নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মর্ম কথা আমি বাংলাদেশী। আওয়ামীলীগ আমার প্রাণের সংগঠন।

সাঈদ হাসান আকাশ

সাঈদ হাসান আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কন্যারাশি

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:২২

নাটক

কন্যারাশি

রচনা- সাঈদ হাসান আকাশ

০১৭১৬৬৭৮৪৪৮



চরিত্রে-

১। সুজন-ভার্সিটির ছাত্র

২। আরিফ-সুজনের বন্ধূ

৩। হায়দার সাহেব- সুজনের বাবা

৪। সুমনা বেগম- সুজনের মা

৫। কাঞ্চি- ভার্সিটির ছাত্রী

৬। রেখা- কাঞ্চির বান্ধবী

৭। রাসেল- রেখা/কাঞ্চির বন্ধু

৮। টুম্পা-রাসেলের বান্ধবী

৯। যুথী- ভার্সিটির ছাত্রী



গল্প

বাপ-বেটা-মা তিনজনরই রাশি কন্যা। সুজন হায়দার-সুমনা দম্পত্তির একমাত্র ছেলে। ভার্সিটিতে পড়ে। কন্যারাশির জাতক সুজন বরাবরই মেয়েদের দেখলে কেমন যেন হয়ে যায়। বন্ধুরাও তাকে নিয়ে মজা করে। সুজন যাকে দেখে তাকেই পছন্দ করে। কাজ বাদ দিয়ে মেয়েদের পিছু হাটে। ভার্সিটির বন্ধু আরিফ একদিন কি যেন ভেবে ক্যাম্পাসের একটি মেয়ের নাম্বার নিয়ে ফোন করে রেখা নামের একটি মেয়েকে। রেখা আর কাঞ্চি আরিফের ফোন পেয়ে দেখা করতে আসে সুজন আর আরিফের সাথে। বিভিন্ন কারনে কাঞ্চি ভাবতে থাকে তার বন্ধু রাসেলের দেওয়া ভবিষ্যত বানীর কথা। রাসেল বলে- ওর সাথে যার প্রেম হবে সে কন্যারাশির জাতক। যে রকম বর্ননা দেয় তার সবটাই সুজনের মাঝে দেখতে পায়। রেখাও মনে মনে সুজনকে টার্গেট করে। কাঞ্চিও প্রেমে পড়ে যায় সুজনের। আরিফ বুঝতে পারে যে মেয়ে দুজনই সুজনের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। সুজনও বুঝতে পারে না কাকে সে পছন্দ করবে। এমনি অজানায় তারা সারাদিন ঘুরাঘুরি করে তারপর রাতে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। সমস্যা হলো কে কাকে বিয়ে করবে? অবশেষে বিয়ে হয়। মা বাবাও মেনে নেয়।



১ম দৃশ্য/দিন

স্থান- হায়দার সাহেবের বাসার ডাইনিং

চরিত্র- হায়দার, সুমনা, সুজন



ক্লোজশর্টে দেখা যাবে ফ্লাক্স থেকে চায়ের কাপে চা পড়ছে। এক চামচ চিনি দিয়ে নাড়ছে সুমনা বেগমের হাত। চামচ রেখে চা এগিয়ে দেওয়া থেকে জুমব্যাক হয়ে মাষ্টার ফ্রেমে দেখবো সুমনা বেগম আর হায়দার সাহেবকে তাদের ডাইনিং টেবিলে।



সুমনা ঃ কারো কথা না ভেবে প্রতিদিন এই ভাবে নাস্তা করে শান্তি পান আপনি?

হায়দা ঃ খুব পাই। (চা খেতে খেতে)

সুমনা ঃ আমার কথা না হয় বাদই দিলাম। ছেলেটার কথাও কি ভাবতে নেই?

হায়দার ঃ সুজন ভার্সিটিতে পড়ে।

সুমনা ঃ তো?

হায়দার ঃ তো....তুমি এখন গরম ভাত খাও আর আমাকে যেতে দাও.....

সুজন ঃ (প্রবেশ) বাবা .....তোমাকে কিন্তু খুব হ্যান্ডসাম লাগছে।

হায়দার ঃ কত লাগবে তাই বল....

সুজন ঃ প্রতিদিন যা দিয়ে থাকো সেটার চেয়ে একটু বাড়িয়ে দিলেই চলবে।

হায়দার ঃ (কাপ রেখে মানিব্যাগ বের করে ৫ হাজার টাকা দিবে) ঠিক আছে নে। শোন ইউনির্ভাসিটি থেকে

ফেরার পথে তোর মার জন্য একটা কদবেল আনবি তো।

সুমনা ঃ বাপ বেটা মিরে আমার সাথে ইর্য়ার্কি হচ্ছে?

সুজন ঃ মা আমি গেলাম। আসতে একটু লেট হবে। বাই...

হায়দার ঃ ওকে বাই। তুমি আমার চশমাটা এনে দাও।

সুমনা ঃ যান আপনিও যান। অফিসে যেয়ে সুন্দরী সেক্রেটারীকে হুকুম করেন। আমাকে না.....

হায়দার ঃ বুঝেছি। চশমাটা আমাকেই নিয়ে আসতে হবে।



(লং শর্টে দেখা যাবে হায়দার সাহেব বের হয়ে যেয়ে চশমা নিযে এসে আবার বের হয়ে যাবে অফিসে যাবার জন্য)



হায়দার ঃ ভাল থাকবেন ম্যাডাম। আসি।(সুমনা তাকিযে থাকে হায়দার সাহেবের চলে যাবার দিকে)



২য় দৃশ্য/দিন

স্থান- রাস্তা

চরিত্রে- সুজন



(রিকসায় পাচিং শর্ট) সুজন রিসকায় বসে আছে। বিকসা চলতে চলতে টিএসসিতে এসে থামবে।







৩য় দৃশ্য/দিন

স্থান- চায়ের দোকান

চরিত্র- সুজন, আরিফ, কাঞ্চি, রেখা,



টিএসসিতে চায়ের দোকানে বসে চা খাবে সুজন। দৃষ্টি তার কোন এক রমনীর দিকে। ফোন বের করে ফোন দিবে আরিফকে।



সুজন ঃ হ্যালো.....আরিফ। আমি সুজন। টিএসসিতে, কনার দোকানে আছি।......ও আসছিস? ওকে আয়।



(ফোন রেখে দেয়। ম্যানিব্যাগ বের করে টাকা দিতে যায় দোকানীকে। এমন সময় একটি সুন্দরী মেয়ে (কাঞ্চি) ও রাসেল আর টুম্পা এসে চা চাইবে। সুজন হা করে তাকিয়ে দেখছে কাঞ্চিকে আর আন্দাজে টাকা দিতে যেয়ে একটি বোয়েম হাতে বেধে পড়ে যাবে। মেয়েটির পায়ের কাছে পড়বে। মেয়েটি রেগে গিয়ে চিতকার করে ওঠে)



সুজন ঃ সরি....আমি সরি। প্লিজ আমি সরি।

(মেয়েটি তাকিয়ে থাকে সুজনের দিকে। রাগে দাত ভাংবে, এরি মধ্যে আরিফ চলে আসে)

আরিফ ঃ কিরে সুজন। লজ্জায় লাল হয়ে আছিস যে। ও ভুলেই গেছি তুই ......

সুজন ঃ (মুখ চেপে ধরে) চুপ। আর হাটে হাড়ি ভাংতে হবে না। শাহাবুদ্দি ওকে একটা মালটোভা চা দে।



(চা দেয় দোকানী। আরিফ চা নিয়ে খেতে শুরু করবে। সুজন দেখবে রিকসা থেকে নামছে একটি মেয়ে (রেখা)। সাদা ড্রেসে মেয়েটি কোনদিকে না তাকিয়ে টিএসসির ভিতরে যাবে। সুজন অপলক তাকিয়ে থাকবে। আস্তে আস্তে এগুবে। আরিফ মুচকি হাসতে থাকে। পিছু পিছু হাটতে হাটতে আবার তাকাবে কাঞ্চির দিকে। দাড়িয়ে ভাবতে থাকে কোনটার দিকে যাবে। একবার কাঞ্চির দিকে লুক লং শর্টে আবার রেখার দিকে লুক।

(ভয়েস ওভারে শোনা যাবে- কোনটা ধরি, কোনটা ছাড়ি বুঝতে পারছি না। ওখানে অনেক মানুষ। যাই ভিতরের টাকে ফলো করি। যদি চান্স পাওয়া যায়)..............ভিতরে যাবে সুজন।





৪র্থ দৃশ্য/দিন

স্থান- চায়ের দোকান

চরিত্রে- কাঞ্চি, আরিফ, টুম্পা, রাসেল



দৃশ্য- ৪/খ/দিন

স্থান- টিএসসির ভিতরে মাঠে

চরিত্রে- রেখা, সুজন



আরিফ সহ সবাই চা খাচ্ছে। ফোন বেজে ওঠে কাঞ্চির। স্কিনে দেখবে রেখার নাম। রিসিভ করে-



কাঞ্চি ঃ কই তুই?

রেখা ঃ টিএসটিতে।

কাঞ্চি ঃ টিএসসির কোথায়?

রেখা ঃ ভিতরের মাঠে।

কাঞ্চি ঃ ....আচ্ছা তুই একমিনিট বস, আমারা চা টা শেষ করে মাঠে আসছি।

রেখা ঃ ওকে। রাসেল টুম্পা কোথায়?

কাঞ্চি ঃ আমার সাথেই আছে।

রেখা ঃ ওকে চলে আয়। (ফোন কেটে দেবে রেখা)

কাঞ্চি ঃ কিরে রেখা কি চোখ বন্ধ করে ঢুকে পড়লো?

টুম্পা ঃ হবে হয়তো। তাছাড়া আমরা এখানে ও বুঝবে কি করে?

কাঞ্চি ঃ আর গবেষনা করার দরকার নেই। তাড়াতাড়ি শেষ কর।





দৃশ্য-৫/দিন

স্থান- টিএসসির বারান্দা ও মাঠ

চরিত্রে- রেখা, সুজন



রেখা টিএসসির মাঠে হাটতে হাটতে দেখবে যে বারান্দায় দাড়িয়ে সুজন তাকে ফলো করছে। রোমান্টিক ভাবে তাকিয়ে দেখছে রেখাকে। লুকোচুরি প্রেমের আভাস দিচ্ছে। আবার নিজেকে আড়াল করছে রেখার কাছ থেকে। সুজনের ঈশারা নাড়া দিচ্ছে রেখার মনকে। সুজন পায়চারী করছে বারান্দায়। গেট দিয়ে ঢুকছে কাঞ্চি, টুম্পা, রাসেল তার একটু পিছনে আরিফ ঢুকবে। সুজন তাকিয়ে দেখবে কাঞ্চিকে। বিষয়টি খেয়াল করবে টুম্পা ও রাসেল। সুজন কাঞ্চিকে দেখে ভাব নিবে। কাঞ্চি টুম্পা ও রাসেল সুজনকে পাশ কাটিয়ে রেখার কাছে যেয়ে বসবে। আরিফ সুজনের কাছে এসে দাড়ায়)



আরিফ ঃ দোস্ত আর কত মেয়েকে তুই অফার করবি?

সুজন ঃ কি বলিস তুই। আমি আবার কাকে অফার করলাম।

আরিফ ঃ না তুই করিস না। তোর চোখ মুখ ইশারা করে।



দৃশ্য-৭/দিন

স্থান- টিএসসির মাঠ

চরিত্রে- সুজন, আরিফ, রেখা, কাঞ্চি, রাসেল, টুম্পা



রেখাদের গ্রুপ বসে আসে। একই ফ্রেমে আসে আরিফ আর সুজন। সুজন ফলো করে কাঞ্চিকে।



রেখা ঃ এত লেট করলি কেন? আমি একা একা.....

কাঞ্চি ঃ কি ভয় পেয়ে গেছিস। নাকি রাগ অনুরাগের মিশ্রন ঘটেছে?

রাসেল ঃ তোরা চুপ থাক। আমি ধ্যান করে বলে দিচ্ছি কি হয়েছে......



(ধ্যানে বসে রাসেল, রেখা কাঞ্চির দিকে তাকিয়ে দেখবে যে কাঞ্চি সুজনের দিকে তাকিয়ে আছে। সুজনও তাকিয়ে আছে কাঞ্চির দিকে। রাসেল এক চোখ খুলে দেখবে রেখাকে। রেখা তখনও সুজনের দিকে তাকিয়ে। রাসেল আবার চোখ বন্ধ করে চিতকার করে ওঠে-)



রাসেল ঃ কন্যারাশি..........(সবাই কেপে ওঠে ভয় পেয়ে। বুকে থু থু দিবে)

কাঞ্চি ঃ কন্যারাশি.....কে? (রাসেলের শরীর ঝাকিয়ে ধ্যান ভেংগে দিয়ে) এই বল.....কার কন্যারাশি।

রাসেল ঃ দিলি তো ধ্যানটা ভেংগে।

টুম্পা ঃ ধ্যান বাবা বলেন। দুই টাকা লাগে দিচ্ছি। আপনি বলেন আর ধ্যানের ভাব করতে হবে না।

রাসেল ঃ কাঞ্চি যার প্রেমে পড়বে....না মানে কাঞ্চির প্রেমে যে পড়বে সে কন্যা রাশির জাতক।

রেখা ঃ রাখ তোর আলতু ফালতু কথা।

কাঞ্চি ঃ আমার তো কন্যারাশি।

রেখা ঃ তোরা রাশি নিয়ে গবেষনা কর। আমি ক্যাফেটেরিয়া থেকে আসছি।

কাঞ্চি ঃ একটু পরে যা।

টুম্পা ঃ হ্যাঁ একটু পরে সবাই এক সাথে যাই।

রেখা ঃ কেন কথা কি ফুরিয়ে যাচ্ছে?



(এই বলে ব্যাগটা নিয়ে সুজনদের পাশ দিয়ে হেটে যাবে। সুজন হা করে তাকিয়ে থাকবে। আরিফ বিষয়টি আমলে নিয়ে-)



আরিফ ঃ দাড়া দোস্ত। আমি আসছি। (আরিফ ছুটে যেয়ে দাড়াবে রেখার সামনে)

আরিফ ঃ এক্সিউজমি। আমার ফোনটা কোথায় রেখেছি পাচ্ছি না। আপনার ফোন থেকে একটা কল দিবেন?

রেখা ঃ ঠিক আছে আপনি দিন।



(আরিফ ফোনটা নিয়ে নাম্বার বসিয়ে কল দিবে। তার মোবাইল সাইলেন্স করা, নো এ্যানসার আসবে)



আরিফ ঃ কোথায় যে পড়লো। ঠিক আছে, থ্যান্স।

রেখা ঃ না ঠিক আছে।(রেখা চলে যাবে। আসবে সুজন)

সুজন ঃ তুই আগে থেকে চিনিস নাকি?

আরিফ ঃ আরে না। নাটক করে মোবাইল নম্বর টা নিলাম।

সুজন ঃ কি? সত্যি তুই পারবি। আসলে মেয়েটা অনেক সুন্দরী

আরিফ ঃ তুই তো যাকে দেখিস তাকে সুন্দরী মনে করিস।

সুজন ঃ নাম্বার টা দিবি?

আরিফ ঃ চল বাইরে যেয়ে দিচ্ছি চল।(লং শর্টে বারান্দা দিয়ে বেরিয়ে আসবে সুজন আর আরিফ)





দৃশ্য-৮/দিন

স্থান- টিএসসির গেটের সামনে

চরিত্রে- আরিফ, সুজন, যুথি



গেটের সামনে আরিফ আর সুজন। রিকসার জন্য দাড়িয়ে আছে। একটি রিকসা তাদের দিকে আসছে। রিকসা আর সুজনের মাঝামাঝি দাড়ানো যুথি। সুজন রিকসা ডাকার নামে যুথিকে ডাকে হাত ইশারা করে) যুথি রেগে মেগে সুজন আর আরিফের কাছে আসে।



যুথি ঃ আপনি আমাকে ডাকছেন কেন?

সুজন ঃ আমি? আপনাকে?

যুথি ঃ নাতো কি?

সুজন ঃ ম্যাডাম সুন্দরী হয়েছেন বলে গায়ে পড়ে প্রেম নিবেদন করতে এসেছেন?

যুথি ঃ what?

আরিফ ঃ সুজন। কথা বাড়াস না। সরি ম্যাডাম। আসলে সুজন রিক্সা ডাকছিল। আজিমপুর যাবো তো তাই।

যুথি ঃ নিজেকে কি মনে করে আপনার সুজন? আমি যুথিও কিন্তু কম না। মনে রাখবেন। বাই।



(যুথি চলে যাই, সুজন আর আরিফ হাসতে থাকে। আরিফ রিকসা ডাকে রিকসা আসে। রিকসায় উঠে চলে যায় তারা)





দৃশ্য-৯/দিন

স্থান-হায়দার সাহেবের ডাইনিং

চরিত্রে- সুমনা (ফোন দেয় হায়দার সাহেবকে)



দৃশ্য-৯/ক/দিন

স্থান- পার্ক

চরিত্রে- হায়দার



(ডাইনিং এ দুপুরের খাবার নিয়ে বসে আছে সুমনা। ফোন দেয় হায়দার সাহেবকে, রিং হয় ওদিকে হায়দার সাহেব পার্কে বেঞ্চে বসে আছে পকেট থেকে ফোন বের করে রিসিভ করে-)



সুমনা ঃ ফোন রিসিভ করতে লেট করলেন কেন? আপনার পাশে কে?

হায়দার ঃ আরে, তুমি কি সব নেশালী নেশালী কথা বলছো.....

সুমনা ঃ আমি নেশা করিনি। নেশা করেছো তুমি। বলো ফোন ধরতে লেট করলে কেনো?

হায়দার ঃ না মানে সামনে একজন সুন্দরী বসে আছে তো তাই।

সুমনা ঃ আপনি হা করে তাকে দেখছেন তাইনা? সাথে হ্যাসবেন্ড আছে না?

হায়দা ঃ হ্যাঁ, তুমি জানলে কি করে!

সুমনা ঃ জানি জানি। শোনেন, আমি দুপুরের খাবার নিয়ে বসে আছি।

হায়দার ঃ অফিস থেকে বেরিয়েছি দুপুরে বাসায় খাবো বলে। কিন্তু আসা হচ্ছে না।

সুমনা ঃ কেন? আমি তাহলে কি করবো?

হায়দার ঃ তুমি খাও।

সুমনা ঃ কি করে খাবো?

হায়দার ঃ আজব তো, হাত দিয়ে খাও।

সুমনা ঃ আরে বুদ্ধ। আপনি আসবেন কিনা তাই বলেন। সুজনও আসে নি।

হায়দার ঃ ও....এই কথা। আচ্ছা শোন, তুমি খেয়ে নাও। আমি একটু শাহাবাগ যাবো।

সুমনা ঃ ওকে। আপনার আর আসা লাগবে না। কেন যে কন্যারাশির পুরুষকে বিয়ে করলাম?

হায়দার ঃ আই লাভ ইউ। বাই টা টা.....(সুমনা হাসতে হাসতে ফোন রেখে দেবে)











দৃশ্য-১০/দিন

স্থান-ইডেনের সামনে

চরিত্রে- আরিফ, সুজন (ফোনদিবে আরিফ রেখাকে)



দৃশ্য-১০/ক/দিন

স্থান-টিএসসির বটতলায়

চরিত্রে-রেখা, কাঞ্চি



(রাস্তার পাশে বসে আছে আরিফ ও সুজন ইডেনের সামনে। মোবাইল স্ক্রিনে কলিং হতে দেখা যাবে। নাম্বারটি সেভ করা রেখা নামে। রিসিভ করবে রেখা। রেখার হ্যালো শোনা যাবে। তারপর মোবাইল কানে তুলবে আরিফ কিন্তু কোন কথা বলবে না।)



রেখা ঃ হ্যালো.......কথা বলছেন না কেন্? কে আপনি?(আরিফ মোবাইল টা সুজনের কানে ধরে, সুজন শুনবে)

রেখা ঃ বেটা ফাজিল, ইতর, বদমাইশ। আর ফোন বা মিসকল দিবি না কলাম। স্টুপিট।

(ফোন কেটে দেয় রেখা।)

কাঞ্চি ঃ কে? চিনিস না তো রিসিভ করলি কেন?

রেখা ঃ জানি না কে?

ইন্টারকার

আরিফ ঃ জানি না কে মানে? ঐ মেয়েটা। যাকে তোর কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী মনে হয়েছিল।

সুজন ঃ কিন্তু

আরিফ ঃ কিন্তু কি?

সুজন ঃ না মানে....

আরিফ ঃ প্রথম প্রথম ঢোড়া সাপ এমনি ফোস করে, বুজলি?

সুজন ঃ তাই বলে এত বেশি বলে ফেলবে?

আরিফ ঃ ঐ সুন্দরীকে নাচাতে হবে, তুই পারবি।

সুজন ঃ কি ভাবে?

আরিফ ঃ দে তোর ফোন দে।(ফোন নিয়ে মিস কল দিবে, রেখা ফোন বের করে দেখবে ৩টা মিস কল)

ইন্টারকাট

রেখা ঃ কাঞ্চি তোর ফোন টা দেতো। (ফোন দিবে, ফোন নিয়ে কল ব্যাক করবে-)

আরিফ ঃ হ্যালো......

রেখা ঃ জান তুমি কোথায়?

আরিফ ঃ কে?

রেখা ঃ সাহস থাকলে বল...কোথায় তুই।

আরিফ ঃ আজিমপুরে ইডেনের সামনে বসে আছি। সাহস থাকলে আসেন।

রেখা ঃ ওকে আসছি। পালাস না যেন?(রিকসা নিয়ে চলে আসবে। রিকসায় পাচিং শর্ট)



দৃশ্য-১১/দিন

স্থান- ইডেনের সামনে রাস্তায়

চরিত্রে- আরিফ, সুজন রেখা ও কাঞ্চি



রিকসা থেকে নামতে দেখা যাবে রেখা ও কাঞ্চিকে। আরিফ ও সুজন বসে আছে একটু দূরে। সুজন দেখেতে পেয়ে আরিফকে দেখাবে-

সুজন ঃ দ্যাখ তারাই না?



(দুজন তাকিয়ে দেখবে যে রেখা ও কাঞ্চি তাদের দিকেই আসছে। সুজন ক্লোজ থেকে দেখবো ভিন্ন দৃশ্য- সুজন অবাক তাকিয়ে আছে। সে দেখবে যে মেয়ে দুটি ভয়ংকর মুর্তিতে দ্রুত পায়ে ছুটে আসছে, মনে হচ্ছে কাচা খেয়ে ফেলবে। হাতে চাকু দেখতে পেয়ে আরিফের বুকে মুখ লুকাবে। স্বপ্ন শেষ। এতক্ষনে রেখা ও কাঞ্চি তাদের কাছে আসবে নরমালি)



আরিফ ঃ আরে আরে....কি হলো তোর?

রেখা ঃ কি ভয় পাচ্ছেন কেন? চলুন বিয়ে করবো।

কাঞ্চি ঃ মেয়েদের মত মুখ লুকাচ্ছেন যে? লজ্জা পেলেন নাকি? (হাসতে থাকে)

সুজন ঃ (মুখ তুলে হাসি দেখে চোখ মারবে কাঞ্চিকে) (হাসি থেমে যাবে) কি হাসি থেমে গেল যে? চার্জ শেষ?

আরিফ ঃ চলুন কোথাও বসি। ভাল লাগবে।

রেখা ঃ ওকে চলুন। দেখি আপনাদের দৌড় কতদুর।

(সবাই উঠবে, ক্যামেরার সামনে দিয়ে একটি বাস চলে যাবে..............)





দৃশ্য-১২/দিন

স্থান- একটি রেস্টুরেন্ট

চরিত্রে-আরিফ, সুজন, রেখা, কাঞ্চি



রেস্টুরেন্টে বসে আছে ৪ জন। টেবিলে ফাস্টফুড। কেউ খাচেছ না। সুজনের দিকে তাকিয়ে আছে রেখা ও কাঞ্চি। আরিফ সবাইকে দ্যাখে। মনে হচ্ছে ধ্যানে বসে প্রেম করছে সুজনের সাথে রেখা ও কাঞ্চি।



আরিফ ঃ এই যে, আপনাদের বলছি। এখানে যে আর একজন নায়ক আছে। এদিকে একজন তাকান।



(কাঞ্চি রেখার দিকে রেখা কাঞ্চির দিকে তাকাবে এবং দুজনই লাজুক হাসি হাসবে। খাওয়া শুরু করবে সবাই। আরিফ আর সুজন আপন মনে খাচ্ছে। রেখা কাঞ্চিকে বলে ইশারায়- তুই ঐটা নে, কাঞ্চি রেখাকে বলে-তুই ঐটা নে। দুজনের ঠেলাঠেলি খেয়াল করে আরিফ।)



আরিফ ঃ এই যে আমার টা শেষ। এখন কার টা নিব? আমি আরো চাই।

সুজন ঃ এই পেটুক। কি করছিস এসব?

কাঞ্চি ঃ না না ঠিক আছে।

(আরিফ একটা নিয়ে খাওয়া শুরু করবে, সুজন কাঞ্চির দিকে তাকিয়ে থাকে।)

রেখা ঃ এই যে, শুধু একজনকে দেখলে চলবে?

আরিফ ঃ ঠিকই তো। আমাকে একটু সুযোগ দে। আমি একটু প্রেম করি।

রেখা ঃ অ্যাঁ..

কাঞ্চি ঃ হ্যা....

রেখা ঃ বিল দেবে কে?

আরিফ ঃ না না আমি না, সুজন। আমি প্রেম করবো না। (হাসবে সবাই)

সুজন ঃ আমার একটা প্রস্তাব আছে।

আরিফ ঃ কি?

সুজন ঃ বলবো?

রেখা ঃ কেন লজ্জা পাচ্ছেন? মনে করুন আপনাদের সাথে আমরা নাই। তাইলে আর লজ্জা পাবেন না।

সুজন ঃ ঠিক আছে। আপনারাও তেমনি মনে করলে বলি।

কাঞ্চি ঃ ওকে বলে ফেলুন।

সুজন ঃ আজ সারাদিন আমরা একসাথে ঘুরবো, খাবো, অনেক মজা করবো।

আরিফ ঃ আমি রাজি। (রেখা কাঞ্চি মুখ চাইবে)

সুজন ঃ তাহলে চলুন। অন্য কোথাও যাই। (ক্যাশে বিল দিয়ে বের হবে)

দৃশ্য-১৩/দিন

স্থান-রাস্তায় (ঘোড়ার গাড়িতে)

চরিত্রে- আরিফ, সুজন, কাঞ্চি, রেখা



(ঘোড়ার গাড়িতে সুজন আর আরিফ আগে উঠবে। তারপর দুজন হাত বাড়াবে রেখা ও কাঞ্চিকে উঠানোর জন্য। আরিফ হাত বাড়িয়ে আছে কাঞ্চি বরাবর, কাঞ্চি হাত ধরতে যেয়েও ধরবে না)



কাঞ্চি ঃ একটু ....আমি আমার ব্যাগটা ঠিক করে নিই।



(এরমধ্যে রেখা হাত বাড়িয়ে দেবে, আরিফ রেখাকে উঠাবে, পরে সুজন কাঞ্চিকে উঠাবে, এবং মুখোমুখি বসবে সুজন ও কাঞ্চি, গাড়ি চলতে শুরু করবে)



রেখা ঃ আচ্ছা...আমরা কিন্তু কেউ কারো নাম জানি না।

আরিফ ঃ ঠিকই তো। আপনারা আগে শুরু করুন।

রেখা ঃ আমি রেখা।

কাঞ্চি ঃ আমি কাঞ্চি।

আরিফ ঃ আমার নাম আরিফ।

সুজন ঃ সুজন।

আরিফ ঃ সুজনের রাশি কিন্তু কন্যারাশি।

কাঞ্চি ঃ মানে? (মনে মনে-তাহলে কি রাসেলের কথা ঠিক হতে শুরু করলো)

রেখা ঃ আমার বিশ্বাস হয়।

সুজন ঃ কি ভাবে?

রেখা ঃ কন্যা রাশির মানুষগুলো রোমান্টিক আর

আরিফ ঃ আর মেয়ে পাগলা হয়।

কাঞ্চি ঃ মেয়েরা কন্যারাশির হলে?

সুজন ঃ সে হয় আরিফের পাগলা।

আরিফ ঃ তুই থাকতে আমি......

(হাসবে সবাই, গাড়ি চলতে চলতে শাহবাগে এসে পৌছে যাবে। গাড়ি থেকে নামে সবাই)



দৃশ্য-১৪/ দিন

স্থান- শাহবাগ ফুলের দোকান

চরিত্রে- হায়দার সাহেব, সুজন, আরিফ, রেখা, কাঞ্চি।



দৃশ্য-১৪/ক/ দিন

স্থান- হায়দার সাহেবের বাসা

চরিত্রে- সুমনা বেগম



ফুলের দোকানে হায়দার সাহেব ফুল দেখছেন। তার ফোন বেজে ওঠে। ফোন দিচ্চে তার স্ত্রী সুমনা বেগম। সুমনা বেগম বাসায় একা পায়চারী করছে। ফোন রিসিভ করে হায়দার সাহেব।



হায়দার ঃ হ্যালো......

সুমনা ঃ কোথায় তুমি?

হায়দার ঃ ফুলের দোকানে, শাহবাগে।

সুমনা ঃ কেন? কাকে ফুল কিনে দিচ্ছ?

হায়দার ঃ কাকে আবার যাকে ভালবাসি।

সুমনা ঃ মানে কি? কাকে ভালবাসো?

হায়দার ঃ আরে পাগলী, তোমার জন্য ফুল কিনছি।

সুমনা ঃ তোমাকে আর ফুল কিনতে হবে না। বাসায় চলে এসো তাড়াতাড়ি।

হায়দার ঃ ওকে বাই। (ফোন রেখে দিয়ে ফুল হাতে নিতেই সুজন ও তার বন্ধুরা আসে)

সুজন ঃ বাবা ফুল কিনলে? মার জন্য?

হায়দার ঃ তাতো কিনতেই হবে। কিন্তু আপনি কেন দুপুরে বাসায় যাননি?

সুজন ঃ এই ব্ন্ধুদের সাথে আছি। ( সবাই সালাম দিবে)

হায়দার ঃ অলাইকুম আসসালাম। ঠিক আছে সবাইকে নিয়ে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরো।

সুজন ঃ ঠিক আছে বাবা।

হায়দার ঃ ও হ্যাঁ সবাইকে ফুল দিয়ো। কয়জন- এক, দুই, তিন, চার। চার জনের ৪ টা সেরা ফুল দাও।

রেখা ঃ ঠিক আছে আংকেল। আমরা নিয়ে নিবো।

হায়দার ঃ ওকে আমি যাই। লেট হলে আবার আদালত বসবে।

(হায়দার সাহেব চলে যাবে, রেখা ও কাঞ্চি হেসে উঠবে)

সুজন ঃ হাসলে কেন? তোমরা হাসলে কেন? (সবাই অবাক তাকাবে) সরি তুমি করে বলে ফেললাম।

(আবাও হাসবে রেখা ও কাঞ্চি)

আরিফ ঃ আমি এতক্ষন কোন কথা বলিনি তাই বলে ভেবো না আমি কিছু শুনিনি।

সুজন ঃ কি শুনেছেন আপনি?

আরিফ ঃ আংকেল সবাই কে যেতে বলেছে।

সুজন ঃ তো চলুন। আমিও তো তাই চাই। সবাই যাবে। আমার বউ হবে।

কাঞ্চি ঃ কি বললেন?

রেখা ঃ সত্যি বললেন?

আরিফ ঃ আমি তো কিছু বুঝতে পারলাম না।

সুজন ঃ চল, এখন নিরিবিলি কোথায় বসি। (চলতে শুরু করবে সবাই)





দৃশ্য-১৫/ দিন

স্থান- হায়দার সাহেবের বাসার দরজা/ ড্রইং রুম

চরিত্র- সুমনা বেগম, হায়দার সাহেব



(রিকসা থেকে নামে হায়দার সাহেব। বাসায় ঢোকে। দরজায় নখ করে। সুমনা বুঝতে পারে হায়দার সাহেব এসেছে। ভিতর থেকে একগ্লাস পানি নিয়ে এসে দরজা খোলে।)



সুমনা ঃ এই যে নাও। এটা ধরো।

হায়দার ঃ কেন?

সুমনা ঃ ধরতে বলছি না। ধরো।

হায়দার ঃ আচ্ছা বাবা ধরলাম। কিন্তু কেন?

সুমনা ঃ খাও।

হায়দার ঃ আজব তো? পানি কেন খাব।

সুমনা ঃ খেতে বলছি তাই খাও। খাও। (হায়দার সাহেব ঢকঢক করে পানি খাবে। সুমনা কিছুক্ষন অপলক

তাকিয়ে থাকে পরে হেসে উঠে)

হায়দার ঃ আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।

সুমনা ঃ তাই.....( বলতে বলতে সোফায় যেয়ে বসবে দুজন)

হায়দার ঃ এই যে তোমার জন্য ভালবাসা।

সুমনা ঃ বাব্বা। বুড়ো বয়সে আবার.....

হায়দার ঃ শোন, আমি চাইলে বাপ ছেলে একসাথে প্রেম করতে পারবো। হু ।

সুমনা ঃ কোথায় তোমার ছেলে টা? খোজখবর কি আছে?

হায়দার ঃ আছে আছে। (হায়দার সাহেবের দিকে তাকিয়ে থাকে সুমনা, মুচকি হাসে হায়দার সাহেব)





দৃশ্য-১৬/ দিন

স্থান-টিএসসি/ পার্ক

চরিত্র- রেখা, কাঞ্চি, আরিফ, সুজন



চারজন বসে আসে সবুজ ঘাসের উপর। আরিফ একটু অন্যমনস্ক। সুজনের সামনে ৪টি গোলাপ।



রেখা ঃ আরিফ, আপনার কি কোন প্রবেলেম?

আরিফ ঃ না....কেন?

রেখা ঃ কেমন চিন্তিত মনে হচ্ছে।

সুজন ঃ রেখার রাশি কি কন্যারাশি?

রেখা ঃ আমার না। কাঞ্চির।

সুজন ঃ তাহলে হয়েছে।

কাঞ্চি ঃ কি?

আরিফ ঃ বিয়ে.....হা হা হা। (কাঞ্চি বেশ মজা পায়)

রেখা ঃ আমার হবে না?

সুজন ঃ হবে। আগে বাদাম খেতে দিন তারপর।

রেখা ঃ (টাকা বের করে দিয়ে) যান নিয়ে আসেন।

সুজন ঃ ওকে.....ম্যাডাম....



(সুজন টাকা নিয়ে আরিফের হাত ধরে টেনে তুলে নিয়ে যাবে। রেখা আর কাঞ্চি বসে থাকবে। ক্যামেরা আরিফ ও সুজনের যাওয়া ফলো করবে লং শর্টে)





দৃশ্য-১৭/ দিন

স্থান-দৃশ্য ১৬ এর স্থান

চরিত্র- রেখা, কাঞ্চি



কাঞ্চি ঃ দ্যাখ.....সারাটাদিন ঘুরে ঘুরে কেটে গেল। একটা ক্লাসো করলি না। সব দোষ তোর।

রেখা ঃ হু সব দোষ আমার।

কাঞ্চি ঃ তারপরো ছেলে দুটো রোমান্টিক।

রেখা ঃ ভালই।

কাঞ্চি ঃ মানাবে তোর সাথে।

রেখা ঃ ঠিকই বলেছিস.............মানাবে ভাল.........(দৃষ্টি আকাশের দিকে। কল্পনায় রেখা। রেখা সুজন কে

নিয়ে রোমান্টিক কিছু শট বা একটি গানের কিছু অংশ চিত্রায়ন) (রেখা হঠাত হেসে ওঠে)

কাঞ্চি ঃ কি ব্যাপার.....স্বপ্ন দেখলি নাকি?

রেখা ঃ স্বপ্ন? সত্যি যদি এমন একটি স্বপ্ন সত্যি হতো...........

কাঞ্চি ঃ স্বপ্নের নায়কেরা বাদাম আনতে কি আমেরিকায় গেল ?..........







দৃশ্য-১৮/ দিন

স্থান- টিএসসির বাইরে

চরিত্র- আরিফ, সুজন



ঝাল মুড়ির দোকানে দাড়িয়ে আছে আরিফ আর সুজন। টেনশনে ঘামছে সুজন।

সুজন ঃ আরিফ.....কি করা যাই?

আরিফ ঃ কি করতে চাস?

সুজন ঃ জীবনে তো অনেক মেয়ের প্রেমে পড়লাম।

আরিফ ঃ তুই তো যাকে দেখিস তাকেই ভালবেসে ফেলিস। অবশ্য মেয়েরাও তোকে দেখলেই প্রেমে পড়ে যাই।

সুজন ঃ রেখা কাঞ্চি ওরাও কি আমার প্রেমে পড়েছে?

আরিফ ঃ অবশ্যই। তা না হলে যা বলছিস তাই করছে কেন?

সুজন ঃ যদি বিয়ের অফার দেয়?

আরিফ ঃ করবি।

সুজন ঃ দুজনকেই?

আরিফ ঃ একটা আমাকে দিয়ে দিস। (হাসবে আরিফ)

সুজন ঃ শোন, আমার কিন্তু আসলেই কেমন যেন লাগছে।

(মুড়ি ওয়ালার একটা ফানি ডায়ালগ থাকতে পারে)

আরিফ ঃ চল......দেখি কপালে কি আছে। নো রিস্ক নো গেইন। আজ রিস্ক একটা নিয়ে নিলে হবে।

সুজন ঃ আমার গলা শুকিয়ে গেছে আরিফ।

আরিফ ঃ চল আমি ভেজানোর ব্যবস্থা করছি। চল।

(ফ্রেম আউট হবে)



দৃশ্য-১৯/ দিন

টিএসসির বারান্দা

চরিত্র-আরিফ, সুজন, যুথী



(টিএসসির বারান্দা দিয়ে আরিফ আর সুজন আসবে, যুথী বিপরীত দিক হতে ওদের ক্রস করে যাবে। সুজন যুথী চলে যাওয়া ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতে যেয়ে ধাক্কা খাবে বারান্দার পিলারের সাথে। মুড়ি পড়ে যাবে। বিষয়টা যুথী দেখে মনে মনে খুশি হবে)



আরিফ ঃ পেট ভরেছে? মেয়ে দেখে পেট ভরেছে? (সুজন কিছু বলতে পারে না)

যুথী ঃ এই যে মিস্টার, শুনুন..........(সুজন ভয় পেয়ে যায়)

আরিফ ঃ সরি....

যুথী ঃ না ঠিক আছে। কোন সমস্যা না। বলছিলাম যে.......এই যে আপনাকে বলছি।

সুজন ঃ জি বলে ফেলুন।

যুথী ঃ মেয়ে দেখলে মাথা চক্কর মারা এ একটা ভয়ংকর সমস্যা।

আরিফ ঃ ঠিক বলেছেন।

যুথী ঃ ডাক্তারের এ রোগ সারতে পারবে না। বিয়ে করে ফেলুন। আসি। টা টা।

(টা টা দিয়ে চলে যাবে। সুজন আর আরিফ পাগলের মত হাসতে থাকে)













দৃশ্য-২০/ দিন

স্থান-দৃশ্য ১৬ এর স্থান

চরিত্র- রেখা, কাঞ্চি, আরিফ, সুজন



বসে আছে রেখা আর কাঞ্চি। ফুল ৪টি এখনো সেখানেই পড়ে আছে।

রেখা ঃ নায়কেরা তো এখনো আসেনা। অন্য কোন মেয়ের সাথে গেল নাকি?

কাঞ্চি ঃ দেখ ফুলগুলো সুন্দর তাই না?

রেখা ঃ থাক। ধরিস না। দেখি ফুল কাকে দেয়?

কাঞ্চি ঃ যদি তোকে দেয়! বিয়ে করবি?

রেখা ঃ চল একটা পাগলামী করি। দুজন দুজনকে বিয়ে করে ফেলি।

কাঞ্চি ঃ আসছে (আরিফ আর সুজন এসে বসবে।চুপচাপ। সুজন ফুল গুলো হাতে নিবে)

রেখা ঃ কি ফুল দিবেন? ফুল দিলে কিন্তু বিয়ে করা লাগবে।

(আরিফ আর সুজন বোকা বনে গেল। রেখা আর কাঞ্চি একে অন্যের দিকে তাকিয়ে হাসবে)

সুজন ঃ আজই কিন্তু। কি রাজি?

কাঞ্চি ঃ এসব কি হচ্ছে? কে কাকে বিয়ে করবে?(ফোন বেজে ওটে রেখার।)

রেখা ঃ হ্যালো........রাসেল। টুম্পা তোর সাথে? তোরা একটু বস আমরা এক্ষুনি আসছি।

আরিফ ঃ কে?

রেখা ঃ আমাদের বন্ধু। চলুন, রাসেল আবার জোতিষি। বলে দিতে পারে অনেক কিছু।

কাঞ্চি ঃ রেখা তুই কি ফাজলামো শুরু করলি।

আরিফ ঃ কি হলো সুজন। এমন সুন্দরী নাকি বাপের জন্মেও দেখিস নি।

রেখা ঃ চলুন.........উঠুন। চলুন চলুন।(উঠবে সবাই)





দৃশ্য-২১/ দিন

স্থান-হায়দার সাহেবের বাসার বারান্দা

চরিত্র- হায়দার সাহেব, সুমনা বেগম



দৃশ্য-২১/ক/ দিন

স্থান- টিএসসির সামনে

চরিত্রে-রেখা, কাঞ্চি, আরিফ, সুজন



(হায়দার সাহেব বারান্দায় পায়চারী করছে আর কবিতার বই পড়ছে। চুপি চুপি সুমনা বেগম এসে শুনবে। একপর্যায়ে কবিতা থামিয়ে দিয়ে)



সুমনা ঃ দেখছো, সন্ধ্যা হয়ে আসছে। তোমার গুনধর রাজপুত্র দুপুরে এলোনা, এখনো আসার নামে খোজ নেই।

হায়দার ঃ আসবে। আসবে। ঠিকই চলে আসবে। আজ তার রাশিফল দেখেছো?

সুমনা ঃ রাশিফল দেখে লাভ নেই। একটা ফোন তো দিতে পারো।

হায়দার ঃ তা তো পারি। দাও ফোনটা দাও। (সুমনা ঘরে যেয়ে ফোনটা নিয়ে আসবে। ততক্ষন হায়দার সাহেব

কবিতা পড়বে)

সুমনা ঃ নাও। এক্ষুনি বাসায় আসতে বলবে।

(হাযদার সাহেব নাম্বার বসিয়ে ফোন দিবে)(সুজন, আরিফ, রেখা, কাঞ্চি টিএসসির সামনে হাটতে হাটতে)

সুজন ঃ একমিনিট। বাবা ফোন করেছে। হ্যালো......বাবা।

হায়দার ঃ আজ তোর রাশিফল দেখেছিস।

সুজন ঃ নাতো বাবা। কেন?

হায়দার ঃ না, এমনি বললাম। শোন, তোর মা খুব টেনশন করছে। কাজ সেরে বাসায় চলে আয়।

সুজন ঃ আচ্ছা বাবা।

হায়দার ঃ ওরা তো তোর সাথেই আছে।

সুজন ঃ হ্যা তুমি জানলে কেমনে?

হায়দার ঃ নিয়ে আয়। আমি তো আছি। নিয়ে আয়। তাড়াতাড়ি আয়। রাখলাম। (ফোন কেটে দিবে)

সুজন ঃ সরি....(সবাই হাটতে শুরু করবে)



দৃশ্য-২২/ দিন

স্থান- রাস্তা

চরিত্রে- আরিফ, সুজন, রেখা, কাঞ্চি



বেশ হাস্যজ্জল ৪জন রাস্তা দিয়ে হাটছে। একসময় রাস্তা পার হয়। আবার কিছু দুর হাটে।



দৃশ্য-২৩/ দিন

স্থান-সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

চরিত্রে-আরিফ, সুজন, রেখা, কাঞ্চি, রাসেল, টুম্পা



পত্রিকা পড়ছে রাসেল, টুম্পা মোবাইলে কিছু একটা করছে।



টুম্পা ঃ কি ব্যাপার, তোর কন্যারাশির জাতক জাতিকা কি আসবে?

রাসেল ঃ আসবে মানে! আসতেই হবে। (বড় ফ্রেমে রেখা, সুজন, আরিফ, কাঞ্চি আসবে)

রেখা ঃ কি ভাই জতিষী। কি করা হচ্ছে?

রাসেল ঃ রাশিফল পড়ছি। বসেন সবাই বসেন। আমি পড়ি, আপনারা শোনেন।

(সবাই বেশ মজা নিয়ে বসে পড়বে। রাসেল রাশিফল পড়বে)

রাসেল ঃ (২৪ আগষ্ট থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর) কন্যারাশি - সৃজনশীল কাজের জন্য প্রশংসিত হবেন। পাওনা আদায়ে

প্রভাবশালী কারও সহযোগিতা পেতে পারেন। প্রেমিক প্রেমিকার জন্য দিনটি শুভ। কন্যারাশির জাতক

জাতিকার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হলে আজই বিয়ে করা ভাল।

(রেখা কাঞ্চির দিকে তাকাবে। কাঞ্চি অপ্রস্তুত হয়ে কিছু বলতে পারবে না।)

রাসেল ঃ কাঞ্চি তোর রাশি তো কন্যারাশি। আজই বিয়ে করে ফেল।

কাঞ্চি ঃ তোর সাথে? আমি রাজি। চল কাজি অফিসে চল।

রাসেল ঃ আমার সাথে না। যার সাথে সারাদিন ঘুরলি তার সাথে।

সুজন ঃ (অবাক হয়) এসব আপনি কি বলছেন?

রাসেল ঃ আপনার রাশি তো কন্যারাশি। আজই বিয়ে করে ফালান।

সুজন ঃ আমি রাজি।

রেখা ঃ আমিও রাজি।

আরিফ ঃ আপনার তো কন্যা রাশি না। কন্যা রাশি তো কাঞ্চির।

রাসেল ঃ এককাজ করি লটারী করি। কার সাথে কার বিয়ে হয়।

কাঞ্চি ঃ ঠিক আছে কর। সিরিয়াসলী আমি আজই বিয়ে করবো। যে বিয়ে করতে রাজি হবে তাকেই বিয়ে

করবো। তাই কপালে যা আছে। কে করবেন বিয়ে? (থমথমে অবস্থা কিছু সময়)

টুম্পা ঃ ধ্যান বাবা। তুমিই বলে দাও। কার সাথে কার, কার সাথে আমার বিয়ে হবে?

রাসেল ঃ (চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষন নিরব, হঠাত জোরে আওয়াজ করে উঠে) ছেলেদের যার ডান পাশে যে তার

সাথে বিয়ে হবে।

(সবাই তার ডান পাশের জনকে দেখবে এবং সবাই অবাক হবে। হেসে উঠবে সবাই)







দৃশ্য-২৪/ রাত

স্থান-মার্কেটে

চরিত্রে- আরিফ, সুজন, রাসেল, রেখা, কাঞ্চি, টুম্পা



তিনটা রিকসা থেকে ৬ জন নামবে এবং মার্কেটে ঢুকবে।





দৃশ্য-২৫/ রাত

স্থান-কাজি অফিস

চরিত্রে- আরিফ, সুজন, রাসেল, রেখা, কাঞ্চি, টুম্পা



ছেলেরা পান্জাবী পড়া, মেয়েরা বিয়ের শাড়ি ওড়না পড়া কাজি অফিস থেকে বের হবে। দেখবে সামনে একটি মাইক্রোবাস সাজানো।



রাসেল ঃ এমন ঘটনা ঘটবে জেনে আগে থেকেই গাড়িটা আমি রেডি রাখতে বলেছিলাম।

রেখা ঃ আচ্ছা, আমরা কি সত্যি সত্যি বিয়ে করে ফেললাম?

আরিফ ঃ হ্যাঁ বউ। কেন সন্দেহ আছে।

রেখা ঃ আমার কিন্তু লজ্জা লাগছে।

সুজন ঃ আমার অবাক লাগছে। সব সময় যাকে দেখতাম তাকেই ভাল লাগতো। কিন্তু এখন শুধু কাঞ্চিকেই

ভাললাগছে।

টুম্পা ঃ কন্যারাশির ছেলেরা আসলে অনেক ভাল।

রেখা ঃ কিরে কাঞ্চি, তুই চুপচাপ কেন?

কাঞ্চি ঃ আমি ভাবছি........সবাই মেনে নেবে তো?

রাসেল ঃ ওয়েট, রাশিফলের শেষ লাইনটা পড়ে শোনাই- কন্যারাশির জাতক জাতিকা গোপনে বিয়ে করলেও

পরিবার থেকে কোন বাধা আসবে না।

আরিফ ঃ তাহলে তো সমস্যার কোন প্রবেলেম নাই। আগে মুরুব্বীদের দোয়া চাই।

সুজন ঃ সবাই আমার বাসায় চল। বাবা মাকে ম্যানেজ করে তারপর বাসায় যাবি।

রাসেল ঃ ওকে সবাই যাচ্চি ।

(সবাই মাইক্রোবাসে উঠবে গাড়ি চলতে শুরু করবে। গাড়ির পাচিং শর্ট নিতে হবে)



দৃশ্য-২৬/ রাত

স্থান- হায়দার সাহেবের বাসার ড্রইং রুম

চরিত্রে- হায়দার সাহেব, সমনা, সুজন, কাঞ্চি, আরিফ, রেখা, রাসেল, টুম্পা



ড্রইং রুমে পায়চারী করছে সুমনা, পিছু পিছু হায়দার সাহেব। একবার দরজায় যেয়ে উকি দেয় আমার ড্রইং রুমে আসে। আবার যায় আবার আসে। সুমনা সোফায় বসে পড়ে। পাশের সোপায় বসে হায়দার সাহেব।



সুমনা ঃ সেই সকালে বেরিয়েছে ছেলেটা। কত রাত হয়ে গেল এখনো আসার নাম নেই। যেমন বাপ তেমন ছেলে।

হায়দার ঃ তুমিও কিন্তু কন্যারাশির জাতিকা। (সুমনার মাথায় হাত বুলাবে)

সুমনা ঃ চুপ থাকো......। কন্যারাশি।

হায়দার ঃ কেন আমাকে বিয়ে করে কি তুমি অসুখী?

সুমনা ঃ আমি কি তাই বলেছি কখনো......

হায়দার ঃ দেখ তোমার ছেলে হয়তো আমার মতই কোন ঘটনা ............(ইতিমধ্যে সবাই জোড় বেধে রুমে প্রবেশ

করে। হায়দার ও সুমনা রোমান্টিক মুহুর্ত থেকে উঠে দাড়াবে অবাক হয়ে)

হায়দার ঃ বললাম না...তোমাকে। কোন ঘটনা ঘটবে।

সুমনা ঃ (রেগে) কোথায় ছিলে?

কাঞ্চি ঃ কাজি অফিসে

সুমনা ঃ তোমাকে প্রশ্ন করিনি। তুমি কে?

সুজন ঃ বউ

সুমনা ঃ তোমাকে প্রশ্ন করিনি? কার বউ?

আরিফ ঃ সুজনের

সুমনা ঃ তুমি আবার কে?

রেখা ঃ হাসবেন্ড

হায়দার ঃ হবে হয়তো.....

সুমনা ঃ তুমি কে?

হায়দার ঃ তুমি আমাকে চিনতে পারছো না? আমি....

রাসেল ঃ আমি রাসেল

টুম্পা ঃ আমি টুম্পা

সুমনা ঃ কি হচ্ছে এ সব? প্রশ্ন করি একজনকে উত্তর দিচ্ছে অন্য জন। মানে কি?

হায়দার ঃ বিয়ে

সুমনা ঃ মিষ্টি কই?....(সবাই সবার দিকে তাকিয়ে একসাথে হেসে উঠবে। পরে জোড়ায় জোড়ায় হায়দার সাহেব

ও সুমনাকে সালাম করবে। সালাম করতে করতে টাইটেল উঠবে)



শেষ







মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.