নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিবর্ন স্বপ্নাবলী নিয়ে অর্ধ জীবন্ত এক অস্তিত্ব আমি। খুব সতর্ক পায়ে হেটে চলি এই ভূমন্ডলে ও স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে থাকি শূন্য পানে নিজের অস্তিত্বের ব্যাখ্যা খুঁজতে।

সাকিব শাহরিয়ার

আমি সাকিব শাহরিয়ার। যেহেতু পৃথিবীর বুকে নিজের অস্তিত্ব অনুভব করি সেহেতু আমি একজন মানুষ। তবে বিবেকের কাঠ গড়ায় দাড়ালে কতটা হতে পেরেছি তা বলতে পারি না। তবুও আমি একজন মানুষ বা মানুষ হওয়ার প্রত্যাশায় তপস্যা রত এক সত্তা বলে নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিতেই বেশি সম্মান বোধ করি।

সাকিব শাহরিয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

অস্তিত্বের অন্তরালে: ৯ (১৮+) বাকি অংশ

১২ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:২৮

প্রথম অংশ

- যান সরেন, পুংটা পুরুষ কোথাকার।
- উফ আবার! রুম মেটরা দেখলে হাসবে না?
- রুম মেটরা দেখবে কেন? ফুলহাতা শার্ট পরে থাকবেন।
- ফুলহাতা শার্ট পরে থাকবেন, না? এবার দেখবে তুলা রাশির হাতের খেলা।
- আই দুষ্টমি করবেন না বলে দিচ্ছি। রুমে জুনিয়র কিছু মেয়ে এসেছে দেখলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।
- ধুর কবে যে একটা চাকরি পাব। একটা বাসা নেব।
- তারপর
- তারপর তুমি আর আমি।
- কেন আম্মা থাকবে না?
- আম্মা কি তার নিজের বাড়ি রেখে ঢাকা আসবে?
- না আম্মাকে আসতে হবে। আমি শ্বাশুড়ি ছাড়া থাকতে পারব না।
- আচ্ছা আসবে।
- মনে থাকে যাতে।
- জো হুকুম।
- আচ্ছা আপনি চাকরীর ব্যাপারে একটু সিরিয়াস হন না।
- আমি তো সিরিয়াসই।
- তাহলে হচ্ছে না কেন?
- কি করে বলি বলো। দেশে চাকরীর বাজারের যা অবস্থা তা তো দেখতেই পাচ্ছো।
- আমার একটার পর একটা বিয়ে আসছে। আর এদিকে আমি আম্মাকে বলতে ও পারছি না যে আমি আপনাকে বিয়ে করে ফেলেছি।
- বলার কি দরকার ঝুলে পর। আমার বিয়ের তো আর কাগজ পত্র নাই। বাসরও হয় নি। তুমি তো এখনো পুরাই ভার্জিন মেয়ে। ছিপি আটা কোকাকোলা।
- আপনি একটা হারামির হারামি।
- হারামি হব না তো কি হব। কতবার বলেছি আমার সামনে এই কথাটা বলবে না আমার বিয়ে এসেছে। এটা শুনলে আমার মাথা ঠিক থাকে না।
- আপনি আমার অবস্থাটা বুঝার চেষ্টা করবেন না?
- করছি বলেই তো ব্যাংক জবের মত একটা জব করার জন্য ও রাজি হয়েছি। নয়ত জীবনে আমি ব্যংকে জব করতাম?
- কই হচ্ছে না তো।
- একটু তো ধৈর্য্য ধরতে হবে তাই না?
- হুম তা ধরেই তো বসে আছি। তাইলে আপনি বাজে কথা বলেন কেন?
- কই বাজে কথা বললাম?
- এই যে বললেন ঝুলে পর।
- জানোই তো এটা শুনলে আমার মেজাজ গরম হয় তাইলে তুমি এটা বলো কেন আমার সামনে?
- আমি আমার সমস্যা গুলো শেয়ার করবো না আপনার সাথে?
- না। আমি এটা মেনে নিতে পারবো না তুমি আমার সামনে দিয়ে অন্য কারো সাথে সংসার করছো।
- আমি ও তো আপনাকে ছাড়া অন্য কোনো পুরুষকে আমার জীবনে মেনে নিতে পারব না।
- এই সোনা বউ এদিকে আস।
- হুম বলেন।
- আমি জানি কেমন হয়ে যাচ্ছি।
- কেমন?
- তোমাকে বুঝাতে পারবো না। আচ্ছা তুমি কখনো একই স্বপ্ন বার বার দেখ?
- না
- কিন্তু
- কিন্তু কি?
- আমি কিছুদিন ধরে একই স্বপ্ন বারবার দেখছি।
- তাই?
- হুম।
- কি দেখছেন?
- কি যেন ঠিক বলতে পারবো না গুছিয়ে।
- আচ্ছা তাহলে অগোছালোই বলেন।
- একটা মরুভূমি, একটা সমুদ্র সৈকত, কিছু প্রবাল, একটা জল রঙ এর কাপড় পরা অদ্ভুত রকম ফ্যাকাশে চেহারার একটা মেয়ে যেন আমাকে ডাকছে। এই এসো আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি। উফ ঘুম থেকে উঠলেই আমার সারা শরীর ঘেমে যায়।
- ইস একটা জল রঙ এর কাপড় পরা অদ্ভুত রকম ফ্যাকাশে চেহারার একটা মেয়ে না, কোমড় ভেঙ্গে ফে্লবো, মাথার চুল গুলো টেনে ছিড়ে ফেলবো। আমার জিনিসের দিকে কুনজর দেয় না?
- আরে এটা তো স্বপ্ন।
- স্বপ্ন না বাস্তব (?) সত্যি করে বলেন।
- আরে ধুর।
- ধুর না, মানে মানে সত্যি কথা বলেন।
- সত্যি স্বপ্ন।
- এই মেয়েকে জীবনে দেখেছেন কখনো?
- না
- দেখেন চিন্তা করে, কোথায় কখন কার সাথে কি আকাম করে এসেছেন, এখন স্বপ্নে দেখা দেয় আপনার সাথে।
- ফালতু কথা বলবে না বলে দিচ্ছি।
- এহ ফালতু কথা না? দেখতে কেমন ভূতটা? আমার চেয়ে সুন্দর?
- না একদম পচা। ফ্যাকাশে চেহারা।
- তাতে কি মেয়ে মানুষ তো। পুরুষ মানুষ হলো শিং ওয়ালা গরু আর শিং ওয়ালা গরুকে কখনো বিশ্বাস করতে নেই। বয়স কেমন?
- দেখে তো যুবতী ই মনে হয়।
- স্বপ্নে আর কি করেছেন বলেন।
- কিছু না।
- সত্যি?
- বিদ্যা।
- আজ কখন দেখেছেন?
- দুপুরে খাওয়ার পরে ঘুমিয়ে দেখেছি।
- ঘুম থেকে উঠে কি করেছেন?
- তোমাকে ফোন করলাম আসার জন্য।
- সেটা তো আমি জানি।
- তাইলে?
- আমি জানি না এমন কিছু করেছেন কিনা?
- হ্যা করেছি তো।
- এই তো বিড়াল বের হয়ে গেছে।
- কোথায় করেছেন?
- বাথরুমে।
- ছিঃ
- ছিঃ বললে কেন?
- আপনি এইসব ও করেন? কি মেয়ে কি দেখতে খুব সুন্দর ছিলো আপত্তিকর অবস্থায় দেখেছেন বুঝি। তাইতো বলি কেন আপনার নাকের লোম কাটতে মনে থাকে না। কেন আপুনি আর আপনাতে নাই।
- ধুর কথার মধ্যে তেনা পেচাবা না।
- কি বলতে চান আপনি। ঘরে আমার সতীন আসছে আর আমি তে্না পেচাবো না?
- উফ এই হয়েছে জ্বালা মেয়েদের সাথে কোনো কিছু শেয়ার করলে ও বিপদ।
- আপনি তার সাথে কি করেছেন বলেন? কেন আপনি তাকে নিয়মিত স্বপ্ন দেখেন?
- আরে সালা এ তো দেখি মহা গেঞ্জাম। নিজের বিয়ে করা বউকেই এখনো কিছু করতে পারলাম না এক বছর হয়ে গেলো আর কে না কে স্বপ্নে দেখা দিল তাকে নাকি আমি কি করে ফেলেছি।
- আমি বুঝি কিছু বুঝিনা না?
- কি বুঝ?
- আমাকে পাচ্ছেন না বলে আপনি দিনরাত অন্য মেয়ের কথা চিন্তা করেন। আর আপনার সে চিন্তাই রাতে স্বপ্ন হয়ে ফিরে আসে। আই, আপনি তাড়াতাড়ি চাকরী পেয়ে বাসা নেন। নয়ত আপনার চরিত্র নষ্ট হয়ে যাবে।
- মেয়ে মানুষ বেশি বুঝলে যা হয় আর কি।
- কি আমি বেশি বুঝি না? বেইমানের বেইমান। আমার সাথে আপনি এত বড় বেইমানি করছেন আবার বলেন আমি নাকি বেশি বুঝি। মরলে মাটি গছবে না কিন্তু।
- ধুর কি বেইমানি করলাম?
- আল্লাহর কসম করে বলেন তো আপনি কেন বাথরুমে গিয়েছিলেন?
- ঘুম থেকে উঠে মানুষ কেন বাথরুমে যায়?
- ছেলেরা অনেক কারনে যায়। আপনি কেন গিয়েছিলেন?
- মুখ ধুতে। ফ্রেশ হতে।
- সত্যি করে বলেন আপনি গোসল করতে যান নি?
- না
- সত্যি বলেন।
- সত্যি।
- ইস পার পেতে চছেন তাই না? আল্লাহ র কসম বলেন।
- কি পিচিচদের মত শুরু করেছো?
- ও হো হো। আল্লাহর নামে শপথ করতে বলেছি বলে এখন পিচিচ বলছেন না? কোনো পার পাওয়া যাবে না বলেন।
- আল্লাহর কসম আমি গোসল করি নি। হয়েছে?
- আসরের নামায পড়েছেন?
- হুম
- সত্যি?
- আরে হ্যা নামায নিয়ে কেউ মিথ্যা বলে নাকি?
- নাপাক অবস্থায় মসজিদে গেলে কি পাপ হয় জানেন তো।
- তুমি আমাকে শিখাবা? আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি তুমি জানো না?
- হুম। আচ্ছা ওই ভূতটা বলে আপনাকে কিছু?
- না।
- নষ্ট মেয়ে কোথাকার।
- তুমি জানলে কিভাবে সে নষ্ট?
- বাহ ভালোবাসা উথলে উথলে পরছে। লাভ এট ফার্স্ট সাইট।
- বাজে কথা বলবে না।
- তাইলে আপনার এত জ্বলে কেন?
- কই জ্বললো?
- এই যে নষ্ট মেয়ে বলার সাথে সাথে বললেন টূমি জানো কিভাবে থে নষ্ট মেয়ে?
- আরে বাবা বাদ দাও তো।
- না কেনো বাদ দিবো? নটি মেয়ে কোথাকার, ডাইনি বুড়ি, খবিশ মহিলা।
- কি মন ঠান্ডা হয়েছে?
- না।
- আর কিন্তু বেশি সময় নাই। তোমার হল গেট বন্ধ হয়ে যাবে।
- তো
- তো আমার পাওনাটা বুঝিয়ে দেবে কে?
- ইস কত টাকা ইনভেস্ট করেছেন এভাবে যে দাবি করছেন?
- সারাটা জীবনই তো ইনভেস্ট করে দিলাম তোমার পিছনে। একি টাকা দিয়ে পরিমাপ সম্ভব?
- উহু এভাবে সবার সামনে আমার লজ্জা লাগে।
- কি করা যাবে উদ্বাস্তু মানুষ। জৈবিক চাহিদা কি নিয়ম মানে?
- তাই বলে কি মানুষ পশু হয়ে যাবে?
- উহু আমি অত শত বুঝি না দাও সোনা বউ।
- ইস আপনার লজ্জা শরম দিন দিন কমে যাচ্ছে।
- চোখে শরম তো কপালে অলক্ষী। বউ এর কাছে লজ্জা করে লাভ আছে?
- উম্মআ...। এই নেন হয়েছে?
- আহাহাহাহা...। দুনিয়ার সুখ। আর একটা।
- না।
- দাও সোনা?
- এমন করুন করে তাকাবেন না আমার মায়া লাগে।
- তাইলে দাও।
- আরে আমার সব কিছু তো আপনার জন্যই তাইলে একটু ধৈর্য্য ধরেন না।
- এক বছর তো ধৈর্য্য ধরেই বসে আছি আর কত?
- আর কিছুদিন সবুর কর সোনা বর।
- তুমি এই তুমি শব্দটা তুলে রাখো কেমন? যখন আমাকে আদর করবে তখন তুমি বলে ডেকো সব সময় না কেমন?
- কেন?
- তোমার মুখের এই শব্দটা আমার অনেক ভালো লাগে। তখন তোমাকে উন্মাদের মত আদর করতে ইচ্ছে হয়।
- আচ্ছে আর দেরি করলে হলে গেট লাগিয়ে দেবে। উঠেন।
- আজ ফিরে না গেলে কি নয়?
- থাকবেন কোথায়? রাস্তায়?
- জানি না।
- আউল ফাউল চিন্তা বাদ দেন চলেন।
- সালা মুরগীর খোয়ার একটা।
- হাটছেন হাটেন এতো কথা বলেন কেন?
- আচ্ছা কত ভালো হত না ভার্সিটি কর্তপক্ষ যদি সব কাপলদের একটা হলে এলট দিতো ডিগ্রি নেয়ার পাশপাশি একটা বাচচা নিয়ে বের হওয়া যেত। দূরে বসে বসে তোমাকে মিস করতে হতো না। সালা সব বুদ্ধু আর গাধার দল।
- মনে রাখবেন ভালোবাসায় দূরত্ব আছে বলেই ভালোবাসা এতো সুন্দর। পাবার প্রতিক্ষা আছে বলেই তা এত পবিত্র। শূন্যতার অনুভূতি আছে বলেই ভালোবাসা শ্বাশত। ভালোবাসার আনন্দ পূর্ণতায় না সোনাবর শূন্যতায়।
আস্তে আস্তে দুটি পা ফুটপাত ধরে হেটে হেটে চলে গেলো। দুটি চোখ অসীম শূন্যতায় চেয়ে থাকলো সে পা দু খানির দিকে। সত্যি ভালোবাসার আনন্দ বোধহয় শূন্যতায়।

(চলবে)

আগের অংক
অস্তিত্বের অন্তরালে: ৩ - ২

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:০০

মু. জামান চৌধুরী বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো অসাম

১৩ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৫০

সাকিব শাহরিয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই মু. জামান চৌধুরী

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.