নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Our sweetest songs are those that tell of saddest thought (Shelly).

রূপক বিধৌত সাধু

মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইল পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন ([email protected])

রূপক বিধৌত সাধু › বিস্তারিত পোস্টঃ

টেম্পোর জন্য অপেক্ষা

০২ রা আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩১


লন্ডনে বসবাসরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কয়েকটা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে; এর মধ্যে একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে ‘কোথাও যাওয়ার জন্য’ উনি গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করছেন। ছবিটা দেখে ১৭-১৮ বছর আগের কথা মনে পড়ে গেল। একজনের জন্য আমি এভাবেই টেম্পো স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করতাম।

সবে কলেজে ভর্তি হয়েছি ব্যবসায় শিক্ষ‍া শাখায়। দেহ-মনে উৎসাহ-উদ্দীপনা ভরপুর। নতুন নতুন বন্ধুও জোটেছে। মোটামুটি ‘ভালো ছাত্র’ হওয়ায় সবাই দেখি খুব সমীহ করে। আমি তো জানি কীসের ভালো ছাত্র! বন গাঁয়ে শেয়াল রাজা; সেরকম আর কী।

প্রেম করলাম কার লগে আর বিয়া করলাম কারে?

বিজ্ঞান, মানবিক আর ব্যবসায় শিক্ষা; একসাথে ইংরেজি ক্লাস হতো। ৭০-৮০ জন নিয়মিত শিক্ষার্থীর মধ্যে আমার আলাদা মূল্যায়ন। কারণ পড়া পারি, নম্বরও বেশি পাই। পাশ করার জন্য অনেকেই আমার ওপর নির্ভরশীল। তাই অনেকে অতিরিক্ত খাতির জমানোরও চেষ্টা করত।

আমাদের বিভাগে, মানে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ২৫ জনের মতো স্টুডেন্ট। মেয়ে মাত্র একজন, তার নাম সুমাইয়া তালুকদার। দেখতে ছোটখাটো, তবে খুব সুন্দর। সবাই লাইন মারার চেষ্টা করে। কিন্তু সে কাউকেই পাত্তা দেয় না। সহপাঠীরা আমাকে খেপায়। আমাকে ডাকে নানা, আর তাকে ডাকে নানি। লজ্জায় তার দিকে তাকাতে পারি না। কিন্তু বুঝতে পারি ‘মনে মনে পছন্দ’ করতে শুরু করেছি।

বাড়ি থেকে বের হয়ে এলাকার বাজারে এসে টেম্পোর জন্য অপেক্ষা করি। ও যে টেম্পোতে চড়ে আসবে, সে টেম্পোতে আমিও চড়ব। একটা-দুটো টেম্পোর পর কাঙ্ক্ষিত টেম্পো আসে। উঠে মুখোমুখি বসি, কিন্তু কথা হয় না। ক্লাসে সামনের বেঞ্চে বসি। সুযোগ বুঝে ওর দিকে তাকাই। ও কীভাবে কথা বলে দেখি।

কলেজ শেষে টেম্পো স্ট্যান্ডে বসে থাকি সে এলে একসাথে যাব। জানি কথা হবে না, তাও একসাথে যাওয়ার আকুল ইচ্ছা। সে অনেকদিন আসে, অনেকদিন আসে না। একদিন চার ঘণ্টা বসেছিলাম, সে আসেনি। পরে কলেজে গিয়ে দেখি বের হয়েছে কি না। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর বুঝতে পারলাম সে চলে গেছে।

বন্ধের দিন তার এলাকার রাস্তা দিয়ে ‘কোথাও যাচ্ছি’ ভাব নিয়ে হেঁটে যাই। পাশের মাঠে বসে থাকি। যদি একনজর দেখা যায়!

তানিন নামে একজন ওর পিছে ঘুরে ঘুরত। পিয়াস নামে একজন বলল, ওর সাথে অনেককিছু হয়ে গেছে। কাওসার নামে একজন মোবাইলে মেসেজ দেখিয়ে বলল, ওর সাথে সম্পর্ক চলে। আমার প্রচণ্ড মন খারাপ হলো। ওর চাহনি দেখলে বুঝি আমার প্রতি আগ্রহ। সত্যি না মিথ্যা, বুঝতে পারি না।

কলেজজীবন শেষ হয়। জনৈক শিক্ষকের মাধ্যমে দু’জন দুই কোচিংয়ে ভর্তি হই। এর মধ্যে একদিন শুনি একজনের সাথে সম্পর্ক হয়েছে ওর। একদিন সরাসরি দেখলামও রিকশায়। মনটা দুমড়েমুচড়ে গেল।

উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। তার সাথে দেখা হলো কয়েকবার, কথাও হলো। অর্থনীতিতে ভর্তি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাদে একজনের সাথে দেখলাম একদিন। নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছে মনে হলো।

একদিন এলাকার এক সহপাঠীর সাথে দেখা হলো। সে জানাল, সুমাইয়া আমাকে পছন্দ করত। আমি বললাম, ওর তো সম্পর্ক ছিল।

সহপাঠী বলল, অন্যরা হিংসায় বলেছে।

আমি বললাম, পরে তো আরেকটা খারাপ ছেলের সাথে সম্পর্ক তো হয়েছিল।

সহপাঠী বলল, তোমার সাথে সম্পর্ক হলে হয়তো এমন হতো না। তোমার সাথে রাগ করে এমন করেছে।

আমি কী বলব, বুঝতে পারি না।

তার সাথে ফেসবুকে যুক্ত হই ২০১৫ সালে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের পর তাকে ফেসবুকে পাইনি। শুনি, ডিসেম্বরের ২৩ তারিখ ওর বিয়ে হয়ে গেছে। সর্বশেষ ওকে দেখি ১০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল।

তাকে নিয়ে কত যে গল্প, কবিতা আছে আমার! আমার গল্পগ্রন্থ ‘কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়’-তে তার নাম সামিয়া তালুকদার নামে উল্লেখ আছে। তাকে নিয়ে ব্লগেও লেখা আছে বেশকিছু।

তাকে জানাও তাকে ভালোবাসি
অব্যক্ত প্রণয়
কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (ষষ্ঠাংশ)

ভেবেছিলাম তাকে নিয়ে আর কখনও কিছু লিখব না। পুরোনো দিনের অনেক কথা মনে পড়ে গেল। কিছু না লিখে পারলাম না।

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪১

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের সেবা করবে তার জন্য নিজেদের মাঝে মারামারি করছে। কতো ভাগ্যবান আমরা ভেবে দেখেছেন?

০২ রা আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: হ্যাঁ, দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কে জয়ী হয়।

২| ০২ রা আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৮

শায়মা বলেছেন: এইভাবে বিদেশে সবাই অপেক্ষা করে গণপরিবহনের জন্য...... দেশে থাকলে ইনি রাজকুমারের মত নিজের পরিবহনে চলতেন....

০২ রা আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: একটা ভিডিওতে দেখলাম নিজস্ব পরিবহণেই চলছেন। লোকজন স্বাগত জানাচ্ছে।

৩| ০২ রা আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩১

শায়মা বলেছেন: তাহলে আবার এই ছবি কেনো?

এটা কি ফটোশ্যুট!!!

০২ রা আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: মন্তব্যগুলো শায়মাসুলভ (স্নিগ্ধ-কোমল) হচ্ছে না। খ্যাপা বাসু টাইপ হয়ে যাচ্ছে :)

৪| ০২ রা আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩১

লোকমানুষ বলেছেন: অপেক্ষারত ভাইটিকে কেউ একজন যদি গুলিস্তানের একটি লোকালে তুলে দিতেন! =p~
তবে আর যাই হোক, ফটোর সাথে ক্যাপশনটা দারুণ-ভাবে মিলে গেছে ;)

০২ রা আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আমি আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছি। আমার ছোটকালের অনুভূতির ক্ষুদ্র প্রকাশ।

৫| ০২ রা আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৪

লোকমানুষ বলেছেন: দেখুন কান্ড!
এখানেও সে সফল!!
কেবল একটি ফটোশুট করে সে আপনার অনুভূতি ছুঁয়ে গেলো, আপনার সাথে কানেক্টেড হয়ে গেলো!!!

০২ রা আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:০৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: “যেখানে দেখিবে ছাই
উড়াইয়া দেখো তাই,
পাইলে পাইতে পারো অমূল্য রতন।”
লাইনগুলোর প্রভাব আমার মধ্যে আছে প্রবলভাবে। মানুষ যা নিয়ে সমালোচনা করে, সেখানে আমি ইতিবাচক কিছু খুঁজে বের করতে পারি।

৬| ০২ রা আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:১০

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: এই লেখার হেডলাইন আর ছবি দেখলে বিএনপি সমর্থকদের হার্ট এট্যাক হইবো!
স্মৃতিচারণ মুলক প্রেম কাহিনী পড়ে ভাল লাগলো।

০২ রা আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:১৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: এই লেখার হেডলাইন আর ছবি দেখলে বিএনপি সমর্থকদের হার্ট অ্যাট্যাক হইবো! আমি সরলমনে ছবিটা ব্যবহার করলাম। এখন দেখা যাচ্ছে লেখার চেয়ে ছবিটা নিয়েই বেশি কথা হচ্ছে।

৭| ০২ রা আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:২৬

ঢাবিয়ান বলেছেন: আপনার অপেক্ষা আর জনৈক ফটো শ্যূট অভিনেতার অপেক্ষার মাঝে আকাশ পাতাল ফারাক। আপনার বর্তমান খবরা খবর কি? এখনও কি শিক্ষকতায় আছেন?

০২ রা আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:৪০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আপনার বর্তমান খবরাখবর কী? এখনও কি শিক্ষকতায় আছেন? শিক্ষকতায় আর নেই। আছি অন্য প্রাইভেট সেক্টরে।

৮| ০২ রা আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:৪৫

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


অপেক্ষার প্রহর সব সময়ে মধুর হয় না।

০২ রা আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:৫৪

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আমার জন্য অপেক্ষার প্রহর বেশিরভাগ সময় বেদনার ছিল।

৯| ০২ রা আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:৫৮

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:



লেখক বলেছেন: আমার জন্য অপেক্ষার প্রহর বেশিরভাগ সময় বেদনার ছিল।
==================

যেথায় ক্ষত সৃষ্টি হয়, সেখান দিয়েই আলো প্রবেশ করে।

আমার কথা না, গুরু রুমীর কথা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.