নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিবর্ন স্বপ্নাবলী নিয়ে অর্ধ জীবন্ত এক অস্তিত্ব আমি। খুব সতর্ক পায়ে হেটে চলি এই ভূমন্ডলে ও স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে থাকি শূন্য পানে নিজের অস্তিত্বের ব্যাখ্যা খুঁজতে।

সাকিব শাহরিয়ার

আমি সাকিব শাহরিয়ার। যেহেতু পৃথিবীর বুকে নিজের অস্তিত্ব অনুভব করি সেহেতু আমি একজন মানুষ। তবে বিবেকের কাঠ গড়ায় দাড়ালে কতটা হতে পেরেছি তা বলতে পারি না। তবুও আমি একজন মানুষ বা মানুষ হওয়ার প্রত্যাশায় তপস্যা রত এক সত্তা বলে নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিতেই বেশি সম্মান বোধ করি।

সাকিব শাহরিয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

অস্তিত্বের অন্তরালে: ৭

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:১৪

- আরে বাহ চারদিকে কত বালি। বালির ব্যবসা করা যাবে।
- করবে নাকি?
- হুম করা উচিত।
- কিন্তু কিনবে কে?
- কিনবে কে মানে? মানুষ কিনবে।
- হুম আমি তো সেটাই জানতে চাচ্ছি। এখানে তুমি মানুষ পাবে কোথায়?
- মানে এখানে কোনো মানুষ নাই?
- না
- কি বলো আমার তো ভয় করছে
- ভয় পাওয়ার কি আছে?
- আমি তো এমন কথা শুনি নি কখনো।
- সব কিছু কেন তোমাকে শুনতে হবে বলো তো?
- হুম তা ঠিক। তার মানে এ মরুভূমিতে তুমি আর আমি ছাড়া আর কেঊ নাই?
- না, শুধু এই মরুভূমিতে কেন হবে এই দুনিয়া তে তুমি আর আমি ছাড়া কেউ নাই।
- ধুর আবার শুরু হয়েছে তোমার চাপাবাজি তাই না?
- না, এটা মোটে ও চাপাবাজি না।
- তাইলে তুমি এতো সুন্দর তাবু বানালে কি করে? তুমি কোথায় কাঠ পেলে কোথায় কাপড় পেলে?
- এই প্রৃথিবীর সব কিছুর নিয়ন্ত্রন পরমেশ্বর আমার হাতে দিয়ে দিয়েছেন। আমি যা চাই তাই হয় এখানে।
- ধুর আগে তো আমি জানতাম আমরা প্ৃথিবীর মানুষেরা চাপাবাজ। এখন তো দেখছি তারা তোমার কাছে শিশু। তোমার মার্কেটিং এ এমবিএ করা উচিত ছিল। অনেক ভালো করতে প্রফেশনাল লাইফে।
- আমদের এখানে কোনো পড়াশোনা নাই। থাকলে করতাম।
- ও তার মানে তুমি মূর্খ?
- হুম
- ধুর এ কোন মূর্খের পাল্লায় পড়লাম রে বাপ। তাই তো তুমি এমন উদ্ভট কথা বলো।
- কেমন?
- এই যে কি সব হাবিজাবি।
- তাই?
- হুম
- আচ্ছা তুমি বুঝি অনেক শিক্ষিত?
- হুম,
- কোথায় পড়াশোনা করেছো তুমি?
- সত্যিইতো কোথায় পড়াশোনা করেছি আমি? আমার কিছু মনে নাই। এই সব মনে করতে গেলে মাথা যন্ত্রনা করে।
- তোমার মা বাবা ভাই বোন কেউ?
- ধ্যাত, তুমি বড্ড যন্ত্রনা কর। এত বেশি বাচাল তুমি। ঊফ আমার মাথা যন্ত্রনা করছে। কেন এসব জেনে তোমার লাভ কি? আমি কি তোমাকে বিয়ে করতে এসেছি এখানে?
- আহা রাগ করছো কেন?
- তুমি হাবিজাবি প্রশ্ন কর কেন? মূর্খ কথাকার।
- আচ্ছা যাও আর করব না।
- আরে এ কি! এই দেখলাম দিনের খটখটে রোদ এখন আবার এমন রাত হয়ে গেল কিভাবে?
- তোমার চাঁদ লাগবে?
- আহা ভাব নিচ্ছো যেন তুমি রাত বানিয়ে দিয়েছো। তুমি এখানকার আল্লাহ।
- হা হা হা আমি আল্লাহ হব কেন? এখানকার সব কিছুর উপর আল্লাহ আমাকে নিয়ন্ত্রন দিয়েছে। আমি যা চাই তাই হবে।
- আবার চাপা বাজি?
- না
- আচ্ছা তাইলে তোমার আকাশে দুইটা চাঁদ নিয়ে আসো তো
- কেন?
- নইলে তো এমনিতেই কিছুক্ষন পরে একটা চাঁদ উঠবে আর তুমি বলবে এই দেখো আমি চেয়েছি বলে আকাশে চাঁদ উঠেছে। শোনো এতো চাপাবাজি করে কোনো লাভ নাই। তোমার মত বদক্ষত মেয়েকে আমি কোনোদিনও বিয়ে করব না।
- আচ্ছা করো না। তবু তুমি যে আমার চোখের সামনে আছো সেটাই আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।
- আরে ধুর আবার শুরু হয়েছে এই সর রোমান্টিক ডায়লগ। তুমি কি হাজার বছর ধরে কামসূত্র পরে বড় হয়েছো? এ্যাহ, মূর্খ নাকি, প্রেমের গল্প লিখতে দিলে তো রবি বাবু কালির দোয়াত ফেলে লজ্জায় পালাবে।
- আরে না আমি মূর্খ। আমি এত শত জানবো কিভাবে?
- হুম মূর্খ হলে কি হবে ছেলে পটানো তো ভালোই শিখেছো। অবশ্য তা ঠিক, তোমার মত পচা চেহারার মেয়েদের এই বিদ্যায় পারদর্শী হওয়া উচিত। নয়ত ভালো ছেলে পাবা না বিয়ে করার জন্য। হাবলা গোবলা যদি কেউ তোমার প্রতি মায়া দেখিয়ে তোমার জালে ফাসে তাইলে তোমার একটা গতি হবে নয়ত আজীবন পরে থাকতে হবে এই মরুতে তাবু গেরে। তবে আমি কিন্তু হাবলা নই।
- হা হা হা আমি জানি।
- আরে সালা চাঁদ তো দুইটাই উঠলো কাহিনী কি?
- তুমি তো দুটোই চেয়েছিলে।
- তার মানে তুমি দুটো চাদ নিয়ে এসেছো?
- হুম।
- ইসরে আমাকে দুধের শিশু পেয়েছো বুঝি, যা বলবে তাই বিশ্বাস করবো?
- কেন তুমি বললে না তোমার দুইটা চাঁদ লাগবে?
- হুম বলেছিলাম। তখন কি আমি জানতাম যে এই গ্রহের চাঁদ দুইটা?
- কে বললো তোমাকে এই গ্রহের চাঁদ দুইটা?
- না হলে চাঁদ দুটো হলো কি করে?
- তুমি চেয়েছো তাই।
- আবার চাপাবাজি! তাহলে কি এখন আমি যদি চাই দিন হয়ে যাক তবে দিন হয়ে যাবে।
- হ্যা কেন হবে না কারন পরমেশ্বর এখানকার সব কিছুর ক্ষমতা আমার হাতে দিয়ে দিয়েছে। আমি এখানে যা চাই তাই হবে। রোদে তোমার ঘাম ঝরছিলো তাই সূর্যের আলো কমিয়ে দিলাম।
- সত্যিই !
- হুম
- বিদ্যা বলো
- আমি তো মূর্খ। আমার বিদ্যা বলে লাভ কি?
- হুম তা ঠিক। আচ্ছা পরমেশ্বর তোমাকে এত ক্ষমতা দিলো কেন? এটা তো অবিচার।
- তাঁর কাজে প্রশ্ন করে তো কোনো লাভ নাই। তিনি সর্বময়। আমি তো তত টুকুই জানি যত টুকু আমাকে জানানো হয়েছে।
- আর্মির মত রেফ রাইট টাইপের কথা। আচ্ছা কতটুকু জানানো হয়েছে তোমাকে?
- এই তুমি পর্যন্ত।
- মানে?
- মানে তোমার নাম কি? তুমি কি কর? তুমি কি খেতে পছন্দ করো? তুমি কোন জিনিসকে কি নামে ডাকো এই সব।
- উফ আমার মাথা যন্ত্রনা করছে। তুমি তোমার পক পক বন্ধ করবে? আমার মাথা কেমন যেন লাগছে। সব কিছু কেমন যেন পেচিয়ে যাচ্ছে। আমি কি কোনো মিথ্যার জালে আটকে গিয়েছি?
- না তুমি এখনই এক সত্যের জালে আছো। এতদিন তুমি ছিলে একটা মিথ্যার মায়া জালে। মানুষ মিথ্যার সাথে অনেকদিন থাকলে মিথ্যাটাকেই তার কাছে সত্যি মনে হয়। বার বার মানুষের কাছে মিথ্যা কথা বললে সে তাই সত্যি বলে মনে করে।
- তার মানে আমার আগের জীবন পুরুটাই মিথ্যা ছিলো?
- বর্তমানে দাড়ালেতো অতীত কে মিথ্যাই মনে হয় তাই বলে কি অতীত মিথ্যা? সবকিছুই তোমার ভাগ্যের অংশ।
- আচ্ছা প্রৃথিবীর জীবনটা কি?
- একটা মায়াজাল বা ইলুশন। সেখানে সবাই “বর্তমানের খাঁচা আর ভবিষ্যতের আশা” এই দুই মাত্রার লয়ে বন্দি।
- মায়াজাল কেন বললে?
- কারন সেখানে সবাই একটা মায়ার জালে বন্দি। সব মানুষের চারপাশে একটা জাল আছে সে জালের এক একটা গিট মানুষের অস্তিত্বের সাথে এত শক্ত করে আটা যে সে তা চাইলেও ছিড়তে পারে না। সে এক একবার এক একটা গিটের বিরোদ্ধে বিদ্রোহ করে উঠে কিন্তু বেশিক্ষন টিকতে পারে না কারন অন্যান্য গিটগুলো আবারা তাকে ফিরিয়ে আনে আগের অবস্থানে। জীবন জালের গীট বাড়তে থাকে একটার পর একটা। আমার এখনো ভাবলে হাসি পায় তুমি চাকরী করবে না বলে কতবার সিদ্ধান্ত নিয়েছো কিন্তু জীবনের অন্যান্য গীট গুলো বাধ্য করেছে তোমায় চাকরীর প্রিপারেশন নিতে।
(চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.