![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুফতী ফয়যুল্লাহ রহ. বলেছেন-
وَأَمَّا مَا أُحْدِثَ بِسَبَبِ تَوَقُّفِ حِفْظِ الْدِّيْنِ عَلَيْهِ فَهُوَ لَيْسَ بِبِدْعَةٍ، بَلْ أَمْرٌ مَأْمُوْرٌ بِهِ وَمَنْدُوْبٌ إِلَيْهِ. تَوْضِيْحُ هَذَا الْمَطْلَبِ وَتَشْرِيْحُهُ: أَنَّ الْأُمُوْرَ الْدِّيْنِيَّةَ عَلَيْ نَوْعَيْنِ: نَوْعٌ هِيَ أُمُوْرٌ دِيْنِيَّةٌ أَصَالَةً وَذَاتًا بِلَا وَاسِطَةِ شَيْئٍ آَخَرَ مِنْ أُمُوْرِ الْدِّيْنِ كَالْصَّلَاةِ وَالْصَّوْمِ وَالْتَّسْبِيْحِ وَالْتَّهْلِيْلِ وَقِرَاءَةِ الْقُرْآنِ، وَنَوْعٌ آَخَرُ هِيَ أُمُوْرٌ دِيْنِيَّةٌ تَبْعًا وَبِوَاسِطَةِ اَمْرٍ دِيْنِيٍّ آَخَرَ لَا بِالْنَّظْرِ إِلَيْ الْذَّاتِ كَإِحْدَاثِ الْمَدَارِسِ الْدِّيْنِيَّةِ وَالْمَكَاتَبِ الْقُرْآنِيَّةِ وَتَدْوِيْنِ عِلْمِ الْنَّحْوِ وَالْصَّرْفِ وَتَعَلُّمِ عِلْمِ الْأَدَبِ وَأَمْثَالِهَا فَإِنَّ هَذِهِ لَيْسَتْ بِأُمُوْرٍ دِيْنِيَّةِ ذَاتًا وَأَصَالَةً وَلَكِنْ قَدْ تَوَقَّفَ عَلَيْهَا حِفْظُ الْدِّيْنِ وَتَحْصِيْلُ الْكَمَالِ فِيْ الْعُلُوْمِ الْدِّيْنِيَّةِ كَمَا هُوَ ظَاهِرٌ فَصَارَتْ هَذِهِ الْأُمُوْرُ أَيْضًا أُمُوْرًا دِيْنِيَّةً بِهَذِهِ الْوَاسِطَةِ وَصَارَتْ مَأْمُوْرَةً بِهَا وَمَنْدُوْبَةً إِلَيْهَا.
فَقَدْ عُلِمَ مِنْ هَذَا الْبَيَانِ: أَنَّ هَذِهِ الْأُمُوْرَ وَأَمْثَالَهَا مِمَا قَدْ تَوَقَّفَ عَلَيْهَا حِفْظُ الْدِّيْنِ لَيْسَتْ هِيَ بِبِدْعَاتٍ شَرْعًا وَإِنْ لَمْ تَكُنْ هِيَ فِيْ زَمَنِ الْسَلْفِ الْصَّالِحِيْنَ, لِأَنَّهَا إِنَّمَا أُحْدِثَتْ لِحِفْظِ الْدِّيْنِ وَإِمْدَادِ الْشَّرْعِ الْمَتِيْنِ فَهِيَ أُمُوْرٌ دِيْنِيَّةٌ تَبْعًا مَأْمُوْرَةٌ بِهَا مِنْ جَانِبِ الْشَّارِعِ، نَعَمْ, هِيَ بِدْعَاتٌ لُغَةً وَهِيَ مَا حَدَثَتْ بَعْدَ أَنْ لَمْ تَكُنْ.
فَعُلِمَ أَنَّ الْبِدْعَةَ لُغَةً بَعْضُهَا سَيِّئَةٌ وَبَعْضُهَا حَسَنَةٌ وَأَمَّا الْبِدْعَةُ شَرْعًا وَهُوَ الَّتِيْ مَرَّ مَفْهُوْمُهَا وَمَاهِيَّتُهَا سَابِقًا, فَكُلُّهَا سَيِّئَةٌ كَمَا دَلَّ عَلَيْهِ حَدِيْثُ: ্রوَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُوْرِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌগ্ধ، فَعُلِمَ مِنْ هَذَا: أَنَّ مَنْ قَسَمَ الْبِدْعَةَ إِلَيْ الْحَسَنَةِ وَالْسَّيِّئَةِ, فَقَدْ أَرَادَ بِالْبِدْعَةِ مَعْنَاهَا الْلُّغَوِيُّ لَا الْشَّرْعِيُّ.
وَأَيْضًا عُلِمَ: أَنَّ بَيْنَ الْبِدْعَةِ الْشَّرْعِيَّةِ وَالْلُّغَوِيَّةِ عُمُوْمٌ وَخُصُوْصٌ مُطْلَقًا. الْبِدْعَةُ الْشَّرْعِيَّةُ خَاصٌّ وَالْبِدْعَةُ الْلُغَوِيَّةُ عَامٌّ. وَقَوْلُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِيْ حَقِّ الْتَّرَاوِيْحِ مَعَ الْجَمَاعَةِ: ্রنِعْمَتِ الْبِدْعَةُ هَذِهِগ্ধ فَقَدْ أَرَادَ بِهَا أَيْضًا مَعْنَاهَا لُغَةً لَا شَرْعًا. وَأَيْضًا الْبِدْعَةُ الْحَسَنَةُ عِنْدَ مَنْ يَقْسِمُهَا إِنَّمَا تُوْجَدُ فِيْ الْوَسَائِلِ لَا فِيْ الْمَقَاصِدِ. فَإِنَّ الْبِدْعَةَ فِيْ الْمَقَاصِدِ كُلُّهَا سَيِّئَةٌ, كَذَا ذُكِرَ فِيْ مَجَالِسِ الْأَبْرَارِ.
দ্বীনের সংরক্ষণ নির্ভরশীল হওয়ার কারণে যা উদ্ভাবন করা হয়েছে, তা বিদ‘আত নয়। বরং তা এমন বিষয় যা করার জন্য (শরী‘আতের পক্ষ থেকে) নির্দেশ ও উৎসাহ দেয়া হয়েছে। এর ব্যাখ্যা হলো- দ্বীনী বিষয়সমূহ দু’ধরণের। এক প্রকার হলো, যা কোনো কিছুর মধ্যস্থতা ব্যতীত ও প্রত্যক্ষভাবেই দ্বীনের কাজ। যেমন: নামায-রোযা, তাসবীহ-তাহলীল, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি। আরেক প্রকার হলো- যা অন্য কিছুর মধ্যস্থতায় ও পরোক্ষভাবে দ্বীনের কাজ। যেমন দ্বীনি মাদ্রাসা ও কুরআনের মকতব প্রতিষ্ঠা করা, ইলমে নাহু ও সরফ উদ্ভাবন করা এবং ইলমে আদব শিক্ষা করা ইত্যাদি। এই দ্বিতীয় প্রকারের বিষয়গুলো প্রত্যক্ষভাবে দ্বীনী বিষয় নয়, তবে দ্বীনের হেফাযত ও ইলমে দ্বীনের পরিপূর্ণতা অর্জন এ সবের ওপর নির্ভরশীল। এ কথা সর্বজন বোধগম্য। এই মধ্যস্থতার কারণে..ই ওইসব বিষয় দ্বীনী বিষয় হিসাবে পরিগণিত হয়েছে এবং এ সবের জন্যও নির্দেশ ও উৎসাহ দেয়া হয়েছে।
সুতরাং এ আলোচনা থেকে জানা গেলো যে, এসব বিষয় যার ওপর দ্বীনের সংরক্ষণ নির্ভরশীল, তা শর‘ঈ পরিভাষায় বিদ‘আত নয়, যদিও তা সলফে সালেহীনের যামানায় ছিলো না। কেননা এসবের উদ্ভাবন করা হয়েছে দ্বীনের হেফাযত ও সহায়তার জন্য। সুতরাং এসব পরোক্ষভাবে দ্বীনী বিষয় এবং এসবের জন্য রাসূল সা.’র নির্দেশ রয়েছে। হ্যাঁ, আভিধানিক অর্থে এসব বিদ‘আত। আর আগে ছিলো না, এমন কিছুকে নতুনভাবে উদ্ভাবন করাকেই আভিধানিক অর্থে বিদ‘আত বলা হয়।
সুতরাং জানা গেলো যে, আভিধানিক অর্থে বিদ‘আত দু’প্রকার। কিছু হাসানাহ এবং কিছু সায়্যেয়াহ। তবে শর‘ঈ বিদ‘আতের (কোনো বিভাজন নেই, বরং) সব কিছুই সায়্যেয়াহ। যার প্রমাণ রাসূল সা.’র হাদীছ: ‘তোমরা অবশ্যই নতুন উদ্ভাবিত বিষয় থেকে দূরে থাকবে। কেননা নতুন উদ্ভাবিত সব (দ্বীনি) বিষয়..ই বিদ‘আত। আর প্রত্যেক বিদ‘আত..ই গোমরাহী।’ এ আলোচনা থেকে জানা গেলো যে, যারা বিদ‘আতকে হাসানাহ ও সায়্যেয়াহ নামে ভাগ করেছেন, তারা ভাগ করেছেন আভিধানিক বিদ‘আতকে, শর‘ঈ বিদ‘আতকে নয়।
আরো জানা গেলো যে, শর‘ঈ বিদ‘আত হলো খাস, আর আভিধানিক বিদ‘আত হলো ‘আম বা ব্যাপক। শর‘ঈ অর্থে যা বিদ‘আত, তা আভিধানিক অর্থেও বিদ‘আত। তবে আভিধানিক অর্থে যা কিছু বিদ‘আত, শর‘ঈ অর্থে তার সব কিছু বিদ‘আত নয়। সুতরাং জামা‘আতের সাথে তারাবীহ নামায আদায় করা সম্পর্কে উমার রা.’র উক্তি- ্রنِعْمَتِ الْبِدْعَةُ هَذِهِগ্ধ ‘এটা কতো..ই না উত্তম বিদ‘আত!’ থেকে তাঁর উদ্দেশ্য বিদ‘আতের আভিধানিক অর্থ, শর‘ঈ অর্থ নয়। তাছাড়া যারা বিদ‘আতকে ভাগ করেছেন, তাদের নিকটেও বিদ‘আতে হাসানার উপস্থিতি শুধু দ্বীনের আনুষঙ্গিক বিষয়াদিতে, দ্বীনের মৌলিক বিষয়াদিতে নয়। কেননা দ্বীনের মৌলিক বিষয়ে সব বিদ‘আত..ই সায়্যেয়াহ। যেমনটা ‘মাজালিসুল আবরার’ কিতাবে বলা হয়েছে।
____________________
উপরোক্ত আলোচনার নিরিখে প্রণিধানযোগ্য কথা হলো- আভিধানিক বিদ‘আতের ভালো-খারাপ দুই দিক..ই রয়েছে। কিন্তু আভিধানিক বিদ‘আত নিয়ে আমাদের আলোচনা নয়। আমাদের আলোচনা শর‘ঈ বিদ‘আত নিয়ে, যার হাসানা বা ভালো বলতে কোনো দিক নেই, সব..ই সায়্যেয়াহ বা খারাপ। শরী‘আতের যতো স্থানে বিদ‘আতের নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে, তা থেকে শর‘ঈ বিদ‘আতই উদ্দেশ্য এবং সেখানে বিদ‘আতকে সুন্নাতের বিপরীতে ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন ইমাম ইবনে হাজার আসকলানী রহ. বলেছেন-
وَالْبِدْعَةُ أَصْلُهَا مَا أُحْدِثَ عَلَى غَيْرِ مِثَالٍ سَابِقٍ وَتُطْلَقُ فِي الشَّرْعِ فِي مُقَابِلِ السُّنَّةِ فَتَكُونُ مَذْمُومَةً.
বিদ‘আতের মূল হলো, যা কোনো পূর্ব নমূনা ব্যতীত উদ্ভাবন করা হয়েছে। আর শরী‘আতে বিদ‘আত প্রয়োগ হলো সুন্নাতের বিপরীতে। সুতরাং বিদ‘আত নিন্দনীয়।
এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি সহ বিজ্ঞানের যতো নতুন নতুন উদ্ভাবন রয়েছে, তার সবই আভিধানিক অর্থে বিদ‘আত, কিন্তু কেউ..ই সেগুলোর ওপর ‘বিদ‘আত’ শব্দ প্রয়োগ করে না। এ থেকে বুঝা যায় যে, কোনো বিশেষণ ছাড়া বিদ‘আত বলা হলে, আমরা তা থেকে শর‘ঈ বিদ‘আতকেই বুঝি।
আরো একটি প্রণিধানযোগ্য বিষয় হলো- দ্বীনের অমৌলিক ও সহায়ক বিষয়াদি, যা উসূলে দ্বীনের অনুকূলে, যার মাঝে দ্বীনের সহায়তা নিহিত রয়েছে ও যার ওপর দ্বীনের সংরক্ষণ নির্ভরশীল এবং নতুন অর্থে বিদ‘আত হলেও যা শরঈ অর্থে বিদ‘আত নয়Ñ কেউ কেউ এ সবকে বিদ‘আতে হাসানাহ নাম দিয়ে বৈধ আখ্যা দেয়ার কারণে বিদ‘আতীদের জন্য ছিদ্রপথ উন্মুক্ত হয়েছে। তারা আজ তাদের প্রবৃত্তির উদ্ভাবিত যাবতীয় বিদ‘আতকে হাসানাহ নাম দিয়ে বৈধ বানানোর অপপ্রয়াসে লিপ্ত।
সুতরাং এটাই যথার্থ কথা যে, হাসানাহ ও সায়্যেয়াহ নামে বিদ‘আতের প্রকরণ অগ্রহণযোগ্য। এর দ্বারা প্রবৃত্তিপুজারীদেরকে চোরাপথের সন্ধান দেয়া হয়, অথচ ওই প্রকরণের কোনো প্রয়োজন..ই নেই। কেননা শরী‘আতে যেসব বিষয়ের নির্দেশ ও তাকীদ রয়েছে, সে সবের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছুই ওই নির্দেশের অন্তর্গত। যেমন শরী‘আতের ইলম অর্জন করা। এখন এই ইলম অর্জনের জন্য মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ও সিলেবাস প্রণয়ন সহ যাবতীয় আনুষঙ্গিক বিষয়াদি ওই নির্দেশের অধীনে অনুমোদিত। পর্যবেক্ষণের শাহাদাত অনুযায়ী এ জাতীয় বিষয়াদিকে হাসানাহ নাম দিয়ে বিদ‘আতকে ভাগ করা এতোটাই আত্মঘাতী যে, তখন কোনো বিদ‘আত..ই আর বিদ‘আত থাকবে না। হাসানাহ-র ছদ্মাবরণে সব অনুমোদিত বানানোর সয়লাব হবে, যেমন এখন হচ্ছে। এ কারণেই রাসূল সা. অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে যাবতীয় বিদ‘আতকে ভ্রষ্টতা ও বর্জনীয় আখ্যা দিয়েছেন। রাসূল সা.’র বিখ্যাত হাদীছের আলোকে ইমাম মালেক রহ. প্রায়ই আবৃত্তি করতেন-
وَخَيْرُ أُمُورِ الدِّينِ مَا كَانَ سُنَّةً ক্স وَشَرُّ الْأُمُوْرِ الْمُحْدَثَاتُ الْبَدَائِعُ.
দ্বীনের সর্বোত্তম বিষয় হলো রাসূল সা.’র সুন্নাত।
আর সর্ব নিকৃষ্ট বিষয় হলো, নতুন আবিষ্কার ও বিদ‘আত।
আল্লাহ আমাদের সকলকে শরী‘আতকে সঠিকভাবে বুঝা ও অনুসরণ করা এবং অবস্থা বিবেচনায় ব্যবস্থা গ্রহণ ও করণীয় নির্ধারণের তাওফীক দান করুন, আমীন।
©somewhere in net ltd.