নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখছি, লিখে যেতে চাই বলে...............

সায়মা নাসরিন রুম্পা

সায়মা নাসরিন রুম্পা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সেই শরতের স্মৃতি...

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১১

তাহারে লইয়া হাঁটিয়াছিলাম বৃষ্টিবিধৌত শরতের ভোরে। বৃষ্টিবিধৌত শরৎ? মানে? শরৎকালে বৃষ্টি আসিবে কোথা হইতে? পাঠকের মনে প্রশ্ন জাগিতেই পারে! ঘটনা হইল ইদানীংকালে বৃষ্টি ঋতু মানিয়া আসিতে চাহে না। হয়তো বর্ষাকাল চলিয়া গেলেও বৃষ্টির দেখা নাই। আবার যখন বৃষ্টি আসিবার কথাই না্ই তখন বৃষ্টি আসিয়া তাহার ভরা যৌবন দেখাইয়া দিবে। সময়-অসময় নাই,যখন তখন আসিয়া পড়িবে। যাহাই হোক, শরতে ক’দিন টানা বৃষ্টি পড়িতেছিল। যেদিন ভোরে বাহিরে হইলাম সেদিনও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।

আটপৌরে জামা পরনে। ছাতাখানা সাথে লইলাম। তারপরও জলের
ছাঁটে গা ভিজিয়া যাইতেছিল। কয়েক কদম হাঁটিতেই পায়জামা পায়ের সহিত লেপ্টে রহিল। অল্প অল্প শীত
করিতেছিল। ইহার পর শহীদ মিনার প্রাঙ্গনের দিকে আগাইয়া যাইতেই তাহাকে দেখিলাম।
একখানা ছাতা লইয়া সেও আসিতেছিল।আমি মুগ্ধ হইয়া তাহার দিকে চাহিয়া রহিলাম।
তাহাকে দেখিলে আমার হৃদপিন্ডে ধুকপুক শব্দ বাড়িয়া যায়। কিন্তু কখনো তাহাকে বুঝিতে দিই নাই।
পাছে যদি ধরা পড়িয়া যায় যে তাহাকে আমি………
যাহা হউক, সে আসিতেছিল। আমার হঠাৎ লজ্জাবোধ হইতে লাগিল। চোখনামাইলাম। খানিক পর লজ্জার মাথা খাইয়া আবার চোখ তুলিলাম। কী করিব, তাহার দিকে বারংবার চাহিতে যে মন চায়!
এত ভোরে বৃষ্টিতে কেহই বাহির হয় নাই। আমরা দুই পাগল যে কিসের টানে বাহির হইলাম কে জানে!

শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে রিক্তপদে দুইজনে খানিকক্ষণ হাঁটিতেছিলাম আর গল্প করিতেছিলাম।
একদিকে গর্তের মতন একটি জায়গায় সামান্য জল জমিয়া ছিল। উৎসাহে সে গর্তে লাফাইয়া জল ছিটাইলাম। দুনিয়ার তাবৎ খুশি সব যেন এইখানে।

তাহার পর ভাবিলাম কলা অনুষদের ঝুপড়ির দিকে হাঁটিব।বৃষ্টি বাড়িতেছিল। কয়েক কদম হাঁটিতেই নজর গেল ইক্ষুর দিকে। তাহার দিকে চাহিতেই দেখিলাম তাহার দৃষ্টি ইক্ষুর দিকে। আমাকে সোৎসাহে চাহিতে দেখিয়া জিজ্ঞে করিল, “আখ খাইবে”? সম্মতি দিলাম। কিন্তু আখওয়ালাকে কোথা্ও দেখিতে পাইলাম না। আখওয়ালার জন্য কি আর আমাদের আখ খাওয়া থামিয়া থাকিবে? আমি তাহার পাশে দাঁড়াইয়া রহিলাম। সে আখের আঁটি হইতে একখানা সুশ্রী লম্বা আখ ছাড়াইয়া লইল। তাহার পর সমান চারভাগ
করিয়া ভাঙ্গিয়া লইল। আমি সপ্রশংস দৃষ্টিতে তাহার দিকে তাকাইয়া রহিলাম। সে আমার হাতে দু’টুকরা আখ ধরাইয়া দিলে আখচিবাইতে চিবাইতে কলা অনুষদের ঝুপড়ির দিকে হাঁটা শুরু করিলাম। সে এক
মনোমুগ্ধকর দৃশ্য! জীবনে কখনো এত আনন্দ পাই নাই; আখ চুরি করিয়া যাহা পাইয়াছিলাম। চুরির আখ
প্রধান রাস্তায় চিবাইয়া যাইতেছি নিশ্চিন্ত মনে- এরূপ নির্ভাবনায়ও পূর্বে কোনদিন ছিলাম
কিনা জানি না। তাও আবার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে।

হে প্রাণসখা, এমনি করিয়া সারাটিজীবন আমার নানান
পাগলামীর সঙ্গী হইও..।। এখন প্রতীক্ষা রহিল কেবল আগামী শরতের !!!!!!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.