নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Our sweetest songs are those that tell of saddest thought (Shelly).

রূপক বিধৌত সাধু

মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইল পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন ([email protected])

রূপক বিধৌত সাধু › বিস্তারিত পোস্টঃ

কয়েকজনকে মন থেকে মুছে দিয়েছি ওদের ছোটলোকির কারণে

১০ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৪


মিরপুর-১৪ এলাকায় স্বাধীনতা চত্বরের এক পাশে দাঁড়িয়ে এক ভদ্রলোকের সাথে গল্প করছিলাম। এ সময় একটা ফুটবল ছুটে এলো আমার সামনে। যেদিক দিয়ে এসেছিল, লাথি দিয়ে সেদিকে বলটা দিলাম। হঠাৎ এক লোক এসে আমার সাথে ঝগড়া জুড়ে দিল। আমি কেন বলে লাথি দিলাম, এ নিয়ে রীতিমতো জেরা শুরু করল। আমি তো থ। বললাম, ‘আপনার সামনে বল পড়লে ছুড়ে দিতেন না?’

সে কোনো কথাই শুনছে না। গায়ে লেগে যাচ্ছে এমন অবস্থা।

আমার পাশের জন সেনাসদস্য, যদিও অনানুষ্ঠানিক পোশাকে এসেছেন। তিনি বললেন, ‘সমস্যা কী আপনার?’ তার সাথেও ঝামেলা শুরু করল লোকটা। তাকে কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না। আমি চূড়ান্ত ধৈর্য ধারণ করছি, কিন্তু ভেতরে ভেতরে রাগে-ক্ষোভে ফেটে পড়ছি।

অনেকক্ষণ ধৈর্য ধরে অন্য পাশে চলে এলাম আমরা। আমার সাথের ভদ্রলোকের সাথে আলাপ চলল বটে, তবে দু’জনই জমে থাকা রাগ-ক্ষোভ কমাতে পারছিলাম না। আমার অফিস পাশেই। লোকজন নিয়ে এসে ওই বদমাশটাকে সাইজ করা যেত। সামান্য বিষয় বলে এড়িয়ে গেলাম। যদিও বুঝতে পারলাম, মারামারি তো এমনি এমনি বাঁধে না। এক কথায় দুই কথ‍ায় লেগে যায়। লোকটার যে অঙ্গভঙ্গি, আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে এতক্ষণে রক্তারক্তি হয়ে যেত। ঝামেলা এড়ানোর জন্য আর এগোইনি। কম বয়সেই মারামারি করিনি; এই বুড়ো বয়সে এসে হাঙ্গামা করার রুচি নেই।

দুই

আমার ডে-অফ সোমবার। সহকর্মীদের আগেই জানিয়ে রেখেছি এদিন বাড়ি যাব। এতে অন্যদের কোনো সমস্যা নেই। দু’দিন পর হঠাৎ এক সহকর্মী দরখাস্ত নিয়ে এসে বললে, ‘আপনি বৃহস্পতিবার ডে-অফ নেন।’

মামাবাড়ির আবদার নাকি! এর আগে বহুবার আমার দিন মাইর গেছে। সাপ্তাহিক ডে-অফ বৃহস্পতিবার ছিল। সেটা বদল করে সোমবার নিয়েছি। এখনও দেখি শান্তি নেই।

আমি বললাম, ‘আমার সোমবারই লাগবে।’ এ নিয়ে বিরাট কাহিনী। তিনি ছুটি নেবেনই। আমি কীভাবে এই অফিসে চাকরি করি তিনি দেখে নেবেন।

আমি বললাম, ‘যা খুশি করুন।’ কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি নিয়ে তার কথা হলে আমি সাফ জানিয়ে দিলাম, আমার সোমবারই লাগবে। তার ছুটি মঞ্জুর হলো না।

পরদিন অফিসে এসে শুনি উনি এক সপ্তাহের ছুটিতে চলে গেছেন। কর্তৃপক্ষের সাথে খাতিরের সুফল পেলেন। আট বছর ধরে এই অফিসে আছেন। কিন্তু আমি তো সোমবার ছাড়ব না।

আজিমপুর গেলাম এক কাজে। বাড়িতে কথা হলে জানাল, বৃহস্পতিবার এলেই হবে। কী মুসিবত! এত কাহিনী তাহলে কেন করলাম!

সোমবার অফিসে গেলে তো ইজ্জত থাকে না। গেলামও না। অফিস থেকে মেসেজ করে আনসেন্ট করে দিল। বুঝলাম, আমি কেন আসিনি সে সম্পর্কে হয়তো লিখেছিল।

তিন

সাবেক এক সহকর্মীর সাথে অনেকদিন পর দেখা। বললাম, ‘মেসেজে পাওয়া যায় না। বড়লোক মানুষ।’

তিনি মেসেজ খুঁজে বের করলেন। আমি বললাম, ‘দেখুন, লিখছেন কী দরকার? মানুষ কি শুধু দরকারেই ফোন দেয়? এমনিতে খোঁজ নিতে পারে না?’

তিনি বললেন, ‘আমি মেসেজের রিপ্লাই দেই না বলে আমার সম্মানহানি করছেন। আপনাকে ডেকেছিলাম চাকরির সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য। আপনি এখনও দুধের শিশু।’

প্রসঙ্গত, এক চাকরি ছেড়ে অন্য চাকরিতে যোগদানের কথা আমার। এই সহকর্মী সেখানকার চেয়ে দুই হাজার কম অফার করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই আমি রাজি হব না। যেহেতু তার ওখানে গিয়েছি, উনি মনে করেছেন আমি চাকরির জন্য গিয়েছি। অথচ আমি তার ওখানে গিয়েছি আগের পরিচয়ের খাতিরে। এবং সে মতোই তার সাথে কথা বলছিলাম। উনি যে আমাকে চাকরিপ্রার্থী, বড়জোর সাবেক সহকর্মী হিসেবে দেখেছেন, আপন লোক ভাবেননি, সেটা তো বুঝিনি। মনে করেছি উনিও আমাকে মিস করেন, যেহেতু একসাথে চাকরি করার শুরুতে তিনি আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। আসলে মানুষ চেনা মুশকিল।

যাহোক, আমি বিরক্ত হয়ে বললাম, ‘সবকিছু আপনিই বোঝেন। আর আমি কিছুই বুঝি না।’ “ফালতু কোথাকার” বলে অফিসের দিকে হাঁটা ধরলাম। পরে দেখি “পাগল” ব্লা ব্লা ব্লা বলছিলেন।

আসতে আসতে ভাবছিলাম আরও কথা শুনিয়ে আসা উচিত ছিল। আমি যে উনার ওখানে চাকরির জন্য যাইনি, সেটা অবগত করা উচিত ছিল। তিনি যখন বলছিলেন, কী দরকার- এতে বিব্রত হয়ে অন্য প্রসঙ্গে কথা বলেছিলাম। যেমন বেতন ঠিকমতো দেয় কি না, পরিবেশ কেমন এসব। আমি তো তার সম্মানহানির মতো কিছু বলিনি। তাছাড়া ততদিনে আমি অন্য চাকরিতে যোগদানও করে ফেলেছি। তার প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। আবার তিনি আমাকে তার ওখানে যাওয়ার জন্য জোর করেছেন, আমি যাইনি ব্যাপারটা এমনও না।

পরে মনে হলো কিছু কিছু মানুষ অন্যকে ছোট করে তৃপ্তি পায়। তাই অন্যের কথা শোনার তাগিদ অনুভব করে না। উনিও শুনতেন না। এরা মানুষকে বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠা দিয়ে, মন-মানসিকতা দিয়ে নয়।

মনটাকে প্রবোদ দিলাম এই ভেবে যে, এ রকম ফালতু মানুষের জন্য এতদিন মিছে দরদ অনুভব করতাম। এখন থেকে আর করব না। সবাই সবকিছু পাওয়ার যোগ্যতা রাখে না। এর আগেও কয়েকজনকে চিরদিনের জন্য মন থেকে মুছে দিয়েছি ওদের ছোটলোকির কারণে। এটা করতেই হয়। না করলে নিজেরই ভোগান্তি। সংখ্যা আরেকটা বাড়ল। এদের জন্য এক সেকেন্ডের জন্যও মন পোড়ে না। 

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:৫৬

কামাল১৮ বলেছেন: প্রাত্যহিক ঘটনার সুন্দর ব্যখ্যা।

১০ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:৫২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ঠিক আছে।

২| ১০ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:৪২

ডার্ক ম্যান বলেছেন: চাইলে সবাইকে মন থেকে বুঝা যায় না

১০ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:৫২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আমি সবাইকে প্রথম দর্শনে ‘ভালো’ হিসেবেই ধরে নিই। পরে হতাশ হতে হয়।

৩| ১০ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১০:২৭

লোকমানুষ বলেছেন: জীবনের অভিজ্ঞতা যেমন তিক্ত, তেমন শিক্ষণীয়—আপনার লেখায় সেটা খুব স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। ছোটলোকি আর অহংকারের মুখোমুখি হলে ধৈর্য রাখা সহজ নয়, কিন্তু আপনি যেভাবে নিজেকে সামলেছেন, তা প্রশংসনীয়। অনেক সময় কিছু মানুষকে মন থেকে মুছে দেওয়াই নিজের মানসিক শান্তির জন্য সবচেয়ে ভালো পথ—আপনি সেটাই দেখিয়েছেন। আপনার কথাগুলো একেবারেই বাস্তব ও জীবনঘনিষ্ঠ মনে হলো।

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১২:০১

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ধৈর্য ধরে এসব লোককে এড়িয়ে যাওয়াই মঙ্গল। বিবাদ অনর্থক।

৪| ১০ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১১:০৪

ক্লোন রাফা বলেছেন: Just Ignore Those People / Life's very short Make it Meaningful With Your Lovable People .

১১ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১২:০৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: একদম ঠিক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.