![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নেই কোন বৃত্তান্ত, একই বৃত্তে ঘুরতে ঘুরতে হচ্ছি শ্রান্ত
ফাগুনের প্রথম দিন। ঢাবির হাকিম চত্বরে চারিদিকে পহেলা ফাগুনের আবির রাঙ্গা হলুদ দেখতে দেখতে হলুদ খিচুরি খাচ্ছি। হঠাত তাড়াতাড়ি শুরু হলো মারামারি। এক টোকাই এর সাথে কথা কাটাকাটির জের ধরে হাকিমের দোকানের এক ছেলে ঘুষি চালালো।টোকাইও তার কাধে ঝোলানো বস্তা ঘুরিয়ে পাল্টা জবাব দিতেই দোকানের ছেলেটি আরো তেতে গিয়ে টোকাইকে শুইয়ে পা দিয়ে টোকাই এর অভুক্ত পেট মারিয়ে ধরলো।টোকাই “ওমা” ‘ওমা বলে চেচিয়ে যাচ্ছে। আশেপাশের ফাগুন উদযাপনকারীদের তখনো সাড়া নেই। গান বাজছে, ছবি তোলা চলছে, সেই সাথে হচ্ছে কথা এবং হাসি বিনিময়। কয়েকজন এসে দোকানের ছেলেটিকে সরিয়ে নিলো। টোকাই কিশোর কোনমতে উঠে কাদতে কাঁদতে একের পর গালি বর্ষণ করতে শুরু করে। চারপাশের ইতসব তখঅনো চলছে, টোকাই এর গালিতে ফাগুনের এতটুকু ঘা লাগে নি।
প্রকৃতির সর্বত্র বসন্ত আসে কিন্তু শ্রেণীশাসিত সমাজে সর্বত্র বসন্ত আসে না, যেমনটি আসে নি সেই টোকাই এর জীবনে। বসন্ত কেন্দ্রীভুত থাকে ধনী এবং মধ্যবিত্তের কাছে। আমাদের দেশের বনেদীরা অবশ্য নিউ ইয়ার আর ভ্যালেন্টাইনেই বেশী মশগুল, বসন্ত পহেলা বৈশাখ এই ধরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নেতৃত্বে থাকে মধ্যবিত্তরা। প্রখ্যাত জার্মান দার্শনিক কার্ল মার্ক্স-এর ভাষায় এরা হলো পেটি বুর্জুয়া যদিও নিজের লেখালেখিতে মার্ক্স এদের পাত্তা দেয় নি। মার্ক্স এর আগ্রহ ছিলো অপর দুই প্রধান শ্রেণীতে- বুর্জুয়া (ধনী যারা উতপাদন এর নিয়ন্ত্রঙ্কারী) এবং প্রোলেতারিয়াত (দরিদ্র যারা নিজেদের শ্রম বিক্রী করে জীবিকা নির্বাহ করে)। সহজভাবে বলা যায়, আপনি একটি ফ্যাক্টরিতে ম্যানেজার পদে আছেন,তাহলে আপনি হলেন পেটি বুর্জুয়া, ফ্যাক্টরির মালিক হলো বুর্জুয়া আর ফ্যাক্টরির শ্রমিক হলো প্রোলেতারিয়াত। তাহলে মার্কসের এর মতো বুর্জুয়াদের ক্রমাগত শোষনের শিকার হয়ে প্রোলেতারিয়াতদের মাঝে শ্রেণিগত চেতনা (class consciousness) আবির্ভাবের মাধ্যমে সমাজে বিপ্লব (revolution) হবে এবং বুর্জুয়াদের সরিয়ে সমাজের উতপাদনের নিয়ন্ত্রন নিবে প্রোলেতারিয়াতগণ।মার্ক্স এর ভাষায় বুর্জুয়া শাসিত পুজিবাদি সমাজ ব্যাবস্থা বা Capitalism (যে অর্থনৈতিক ব্যাবস্থায় যে কেউ যত খুশী সম্পদের মালিক হতে পারে) ধ্বসে পড়বে এবং শ্রমিক শাসিত সমাজতন্ত্র বা Socialism-এর আবির্ভাব ঘটবে। এই ধারণার প্রেক্ষিতেই মার্ক্স এবং এঙ্গেলস ১৮৪৮ সালে লিখেছিলেন কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো। পরবর্তীতে কমিউনিস্ট শাসিত সোভিয়েত রাশিয়ার দিকে নজর দিলেই বোঝা যায় মার্ক্স যেভাবে সমাজের পরিবর্তন অনুমান করেছিলেন সেভাবে তা ঘটে নি। সোভিয়েত রাশিয়ার পতন এবং যুক্ত্ররাষ্ট্রের কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের মোড়কে পুজিবাদের ধারণা প্রায় বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠা পায় এবং বিশ্বায়নের এই যুগে তা এখনো বেশ বহাল তবিয়তেই টিকে আছে।
প্রশ্ন হলো মার্ক্স এর এতো বাক বাকুম এর পড়েও কেন সেই ইউটোপিয়ান রেভুলুশ্যান হলো না কিংবা কিছু কিছু দেশে হয়েই বা টিকলো না কেন? এই ব্যাখা দিতে গিয়ে মার্কসিস্টরা ব্যাবহার করেন হাঙ্গেরিয়ান দার্শনিক জর্জ লুকাত-এর রিইফিকেশন তত্ত্ব। ১৯২৩ সালে প্রকাশিত History and Class Consciousness বইতে লুকাত রিইফিকেশন সম্পর্কে লেখেন “Reefication is the necessary immediate reality of every person living in capitalist society. Reefication requires that a society should learn to satisfy all its needs in terms of commodity exchange”.
অর্থাৎ একটি সমাজে তখনই রিইফিকেশন প্রযোজ্য হবে যখন সমাজের সকল চাহিদা পূরণ হবে পন্য বিনিময়-এর মাধ্যমে। প্রশ্ন আসবে বসন্ত তো বাঙ্গালীর একটি সাংস্কৃতিক উতসব। এর সাথে রিইফিকেশন তত্ত্বে উল্লেখিত পন্য বিনিময় এর সম্পর্ক কি? মার্ক্সীয় দৃষ্টিতে বলা যেতে পারে এখানে সংস্কৃতি বা culture নিজেই পণ্য এবং সংস্কৃতিকে পণ্য হিসেবে ব্যাবহারের প্রধান নিয়ামক হলো মিডিয়া।প্রতি বছর বসন্ত নিয়ে প্রচার করে মিডিয়া একটি ফেটিসিজম তৈরী করেছে যে আপনাকে বাঙ্গালী হতে হলে বসন্তে অবশ্যই পাঞ্জাবী বা শাড়ি পরে ঘোরাঘুরি করতে হবে, আপনাকে ভান করে যেতে হবে যে আপনার মনে (মূলত পোশাল-আশাকে) বন্সন্ত এসেছে। নিজের অভিজ্ঞটা থেকে বলি। আজ থেকে চার-পাচ বছর আগে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকে ছিলাম তখন দেখতাম পহেলা ফাল্গুনে হলুদের আবরণে সেজে গুজে লোকজন আসতো বিকালের দিকে।সকাল থেকে যদিও চারুকলায় অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যেতো কিন্তু সেখানেও সেরকম ভীড় চোখে পড়তো না। আর এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ ভাগে এসে সদ্য সমাপ্ত পহেলা ফাল্গুনে দেখলাম সকাল থেকেই ক্যাম্পাস লোকে লোকারণ্য (কিংবা হলুদে হলদারণ্য)। অনেকেই হয়তো দেখে বলতে পারেন ভালোই তো, বাঙ্গালী আরো সংস্কৃতিমনা হয়েছে, প্রকৃ্তিপ্রেমী হয়েছে। এখানে আবার পালটা প্রশ্ন করা যেতে পারে এই বাঙ্গালী কোন বাঙ্গালী? এই বাঙ্গালী হলো ধনী এবং মধ্যবিত্ত বাঙ্গালী, এই বাঙ্গালী হলো রিইফাইড বাঙ্গালী।
আগেই বলেছিলাম Class consciousness এর কথা। মার্ক্সীয় দৃষ্টিতে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের জন্য প্রয়োজন Proletariate class consciousness যে চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে শ্রমিকেরা একত্রে বুঝতে পারবে তারা বুর্জুয়া দ্বারা নিষ্পেষিত (মার্কসীয় ভাষায় alienated) এবং বুর্জুয়াদের সাথে প্রলেতারিয়েতদের শ্রেণী সংঘাতের (class conflict) মাধ্যমে সমাজে বিপ্লব সাধিত হবে।যেমন Proletariate class consciousness এর কারণে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গার্মন্টস শ্রমিকেরা রাস্তায় নামে।কিন্তু তাদের আন্দোলন বেশীদিন স্থায় হয় না কারণ এখন শ্রমিকরা (Proletariate) রিইফিকেশন-এর শিকার। রিইফিকেশন হলো এমন এক পরিস্থিতি যেখানে Proletariate class consciousness অনুপস্থিত থাকে এবং এর বদলে যা থাকে তা হলো Bourgeoisie class consciousness এবং false consciousness। ভারতে যেমন ক্রিকেট এবং সিনেমা নিয়ে সকল শ্রেনীর নারী পুরুষ শিশুর মাতামাতি। সিনেমার সুপারস্টার আর ক্রিকেটাররা সেখানে দেবতার মর্যাদা পায়। আবার সিনেমা এবং ক্রিকেট (বিশেষ করে আইপিএল) উভয়েই বুর্জুয়াগোষ্ঠী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সেক্ষেত্রে ক্রেকেটীয় এবং সিনেমাজাত চেতনাকে বলা যেতে পারে Bourgeoisie class consciousness। আমাদের দেশে যার দাপট দেখা যায় তা হলো false consciousness। এ কথাটির সর্বপ্রথম ব্যাবহার করেন মার্ক্সের দোস্ত ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস। সাংস্কৃতি, ধর্ম এবং জাতীয়তাবাদ সবই এর আওতায় পড়ে। মানুষ সাংস্কৃতিমনা হলা অথবা ধর্মপ্রাণ হলে অথা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হলে মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আসতে পারে কিন্তু সমাজ কাঠামোতে কোন পরিবর্তন আসে না। উদাহরণসরূপ বলা যেতে পারে পহেলা ফাল্গুনের কথা। bourgeoisie consciousness থেকে মিডিয়ার দ্বারা আক্রান্ত হয়ে আমি আপনি false consciousness এ উদ্বুদ্ধ হয়ে সেখানে অংশ নিচ্ছি, আমাদের মনে হচ্ছে আমরা আগের চেয়ে আরো বেশী বাঙ্গালী কিন্তু আমাদের সমাজে অসমতাগুলো এখনো প্রক্রিয়াধীন (টোকাইকে মেরে ধরে শুরুতেই এর উদাহরণ দিয়ে রেখেছি)। যদিও ব্যাক্তিগতভাবে আমি পহেলা ফাল্গুনকে পুরোপরী নেতিবাচক দিক থেকে নিতে অনিচ্ছুক। এ সকল অনুষ্ঠানে ফুল বিক্রেতারা অএঙ্ক লাভবান হয়, মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য বাড়ে এবং সংস্কৃতি নতুন করে গতি পায়।
জার্মান সমাজবিজ্ঞানী হার্বাট মারকুজা তার “one dimensional man” বইতে রিইফিকেশনের আরেকটি মাধ্যম হিসেবে দায়ী করেছেন প্রযুক্তিকে। এই দৃষ্টান্ত আমি নিজেই দেখেছি পহেলা ফাল্গুনের দিন ক্যাম্পাসে। শাড়ী-পাঞ্জাবী আর গান-ঘোরাঘুরি সব ছাপিয়ে সবচেয়ে বেশী দাপট ছিলো ক্যামেরার ফ্ল্যাশের। কিছুক্ষন পর কিচ কিচ শব্দে ঝলসে উঠছে তা সর্বত্র অবিরাম। সূর্য যদি না উঠতো তাহলেও কোন ক্ষতি হতো না, ক্যামেরার ফ্ল্যাশের আলোতেই লোকজন নিশ্চিন্তে পথ চিনে নিতে পারতো।টিএসসি এর সামনে দিয়ে যাবার সময় হঠাত অনুভব হলো আমার জ্যাকেটে কি যেন বেজে আছে। দেখি জ্যাকেটের চেনে এক তরুনীর আচল আটকে আমার সাথে সাথে চলে আসছে। তরুণীর খেয়াল নেই, সে ফোনে উল্টোদিকে ঘুরে কথা বলছে তো বলছেই।তাড়াতাড়ি চেন থেকে আচল ছাড়িয়ে দ্রুতি হেটে চলে আসলাম। কোন অঘটন ঘটে নি। থ্যাঙ্কস টু রিইফিকেশন।
সন্ধ্যায় বাসায় ফেয়ারার জন্য শাহবাগে যাচ্ছি বাস ধরতে। আজিজ মার্কেটের সামনে এক ভদ্রলোক ফুটপাথে মটরসাইকেল তুলে দেয়ায় একটা জটলা সৃষ্টি হয়েছে। ফুটপাথে আবার হকাররা নানা জিনিষের পসরা সাজিয়েছে, আজ তাদের এক্সট্রা কিছু আয় করার মোক্ষম সুযোগ। মোটরসাইকেল আরোহী একটু একটু করে ঠেলে ঠেলে জটলার ভেতর দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছে আর ইচ্ছেমতো ফুটপাথের হকারদের গালি দিচ্ছে তারা ফুটপাথ দখল করে তার রাস্তা আটকেছে কেন। মোটরসাইকেল আরোহী কিন্তু নিজেও ফুটপাতে তার মোটরসাইকেল তুলে নিয়ম ভেঙ্গেছেন যদিও কেউ সে কথা তুললো না। হকারগুলো নীরবে গাল হজম করে গেলো। রিইফিকেশনের প্রভাবগুলো এরকম। এক্ষেত্রে পুজিবাদী সমাজের একাগ্রতায় শ্রেণিগত বৈষম্য বৃদ্ধি পায়, যে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেনীর সাহিত্য বিজ্ঞান এবং রাজনীতিতে ভূমিকা রাখার কথা ছিলো (যেমনটা ঘটেছিলো পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে) তারা ভোগে বশবর্তী হয়ে শ্রেনী শোষণে ধণিদের সাথে হাত মেলায়। এর ফলে আমরা দেখতে পাই সমাজের দূর্নীতির বৃদ্ধি, রাজনৈতিক সংকট, মৌলবাদের উত্থান এবং ভবিষ্যতে দেখবো হয়তো আরো অনেক কিছু। লুকাত রিইফেকশন সম্পর্কে বলে গেছেন, “Just as the capitalist system continuously produces and reporoduces itself economically on higher and higher levels, the structure of reeifcation progressively sinks more deeply…into consciousness of man”.
(লেখকের কথাঃআমি কমিউনিস্ট বা মার্কসিস্ট কেউই নই। সামুতে সাধারণত রম্য লিখি । সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে ভাবলাম নিজের লেখাপড়ার বিষয় থেকেও কিছু ব্যাপার সামুর ব্লগারদের সাথে শেয়ার করি)।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:১১
সাদরিল বলেছেন: ধন্যবাদ পরিবেশ বন্ধু
২| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৩৬
মামুন রশিদ বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষণ! ফাল্গুন উৎসবকে রিইফিকেশন তত্ত্বে ফেলে খুব সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন । তবে মার্কসের পাতিবুর্জুয়ার (পেটি বুর্জুয়া) সাথে আমাদের মধ্যবিত্তের আঙ্গিক এবং আচরণগত অনেক পার্থক্য আছে । কমিউনিস্ট মেনিফেস্টুতে প্রলেতারিয়েত আর বুর্জুয়ার কনফ্লিক্ট অবশ্যম্ভাবি হলেও আমাদের উপমহাদেশের বাস্তবতায় এর প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন । ব্রিটিশরা সিপাহি বিদ্রোহের পর উপমহাদেশে একটা নতুন শ্রেণীর উদ্ভব ঘটায় যারা মোটামোটি শিক্ষিত এবং শাসনকার্যে রাজশক্তির সহায়ক । মুলত সরকারি সুবিধাভোগী একটি করণিক শ্রেণীর উদ্ভাবন ঘটালেও খুব দ্রুত এই শ্রেণী রাষ্ট্র, সমাজ আর অর্থনীতির মুল ধারক হয়ে উঠে এক শতাব্দির মধ্যে । এটাই সেই মধ্যবিত্ত শ্রেণী যারা সমাজে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে এবং রাষ্ট্রে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে । পরবর্তিতে বাংলা অঞ্চলে এই শ্রেনীটি নতুন উপনিবেশকারি পাকিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়, নিজের সংস্কৃতি আর নিজেদের রাস্ট্রের অভ্যুদয় ঘটায় । মধ্যবিত্ত শ্রেনীর এরকম উদ্ভব এবং সমাজ ও রাস্ট্র পরিচালনার মুল ধারায় নেতৃত্ব দেয়া বিশ্বের অন্যান্য অংশে বিরল । তাই বাংগালী মধ্যবিত্ত শ্রেনী মার্কসের পাতিবুর্জুয়াদের মত বুর্জুয়াদের সহশক্তি হিসাবে কাজ করেনি, বরং প্রলেতরিয়েতের পাশে থেকেছে বারবার ।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:২৩
সাদরিল বলেছেন: আমাদের মধ্যবিত শ্রেনী মার্ক্স বর্ণিত পাতি বুর্জুয়া হতে অনেকাংশে আলাদা এ ব্যাপারে একমত। কিন্তু সাম্প্রতিক আধুনিকায়ন এবং শিল্পায়নের ফলে যে নতুন উঠতি মধ্যবিত্ত শ্রেণী ঢাকায় দেখা যাচ্ছে তারা আগেকার মধ্যবিতুদের মতো অত সচেতন নয়, মূলত ভোগ করা এবং সম্পদ আহরণ এসবই তাদের প্রধান লক্ষ্য। সেই প্রভাব আমদের সাহিত্যে দেখলেই পাওয়া যাবে। যেমন আগকেয়ার মধ্যবিত্ত সাহিত্যে দরিদ্র মানুষের কথা প্রচুর লেখা হতো এখনকার সাহিত্যে সমাজ নিয়ে তেমন প্রতিরোধ চোখে পড়ে না, আগে রাজনীতিতেও মধ্যবিত্তদের দেখা যেতো, এখনকার মধ্যবিত্তরা ততটা রাজনীতি সচেতন নয়, এখনকার মধ্যবিত্ত ছাত্র-ছাত্রীরা বরং মোবাইল ফেসবক এসবেই বেশী সময় দেয়। প্রযুক্তির কারণে পশ্চীমা ধাচের রিইফিকেশন আমাদের দেশেও একইভাবে প্রবাহিত হচ্ছে
৩| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৫৮
মামুন রশিদ বলেছেন: আরও একটা প্রণিধানযোগ্য ব্যাপার, আমাদের এখানে মুল প্রলেতরিয়াত শ্রেনীটি কিন্তু শ্রমিক নয়, বরং কৃষক । অষ্টাদশ শতকের শিল্প বিপ্লবের ধাক্কায় ইউরোপে শ্রমিক শ্রেনীর যে বিশাল অভ্যদয় ঘটেছিল, উপমহাদেশের বাস্তবতা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন । আর এখানে মধ্যবিত্ত শ্রেনীর উদ্ভব ও বিকাশ ঘটেছিল কৃষক শ্রেনী থেকেই । মধ্যবিত্ত শ্রেনী তার এই কৃষক পরিচিতি কখনোই ভুলে যায়নি, বরং এটা নিয়ে তারা গৌরব বোধ করত । সুতরাং বুর্জোয়া শ্রেনী থেকে মধ্যবিত্তরা কৃষক শ্রেনীর সাথেই বেশি নৈকট্য বোধ করত । আর তাই মহান মুক্তিযুদ্ধ সহ প্রতিটা আন্দোলন প্রতিবাদে কৃষক মধ্যবিত্ত শ্রেনীর পাশে দাঁড়িয়েছে । আর এই কারণে রিইফিকেশন থিউরি আমাদের অঞ্চলে উল্টো ভূমিকা পালন করেছে ।
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৫২
সাদরিল বলেছেন: মূলত গোটা এশিয়াতেই মার্ক্স এর আলোচনার ভিন্ন প্রবাহ আমরা দেখতে পাই। মার্ক্স বলেছিলো প্রলেতারিয়াতরা সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব করবে কিন্তু চীনে বিপ্লব হয়েছিলো কৃষক দ্বারা। আমাদের দেশেও প্রলেতারিয়াত হিসেবে কৃষকদের অর্ন্তভুক্ত করা যুক্তিযুক্ত। আর আপনার দুটি কমেন্ট এর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি নিজেও অনেক কিছু জানলাম।
৪| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:১৯
মাহাদি হাসান বলেছেন: অনেকদিন পরে খুব ভাল একটা লেখা পড়লাম। ধন্যবাদ
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:০২
সাদরিল বলেছেন: অনেকদিন পর ব্লগারদের মন্তব্য পেয়ে আমারও ভালো লাগলো।আপনাকেও ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য।
৫| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:২২
একজন ঘূণপোকা বলেছেন:
ভাল লেখা ম্যান।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:২১
সাদরিল বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ম্যান
৬| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৪১
ফরটি ইজ দা নিউ থারটি বলেছেন: আল্লাহকে স্মরণ করুন, এই দুনিয়া অল্প কয়দিনের
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:০৫
সাদরিল বলেছেন: সর্বশক্তিময় মহান আল্লাহকে সবসময়েই স্মরণ করি, ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
৭| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৩২
পাঠক১৯৭১ বলেছেন: টোকাই টোকাই মারামারি চলছে, এর নাম বাংলাদেশ।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২১
সাদরিল বলেছেন: না, টোকাই পেলেই মারা হচ্ছে, এরই নাম বাংলাদেশ
৮| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:০১
ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন: কিন্তু শোষিত হতে হতে একসময় শোষিত শ্রেণী সংগ্রাম শুরু করবে,এই জিনিসটা কেমন জানি অবিশ্বাস্য লাগে।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৩৩
সাদরিল বলেছেন: শুধু শোষিত হলেই যে শ্রেণী সংগ্রাম শুরু হবে এ কথাটি ঠিক নয়, এখানে আরো শর্ত আছে।সেসব নিয়ে আরেকদিন আলোচনা হবে।
৯| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৩২
রাবার বলেছেন: ভাল লিখছেন ++++
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:২১
সাদরিল বলেছেন: ধন্যবাদ
১০| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৪:০৭
কোলড বলেছেন: You appear to have a knack of explaining complicated things in a simple way. Good analysis. Person like you should be in academia.
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:০৪
সাদরিল বলেছেন: মন্তব্যটির জন্য অনেক ধন্যবাদ ব্রো। একাডেমিক গবেষণায় আগ্রহ আছে, তবে আমি এখনো ছাত্র। ভবিষ্যতে কোথায় থাকবো এখনো নির্ধারিত হয় নাই কিন্তু আপনাদের সাথে সর্বদা থাকার চেষ্টা করবো।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:০৪
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: ভালই লিখেছেন
চালিয়ে যান