![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইদানিং রোহিঙ্গা ইস্য্যু নিয়ে বেশ কথাবার্তা (তোলাপাড় ও বলা যায়) চলছে এই উপমহাদেশ জুড়ে। অবশ্য এটা নতুন কোন ইস্যু নয়। দিন কয়েক পরপরই এটা বেশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। আবার থেমেও যায়। রোহিঙ্গা ইস্যুটা অনেক পুরাতন। মায়ানমার বলছে রোহিংগারা বাংগালি, তারা অনেক আগে কাজের খোঁজে এখানে (পূর্বের আরাকান রাজ্যই বর্তমান মায়ানমার) এসে রয়ে যায়। আর ফিরে যায় নি। সুতরাং তাদের বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে। কি অদ্ভুত তাদের যুক্তি! আমার প্রশ্ন হলো মায়ানমারের লোকেরা কাজের খোঁজে ইউরোপ বা আমেরিকা তে গিয়ে কি নাগরিকত্ব নাগরিকত্ব আশা করে না? আর যদি তাদের সন্তান সেখানে জন্ম নেয় তবে কি সেই সন্তান সেদেশের জাতীয়তা পায় না? আর বাংলাদেশ বলছে তারা রোহিঙ্গারা জন্মসূত্রে বর্মী... এই নিয়ে চলছে টানাপড়েন। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। আমি সেদিকে যাবনা কারন যে কেউ চাইলেই Googling করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারে। আজকের লেখার বিষয়টা ও সেটা নয়।
মায়ানমার তো রোহিংগাদের মানুষ হিসেবেই মানতে নারাজ। ইন্টারনেট এবং গনমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, যতভাবে অত্যাচার নিপিড়ন করা যায়, করা হচ্ছে, এমনকি পুড়িয়ে মেরে ফেলতেও দ্বিধা করছে না। ধর্ষণ আর কুপিয়ে বা লাঠি দিয়ে হত্যা করা তো নিত্যনৈমিত্তিক পদ্ধতি। তাছাড়া কাজ করিয়ে মজুরী না দেয়া এগুলাতো আছেই। তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হয়েছে অনেক আগেই মানুষ হিসেবে নুন্যতম যে অধিকার সেটাও দিতে নারাজ বর্তমান জান্তা সরকার। (অবশ্য তথাকথিত গনতন্ত্রকামী আং সাং সুকি ও যে খুব উদার তাও বুঝা যায় না।)। দীর্ঘদিন ধরে মায়ানমারে সামরিক শাসন (বলা উচিত অপশাসন) চলছে। যে কারনে গণমাধ্যমগুলোকে খুব সেন্সরশিপের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে (প্রকৃত খবর আরও ভয়াবহ হবে )। মায়ানমারের প্রায় শতভাগ লোক বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারি। প্রতিটা বৌদ্ধ জন্মান্তরে বিশ্বাস করে। অর্থাৎ তারা বিশ্বাস করে মানুষ মরে গেলে তার পাপ পুন্য অনুসারে বিভিন্ন প্রানীর আকৃতিতে পুনরায় জন্মলাভ করে। এভাবে একসময় প্রায়শ্চিত্ত করতে করতে সে আবার মানুষ হিসেবে জন্ম লাভ করে। সেই কারনে বৌদ্ধ ধর্মে পশু হত্যা মহাপাপ। তবে সম্ভবত মুসলমান হত্যা পাপ নয় । কিংবা অতীব পুন্যের কাজ। অবস্থা দৃষ্টে অন্তত তাই মনে হয়। আজ বিবিসির খবরে দেখলাম এক বুদ্ধ ভিখু আন্দোলন করছে সাগরে যেসব রোহিঙ্গা রা ভাসছে তারা নাকি মোটেই মিয়ান্মারের নাগরিক নয়... সাগরে ডুবে যাক কিংবা অনাহারে মারা যাক কোনভাবেই তাদের কে মায়ানমারে ফিরিয়ে আনা যাবে না ।
আমার কাছে যেটা মনে হয়, আমি ব্যাক্তিগতভাবে প্রচন্ডভাবে বিশ্বাস করি, রোহিঙ্গাদের প্রধান অপরাধি হচ্ছে তারা জন্মসুত্রে মুসলমান। আজ যদি তারা বুদ্ধিষ্ট হত তবে আমি নিশ্চিত এই সমস্যায় পড়তে হতনা। তারা মায়ানমারের যেকোনো নাগরিকের ন্যায় যাবতীয় সুবিধা ভোগ করতো। আর যদি খ্রিষ্টান হতো তবে তো কথাই ছিলো না। পশ্চিমা প্রভুদের ইশারায় তাদের সকল সুবিধা দিতে বাধ্য হতো নতুবা এতদিনে নতুন এক খ্রিস্টান দেশের ই জন্ম হয়ে যেতো। কিংবা নিদান পক্ষে হিন্দু হতো তবে হয়তো এতো খারাপ অবস্থা হতো না। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ও নিশ্চিত ভাবে তাদের গ্রহন করতো (ভোট ব্যাঙ্ক হতো কিনা? বর্তমানে ইসলামি দল গুলো যেরকম অনুরোধ করছে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে নিয়ে আসতে, তখন কি সে রকম করতো? নাকি তাদের সুরও অন্যরকম হতো? জানতে মুঞ্চায়)। পোড়া-কপালী রোহিঙ্গারা ! আর কিছু হতে পারলোনা কেবল মুসলমান ছাড়া। এটাই তাদের যত কাল হলো।
রোহিঙ্গাদের জন্য কিছু করা কি আসলেই সম্ভব না? জাতিসঙ্ঘ কিংবা OIC সদস্যভুক্ত দেশ গুলা যদি এক হয়ে সবাই রোহিঙ্গাদের নিজেদের দেশে ভাগ করে নেয় তবে ত সকল সমস্যাই মিটে যেতো। এমন অনেক মুসলমান দেশ আছে যেখানে জনবসতির ঘনত্ব খুব কম, তারা একাই সকল রোহিঙ্গাদের নিয়ে যেতে পারে। তা না করে কেবল বাংলাদেশের উপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে, কেনো? বাংলাদেশ নিজেরা অতি জনবহুল দেশ হয়েও তো ইতিমধ্যেই নিবন্ধিত ত্রিশ হাজারের (অনিবন্ধতের হিসাব নেই, লক্ষাধিক তো হবেই) অধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। তবে কি রোহিঙ্গা ইস্যু অন্য কোন কারনে ইচ্ছাকৃত ভাবেই দিনের পর দিন ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে? নোংরা এ ধরণীতে অসম্ভব না কিছুই।
©somewhere in net ltd.