নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবার সাথে শিক্ষণীয় পোস্ট শেয়ার করতে চাই। আমার দ্বারা যদি কেউ উপকৃত না হয়, তো ক্ষতির শিকার হবে কেন?
টাটা গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান রতন এন. টাটা টুইটারে তাঁর সাথে ঘটা একটি ঘটনা শেয়ার করেছিলেন। যা আমাদের জন্য খুবই শিক্ষণীয় বার্তা বহন করে। ঘটনাটি হচ্ছে:
জার্মানি শিল্প-কারখানায় সমৃদ্ধ এক উন্নত দেশ। অনেকের ধারণা ঐ দেশের লোকেরা খুবই জাকজমকপূর্ণ জীবনযাপন করেন। যখন তিনি হামবার্গ পৌঁছান তখন তাঁকে স্থানীয় এক সহকর্মী একটি রেস্টুরেন্টে নিয়ে যান। তিনি দেখলেন প্রায় সবগুলো টেবিলই ফাঁকা পড়ে আছে! সেখানে একটি টেবিলে এক তরুণ প্রেমিক-প্রেমিকা বসে খাবার খাচ্ছে। টেবিলে শুধুমাত্র দুটি প্লেট আর দুটি বিয়ারের বোতল ছিল। তিনি মনে মনে ভাবলেন এই সামান্য খাবারে আবার রোমান্স হতে পারে কি? আবার এই মেয়ে এই কঞ্জুস ছেলেকে ছেড়েই যাবে হয়তো!
অন্য এক টেবিলের পাশে কয়েকজন সুন্দরী মেয়ে ছিল। যারা প্লেট দিয়ে যেত। আরেকজন প্লেটে খাবার দিত। এন. টাটা লক্ষ্য করলেন ওখানকার লোকেরা প্লেটের সব খাবারই খেয়ে শেষ করছে।
যেহেতু তিনি ক্ষুধার্থ ছিলেন তাই তার স্থানীয় সহকর্মী কয়েক প্রকার খাবারের অর্ডার করেন। খাওয়া শেষ করে বিল পরিশোধ করে বাইরে আসার সময় দেখেন এক তৃতীয়াংশ খাবার টেবিলে পড়ে আছে। যখন তিনি রেস্টুরেন্ট থেকে বের হবেন ঠিক তখনই সেই সুন্দরীদের একজন এসে ইংরেজীতে কথা বলতে লাগলেন। তিনি বুঝলেন খাবার নষ্ট করার কারণে মেয়েটি বেজায় চটেছে! এন. টাটা বলেছিলেন, “আমি খাবারের জন্য পয়সা দিয়েছি, আর যতটুকু নষ্ট করেছি সেটার পয়সাও তো দিয়েছি তাই আপনার সাথে আমার কোন লেনদেন নেই”।
মেয়েটি খুবই ক্রুদ্ধ হয়ে দ্রুত কোথাও ফোন দিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই Social Security Organisation থেকে ইউনিফর্ম পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি এসে হাজির হলেন। তারা মামলার সমঝোতায় টাটার কাছ থেকে ৫০ ইউরো জরিমানা নিয়ে নেন।
টাটা চুপচাপ জরিমানা গুণতে বাধ্য হন। সে সময় অফিসার কঠোর কণ্ঠে বলেছিলেন, “ঐ পরিমাণ খাবার আপনি অর্ডার করবেন যতটুকু খেতে পারবেন। পয়সা আপনার কিন্তু সম্পদ সমাজের”।
পৃথিবীতে এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম যারা খাবার কম করে সামনে রাখে। মনে রাখবেন সম্পদ নষ্ট করার কোনই অধিকার আপনার নেই।
এই উন্নত দেশটির লোকগুলোর মন মানসিকতায় আমাদের লজ্জ্বিত হওয়া উচিৎ। আমাদের দেশে সম্পদের অভাব রয়েছে। গ্যাস, বিদ্যুতের পয়সা দেই বলেই কি অপচয় করতে হবে? রান্নার পর চুলা নেভানোর প্রয়োজনবোধ করিনা। লজ্জ্বা থেকে বাঁচতে কয়েক আইটেমের খাবার পরিবেশন করি। খাবে না যত নষ্টই করে তার থেকে বেশি!
দেশকে ভালবাসেন? দেশকে মহান করতে চান? দেশ তখনই মহান হয় যখন তার নাগরিক মহান হয়। আর মহান হতে শুধু বড় বড় অর্জনের দিকেই নয় ছোট ছোট বিষয়গুলোকেও গুরুত্ব দিতে হয়। তবেই দেশের ভিত্তি শক্ত হয়।
তাই আসুন আমরা বলতে শিখি, “টাকা আমার কিন্তু সম্পদ দেশের”।
মূল ঘটনা: রতন টাটা’র টুইটার থেকে।
©somewhere in net ltd.