![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I'm the real last survival in Savar Tragedy Rana Plaza Disaster. I survive 5 days or more than 100 hours by the grace of Almighty God.
আলহামদুলিল্লহা! মহান আল্লাহর দয়ায় বেঁচে আছি।
সত্যি কথা বললে তো কাফের ফতুয়া পেতে হবে! যা হোক... বেঁচে ফিরেছি,
মহান আল্লাহ্র খাছ দয়ায় ও আল্লাহ্র মহান বন্ধু সূফী সাম্রাট হযরত
মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী(মাঃআঃ) হুজুরের দয়া এবং সকল সাধারণ মানুষ ও ফায়ার
সার্ভিসের কর্মী, যারা নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে ধ্বসে পরা রানা প্লাজার ভবনের ধ্বংস স্তূপের
ভিতর প্রবেশ করে উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ করেছে। আমার সকল পরিচিত আশেকে রাসুল
ভাই ও বোন, সাভার আশেকে রাসুল পরিষদ এবং আমাদের এম জে এস কর্মী ভাইরা,
যারা আমার জন্য আল্লাহ্র মহান বন্ধুর নিকট সরাসরি আজিজি ও মানত করেছে এবং
উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ করেছে। আমার মা-বাবা, ভাই-বোন, সকল আত্মীয়-স্বজন
আমার জন্য মহান আল্লাহ্র নিকট দোয়া ও কান্নাকাটি করেছে। ওনাদের সকলের দোয়া ও
সকল শ্রেণীর উদ্ধার কর্মীদের পরিশ্রমে এবং আল্লাহ্র মহান বন্ধুর খাছ দয়ায় মহান আল্লাহ্
দয়া করে এই অধমকে জীবন ভিক্ষা দিয়েছেন। এই চরম বিপদে বাস্তবে দেখেছি মহান আল্লাহ্ কিভাবে দয়া করেন।
কারণ ২৪শে এপ্রিল বুধবার ২০১৩ খ্রিঃ সকাল ৯টার পূর্বে ৯তলা রানা প্লাজা ভবনটি ১০-১২ সেকেন্ডের
ভিতর ধ্বসে পরে। আমি ৩য় তলার নিউ ওয়েভ বটমস লিঃ গার্মেন্টসের সুইং সেকশনের এ ও বি লাইনের
মাঝখানে ছিলাম। মাত্র ৩-৫ সেকেন্ডের ভিতর চোখের পলকে ৪র্থ তলার ছাদ ৩য় তলার মেঝের সাথে মিশে যায়।
ঐ চরম মুহূর্তে ২টি শব্দ বলতে পেরেছি- "বাবাজান বাঁচান" বাবাজান বাবাজান।
আমি তো আর মহান আল্লাহ্কে চিনি না! তাই আল্লাহ্র মহান বন্ধুর উছিলা ধরে, আল্লাহ্র বন্ধুর মাধ্যমে
আল্লাহ্কে ডেকেছি। ঐ চরম মুহূর্তে একমাত্র মহান আল্লাহ্ই দয়া করেছেন। ৪র্থ তলার ছাদ ও ৩য় তলার
মেঝের মাঝে ভিম ও পিলারের মাত্র দেড় ফুট পরিমাণ ফাঁকা স্থানের ভিতর আটকে ছিলাম। কিছুক্ষণ পর
বুঝতে পারি ডান পায়ে প্রচণ্ড ব্যাথা, পা ফুলে গেছে। চারদিকে আর্তনাদ, আহাজারি, চিৎকার, কান্নাকাটি,
বাঁচার জন্য করুন স্বরে ডাকা চিৎকার......উফ! ভাঙ্গা টিউব, ভাঙ্গা সুইং মেশিন, ভাঙ্গা টেবিল, ভাঙ্গা টাইলস,
ফেব্রিক্স, ভাঙ্গা ছাদের সিমেন্ট ও ইটের গুড়া ও বড় বড় চাকা, প্রচণ্ড ধুলা ও অন্ধকার। মোবাইলের আলো দিয়ে
সবকিছু দেখলাম। মোবাইলের নেটওয়ার্ক নেই, খাবার পানি নেই, আলো নেই, বাতাস নেই, প্রচণ্ড গরম, খাবার নেই,
অক্সিজেনের স্বল্পতা, ঘুটঘুটে অন্ধকার, চারদিকে মরা লাশ, দুর্গন্ধ এই অবস্থায় ৫ দিন বা ১০০ ঘণ্টার বেশি বেঁচে
থাকা স্বাভাবিকভাবে সম্ভব না। দুর্ঘটনার দিন আমি নাস্তা না করে গার্মেন্টসে যাই, এমনকি ১ গ্লাস পানিও পান করে যাইনি।
পানির পিপাসা কি জিনিস ভালোই টের পেয়েছি। এই দীর্ঘ সময় পানি ছাড়া বেঁচে থাকা কি যে কষ্ট!
যা হোক.. মহান আল্লাহ্ দয়া করে ৩য় দিনে বা ৬০ ঘণ্টা পরে ছোট ছোট ৩টি বোতলে প্রায় ৭০০-৮০০ মিঃলিঃ খাবার পানি দিয়েছেন।
উদ্ধারকর্মী ভাইরা আমাকে খাবার পানি দেয় ৪র্থ দিনের শেষ রাতে বা ৯০ ঘণ্টা পরে। অনেক লম্বা ঘটনা...
এই পাঁচটি দিন আমার মহান মুর্শিদকে সুস্থ থাকতে দেইনি। মহান মুর্শিদের পুতঃপবিত্র হৃদয়ে মহান আল্লাহ্র আরশ।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঘোষণা দিয়েছিল যে, ৭২ ঘণ্টা পর ধ্বসে পরা রানা প্লাজা ভবনটি দ্রুত ভেঙ্গে ফেলবে কারণ
৪৮ ঘণ্টা পর জীবিত মানুষ পাওয়া যাবে না। সেই ঘোষণাও রদ করা হয়েছে। আমার শার্টের বুক পকেটে আল্লাহ্র
মহান বন্ধু সূফী সাম্রাট হযরত মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী(মাঃআঃ) হুজুরের ১টি ছবি মোবারক ছিল। ছবি মোবারকটি মানিব্যাগে ভরে,
আমি আমার ঘড়ি, মোবাইল, মানিব্যাগ উদ্ধারকর্মী ভাইদের হাতে দেই। সেই ছবিটি দেখে আমাকে যারা উদ্ধার করতে এসেছিল,
সকলের ভিতর আমাকে উদ্ধার করার প্রচণ্ড শারীরিক ও মানসিক শক্তি চলে আসে। অথচ এই ঘটনার ৩ ঘণ্টা পূর্বে তারাই
আমাকে ১টি হাতুরি ও শ্রেণি দিয়ে ফেলে রেখে যায়, ওরা বলে- "তুই হোল খুড়ে বের হয়ে আয়"। যা হোক.. শেষ পর্যন্ত আমাকে
৮তলা থেকে ৪র্থ তলার মোট ৫টি ছাদ কেটে ৩য় তলা থেকে ৫ দিন বা ১০০ ঘণ্টা পর ২৮শে এপ্রিল রবিবার ২০১৩ খ্রিঃ দুপুর সাড়ে
১২টার দিকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর সাভার সি এম এইচে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আই সি ইউতে আমাকে নিয়ে যাওয়ার
কিছুক্ষণ পর মহান মুর্শিদ দয়া করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমার সাথে দয়া করে কথা বলেন,
আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছেন, আমার শারীরিক খোঁজখবর নিয়েছেন।
এরপর ৩ মে শুক্রবার বাবে রহমতে যেয়ে সরাসরি মহান মুর্শিদকে প্রাণভরে কদমবুচি ও সালাম করি।
সুস্থ হওয়ার জন্য মহান মুর্শিদের মাধ্যমে মহান আল্লাহ্র দয়া কামনা করি। প্রাণভরে মহান মুর্শিদকে দেখি।
মহান মুর্শিদ দয়া করে আমার শারীরিক খোঁজখবর নিয়েছেন, ভালো চিকিৎসা ও চিকিৎসকের ব্যাবস্থা করে দিয়েছেন।
নিয়মিত প্রতি শুক্রবার বাবে রহমতে যেতাম। প্রায় প্রতি শুক্রবারই মহান মুর্শিদ দয়া করে এই অধমের শারীরিক
খোঁজখবর নিয়েছেন ও পরামর্শ দিয়েছেন। মহান মুর্শিদের আহলে বায়েত বা পরিবারবর্গ দয়া করে আমার শারীরিক
খোঁজখবর নিয়েছেন। এরপর পায়ের প্লাস্টার কাঁটার পর মোটামুটি সুস্থ হয়ে পুরা রমজান মাস মহান মুর্শিদের
সোহবতে থেকে প্রাণভরে মহান মুর্শিদকে দেখেছি, মহান মুর্শিদের হাত মোবারক ও কদম মোবারকের স্পর্শ
নিয়েছি, অনেক অজানা কথা জেনেছি, মহান মুর্শিদকে বুঝতে হলে সোহবতের বিকল্প কোন পথ নাই।
এই সোহবত ২০০২ সালে লাভ করলে, জীবনটা অনেক গোছানো ও সুন্দর হতো। মুখে মুখে গোলাম বলা সহজ,
বাস্তবে কাছে থেকে গোলামী করা অনেক কঠিন। কাছে থাকলে ভুল ও বেয়াদবি হয় বেশী, এর চেয়ে দূর থেকে
তরীকা করা সহজ। তাই ঈদের ২য় দিন মহান মুর্শিদকে বলে বিদায় নিয়ে সাভারে বাসায় চলে এসেছি।
©somewhere in net ltd.