| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রূপক বিধৌত সাধু
মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইল পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন ([email protected])

সপ্তাহ দুই আগে আমার এক সাবেক সহকর্মী মেসেঞ্জারে হঠাৎ নক দিল। কিছুক্ষণ তার সাথে চ্যাট করার পর কল দিলাম। পুরোনো দিনের অনেক কথা হলো। একপর্যায়ে বলল, স্যার, কিছু টাকা দেন (পরিমাণটা লিখলাম না)। ভাত খাব।
আমি একটু বিব্রতবোধ করলাম। প্রথমত, এতদিন পর কথা হওয়ার একপর্যায়ে কীভাবে সরাসরি টাকা চাইতে পারে! দ্বিতীয়ত, মাসের শেষদিক। আমার পকেটের অবস্থাও তেমন ভালো না। অল্প কিছু টাকা আছে। মাস কুলাবে না, ধার করতেই হবে।
খাওয়ার কথা বলছে যেহেতু, না তো করা যায় না। এমন দিন আমারও গেছে। নগদে টাকা পাঠিয়ে দিলাম। সে জানাল, পরদিন আমার সাথে দেখা করবে। আর তখনই টাকাটা দিয়ে দেবে। আমি চিন্তাও করিনি, জিগ্যেসও করিনি সে টাকা কোথা থেকে দেবে।
তার সাথে ফেসবুকে অ্যাড আছি অনেক বছর হয়। করোনায় স্কুল বন্ধ হওয়ার পর সে তার এলাকা লালমনিরহাট চলে যায়। সেখানে কোনো একটা এনজিওতে ঢুকেছিল। এর মধ্যে ফেসবুকে আবার দেখলাম মেট লাইফে কী একটা ভালো পদে ঢুকছে। ঢাকায় এসেছে মাসখানেক হলো। এখানে নাকি ব্র্যাক ব্যাংকে ইন্টারভিউ আছে। লিখিতসহ বাকিসব আগেই হয়ে গেছে।
পরদিন আমার সাথে দেখা হলো। জানাল, ইন্টারভিউ দিয়েছে। ট্রেনিং হবে। পরে জয়েনিং। একসাথে খাওয়াদাওয়া করলাম। আড্ডা দিলাম সন্ধ্যা পর্যন্ত। যখন যাওয়ার সময় হলো আমার কাছে টাকা চাইল আরও ২০০।
এবার একটু বিরক্তই হলাম। বললাম, আপনাকে গতকাল সবই বললাম, তাও টাকা চাইছেন? যে কয় টাকা আছে সেসব কোন খাতে খরচ হবে তার ফিরিস্তি দিলাম। কিন্তু না সে নাছোড়বান্দা। আমি টাকা না দিলে সে যেতে পারবে না। তার কাছে ভাড়া নেই।
বললাম, ঢাকায় আসছেন টাকা ছাড়াই? চললেন কেমনে একমাস? সে বলল, ১০ হাজার খরচ হয়ে গেছে।
কী আর করা? অগত্যা ৬০ টাকা ভাড়া দিলাম। বললাম, আপনি মিয়া আগের মতোই বাটপার আছেন। শত অভাবেও এই স্বভাবটা হলো না আমার। মিথ্যা কথা বলতে পারি না। বাটপারি করতে পারি না। সে হাসতে হাসতে বলল, আপনি তো মেনে নিতে পারেন। আমি চিন্তা করি আজকে কেমনে বাঁচব সেটা। কালকের চিন্তা কাল।
রাতে মেসেজ দিলাম, ঠিকমতো গেছে কি না। জানাল, গেছে। প্রচণ্ড জ্বর এসেছে। বললাম, নাপা খেয়ে ঘুম দিন।
পরদিন রাতে আবার মেসেজে দিলাম, কী অবস্থা? সে বলল, স্যার, গতকাল দুপুরের পর থেকে এখন পর্যন্ত কিছু খাইনি। আমি বললাম, কাল সকালে আসুন। খাওয়াব নে।
সে বলল, ৫০০ টাকা পাঠান।
একটু মায়া তৈরি হয়েছিল। এ কথা শোনার পর মানিব্যাগের ছবি তুলে পাঠালাম আর কিছু কড়া কথা শোনালাম। সে বলল, না পারলে নাই। এত কথা বলার দরকার ছিল না।
কয়েকদিন পর আবার মেসেজ দিলাম। কী খবর? চাকরি হলো কি না। সে বলল, বাড়ি চলে আসছি। এখন আর জিগ্যেস করলাম না টাকাটা দিলেন না? ওর হয়তো সেটা খেয়ালই নেই।
করোনার সময় এই লোক বাসা ভাড়া না দিয়ে গাজীপুর থেকে পালিয়েছিল। তখন থেকেই তাকে আমি বাটপার বলতাম। তখন সে বলত, স্যার টাকা না থাকলে কী করব? তা ঠিক কথা। কিন্তু তাই বলে একটা উচ্চশিক্ষিত মানুষের ম্যানেজমেন্ট থাকবে না? কথাবার্তা ঠিক থাকবে না? যে ব্র্যাক ব্যাংকের জন্য নির্বাচিত হলো, তার একটা ক্লাস থাকবে না? আমার তো এখন সন্দেহ হচ্ছে সে মিথ্যা কথা বলেছে। কোনো ইন্টারভিউ হয়তো ছিল না।
ছবি: ইন্টারনেট
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১১
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: এভাবে চললে এরা একসময় একা হয়ে পড়ে। কেউ এদের বিশ্বাস করে না।
২|
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২২
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
বুঝা মুশকিল, অবস্হা শিকার, নাকি বাটপার! আপনার অবজারভেশান নিয়েও আমার সন্দেহ আছে।
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৮
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: কিছুটা তো অবস্থার স্বীকারই। তাই বলে কথা-কাজে এত লাগামহীন হলে চলে? আমি যা পারব না, তা বলব কেন? আবার এমন হতে পারে যদি বলত ফেরত দিতে পারবে না, তাহলে হয়তো সাপোর্ট পেত না। সাময়িক হেল্প না হয় হলো, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তো বিশ্বাস হারাল।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:০৭
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: এমন মানুষ অহরহ রয়েছে সমাজে!