![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনলাইন পত্রিকা মারফত অবগত হলাম, আজ তোমরা দেশে ফিরেছো। তোমাদেরকে বিমানবন্দরে ক্রিকেট-প্রেমীরা অভিনন্দিত করেছে। পত্রিকার রিপোর্ট, কলাম ও কমেন্ট থেকে অবগত হয়েছি যে, সাংবাদিক থেকে নিয়ে সর্বস্তরের ক্রিকেট-ভক্তরা তোমাকে অত্যন্ত ভালোবাসে। তারা ভালোবাসে তোমাকে তোমার ক্রিকেটীয় প্রতিভার কারণে, নেতৃত্বগুণের কারণে, যোগ্য নেতা হিসাবে, ভালো বন্ধু হিসাবে, সততা ও নিষ্ঠার কারণে, নির্মোহ দেশ প্রেমিক হওয়ার কারণে, মিশুক, বন্ধু-বৎসল ও সদালাপী হওয়ার কারণে এবং তোমার অকৃত্রিম ও লৌকিকতামুক্ত আচরণ সহ আরো অনেক কারণে।
কখনোই তোমার সম্পর্কে দম্ভ, রুঢ় আচরণ বা কোনো প্রকার কেলেংকারী-সংক্রান্ত সংবাদ দৃষ্টিগোচর হয়নি; অথচ তা এখন অহরহ। সামান্য যশ-খ্যাতি অর্জিত হতে না হতেই এবং দু’টাকার গরম পকেটে পুরতে না পুরতেই যা আজকালকার দিনে অধিকাংশ মানুষের থেকেই প্রকাশ পেতে শুরু করে।
কিন্তু তুমি ওই অধিকাংশের সম্পূর্ণ বিপরীত। ওই দিন পত্রিকায় তোমার বাবার একটি সাক্ষাৎকার পড়েছিলাম। তোমার বাবা বলেছেন, তুমি নিয়মিত নামায আদায় করো, এমনকি পারতে সাধ্যে তাহাজ্জুদও মিস করো না, তুমি সাদা-সিধা জীবন-যাপনে অভ্যস্ত, এতো কিছুর পরও আভিজাত্য তোমাকে স্পর্শ করেনি, তুমি উদার ও দানশীল, বাল্য-বয়সের বন্ধুদের তুমি আজো ভুলোনি, যেকোনো বিপদ-আপদে তুমি তাদের পাশে দাঁড়াও, অনেক বেকারকে তুমি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ব্যবস্থা করেছো, গরীব-ঘরের অনেক সন্তান তোমার টাকায় উচ্চ শিক্ষা লাভ করছে ইত্যাদি সহ সমাজ-সেবামূলক আরো অনেক কাজ তুমি আঞ্জাম দিয়ে থাকো এবং এতে তুমি অত্যন্ত নির্মোহ। আমি আরো জেনেছি যে, তুমি টাকা ব্যাংকে জমা রাখো ঠিকই, কিন্তু ইসলামে সূদ হারাম হওয়ার কারণে তুমি শুধু মূল টাকাই উত্তোলন করো, কখনোই সূদ গ্রহণ করো না।
তোমার ব্যক্তি-জীবন সম্পর্কে এসব তথ্য অবগত হওয়ার পরে আমিও তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। আমার মনে হয়, এসব গুণাবলি যার মধ্যে থাকবে, যে কোনো মানুষের ভালোবাসা তার অবশ্য প্রাপ্য, বরং এমন গুণাবলির অধিকারীকে মানুষ ভালোবাসতে বাধ্য। ভালো গুণাবলি থেকেই ভালোবাসা সৃষ্টি হয়, আর ভালোবাসা থেকে সৃষ্টি হয় একটি দাবীর সম্পর্ক। তাই তোমার সমীপেও নিশ্চয়ই তোমার ভালোবাসার অনেক দাবী রয়েছে। আজ আমিও তোমার সমীপে একটি দাবী পেশ করবো। এটা তোমার আরো অনেক ভক্তেরও মনের একান্ত চাওয়া হলেও হতে পারে।
দাড়ী মুসলমানদের জন্য একটি সার্বক্ষণিক ওয়াজিব ইবাদত। যে মুসলমান দাড়ী মুণ্ডন করে, সে সারাক্ষণই গুনাহে লিপ্ত থাকে। আমাদের প্রিয় নবী সা. দাড়ী রাখার প্রতি আমাদেরকে উৎসাহিত করেছেন, নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূল সা.’র সুন্নাত হিসাবে সব যুগের আল্লাহ-অলা মুসলমানরা দাড়ী রেখেছেন। ভেবে দেখো, আজ যদি কোনো দাড়ী মুণ্ডিত যুবকের মৃত্যু হয়, সে কোন মুখ নিয়ে প্রিয় নবীর সামনে উপস্থিত হবে?
মোটকথা, দাড়ী রাখার গুরুত্ব অপরিসীম, যা তোমাকে বুঝিয়ে বলার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। ইতোপূর্বে আমরা তোমার ইবাদত-বন্দেগী ও ইসলামী বিধানের প্রতি অনুরাগ-আনুগত্য সম্পর্কে যা অবগত হয়েছি, দাড়ী রাখাটা তার সাথে খুবই সঙ্গতিপূর্ণ। কতো দাড়ি-অলা ক্রিকেটারের বিপক্ষেই তো তুমি ‘বল’ করেছো! ওই দাড়ী-অলাদের অনেকেই তো অমুসলিম দেশের প্রতিনিধি! মুখ-ভর্তি দাড়ীর কারণে কিন্তু তারা কিকেটে বিলকুলই বে-মানান নন। দাড়ীর কারণে তাদের নাম-ডাক ও যশ-খ্যাতিতে কোনো কমতি আসেনি। বরং জার্সি যেমন দেশের পরিচয় বহন করে, সাথে তাদের দাড়ী তাদের মুসলমানিত্বের পরিচয় বহন করে। তাই তোমার মতো ইসলামের প্রতি অনুগত এক জনের থেকে মুসলমানিত্বের পরিচয়-বহ দাড়ী রাখার দাবী করা খুবই যথার্থ। তুমি তো ভক্তদের আব্দার পুরা করতে খুবই অভ্যস্ত। আশা করি দাড়ী রাখার আব্দার পুরা করতেও তুমি বিলকুল কার্পণ্য করবে না।
তোমরা তরুণ প্রজন্মের আইডল। তারা সব ক্ষেত্রে তোমাদের অনুসরণ করে। তোমরা দাড়ী রাখা যদি একজন তরুণেরও দাড়ী রাখার কারণ হয়, তুমি অবশ্যই পূর্ণ ছওয়াবের অধিকারী হবে; যেমন কেউ মন্দ কিছুর পথ-নির্দেশ করলে পালনকারীর সমপরিমাণ গুনাহ নির্দেশকের আমল-নামায়ও লেখা হয়।
পরিশেষে তোমার সর্বাঙ্গীন কল্যাণ কামনা করছি। আল্লাহ তোমাকে দ্বীনের পথে পরিচালিত করুন এবং তাঁর দ্বীনের অনুগত ও একনিষ্ঠ খাদেম হিসাবে কবুল করুন, আমীন।
©somewhere in net ltd.