![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই লেখাটি লিখতে শুরু করার আগে ব্লগ এ মুসা ইব্রাহিম এর এভারেস্ট জয় সম্পর্কিত কিছু পোস্ট পড়ছিলাম, এভারেস্ট দর্শন এবং নেপাল এর স্মৃতিগুলো তখনই মাথা চারা দিতে শুরু করল, আর তখনি সিদ্ধান্ত নিলাম ব্লগ এর জন্য কিছু লেখব। এশিয়ার দর্শনীয় কিছু জায়গার নাম বলতে বললে আমি প্রথমেই যেই জায়গার নাম নিব সেটা হল নেপাল, পাহাড় ঘেরা স্বপ্নীল এক দেশ। স্রীষ্টিকর্তার কাছে ধন্যবাদ যে আমার সৌভাগ্য হয়েছিল সেই দেশ ঘুরে আসার।ছোটবেলায় কোন এক মাসিক পত্রিকায় দেখতাম বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ব্যাক্তিদের সাথে আলোচনায় তাদের জিজ্ঞাসা করা হত “পাহাড় ভাল লাগে? নাকি সমুদ্র?” আমি ওই কথোপকথনগুলো পড়ে মনে মনে ভাবতাম এইটা আবার জিজ্ঞাসা করার কি আছে? কোথায় সমুদ্র আর কোথায় পাহাড়?কোন তুলনা কি চলে?? আসলে ছোটবেলা থেকে ঘুরতে যাওয়া মানেই ছিল কক্সবাজার…তাই সমুদ্রের প্রতি ছোটবেলা থেকেই এক প্রকার পক্ষপাতিত্ব কাজ করত…পাহাড়ের নেশা যে কি জিনিষ সেটা নেপাল আর দার্জিলিং না গেলে কখনোই বুঝতাম না…
সময় টা ছিল ২০০৯ এর ফেব্রুয়ারি মাস।বুয়েটের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। একদিন হঠাৎ করে এক বন্ধু বলে দোস্ত চল পরীক্ষা শেষে নেপাল যাই…. আমাকে আর পায় কে? বাসায় বাবা মা কে জানায় দিলাম আমি নেপাল এর পথে রওনা হচছি…আমরা ছিলাম মোট ১৩ জন। তার মধ্যে একজন নেপালি ছেলে, নাম নাস্রুল্লাহ… আমাদের সাথে ইলেক্ট্রিকাল এ পড়ত (আমি অবশ্য সিভিলিয়ান )…ওর সাথে নেপাল গেলে ও আমাদের গাইড হিসাবে কাজ করতে পারবে, আবার থাকার ব্যবস্থা ও হয়ে যাবে… আর চিন্তা কি? দাড়িয়ে গেলাম নেপাল এম্বাসির লাইনে …তখন আমাদের লেভেল ৪ টারম ১ ফাইনাল পরীক্ষা চলে… প্রতিটা পরীক্ষা শেষে ৪-৫ দিনের ছুটি থাকে…সেরকমি এক ছুটির দিন এ আমরা হাজির নেপাল এম্বাসি তে…। নেপাল এর ভিসা পাওয়া খুব এক্টা কঠিন কাজ না… কারন নেপাল এর আয়ের এক্টা বড় উৎস হল tourism…. যেইদিন আবেদন করা হয় তার একদিন পরই ওরা ভিসা দিয়ে দেয়… নেপাল এর ভিসা পেয়ে সবারই মন খুব খুশি… এমন এক্ টা ভাব যেন নেপাল চলে গেছি…কিন্তু তখন ও বুঝি নাই ইন্ডিয়ান হাই কমিশন যে কি জিনিষ… ইন্ডিয়ান হাই কমিশনে দীর্ঘ ৪ দিন দৌড়াদৌড়ির পর ইন্ডিয়ান ভিসা হাত এ পাই…সেই গল্প আরেক দিন করবনে… যাই হোক…বহু প্রতীক্ষিত সেই দিনটির অপেক্ষায় আমরা… নেপাল যাব,নেপাল যাব… দিনটা ছিল ২৫ ফেব্রুয়ারী রাত, শ্যামলী বাসে করে বুড়িমারী বর্ডার ক্রস করে ভারতের শিলিগুড়ি পর্যন্ত বাস, শিলিগুড়ী থেকে নেপাল বর্ডার মাত্র ৪০ মিনিট এর পথ। সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপার ছিল যেদিন আমরা বাংলাদেশ ক্রস করি ওইদিন বি ডি আর হত্যাকান্ড ঘটে, আমরা বর্ডার ক্রস করার ঘন্টাখানেক এর মাঝেই বন্ধ করে দেয়া হয় বাংলাদেশ সীমানা… অনেক ভাগ্যবান ছিলাম আমরা। যাই হক, ভারতিয় বর্ডার এ ভয়ঙ্কর দর্শন অফিসারদের সামলে ভারতে ঢুকে আবার বাস এ চড়ে বসলাম, এখনের গন্তব্ব শিলিগুড়ি… পথের ২ ধারে শুধু চা বাগান, এলাকাটা ছিল ডুয়ার্স… মনে হচ্ছিল সমরেশের গল্পর নায়ক অনিমেশ হয়ে গেছি… দীরঘ ২ ঘন্টা চলার পর পৌছালাম শিলিগুড়ি… ভারতের ছোট এক পরগনা (আমাদের দেশের জেলার সমতুল্য) হল শিলিগুড়ি, এখান থেকে যেমন নেপাল যাওয়া যায়, তেমনি ভারতের পাহাড়ী এলাকাগুলোতেও (দার্জিলিং, গ্যাংটক)যাওয়া যায়… আমরা লোকাল এক বাস এ চড়ে যাত্রা শুরু করলাম ভারত নেপাল এর সীমানা রানীগঞ্জ এর দিকে। সীমানায় যখন পৌছালাম তখন দেখে মনে হচ্ছিল নেপাল বুঝি ভারত এর এক অঙ্গপ্রদেশ, খুব একটা পার্থক্য খুঁজে পেলামনা… যাই হউক, ঢুকলাম নেপাল এ… যায়গার নাম কাকড়ভিটা… সেখান থেকে এক বড় মাইক্রবাস এ ১৩ জন যাত্রা শুরু করলাম রাজধানী কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে… কাকড়ভিটা থেকে কাঠমান্ডু ১০ ঘন্টার সফর… কিন্তু বিধি বাম… সমগ্র নেপাল তখন মাওবাদি দের আন্দলোন এ থরহরি কম্পমান… নেপাল এর হাইওয়ে গুলো ওদের দখলে তখন… আমাদের ড্রাইভার এবং তার ২ সহকারি আমাদের জানালো অন্য রাস্তা দিয়ে যেতে হবে… সময় লাগবে আরও ২-৩ ঘন্টা বেশি, অর্থাৎ ১৩-১৪ ঘন্টা… কি আর করা… তাই সই… কিন্তু রাস্তার অবস্থা এতই খারাপ, সেই ১৩ ঘন্টার সফর লাগল ৪০ ঘন্টা…এর মাঝে এক রাত কাটাতে হয় ১ মাইক্রোবাস এ ১৩ জন গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে, জায়গাটা ছিল এক পাহাড়ি নদীর কিনারে। রাত ১২ টায় আমরা ওই নদীর তীরে এসে আবিস্কার করলাম রাতের বেলা নদিতে ফেরি চলাচল বন্ধ।দিনের আলো দেখা দিলে তবেই ফেরী আসবে, কি আর করা, গল্প করতে করতে ক্লান্ত আমরা এক সময় গেলাম ঘুমিয়ে…সারা জীবন মনে থাকবে ওই ঘুম…এত অল্প জায়গাতেও কিভাবে ঘুমান যায় সেটা ওই রাত ছাড়া আর কখনও কল্পনাও করতে পারতাম বলে মনে হয় না।দুঃস্বপ্নের মত ওই রাত এর পর ও আমাকে তাড়া করেছিল আরও কয়েক রাত…পরের দিন যাএাপথে কিছুক্ষনের বিরতি নেই আমাদের নেপালী বন্ধুর শ্বশুরবাড়িতে, পাঠক বন্ধুরা অবাক হচ্ছেন? তাহলে আরেকটা মজার তথ্য দেই: আমাদের সেই বন্ধুর বিয়ে হয় সেকেনড ইয়ার এ এবং তার প্রথম সন্তানের জন্ম হয় থার্ড ইয়ারে থাকতে... ২ দিন টানা মাইক্রবাস এ যাত্রা করার পর দেখা পেলাম পাহাড় ঘেরা কাঠমান্ডু শহরের…শহরটি হল এক উপত্যকার মাঝে…ইংরেজিতে যাকে আমরা বলি Valley….আমরা যখন সারা রাত গাড়িতে রাস্তা পাড়ি দিচ্ছিলাম তখন অন্ধকারেও বুঝা যাচ্ছিল ২ পাশের রাস্তা কতটা বিপদসঙ্কুল…রাস্তার পাশে গভীর খাদ…সেই সব রাস্তা পার হয়ে কাঠমান্ডু তে ঢুকতে না ঢুকতেই বিপত্তি… উচু এক ঢাল এ উঠার সময়ে গাড়ির চাকা গেল পাংচার হয়ে আর গাড়ি মুখ থুবড়ে পরল রাস্তার পাশে… আল্লাহ কে ধন্নবাদ দিলাম যে ভয়ানক এক দুরঘটনা থেকে রেহাই দেয়ার জন্য। যাই হউক, পৌছালাম আমাদের নেপালি বন্ধুর ভাইয়ার বাসায়…তিনি আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন…এদের বংশের রীতিই বুঝি বাংলাদেশে এসে শিক্ষা গ্রহন করা…সেই ভাইয়া আমাদের টুরের ছোটখাট এক সূচী তৈরী করে দিলেন… এরপর শুরু হল আমাদের নেপাল ভ্রমন…
সেই কাহিনি নয়ত আরেক দিন করব… চলতে থাকবে এই লেখা, শেয়ার করব আপনাদের সাথে আমাদের নেপাল ভ্রমন এর মজার মজার গল্পগুলো………
১৭ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ১২:৪৯
সাকিব007 বলেছেন: ধইন্যাপাতা জিকুভাই.... :-)
২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ১:২৭
অগ্নিলা বলেছেন: বানানের সমস্যা গুলো কি অভ্র ব্যাবহার না জানার কারনে হচ্ছে? রেফ দিতে চাইলে যে বর্নে রেফ দিতে চান আর আগে ২ বার r চাপবেন, তারপর বর্ণটা।
কথার মাঝে আমরা ডট দেই এগুলো দাড়ি বানিয়ে দেখেন একই জিনিশ। শুধু টানা কথায় ডট ভাল লাগে।
বর্ণনা বেশ সুন্দর ঝরঝরে। কিন্তু গল্প বলা আর ব্লগ লেখার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে অচেনা মানুষও আপনার গল্প শুনবে, পরে কি হল সেটা শুনার জন্য বসে থাকবে! ভাল না লাগলে, "ধুত ছাই! কি লিখেছে" বলে উঠে যাবে। তাই বাক্যগুলো নিয়ে একটু চিন্তা করবেন। একরকম কথা বার বার আসা কেমন যেন লাগে (কি আর করা!!)
আর লেখা যদি কয়েক পর্বে সমাপ্য হয় তবে সেটাও উল্লেখ করবেন। (যেমন আমি বুঝলাম না এখানে মূসা ইব্রাহিমের কি কাজ!!!)
আমার ব্লগে কি যেন ডিষ্টার্ব হয়েছে, তাই আমি রেটিং করতে পারছি না।
প্রথম প্রয়াস হিসাবে + +
১৭ ই অক্টোবর, ২০১০ সকাল ৮:০৯
সাকিব007 বলেছেন: ধন্যবাদ অগ্নীলা, আসলে মুসা ইব্রাহীম এর নামটা লেখাটার সূচনা করার জন্যই ব্যবহার করেছি, আমার উদ্দেশ্য আমাদের ভ্রমন এর কাহিনি বলা। মুসা ইব্রাহীম যে আমাকে বারবার ওই দিন গুলোতে ফিরিয়ে নিয়ে যান সেটা বুঝানোই ছিল আমার উদ্দেশ্য।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ১২:৩৬
জিকসেস বলেছেন: পুত্তুম পিলাচ।