নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সালমা রুহী

সালমা রুহী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ও বাজান তুই কই গেলিরে..............

১৬ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৪

জামাল মিয়া 'সিএনজি' চালায়। হঠাৎ একদিন নিজস্ব সিএনজি এক্সিডেন্ট করে পায়ের হিপ-জয়েন্ট ভেঙ্গে ফেলেছেন।
ডাক্তার বলেছেন, "অপারেশন ছাড়া নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেন না। অপারেশনে প্রায় লাখ-খানেক টাকা খরচ হবে। এতো টাকা কিভাবে জোগাড় হবে!!! টাকাও জোগাড় হচ্ছে না, অপারেশনও করাতে পারছেন না। অচল হয়ে বিছানায় পড়ে আছেন, আজ প্রায় দু'বছর হলো।
তার উপার্জনেই সংসার চলতো। তাদের একমাত্র ছেলে, ষোল কি সতের বছরের 'মানিক'। ইলেকট্রিকের কাজ শিখছে....।
জামাল মিয়ার স্বপ্ন ছিলো ছেলেকে বিদেশ পাঠাবেন, তাই মানিক কে ইলেকট্রিকের কাজ শিখতে দিয়েছিলেন। এখন সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার.....
জামাল মিয়ার সিএনজিটা এখন মানিক চালায়। মানিকের আয়ে কোন মতে দু'বেলা ডাল-ভাতের জোগাড় হচ্ছে। কিন্তু বাবার অপারেশন এর টাকা জোগাড় হচ্ছে না। তার উপর মা হার্টের রোগী।
মানিকের মা'ও অসুস্থ থাকে, মানিক ছোট মানুষ তার এই অল্প আয়ে মায়ের ঔষধ খরচ ও আসেনা।
মানিক মায়ের কাছে এই নিয়ে দুঃখ করে। মা বলেন, "বাজান, আগে কোনমতে দুইডা ডাল-ভাত খাওয়াইয়া আমডার জানডা বাঁচা। এরপরে এনা অসুদ আর অপারেশন।
মানিক দু'টাকা বেশি আয়ের জন্য সিএনজি চালানোর পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় ইলেক্ট্রিক এর টুকটাক কাজ পেলে করতো।
মা মানা করে বলেন, "বাজান তুই তো কারেন্টের কামডা ভালা মতন পারছ না, খালি শিখতাছিলি, এই কামডা করিছ না।"
গত বছর মানিকদের পাশের বাড়ির এক ছেলে ইলেক্ট্রিক এর কাজ শিখছিলো। ভালো ভাবে না জেনে এক বিয়ে বাড়িতে জেনারেটর চালাতে গিয়ে শক সার্কিট এ মারা যায়।
তারপর থেকে মা খালি নিষেধ দেন, "বাজান এই কাম তুই শিখিছ না। কিন্তু বাবার স্বপ্ন বিদেশ পাঠাবে, বিদেশে নাকি ইলেকট্রিক কাজের টাকা বেশি।।

পাশের বাড়ির সাজুর মায়ের চিৎকার এ মানিকের মার ঘুম ভাঙে। "মানিক্কার মাগো, মানিক্কা আর নাই।"

মানিকের মা দৌড়ে ঘর থেকে বের হন, সাজুর মা হাঁপাতে হাঁপাতে মানিকের মাকে বাজারের দিকে টেনে নিয়ে যায়। মানিকের মা দেখেন এক জায়গায় অনেক লোক, সবাই উপরের দিকে তাকিয়ে আছে.....
মানিকের মা উপরের দিকে তাকিয়ে পাথরের মত জমে যায়......
তার আদরের মানিক আজ মৃতদেহ, মাঝ-বাজারের ট্রান্সমিটারের উপরে ঝুলে আছে....!
মানিকের মায়ের বিলাপে পুরো বাজারের মানুষ স্তব্ধ হয়ে গেলো।

"বাজানরে তরে না-করছিলাম কারেন্টের কাম করিছ না। তরে কি কইছিলাম তুই জীবন দিয়া আমগো চিকিতসা কর.......ও বাজানরে আমি তো তরে কইছিলাম আমগো অসুদ লাগতো না, তুই শুধু দু'ইডা ডাইল ভাত খাওয়াইয়া আমডার জানডা বাচা........ তর বাপের অপারেশন আমার চিকিসসা অসুদ, কিছুই ত হইলনা বাজানরে জানডা দিয়া দিলি। তুই ছাড়া আমগো আর কে আছে ক?? অহন দুই মুট ভাত খাইয়া জানডা কেমনে বাচামু!! অ বাজান,,,,,, আমগোরে ফালাইয়া তুই কই গেলিরে......." কথাগুলো শেষ না করতেই মানিকের মা মূর্ছা গেলেন.......

মানিকের মা ভেবেছে তার ছেলে ইলেক্ট্রিকের কাজ করতে গিয়েছিলো। পরে জানা যায় একটা চোরের সংঘবদ্ধ দল, ট্রান্সমিটার চুরির জন্য মানিককে মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়েছে, কারন তারা জানে সে ইলেক্ট্রিক এর কাজ জানে।
তাই মানিক তার বাবার অপারেশন, মায়ের ঔষধ এসব আনার জন্যই এই মরণ ফাঁদে পা দিয়েছিলো......."

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৩

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: প্রথমেই অমন বিভৎস ছবি দেয়াটা আপনার একেবারেই উচিত হয় নি। X(লেখা পড়িনি।

১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩৪

সালমা রুহী বলেছেন: ছবিটির জন্য দুঃখিত ।

২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫২

খালেদা শাম্মী বলেছেন: কত মানিক এভাবে হারিয়ে যায় আমরাতো খবরও পাই্না। ভাল লেগেছে পড়ে।


নিজাম সাহেব, আমি কিন্তু আপনার কমেন্ট পড়েই ছবি দেখেছি। প্রথমে লেখাতেই আটকে ছিলাম।

১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩৫

সালমা রুহী বলেছেন: ধন্যবাদ । এবং ছবিটির জন্য দুঃখিত ।

৩| ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


ভয়ংকর ছবি ব্লগে দিতে হয় না

১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩৫

সালমা রুহী বলেছেন: ছবিটির জন্য দুঃখিত ।

৪| ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:১৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: ভয়ঙ্কর ছবি উন্নত দেশে কোন সংবাদপত্রেও দেয় না। আমাদের দেশের সংবাদপত্রে সব সময়ই বিভৎস সব ছবি দেয়। মানুষের মন কোমল । তাই এই সব ছবি না দেয়াই উত্তম।

১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩৬

সালমা রুহী বলেছেন: ছবিটির জন্য দুঃখিত ।

৫| ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:২১

চাঁদগাজী বলেছেন:


ছবিটা সরায়ে ফেলেন; ব্লগিং মানে ভাবনা ও লেখা, ছবি নয়

১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩৭

সালমা রুহী বলেছেন: জ্বি , ছবিটির সরিয়ে ফেলেছি ।

৬| ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:২২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: খুবই দু:খজনক কাহিনী!

সত্য ছবির চেয়েও ভয়ংকর!

৭| ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:০৪

বেঙ্গল রিপন বলেছেন: মানিকের বাবা, মা কোথায় থাকে আমাকে বিস্তারিত জোগাড় করে দিলে বাধিত হবো। আমি তাদের পাশে দাড়াতে চাই।

১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৪৩

সালমা রুহী বলেছেন: কয়েক বছর আগে ঘটে যাওয়া আংশিক সত্য ঘটনা নিয়ে গল্পটি লেখা ।
আপনার মহত্ত্বে অভিভূত ।দুয়া করি আপনি মানুষের কল্যাণে এগিয়ে থাকুন ।

৮| ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: যদি গল্প হয়,তাহলে বলবো ভালো হয়েছে।তবে গল্পতো সমাজের একটি চিত্র , সে দিক থেকে খুব খারাপ লাগলো।ধন্যবাদ আজ দেবোনা , পরবর্তী পোস্টের জন্য তোলা থাকলো।

৯| ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৫০

নূর-ই-হাফসা বলেছেন: খুব কষ্টের গল্প , এমন কত পরিবার যে আছে ।
খুব ভালো লিখেছেন ।

১৭ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:৪৩

সালমা রুহী বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.