![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার স্বপ্নগুলো ধূসর হলেও বাস্তবায়নগুলো রঙিন করব ।
আজ নীলার গায়ে হলুদ। আজকে তার মুখে হাসি থাকার কথা অথচ তার চোখে আজ পানি। যার সাথে তার বিয়ে হচ্ছে তাকে তার পছন্দ না যাকে তার পছন্দ তাকে আবার তার বাবা-মায়ের পছন্দ না। তাই বাবা মায়ের কথা মতই বিয়ে করতে হবে। যার সাথে নীলার বিয়ে হচ্ছে তার বয়স ৩০, একটা প্রাইভেট ফার্মে জব করে। বেতন ভালই নাম তার নাহিদ।
নাহিদের , নীলাকে খুব পছন্দ কিন্তু নীলার মোটেই পছন্দ না নাহিদকে। নীলা যাকে পছন্দ করে তার নাম দুরন্ত। নীলার সাথে একই ভার্সিটিতে পরে ৩য় বর্ষে। সেই ১ম বর্ষ থেকে তাদের মধ্যে সম্পর্ক। অথচ নীলা এখনও দুরন্তকে নিয়ে সন্দিহান যে দুরন্ত তাকে ভালবাসে কিনা। ৩৬৫ দিনের মধ্যে দেখা যায় ৩৬৪ দিনই তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকে তবুও নীলা তাকে প্রচণ্ড ভালবাসে। অবশ্য দুরন্তও তাকে ভালবাসে। সেই ১ম দিনের কথা দুরন্ত ভার্সিটিতে নীলাকে দেখেছিল বদরুজ্জামান স্যার এর ফিজিক্স ক্লাসে। আড়চোখে তাকান, তারপর প্রেমে পরা, দুজন দুজনকে চেনা তারপর প্রেম শুরু। সেই থেকে এখনও আছে কিন্তু নীলার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।
আজ নীলার বাসর রাত। সে পাথরের মত খাটের এক কোনে বসে আছে। কিছুক্ষণ পরে নাহিদ এসে ঘরে ঢুকল। নীলার দিকে চোখ পরতেই দেখে মেয়েটা চুপ করে খাটের এক কোনে বসে আছে। নাহিদ অবশ্য জানে এ বিয়েতে নীলার মত ছিল না। নীলা যে অন্য একটা ছেলেকে ভালবাসে একথাও সে জানে। তবুও সে নীলাকে বিয়ে করেছে কোন এক মায়ার টানে। আস্তে করে সে নীলার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। দাঁড়াতেই নীলা বলে উঠলো দাঁড়িয়ে আছেন কেন নতুন বউয়ের ঘোমটা তুলে তাকে সোহাগ করেন। এমন কথায় হকচকিয়ে যায় নাহিদ। তাই একটু দূরে সরে গিয়ে খাটের এক কোনে বসে পরে। আবারও নীলা বলে ওঠে দূরে গিয়ে বসলেন কেন কাছে আসেন সোহাগ করেন। আজকে তো আপনার বাসর রাত বউকে সোহাগ করবেন না। এই ধরনের কথার জন্য নাহিদ একদম এ প্রস্তুত না। তাই সে বলল, আচ্ছা তমার যদি সমস্যা হয় তাহলে তুমি খাটে ঘুমাও আমি নিচে ঘুমাচ্ছি। এই বলে নাহিদ বালিশটা নিয়ে নিচে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই এক চিৎকার দিয়ে নীলা বলল স্বর্ণা এক কাপ চা দিয়ে যাস তো । পরক্ষেনেই মনে পরল এটা তার বাসা না এটা তার শ্বশুর বাড়ি। নিচে তাকিয়ে দেখে নাহিদ নেই। ফ্রেশ হয়ে সে ঘর থেকে বের হয়েই দেখে একটা পিচ্চি ছেলে ফোকলা দাত বের করে হাসছে। সে বলল , “আফা স্যার আফনারে ঘুম থেইক্কা উঠার পরে চা দিবার কইছে। আফনারে কি চা দিমু”। নীলা বলল, যাও নিয়ে আস। কিছুক্ষন পরেই পিচ্চিটা চা নিয়ে আসল। চলে যাবার সময় নীলা ডাক দিল এই পিচ্চি এদিক আস, তোমার সাথে গল্প করি। তোমার নাম কি? পিচ্চিটা বলল তার নাম রহিম। তার মা এই বাড়িতে কাজ করে। সারাদিন রহিম এর সাথে গল্প করে সময় কাটল নীলার। সে যতটা ভেবেছিল ততটা খারাপ তার লাগে নাই এই বিশাল বাড়িতে। অবশ্য একটু একাকি লেগেছিল সে ছাড়া এই বাড়িতে আর তেমন কেউ নাই। যারা আছে তারা সবাই এই বাড়িতে কাজ করে। অবশ্য রহিম ছেলেটা খুব চটপটে আর খুব মজার মজার কথা বলে। ওর সাথেই সময় কেটে গেছে।
এখন সময় বিকাল ৪.৩০ টা। নাহিদের অফিস ছুটি হয় বিকাল ৪ টায়। সে এখন বাসে, বাসায় যাচ্ছে। আজ তার মনটা বিষণ্ণতায় ছেয়ে আছে। সে নীলাকে এত ভালবেসে ফেলেছে অথচ নীলা তাকে সহ্য করতে পারে না। কার জন্য সে বাসায় ফিরে যাবে তবুও তাকে ফিরতে হবে কারন সে নীলাকে ভালবাসে।
এখন সন্ধ্যা ৬ টা বাজে। কলিংবেলের শব্দ। দরজা খুলে ফোকলা দাঁত বের করে হাসি দিল রহিম। নাহিদ তার চুলে হাত বুলিয়ে ভিতরে ঢুকল। তারপর নীলার রুমের সামনে গিয়ে কিচ্ছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে আসতে করে ভিতরে ঢুকে দেখল নীলা কাঁদছে। সে কাছে গিয়ে নীলার মাথায় হাত রেখে বলল, “ কি হয়েছে নীলা, কাঁদছ কেন”। চমকে পিছনে ফিরে তাকাল নীলা। প্রায় চিৎকার করে বলল, “আপনি আমার গায়ে হাত দিছেন কেন, আপনার মতলবটা কি? আপনি আমার সামনে থেকে জান। আর কখনও আমার সামনে আসবেন না। যান, চলে যান”। এই কথাগুলোর জন্য একদমই প্রস্তুত ছিল না নাহিদ। সে প্রচণ্ড রকমের কষ্ট পেল। “ আসলে আমি তোমাকে বলতে চেয়েছিলাম, আমাদের বাগানটা অনেক সুন্দর, একসাথে বসে চা খেলে তোমার ভাল লাগবে”। নাহিদ, নীলাকে বলল। “ আপনি অন্য কোন মেয়েকে নিয়ে এসে তার সাথে বসে চা খান আমার সাথে কেন। যান আমার চোখের সামনে থেকে”। প্রায় ক্ষেপে উঠে কথাগুলো বলল নীলা। কথাগুলো শোনার পর প্রচণ্ড রকমের কষ্ট নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল নাহিদ।
কিছুক্ষন পর গোসল সেরে এক কাপ চা, আর দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বাগানে বসে আছে নাহিদ। নাহিদকে দেখে নীলার খারাপ লাগলো। নাহিদ তো নীলাকে শুধু বাগানে বসার কথা বলতে এসেছিল সে খামাখা তাকে কত খারাপ কথাই না বলল। আর নাহিদ তাকে তো তাকে বকা দিতেই পারত কিন্তু সে কিছুই বলে নাই। শুধু শুনে গেছে।
রাতে নীলা দুরন্তকে ফোন দিল। সে দুরন্তকে বলল, “ আমি এখনও তোমাকেই ভালবাসি আর এখনও তোমাকেই চাই”। “ কিন্তু আমি তোমাকে চাই না নীলা। আমি হইত একসময় তোমাকে ভালবাসতাম কিন্তু এখন আর বাসি না। তুমি অন্যের সংসারে সুখি হও আমাকে আর বিরক্ত করবে না”। দুরন্তের কঠিন জবাব। “ কিন্তু তুমি তো একসময় আমাকে নিয়ে সপ্ন দেখতে, আমাকে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে আমাকে কখনও ছেড়ে যাবে না তাহলে কি তুমি আমকে ভালবাসতে না?” নীলার প্রশ্ন। “ তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড ছিলে ঠিকই কিন্তু তোমাকে মন থেকে আমি কখনও ভালবাসতে পেরেছি কিনা জানি না, নীলা। আর তুমি আমাকে কখনও ফোন দিবে না”। এই বলে ফোন কেটে দিল দুরন্ত। নীলা বোকার মত চেয়ে আছে। তার কিছুই করার নেই। “ আফা খাইতে চলেন, স্যার ডাকে”। রহিমের কণ্ঠ শুনে পিছনে তাকাল নীলা আর মন্ত্রমুগ্ধের মত রহিমের পিছনে যেতে লাগলো। এই অন্যমনস্কতার কারনে হঠাৎ সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পা ফসকে গেল নীলার। গড়াতে গড়াতে নিচে পরে গেল। চিৎকার দিয়ে নাহিদ ছুটে এসে দেখে নীলা অজ্ঞান হয়ে গেছে। তক্ষুনি নীলাকে নিয়ে ছুটল হসপিটালে।
এখন রাত প্রায় ৩ টা। নাহিদ নীলার পাশে বসে আছে। নাহিদের একটা হাত নীলার কপালে আর একটা হাত দিয়ে সে নীলার হাত শক্ত করে ধরে আছে। সিঁড়ি থেকে নিছে পরে গিয়ে মাথা অনেকখানি কেটে গেছে। ডাক্তার চিকিৎসা করে গেছেন। তারপর থেকে নাহিদ নীলার পাশে জেগে বসে আছে। কিছুক্ষন পর নীলার জ্ঞান ফিরল। আর নাহিদ ভয় পেয়ে হাত সরিয়ে নিল। অপ্রস্তুত অবস্থায় নীলার দিকে তাকিয়ে আছে। নীলা আস্তে আস্তে বলল, “ হাতটা সরিয়ে নিলে কেন? তুমি আমার হাতটা সারাজীবন ধরে রাখবে নাহিদ? সবসময় আমার পাশে থাকবে তো?” “হুম নীলা আমি তো সারাজীবন তোমার পাশেই থাকতে চাই”। বলে আলতো করে নীলার কপালে চুমু খেল নাহিদ। ছ
২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:৩৭
শূন্য সাগর বলেছেন: হুম অবশ্যই
৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৬
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: দুরন্ত এরকম করল কেন ? কষ্ট থেকে ?
ঈদের শুভেচ্ছা রইল
৪| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:৫৪
শূন্য সাগর বলেছেন: ষ্ট এবং ভালবাসা দুটো থেকেই।
আপ্নাকেও ঈদের শুভেচ্ছা।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:০০
নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: আরো ভাল হওয়া চাই............
পেরনা রেখে গেলাম