![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২০১৪ সালে ভারতে বিজেপি যখন নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জন করে তখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। একদিকে কংগ্রেসের পতনের কারনে কংগ্রেসের বহু পুরানো ও সম-আদর্শিক দল বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ তখন বেশ কিছুটা বাহ্যিক চাপে পড়েছিল। অপর পক্ষে বিএনপি উতফুল্ল হয়েছিল কারন মনে করেছিল যে বিজেপি আওয়ামীলীগ সরকারকে চাপে ফেলে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দেবে। কিন্তু তার একবছর হতে চলল এবং ভারতের বিজেপি সরকারের দিক হতে আওয়ামীলীগ বর্তমানে সেইফ বলা চলে। উপরন্তু বন্ধুত্বের নির্দশন স্বরুপ ভারতের প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিনের মধ্যে বাংলাদেশ সফরে আসছেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিজেপি সরকারের প্রভাব কতটুকু বুঝতে হলে আগে ভারতের অভ্যন্তরীন বিষয়ে বা মোদি সরকারের তার নিজ দেশ ভারতের প্রতি কমিটমেন্ট কতটুকু সেটা বুঝতে হবে। নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পরই ঘোষনা দেন ভারতের উন্নয়ন ঘটানোর জন্য তিনি যা প্রয়োজন সবই করবেন। যদিও সব দলই বা দলীয় প্রধানরাই এরকম কথা বলে থাকেন কিন্তু মোদি ব্যতিক্রম বলেই মনে হচ্ছে। তিনি ইতিমধ্যে ঘোষনা দিয়েছেন কোন প্রতিবেশির অভ্যন্তরীন ব্যাপারে মাথা ঘামাবেননা এবং কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করবেননা। সাম্প্রতিক সময়ে এর নমুনা আমরা দেখতে পাচ্ছি। তিনি আরও বলেছেন ভারতের স্বার্থ রক্ষা করে তিনি প্রতিবেশিদের জন্য যা করার করবেন। করছেনও। যেমন ভারতের লোকসভায় সীমান্তচুক্তি পাস। কূটনৈতিক মহল হতে আরও শোনা যাচ্ছে যে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আসছেন। এবং তিস্তা ইস্যুর ও একটা ব্যাপক অগ্রগতি হতে পারে। নিকট প্রতিবেশি ও দীর্ঘদিনের পরিক্ষিত বন্ধু বাংলাদেশের জন্য যা একটা বিরাট পাওনা হতে যাচ্ছে।
বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলাদেশের বিরোধীদল বিএনপি মোদি ও তার সরকারকে বন্ধু বন্ধু করে অস্থির করে ফেলেছে কিন্তু মোদির দিক থেকে বা বিজেপির দিক থেকে আমরা তেমন কিন্তু দৃশ্যমান সাড়া দেখতে পাইনি। শুধুমাত্র বিএনপি নয় বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল, বা তাদের নেতাদের বুঝতে হবে মোদি বলুন, রাহুল বা সোনিয়া বলুন যেই প্রধানমন্ত্রীর হটসিটে থাকুন না কেন তিনি কিন্তু নিজ দেশের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেবেন। বহু জাতপাত, রাজনৈতিক ধারায় বিভক্ত ভারতের রাজনীতিবিদরা জওহরলাল নেহেরুর এই একটা নীতি ভালভাবেই অনুসরন করে থাকে। আর মোদিজি তো পাক্কা বিজনেসম্যান। তিনি ঝানু ব্যবসায়ীর মতো সারা বিশ্বে ঘুরে ঘুরে ভারতের ইমেজের বাজারজাতকরন করতেছেন। ভারত কে বিনিয়োগের স্বর্গভূমি এই ফেনা তুলে ফেলেছেন। আজ চীন তো পরশু কোরিয়া তো তার পরদিন যুক্তরাষ্ট্র। কৌরব পান্ডব কাউকেই ছাড় দিতেছেননাহ। সবাই কে ভারতে ডাকতেছেন ব্যবসা করার জন্য। কাজেই নিকট প্রতিবেশি বাংলাদেশের সাথে মোদি যে ব্যবসায়ী সুলভ ব্যবহার করবেন এটাই অনুমিত।
বাংলাদেশে বিএনপি থাকুক আর আওয়ামীলীগ থাকুক মোদির কিছু যায় আসে নাহ। মোদি তার পূর্বসুরীদের মতো দেখবেন যে কে তার দেশের স্বার্থরক্ষা করবে ভালভাবে। সেটা যে করতে পারবে মোদি তাকেই বন্ধুর মতো কাছে টেনে নেবে। আপাত দৃষ্টিতে সেই কাজে হাসিনা সরকার সফল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার তার গত মেয়াদে বৃহত প্রতিবেশিকে যত বেশি দিয়েছে সেটি এখনও টাটকা। নরেন্দ্র মোদি সেটি জানেন। আর সেই কারনেই আরও প্রাপ্তির আশায় মোদি সরকারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চটাবেন বলে মনে হয়না। সুতরাং আপাত দৃষ্টিতে ভারতের দিক থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও কয়েকবছরের জন্য নিরাপদ।
আর বিএনপির ব্যাপারটা একটু ভিন্ন। দলটি বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ সময় পার করতেছে। সাংগঠনিক কাঠামো প্রায় বিধস্ত। শক্তিশালী দল করে আন্দোলন করে নির্বাচন আদায় করা নিকট অতীতে বিএনপির পক্ষে সম্ভব না। এই খবর নরেন্দ্র মোদিরও জানা আছে। কারন ভারতীয় উপমহাদেশে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যপক প্রভাব আছে এবং বিএনপির এই দুর্বল অবস্থা গোয়েন্দা সংস্থা মারফত নরেন্দ্র মোদির ও জানা আছে। আর সবল সবর্দা সবলের পক্ষেই থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। কাজেই যাকে দিয়ে বাংলাদেশে ভারতের ব্যপক বাজার ধরে রাখা সহ সকল স্বার্থ উদ্ধার হবে নরেন্দ্র মোদি বা তার সরকার তাকেই চাইবেন এটা স্বাভাবিক। সুতরাং আওয়ামীলীগ- বিজেপি একটা উইন-উইন পজিশনে থাকবে আরও কয়েক বছর।
রাজনীতির বাজারে আর একটা কথা প্রচলিত আছে যে জামায়াতের কারনে বিএনপি বিজেপিকে পাশে পাইতেছে নাহ। কথাটার আংশিক সত্যতা আছে পুরাটা নয়। এব্যাপারে বিএনপির ধরি মাছ না ছুই পানি অথবা দুই নৌকায় পা দিয়ে চলা নীতি বর্তমানের গতিশীল রাজনৈতিক বিশ্বে বিএনপিকে আরও একঘরে করে ফেলতেছে।
সর্বোপরি মোদি বা বিজেপি সরকার উভয়ই হল ব্যবসায়ী বা ব্যবসাদার সরকার। বাংলাদেশ থেকে যার দ্বারা ব্যবসা হবে মোদি সেদিকেই যাবেন। এটাই হল বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব
লেখাটির পত্রিকা লিংক-http://www.1newsbd.com/opinion
সবার মতামত কামনা করি-https://www.facebook.com/najmus.sabuj
অথবা[email protected]
©somewhere in net ltd.