নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ মানুষের জন্য |

নষ্ট অবতার

নষ্ট অবতার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমাজ,ধর্ম এবং রাজনীতি

২১ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৬

বহুকাল আগে মানবের জনমের শুরুতে কোনো ধর্ম ছিলো না, মানুষ সহজাত প্রবৃত্তির সাহায্য নিয়ে বেচে ছিলো । আপনার কি এই কথাটায় কোনো আপত্তি আছে ? যদি থাকে, যদি আপনি বলেন ইসলাম ছিলো, বা হিন্দু ছিলো, বা ইহুদি ছিলো.... আমি মেনে নিলাম । কিন্তু আমার এ কথাটা আপনি মেনে নেন, ধর্ম যেটা ছিলো বলে আপনি দাবি করছেন, তা হয়তো ছিলো, কিন্তু যারা তখন বেচে ছিলো, তারা এ বিষয়টা জানতো না ।



প্রতিকূল পরিবেশে জীবন যাপন শুরুর পরে মানুষ ধীরে ধীরে তার মস্তিস্ক ব্যবহার করতে শিখল । ঝড়, বন্যা , আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, বজ্রপাত, বন্য প্রাণী মানুষকে করলো ভীত । মানুষ বুঝতে শিখল এসব শক্তির কাছে তারা নিতান্তই অসহায় । তাই মানুষ এসব শক্তিকে পূজা করতে শুরু করলো । মানুষ ভাবলো বেচে থাকতে হলে এসব শক্তিকে প্রসন্ন করতে হবে । স্তুতিতে কখনো কাজ হতো, কখনো হতো না । মানুষ সূর্য্য চন্দ্র গ্রহ নক্ষত্রের পূজা করতে শিখলো ।



সকল প্রাচীন সভ্যতায় এর প্রমান মিলে । মেসোপটেমীয় সভ্যতায় এর নিদর্শন মেলে, নিদর্শন মেলে সিন্ধু সভ্যতায়, নিদর্শন মেলে মিসরীয় সভ্যতায় , নিদর্শন মেলে গ্রীক সভ্যতায় ।

আর এভাবেই ধর্মের বীজ বপন সম্পন্ন হয় ।



মানুষ দলভুক্ত প্রাণী । সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ দলগতভাবে থাকতে পছন্দ করে । দলগতভাবে শিকারে যেত । শিকারলব্ধ খাবারের বন্টন নিয়ে যে দ্বন্দের সৃষ্টি তা উপশমের জন্যই মানুষ একে অন্যকে দৈবশক্তির ভয় দেখানো শুরু করে । মানুষ সমাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সৃষ্টি করে একের পর এক ধর্মীয় মূল্যবোধ । আর এভাবেই মানুষ হয়ে উঠে সভ্য ।



সামাজিক জীবনে ধর্মের প্রয়োজনীয়তা ছিল অনস্বীকার্য । ধর্মীয় অনুশাসন যেসব সমাজে ছিল সেগুলো সেসব সমাজের মানুষের পশু প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রন করেছে ।



রাজ্য পরিচালনার নীতিগুলো যেসব সমাজে ধর্মীয় মূল্যবোধ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, সে সব সমাজ আর যাই হোক, নষ্ট সমাজে পরিনত হয় নি বলে আমার বিশ্বাস । সেসব সমাজ হয়েছে আরো সুশৃঙ্খল । তবে আমি বিশ্বাস করি, সমাজ পরিবর্তনের সাথে সাথে ধর্মীয় বিধান গুলোর কিছু বিধান এমন ভাবে পরিবর্তত হওয়া দরকার যাতে ধর্ম সমাজকে ধারণ করতে পারে । পরিবর্তনশীল সমাজের সাথে ধর্মের সংঘর্ষ হলে মানুষ অধার্মিক হওয়ার প্ররোচনা পাবে । যেমন ধরুন,ইসলামে ছবি আঁকা নিষেধ, কোনো ছবি ঘরে টানিয়ে রাখা নিষেধ । কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভালো মুসলমানরা ও কিন্তু টেলিভিশন দেখছে (নিশ্চয়ই যা কিছু শালীন)। এখন ধর্মের দোহাই দিয়ে সমাজে যদি এমন ধারণা প্রতিষ্ঠা করা হয় যে , টেলিভিশন দেখা হারাম, তখন সমাজের অনেক মানুষের কাছেই ধর্মের এই বিধানের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে । বিধান পরিবর্তন হয়ে এমন হওয়া উচিত যাতে সমাজের জন্য তা যথোপযুক্ত হয় । সেটা অলিখিত ও হতে পারে, আবার লিখিত ও হতে পারে ।



সত্য কথা বলতে গেলে, আমি বিশ্বাস করি সকল ধর্মীয় মূল্যবোধ ই সামাজিক মূল্যবোধ । তাই কেউ যদি নাস্তিক ও হয়ে থাকেন, তবু সমাজের শৃঙ্খলার স্বার্থে অন্তঃত সমাজকে প্রভাবিত করে, নৈতিকতাকে প্রভাবিত করে এমন সব অনুশাসন গুলো মেনে চলা উচিত । যেমন, একজন হিন্দু, সে মন্দিরে না যাক, কিন্তু অন্য ধর্মীয় অনুশাসনগুলো যেমন মিথ্যা না বলা, কারো ক্ষতি না করা , মানুষের উপকার করা- এসব পালন করা উচিত



আর আমার বিশ্বাস মানব সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে মানব মনের অগ্রগতি এমন ভাবে হবে যে, মানুষ তখন ধর্মের কথা ভেবে নয়, নিজের অজান্তেই নিজের বিবেচনায় সামাজিক শিক্ষায় ই এসব অনুশাসন পালন করবে । মানুষের জয় হবেই । না হলে আজ থেকে ৫০০ বছর পরে পৃথিবীর পরিনতি হবে ভয়াবহ ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.