নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১.
অবশেষে একটা কাজ খুঁজে পেয়েই গেলো মনোয়ার। তেমন বড় কোন কাজ না। একটা ফিল্ম প্রোডাকশন হাউজের সামান্য কর্মী। তার কাজ হচ্ছে সিনেমার পরিচালক সাহেবের ফাইফরমাশ খাটা।
মনোয়ার কখনো বাংলা সিনেমা পছন্দ করতো না। আর আজ তার চোখের সামনেই তৈরী হবে বাংলা সিনেমা! চোখের সামনে মোটাসোটা নায়িকারা হেলেদুলে বেড়াবে! কী বিরক্তিকর।
সে ভালোবাসে হিন্দি সিনেমা। আহা কী ফিগার একেকটা নায়িকার! তার এক সময় স্বপ্ন ছিলো হিন্দি সিনেমার নায়ক হবার! এ কথা সে তার চিত্রকল্প সিনেমা হাউজে বর্তমান সিনেমা ‘কাছে আসো, ভালোবাসো’র পরিচালক আসাদুজ্জামানকে বলেছিলো। আসাদুজ্জামান লোক ভালো। মনোয়ারকে বেশ স্নেহ করেন। মনোয়ারের মুখে তার হিরো হবার স্বপ্নের কথা শুনে তিনি বলেছিলেন, “আচ্ছা এখন থেকে তোর নাম দিলাম মনোয়ার খান। যাহ্ হিরো বানিয়ে দিলাম।” -বলেই তার বিশাল ভুঁড়ি দুলিয়ে হোহো করে হাসতে লাগলেন।
আরো একটা লোক মনোয়ারকে বেশ স্নেহ করেন। তিনি হলেন মিজান ভাই। নাম্বার ওয়ান মেকাপম্যান। কী হাতের জাদু তার! নিমিষেই কুৎসিত নায়িকাদের হুরপরী বানিয়ে ফেলেন। সুন্দর দাড়ি টুপি ওয়ালা সুফী লোক মিজান ভাই। সারাক্ষণ সুগন্ধী জর্দা দিয়ে পান চিবোন। সবাই, এমন কী পরিচালক সাহেব ও তাকে সমীহ করেন।
২.
আর কিছুক্ষণ পরেই শ্যুটিং শুরু হবে। একশন দৃশ্য। নায়ক জাহিদ খানের সাথে ভিলেন রসু শাহ্-এর ব্যাপক ফাইটিং। ফাইটিং এর এক পর্যায়ে রসু শাহ্ মিজান খানের বাম হাত কেটে নেবে। কিন্তু তাতেই কী! আসাদুজ্জামানের নির্দেশে নায়িকাকে নায়কের কাছে আসতেই হবে, ভালোবাসতেই হবে!
মেকাপম্যান মিজান ভাই নায়ক জাহিদ খানকে একটা ঢোলা শার্ট পরিয়ে দিয়েছেন। বাম হাতটা পেছনে বাঁধা হয়েছে শার্টের ভেতর দিয়েই। আর শার্টের বাম হাতার গোড়ায় রক্তের মত লাল রঙ মাখিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
নায়ক জাহিদ খান ঘামছিলেন। কারণ তার বাঁধা বাম হাতের গোড়ায় খুব ব্যাথা করছিলো। ওদিকে মেকাপম্যান মিজান লোকটাও বকর বকর করেই যাচ্ছে। কোন্ এক প্রোডাকশন বয় মনোয়ার, সে নাকি বড় নায়ক হয়ে যাবে এক দিন। ক্ষেপে গিয়ে হঠাত কী মনে করে সে ডান হাত দিয়ে একটা চড় বসিয়ে দিলো মিজানের গায়ে।
স্পটের সবাই থমকে চুপ করে গেলো। মেকাপম্যান মিজান ধীরে ধীরে সরে গেলেন। একটু পরেই আবার কাজ কর্ম শুরু হয়ে গেলো। কিন্তু মনোয়ার মিজান ভাইকে খুঁজছিলো। কোথায় গেলো মিজান ভাই?
৩.
সর্বনাশ হয়ে গেছে। মনোয়ার হট্টোগোল শুনে এসে দেখে নায়ক জাহিদ খান অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। তার বাম হাতের গোড়া থেকে তীব্রগতিতে কিছু লালবর্ণের তরল বেরুচ্ছে। কিন্তু সেটা রক্ত না রঙ বোঝা যাচ্ছে না। তার শার্টটা খুলে দেওয়ার পর দেখা গেলো তার বাম হাতটা সেখানে নেই। কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব? হাতটা গেলো কোথায়?
মনোয়ারের ফোনটা কেঁপে উঠলো। সে দেখতে পেলো মিজান ভাই এসএমএস করেছে। “Taratari palaya jao.” মিজান বুঝতে পারলো না ক্যানো তাকে পালাতে হবে। কিন্তু সে দ্রুত ম্যাকাপ রুমে রাখা তার ব্যাগের কাছে দৌড়ে গেলো। আর দেখতে পেলো পলিথিনে মোড়ানো লম্বাটে গড়নের ঠাণ্ডা কিছু একটা তার ব্যাগের নিচে পড়ে আছে।
জিনিসটা হাতে তুলে নিয়ে মনোয়ার ওটা থেকে সেই সুপরিচিত সুগন্ধী জর্দার গন্ধ পেলো, যেটা মিজান ভাই ব্যাবহার করেন। মিজান ভয়ে ভয়ে পলিথিনের মোড়কটা খুলে ফেললো। ... ভেতরে ছিলো একটা কাটা হাত। মনোয়ারের বুঝতে বাকি রইলো না এটা কার হাত।
... কিন্তু এটা এখানে কীভাবে এলো???
‘ হাত’
সন্ধি মুহিদ
২০১১
বি.দ্র.: গল্পটি রহস্য পত্রিকা কর্তৃক অমনোনীত!
গল্পের ক্যাটাগরিঃ রহস্য গল্প
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫০
সন্ধি মুহিদ বলেছেন: আমি কেম্নে কমু
২| ০৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:০২
খেয়া ঘাট বলেছেন: কোথাও যেন কিছু একটা মিসিং রয়ে গেলো।
তবে টান টান একটা উত্তেজনাতো ছিলোই।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫১
সন্ধি মুহিদ বলেছেন: জাস্ট লেখার চেষ্টা। ঠিকমত লিখতে পারিনি
৩| ০৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:০৫
সন্ধি মুহিদ বলেছেন: হাতটা কাটল ক্যাম্নে এইটাই রহস্য :p
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:০০
শুঁটকি মাছ বলেছেন: কি হইল এইটা?হাতটা কাটল কেমনে?????