোমানী

তালিবুল ইলম

রুহুল্লাহ নোমানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজকের পরাজয় নিয়ে কিছু প্রথা-বিরোধী কথা: আমি যে কারণে মনেপ্রাণে পরাজয়..ই চেয়েছিলাম!

১৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৪৯


খেলায় হার-জিত থাকে। তবুও সবাই নিজ নিজ দেশের জয় কামনা করে। কিন্তু আমি তেমন করি না। আমি শুধু দেশ নয়, বরং প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই কামনা করি যে, তারা যেনো হারের আবর্ত থেকে বের হতে না পারে। তাহলে হয়তো তারা এসব অহেতুক জিনিসের প্রতি মনোযোগী হওয়ার অভিশাপ থেকে বেঁচে যেতে পারবে। হয়তো কিছু কাজের কাজও করতে পারবে।

ধরুন, আজ যদি বাংলাদেশ জিতে যেতো, তাহলে লাভ কী হতো? আরেকটি বা আরো কয়েকটি কর্মদিবস কর্মহীন অতিবাহিত হতো, এই তো? এর দ্বারা কি ফেলানী হত্যার কোনো কিনারা হতো? অমিমাংসিত ইস্যুগুলোর কোনো সুরাহা হতো? বাংলাদেশের নদী পানিতে ভরে যেতো? ভারতের মুসলিম-গণহত্যা বন্ধ হতো? ভেঙ্গে দেয়া মাসজিদগুলো আবাদ হতো? ভারতের মুসলিমরা সদর্পে দেশময় দাপাতে পারতো? কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হতো? বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের নগ্ন হস্তক্ষেপ থেমে যেতো? স্থল কিংবা নদী সীমানায় আমাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্টিত হতো?

এর কোনোটিই যখন হতো না, তখন এই বিজয়ের অর্জন কী? ক্ষণিকের বিনোদন, এই তো! সময়, পড়াশুনা, কর্মদিবস ইত্যাদি বিসর্জন না দিয়ে ওই বিনোদন অর্জনের আর কী কোনো পথ নেই? কতো লক্ষ-কোটি টাকা খরচ করা হয় ওইসব খেলোয়াড় দের পেছনে এই অবাঞ্ছিত বিনোদন লাভের জন্য হিসেব কষে দেখেছেন কভু? একেক খেলোয়াড়ের পেছনে বার্ষিক ব্যায় প্রায় অর্ধ কোটি টাকা, আর অর্জন? এরপর তার সাথে যেনা-জুয়া থেকে আরো কতো অনৈতিকতার সম্পর্ক রয়েছে, তার হিসেব কে করবে? তারাই যদি আইকন হয়, তাহলে আগামী প্রজন্ম কোথায় গিয়ে ঠেকবে? দায়িত্বশীলদের মাঝে এসব নিয়ে ভাবার মতো কোনো সুস্থ বিবেক মনে হয় নেই!

বলা হয়ে থাকে, এর দ্বারা দেশের পরিচিতি হয়। দেশ বিশ্বময় পরিচিতি লাভ করে। বেশ। ওই পরিচিতি লাভের আর কোনো অপশন নেই? ওদের পেছনে যতো টাকা ব্যয় করা হয়, তা বিজ্ঞান-উদ্ভাবনের পেছনে ব্যয় করো। পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দাও বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনে। ধর্মীয় শিক্ষা খাতে ব্যায় করো, গড়ে তোলো সুশিক্ষিত আদর্শ এক জাতি, যারা হবো পুরো বিশ্বের জন্য রোল মডেল। উন্নয়নের কাজে ব্যয় করো। বাংলাদেশ হোক বিশ্বের অন্যতম উন্নত রাষ্ট্র। আরো কতো কাজেই তো এসব অর্থ ব্যয় করে পুরো বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়, তাই না! হাফিয ছাকিব বিশ্ব হিফয প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে বাংলাদেশকে কুরআনের মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করেছিলো। কই তোমরা তো সে সংবাদও প্রকাশ করতে পারোনি! ওই টাকাগুলো বেয়াদব ছাকিবদের পেছনে ব্যয় না করে এসব হাফিয ছাকিবদের পেছনে ব্যয় করে বিশ্বময় বাংলাদেশকে পরিচিত করা যায় না? অবশ্যই যায়। সে কারণেই প্রশ্ন জাগে, উদ্দেশ্য কি বাংলাদেশকে পরিচিত করা, না অসুস্থ বিনোদনের মাধ্যমে অসুস্থ প্রজন্ম তৈরী করা?

এমন সব বিষয়কে সামনে রেখে আমার একান্ত চাওয়া হলো, কোনো মুসলিম দেশ এসব অসুস্থতায় এগিয়ে না যাক। এগিয়ে যাক দ্বীন, মানবতা, নৈতিকতা, ¯^চ্ছলতা, আত্মসম্ভ্রম, ¯^নির্ভরতা এবং সব ধরণের ভালো ও কাম্য প্রতিযোগিতায়। সে হিসাবে কাল যদি পাকিস্তান হেরে যায়, আমার অখুশী হওয়ার কোনো কারণ নেই। বিশ্বময় যেখানে কোটি কোটি অভুক্ত-অসহায় মানুষের মানবেতর জীবন-যাপন, সেখানে তাদের মুখে হাসি ফোটানোর চেয়ে আনন্দ আর কী হতে পারে? ফুটবল-ক্রিকেটের পেছনে ব্যয় করা লক্ষ-কোটি টাকা তাদের পুনর্বাসনে ব্যয় করে প্রকৃত বিনোদন উজ্জাপন করা যায় না? তা....ই কারা হোক!

জ্যোতিষ-বিদ্যা ও বিশ্বাস ইসলামের সাথে চরম সাংঘর্ষিক। অথচ এতে বিশ্বাস করার মতো লোকের অভাব নেই। প্রায় সব পবিত্রকায়ই ছাপা হয় ‘রাষিফল’....... আপনার দিনটি কেমন যাবে? গত দু’দিন থেকে ভারত-বাংলাদেশের খেলা নিয়েও জ্যোতিষীরা তাদের বিদ্যার ঝাঁপি উন্মুক্ত করেছিলেন। পত্রিকা মারফত জানলাম, উভয় দেশের জ্যোতিষ বাবুরাই ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন, ১৯ মার্চ মেলবোর্নে বাংলাদেশ জিতবে। আর সবকিছু বাদ দিলেও, শুধু এ একটি কারণে যেকোনো মুসলমানের আজ বাংলাদেশের পরাজয় কামনা করা উচিৎ ছিলো। কারণ আজ বাংলাদেশ জিতলে ‘রাষিফল’ ও জ্যোতিষ বিদ্যার প্রতি মানুষের আস্থা কয়েক গুন বেড়ে যেতো। অথচ তারা ওটাকে আশীর্বাদ হিসাবেই গ্রহণ করেছিলো! তাই টস-ভাগ্য বা বাজে আম্পায়ারিং যাই বলা হোক না কেনো, আজকের পরাজয়কে মঙ্গলজনকই বলতে হবে। আর এটা যদি পরিকল্পিত বাজে আম্পেয়ারিং..ই হয়ে থাকে, তবে তা যে এদেশের ভারতপ্রেমী বন্ধুদের গালে একটি চরম ভালোবাসার শক্ত চপেটাঘাত, এ অর্জনও-বা কম কিসে! হ্যাঁ, এটা নিতান্ত..ই হতাশার যে, ভারত যেখানে ¯^ীয় ¯^ার্থ আদায়ে বন্ধু-শত্রæ চিনে না, আমরা সেখানে শুধু ত্যাগ..ই ¯^ীকার করে যাই কল্পিত বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে। জয় হোক বন্ধুত্বের!

সবাই যখন পরাজয়ের মনোকষ্টে নিমজ্জিত, তখন আমার প্রথা বিরোধী কথাগুলো কারো মনে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করতে পারে! কিন্তু কী আর করা যাবে! ক্রিকেটীয় লাভ-ক্ষতির পরিসংখ্যানে যে আমার মনটা ভীষণ ভারাক্রান্ত হয়ে আছে! মনের রক্ত ক্ষরণ যদি নিপের মুখ বেয়ে বের হতো, তাহলে হয়তো কেউ কেউ আমার সাথে সহমত পোষণ করতেন। তবে দিলের উত্তাপ যে একদমই কারো অন্তরকে ছুঁয়ে যাবে না, সে কথাও তো হলফ করে বলা যায় না!


_________________________উপরোক্ত লেখাটি ফেবুতে শেয়ার করার পরক্ষণেই দৃষ্টিগোচর হলো নিম্নের সংবাদটি। সংশ্লিষ্ট মনে হওয়ায় তাই সংযুক্ত করে দিলাম .......................

হারের শোক সইতে না পেরে
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/481204

বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের পরাজয়ের ধাক্কা সামলাতে না পেরে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন এক ব্যক্তি। তাঁর নাম উজির আলী (৪৫)। তাঁর বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ-ভারত খেলা শেষ হওয়ার পরপর ঘটনাটি ঘটে।

মৃতের ছোট ভাই বখতিয়ার হোসেন জানান, পেশায় রাজমিস্ত্রি উজির আলী খেলাপাগল ছিলেন। বাংলাদেশ ফুটবল ও ক্রিকেট দলের খেলা নিয়মিত দেখতেন। আজও ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের খেলা দেখছিলেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশের পরাজয় অনুমান করতে পারার পর থেকে ঘরের মধ্যে পায়চারি শুরু করেন তিনি। বাংলাদেশের শেষ উইকেট পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বুক চাপড়ে আর্তনাদ করতে থাকেন। একপর্যায়ে মেঝেতে পড়ে যান তিনি।
পরিবারের লোকজন উজির আলীকে তড়িঘড়ি করে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার সময় পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত ক্রিকেট ভক্ত তাঁকে দেখার জন্য ছুটে আসেন।


____________________
..................... ইবরাত নাও হে চক্ষুষ্মাণেরা! নিশ্চয়ই এতে তোমাদের জন্য ইবরাত রয়েছে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



আমাদের দেশে পাগলকে পীর, ফকির, দরবেশ মনে করেন অনেকে।

২| ১৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:১৭

বংশী নদীর পাড়ে বলেছেন: ভাই আপনার সাথে ১০০% একমত। মূলতঃ আমাদের সমাজটা আহামরি আর অতিরঞ্জিত বিনোদনের কুলষতায় দুষিত হয়ে গেছে যেমন দুষিত হয়ে গেছে আমাদের বংশী নদীর পানি। যেমন করে দুষিত হয়ে গেছে ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর পানি। সুতরাং এই দুষিত পানির মধ্যে যেমন মা মাছেরা ডিম দিলে ডিম থেকে বেরিয়ে আসা মাছের সদ্যজাত পোনা গুলি পৃথিবীর আলো-বাতাস দেখার আগেই মারা যায় ঠিক আমাদের সমাজের অবস্থাও তাই। আমার চোখে এই অহেতুক পাগলামীর কোনো মূল্য নাই। যেখানে দুই আনার কোনো লাভ নাই সেখানে পাগলেও তো যায় যায়না। এখন দেখি মানুষের বিবেক পাগলের চেয়েও খারাপ হয়ে গেছে। এই যে উজির আলী (৪৫)। চলে গেলেন তিনি কি মনকির নেকিরকে গিয়ে বলবে আমি ভাই খেলা দেখে পরাজয়ের শোক সহ্য না করতে পেরে মারা দেছি আমাকে তোমরা ডিসটার্ব করো না। হাহাহাহ। হয় রে মানুষ। হায় রে ক্রিকেট প্রেমিক। অথচ আল্লাহ বলেন- ওই ব্যক্তির জন্য জান্নাত লাভ অসম্ভব যে ব্যক্তি সকল বস্তুর চেয়ে আমার প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স.) কে বেশি ভালবাসবে না।

৩| ২১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৮

রুহুল্লাহ নোমানী বলেছেন: বংশী ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

৪| ২১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৭

নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: খেলা একটা ফালতু বিনোদন - এটা মানতে পারছিনা। মানসম্মত খেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজ দেশকে বিশ্ব মানচিত্রে সম্মানিত করার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের একটা ঊপায় করা যায়।

তবে ক্রিকেট কোন খেলা কিনা - এ প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। এখন যে ক্রিকেট আমরা দেখছি, এটাকে খেলা বললে ডব্লিউ ডব্লিউ ই এর রেসলিংও একটা খেলা, যেখানে জয় পরাজয় পূর্ব নির্ধারিত থাকে কেবল সাময়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে মানুষের কিছু মূল্যবান সময় নষ্ট করা যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.