নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেঁচে থাকার প্রবল ইচ্ছাই মানুষকে তার স্বপ্ন পূরণে উৎসাহিত করে....

সাদেকুর রহমান (সাদেক)

দুই দিনের মুসাফির

সাদেকুর রহমান (সাদেক) › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন কি ভেঙে গেছে আপনার?

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:২৭

বিসিএস ক্যাডার হওয়ার যোগ্যতা আছে আপনার। নিজেও জানেন পারবেন আপনি, আমাকে দ্বারা সম্ভব। সফল আমি হবই। তবুও মাঝে মাঝে হাল ছেড়ে দেন। কখনোবা প্রকৃতির নির্মম পরিস্থিতি কিংবা প্রয়োজনের তাগিদে কর্মব্যস্ততা আপনাকে পিছু হটতে শিখায়। পঁচিশোর্ধ্ব বয়স আপনার। পরিবারের বড় সন্তান আপনি। আরো দু'চার জন ভাই বোন। তাদের পড়াশুনার খরচ জোগানো, পরিবারকে সাপোর্ট দেওয়া, বাবার অসুস্থতা এসব কিছু আপনাকে দমিয়ে ফেলে, ভেঙে চুরমার করে ফেলে লুকিয়ে থাকা সেই সুপ্ত স্বপ্নটাকে। হুম, সেটাই বাস্তবতা। আর এমনটাই হওয়ার কথা। বেসিক্যালি, অনার্স শেষ করার পর পরই শুরু হয় আমাদের ভাবনা। কবে একটা ভাল চাকুরি পাবো? কবে পরিবারের বোঝা হালকা করবো? :( অনেকটা বছরই তো বাবা-মা পড়াশুনা করিয়েছেন। একটা লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবো বলে। একটা চাকুরি করবো বলে।
অনার্স চলাকালীন সময়েই বাবা মারা দীর্ঘ শ্বাস ফেলেন- বাবা, কবে চাকুরি করবে তুমি?? বিশেষ করে পরিবারের বড় সন্তানের যত ভাবনা! পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিই যখন বার্ধক্যজানিত কারণে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বলে- সমস্যা নেই। আমি সুস্থ হয়ে আরো কিছু দিন কষ্ট করে না হয় তোমার পড়াশুনার খরচ চালাব। তুমি চিন্তা-ভাবনা না করে পড়াশুনা কর। বড় অফিসার হওয়ার জন্য চেষ্টা চালাও। আমি তো মরে যাই নি। ছোট্ট ভাইটি যখন টিউশন ফি'র জন্য সেমিস্টার ড্রপ দেয়। বাবা কখন সুস্থ হবেন? আর টাকা পয়সা ইনকাম করবেন, সে আশায় যখন সান্ত্বনা খুঁজে পান, তখন বড় ছেলে হয়ে আপনার আর আমার চোখের জল ফালানো ব্যতীত আর কিছুই করার থাকে না। কখনো বা হাসপাতালের বারান্দায় ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে উঠা আর নিজের প্রতি ধিক্কার ছুঁড়া!!! কিছুদিন পরে যখন ডাক্তার আপনাকে ডেকে বলবেন- তোমার বাবাকে সামনের দিনগুলোতে সর্ম্পূণ বিশ্রামে থাকতে হবে। তারপর আপনি কি করবেন? বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নিবেন নাকি যে কোন চাকুরিতে প্রবেশের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করবেন???

আমাদের দেশের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা ছোটবেলা থেকে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন দেখে আবার সেটাকে ধুলিস্যাৎ করেন নিজেই। তার বেশিরভাগ কারণই পরিবারের অভাব-অনটন, হঠাৎ করে বাবার অসুস্থ হয়ে পড়া কিংবা মায়ের পক্ষে পরিবার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়লে। ঠিক ওই মুর্হুতে পরিবারকে আর্থিক সাপোর্ট দেওয়ার জন্য উঠে-পড়ে লাগেন তারা। একটা সময় বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি থেকে অনেকটা ছিটকে পড়েন।
প্রতি বছরই বিসিএস পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। লক্ষের অঙ্কটা বেড়ে যাচ্ছে সময়ের সাথে সাথে। তবে ক্যাডার হওয়ার তীব্র বাসনা নিয়ে প্রিলিতে অংশ নেনই বা কতজন??? কিছু অংশ পরীক্ষায় অনুপস্থিত, কিছু অংশ চাকুরি-বাকুরি নিয়ে দৌড়াদৌড়ির ফাঁকে মনকে সান্ত্বনাস্বরুপ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, আবার অনেক অংশেরই ভাল প্রস্তুতি থাকেন না। সবকিছু কাঁটছাট করে ক্যাডার হতেই হবে- এমন বাসনাধারী পরীক্ষার্থীরা সংখ্যা থাকে খুবই কম। আর তাদের মধ্যেই হয় মূল প্রতিযোগিতা। সেই প্রতিযোগিতায় চূড়ান্তভাবে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণে আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকেন তারা। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য যারা শুরু থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকেন তারাই হয়তবা লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগটুকু পেয়ে থাকেন। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে কেবল ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট।
বিসিএস ক্যাডার হতে হলে নূ্্যনতম ১-২ বছরের পড়াশুনা করা আবশ্যক বলে মনে করেন অনেকে। আবার কেউ কেউ অভিজ্ঞতার আলোকে বলে বেড়ান- ক্যাডার হতে হলে সবকিছুই আপনাকে ছেড়ে দিতে হবে। সারাদিন চাকুরি আর টিউশনি করে বিসিএস হয় না। এটার জন্য মানসিক প্রস্তুতি এবং দীর্ঘ সময়ব্যাপী পড়াশুনার প্রয়োজন পড়ে। জীবনের সাথে সংগ্রাম করে সফল হওয়া যোদ্ধা অর্থাৎ বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন এমন পরিবারের বড় সন্তানের মুখেও শোনা গেছে---আপনি যাই করুন না কেন, সেটার উপর কোন প্রভাব পড়বে না। যদি আপনার ফোকাস ঠিক থাকে। আপনার ফোকাস ঠিক রেখে আপনি সারাদিন পরিবারে অর্থের যোগান দিতে চাকুরি অথবা টিউশনি করে রাতের সময়টুক এবং দুপুরের লাঞ্চ সময়টুকু কাজে লাগিয়েও আপনি ক্যাডার হতে পারবেন। এর জন্য প্রয়োজন আপনার ইচ্ছাশক্তি। যে কোন মূল্যে আপনাকে ক্যাডার হতেই হবে-এমন শক্তবাক্য আপনার মনে চিরস্থায়ীভাবে প্রবেশ করিয়ে নিন। সিলেবাসের অর্ন্তভুক্ত বিষয়সমূহের উপর যদি আপনার বেসিক জ্ঞান অনেক মজবুত থাকে, তাহলে আপনি সফল হতে পারবেন।
আর হুম, মূল কথাটা হল সবসময় পাগলারাই এগিয়ে থাকে। আপনি পাগলা হওয়ার চেষ্টা করুন। দেখবেন দৌঁড়ে আপনি পাগলাই এগিয়ে। পাগলাদের ভাষ্যমতে, সবসময় আর্থিক সমস্যা ফ্যাক্টর হয় না। সারাদিন অর্থ উপার্জনের জন্য খাটুন আর রাত হলে ক্যাডারের জন্য খাটুন। প্রতি বছরে কেবল রাতের বেলা কাজে লাগিয়ে ৩৬৫*৬=২১৯০ ঘন্টা যদি পড়াশুনা করেন, তাহলেও কিন্তু আপনাকে দিয়ে সম্ভব।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.