![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনের কথা অপরকে বলতে ভাললাগ।কবিতা ভালবাসি। একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।
আমার ব্লগে হাতে খড়ি ২০০৯ সালে প্রথম আলো ব্লগের মাধ্যমে। তখন পর্যন্ত শুধু “ব্লগ” শব্দটি শুধু শুনছি। কিন্তু চেখে দেখা হয়নি।
প্রথম আলো পত্রিকায় আমি নিবন্ধন করেছিলাম মন্তব্য করার জন্য। প্রথমআলো পত্রিকার কোনায় একটি বিজ্ঞাপন দেখে এই ব্লগের নাম জানতে পারি। আগ্রহ নিয়ে একটা অ্যাকাউন্ট খুলে ফেললাম। এর পর শুরু হল ব্লগিং যাত্রা।
প্রথম আলো ব্লগ থেকে সামু ব্লগ নামে একটা ব্লগ আছে সেটা জানতে পারি। এটা বাংলাদেশের প্রথম ব্লগ সাইট জানার সাথে সাথে সামুতে আসতে দেরি করিনি। সামুতে আসার পর প্রথম আলো ব্লগ (সেই সময়) আমার কাছে পানসে লাগা শুরু করে।
সামু ব্লগে তখন মুক্তি যুদ্ধ বিষয়ক বেশ সুন্দর সুন্দর পোস্ট আসতো। আমি নিয়মিত কয়েকদিন সেগুলো পড়েই ব্লগের ফ্যান হয়ে গেলাম। তাছাড়া বিভিন্ন ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে লেখাগুলো কম আকর্ষণীয় ছিল না।
সামুতে নিয়মিত হওয়ার পর ওটাই ছিল একমাত্র ব্লগ। বাকীগুলোতে আর যাওয়া হত না।
সামুতে যখন দিনের একটা দীর্ঘ সময় পার করছি মজা করে টেকি ব্লগ, উবুন্টু/লিনাক্স বিষয়ক ব্লগ, মুক্তি যুদ্ধের ব্লগ পড়ছি তখন থেকেই কিছু কিছু মানুষের অসভ্যতায় এবং সামু ব্লগের একপেশে আচরণের কারনে ব্লগের প্রতি আমি আসক্তি হারিয়ে ফেলি।
সেই অসভ্যতা আর কিছুই নয়, ইসলামের সমালোচনা করার নামে মুহাম্মদ (সা এবং আল্লাহকে নিয়ে বাজে মন্তব্য এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি।
এই ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আমরা অনেকেই অনেকবার ব্লগ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়নি। যেন তারা ধরা ছোয়ার বাইরে।
ঘটনা প্রবাহে আজ কিছু কিছু ব্লগারকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এটি বেশ ভাল উদ্যোগ। যদিও অনেকেই একে আই ওয়াশ বলছে। কিন্তু কথা হল ব্লগে ইসলামের বিরুদ্ধে লিখলেই কি তাকে ধরতে হবে?
কারো যদি ইসলামের কোন বিষয় নিয়ে সন্দেহ থাকে কিংবা কেউ যদি কোন কিছুকে অযৌক্তিক মনে করে তাহলে কি সে কিছুই বলতে পারবে না? যদি না বলে তাহলে সন্দেহ যাবে কি করে? যে ব্যক্তি যুক্ত দিয়ে বোঝাবে ইসলামের অনেক আচরণের কোন মানে নেই কিংবা সেগুলো অযৌক্তিক তাকেও কি আমরা খারাপ বলবো?
আমরা যারা ইসলাম পালন করি এবং মনে প্রাণে বিশ্বাস করি ইসলাম এমন একটি জীবন ব্যবস্থা যা মানুষের সকল সমস্যার সমাধান দিতে পারে তাদের ইসলামের প্রতি
অনুভূতি প্রবল। খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। যাকে ভালবাসি তার প্রতি অনুভূতি প্রবল থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু এটা আমাদের বোঝা উচিত আমি ভালবাসি বলে অন্যও ভালবাসবে এমনটা হওয়ার কথা না। আর আমি যাকে/যেটিকে ভালবাসি তার দোষ-ত্রুটি নিয়ে কথা বা আলোচনা সমালোচনা করা যাবে না এমনটা চিন্তা করা ঠিক না। আলোচনা সমালোচনার জবাব দেওয়ার উচিত যুক্তি দিয়ে।
যদি এমন হয় তর্কই করা যাবে না, বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না তাহলে ইসলামের দাওয়াত দিব কি করে? আমি যদি অমুসলিম কাউকে দাওয়াত দেই তাহলে সে এক কথাতেই আমার কথা মেনে নিবে এটা হতেই পারে না। সে প্রশ্ন করবে, সে সমালোনা করবে, সে খুচা দিবে এটাই স্বাভাবিক। আমাদের শুধু ধৈর্য ধরে উত্তর দিতে হবে। তাকে বোঝাতে হবে। তাহলেও তাকে মুসলিম বানানো সম্ভব। অন্যথায় সে কিছুই শুনতে চাবে না। তাই ইসলাম নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করা যাবে না এমনটা চিন্তা করা উচিত না।
কিন্তু আলোচনা বা সমালোচনা মানে কি?
টিভিতে আমরা বিতর্ক দেখি। সেখানে যুক্তি দিয়ে, তথ্য উপাত্ত দিয়ে, কথার পিঠে কথা দিয়ে নিজের বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। সেখানে কি গালি দেওয়া হয়? আলোচনা কিংবা সমালোচনার মানে কি গালাগালি করা?
আমরা যদি মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা চিন্তা করে সবাইকে সব কিছু নিয়ে কথা বলার সুযোগ দেই তাহলে অন্যরা কেন আমাদের অনুভূতির কথা মাথায় রাখবে না। গালি দেওয়া কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা? যদি তাই মনে করেন তাহলে আমার কিছু বলার নেই। আর যদি না হয় তবে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মুক্তির দাবি করার কোন সুযোগ নেই। তাদের শাস্তি হওয়াই উচিত। শুধু যারা ইসলামের বিরুদ্ধে বলে গালাগালি করেছে তাদেরই নয়। যারা ইসলামের পক্ষে বলতে গিয়ে গালাগালি করেছে তাদেরও বিচার করা উচিত। গালি এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা কখনোই এক হতে পারে না।
তাই ইসলামের সমালোচনা করা যাবে না এটা যেমন ঠিক নয়, ঠিক তেমনি মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে গালিবাজদের মুক্ত করার আন্দোলনের কোন যুক্তিও দেখি না। বরং এই আন্দোলন ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান।
©somewhere in net ltd.