নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গুছানো-অগুছানো অনুভূতি

সাগর তামিম

হাওয়ায় ভাসা ভাবনাগুলো লেখা-বলা হয়ে উঠে না। যতটুকু ধরা দেয়া, তা কেবলি আবছা অন্ধকারের মতো...

সাগর তামিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

উড়োচিঠি: মায়াপরি (পর্ব-দুই)

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৮

অতি প্রিয়জন মায়াপরি,
অনেক দিন পর তোমায় লিখছি। সময় হলে পুরোটি পড়বে। কেমন জানি ভয়, অজানা শংকা আমাকে বিভোর করে রাখে। থাক, প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে মুখ্য বিষয় আসি।
ইদানিং একটি বিষয় বেশ পরিস্কার হয়ে গেছে । জানো, আজ সারাদিন বাসায় কাটালাম। সম্পূর্ণ একা একা। বিছানায় গড়াগড়ি, টেবিলে উঠ-বস করা, পুরোনো কিছু বই ঘেটে-ঘুটে পছন্দের বই পড়া, আবার বিছানায়…। বেশ অসহ্য যন্ত্রনায় কাটছিল। এর এক মুহুতে মনে হলো, মাথার চুলগুলো বেশ এলোমেলো হয়ে গেছে। মাথা ভার হয়ে আসছে। মায়াপরি, মাথায় চুল বেশি হলে কি মস্তিস্ক সক্রিয় থাকে না ? বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তোমার কি জানা আছে? ও তুমি তো রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রী। কি করে সঠিক ব্যাখ্যা দিবে। তবে আমার এখনো কানে ভাসে, তুমি একদিন আমাকে বেশ গুছিয়ে গুছিয়ে মানুষের ক্রিয়া-কলাপে মস্তিস্কের ব্যাখ্যা দিয়েছিলে। তখন মনে হয়েছিল, তুমি সব বিষয়ই পারদর্শি।
এবার পরিস্কারের বিষয়টি বলি, যখন মস্তিস্ক একেবারে জ্যাম হয়ে আসছিল। তখন ড্রয়ার থেকে দুটি ঘুমের ওষুধ খেয়েছি। তাও দুই কোম্পানির ‘সেডিল’ আর ‘সিডেকসিন’। এরপরেও ঘুম আসেনি। বিশ্বাস হচ্ছে না তোমার, আমারও বিশ্বাস হচ্ছিল না। কি করে সম্ভব? আমার পরিচিত সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাজিব আমদেককে ফোন দিলাম। পুরো ঘটনাটি বললাম। শুনে তিনিও অবাগ হলেন। আমাকে অনেক ‘ভালো ভালো’ কথা শুনালেন। কিন্তু এরকম কেন ? ঘুম কি আমার পৃথিবী থেকে উদায় হয়ে গেল। তুমি তো মাঝে মাঝে ঘুমের ওষুধ খেতে। তারপর ঘুমের ঘোরে কাত হয়ে পড়তে। আমি তোমার ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কথা জানলে, পরের দিন দুপুরে ফোন দিতাম। তখনও মনে হতো, তুমি ঘুমের ঘোরে। কি করে এতো ঘুম আসছিল তোমার। এখন আমার ঘুম নেই কেন? তুমি কি কোন আলোচনা রাখতে পারবে এই বিষয়ে?
এই সব ভেবে আমার মনে হয়েছে, আমি আসলেই অন্যরকম মানুষ। কিছুটা অন্যগ্রহের মানুষ। পৃথিবী ছাড়া অন্য গ্রহে কি মানুষ বাস করে বা মানুষের মতো প্রাণী কি স্বাভাবিক ভাবে বেচে থাকে। আমার জানা নেই। এসব সহজ প্রশ্নের উত্তরও ইদানিং খুজতে পারছি না। বিভু, আজ তোমায় সত্যি করে বলি, মানুষের সব কিছুই তার ভালো-মন্দের উপর নিভর করে। আমি নিজেকে আবিস্কার করেছি, আমার পৃথিবী এখন পুরো মন্দের মধ্যে আছে। বিষয়টি পরিস্কার।
ও শোন, ডা. রাজিব বললো, আমার কথা বলার সময় না কি জড়িয়ে যায়। কন্ঠ না কি আগের মতো পরিস্কার নেই। ফিসফিস হয়ে আসে অনেক শব্দ। এমনটি তো আমি ছিলাম না। বেশ ঝাঝালো কন্ঠ আর কিছুটা শুদ্ধ উচ্চারণ ছিল আমার প্রতিটি শব্দে, বাক্যে। ডা. রাজিবের এই কথা শোনার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন থেকে কম কথা বলবো। না হলে, কি বলতে গিয়ে কি বলে ফেলি। তাছাড়া তোমার সাথে তো আমার কথাই কমে গেছে। কম বললে ভুল হবে, হয় না বললেই চলে। যাও হয়, পুরোটাই বিষন্ন আর জঞ্জালময়। এই বিশ্রী পরিস্থিতি আর অপরিপাক্কতা থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখাই ভালো। ঠিক তো ?
মায়াপরি, পরশু দিন রাতে অথাৎ রাত ৪টার পরে একটু তন্দ্রা আসছিল, হঠাৎ মনে হলো, তুমি ফোন করছো। তন্দ্রার ভিতরেই ফোন রিসিভ করলাম। কথা বললাম, এক সময় মনে হলো কেউ ফোন দেয়নি। উফ…সেকি যন্ত্রণার মুর্হুত। পরে আর ঘুম হলো না। আসলে কি জানো, মানুষের সব কিছুই তার চিন্তার প্রতিফলনে তৈরি হয়। তুমি যে চিন্তা করছো, হয় তো প্রকৃতি তোমায় তার মুখোমুখি করবে। সেটি হয় বাস্তবে, না হয় তন্দ্রার মধ্যে। স্বপ্নের মধ্যে নয়, স্বপ্ন হতে হলে গাঢ় ঘুম হতে হয়। নির্ভেজাল ঘুম। এই মুর্হুতে আমার সেই নির্ভেজাল গাঢ় ঘুম নেই।
থাক, এখন আর নয়। আগের চেয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করো। ভালো থাকার চেষ্টা করলেই না কি ভালো থাকা জায় না। তারপরেও চেষ্টাটুকু করো।

ইতি, শুকিয়ে যাওয়া নদীর মতো একজন ‘আবির রায়হান’।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৪

সাগর তামিম বলেছেন: ইচ্ছে হলে আপনিও দেখতে পারেন, খুব বেশি বিরক্তি হবে না বরং একটু পোড়া গন্ধে নাক উকুচুকু করবে...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.