নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
৩.
সন্ধ্যাকে আমার বোনের বাসায় রেখে অফিসে গিয়েছিলাম। বোনের বাসা আমার বাসার কাছেই। দশ মিনিটের হাঁটাপথ। সকালে যখন গিয়ে বললাম, "বুবু, মেয়েটারে রাখো। সন্ধ্যায় নিয়া যাবো নে।" তখন তানিয়া বুবু আমার দিকে তাকিয়ে বললো, "বিষয়টা কী? তোর বউ কই?"
আমার বুবু বিরাট বুদ্ধিমতী। সে ইতোমধ্যেই বুঝে ফেলেছে তিথী বাসায় নেই। আমি বললাম, "সে তার বাপের বাড়ি গ্যাছে।"
ওটা বলেই আমি তাড়াতাড়ি বেরিয়ে চলে এলাম। অফিস থেকে ফেরার সময় সন্ধ্যাকে আনতে গেলাম। সন্ধ্যাকে আমি কিছুই শিখিয়ে পড়িয়ে আনি নি। সে নিশ্চয়ই বলে দিয়েছে তিথী আবীরের সাথে ভেগে গেছে। বলে ফেললে তো ভালোই। এক সময় না এক সময় তো বলা লাগতোই। আমি বলতে নাহয় বিব্রত হতাম, কিন্তু সন্ধ্যা বলে ফেললে তো বেঁচেই গেলাম।
কাঁচুমাচু মুখ করে এসে কলিংবেল চাপলাম। বোন দরজা খুলে দিলো। দরজার সামনে একজোড়া জুতোর দিকে নজর গেলো। ক্ষীণ সন্দেহ হলো, আচ্ছা তিথী ফাজলামো করে এখানে লুকিয়ে নেই তো? জুতোজোড়া তো ওরই মনে হচ্ছে।
আমার জুতো খুলে বুবুর পেছন পেছন গেলাম। দেখি, আমার ভাগিনা তন্ময় আর আমার কন্যা ঘরময় গল্পের বই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছে। আমার দুলাভাইয়ের বিরাট বইয়ের সংগ্রহ আছে। মাঝে মাঝে ওখান থেকে আমি বই নিয়ে পড়ি।
নাস্তা করে বুবুকে বললাম, "সন্ধ্যা কিছু বলেছে তোমাকে?"
বুবু বললো, "কী বলবে সন্ধ্যা আমাকে?"
"না কিছু না।"
"তিথী কোথায়?"
"ও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে আরেক জনের সাথে, সম্ভবত ডিভোর্স পেপারও পেয়ে যাবো কিছুদিনের মধ্যে।"
হড়বড় করে বলে ফেললাম সব কিছু। বুবু চুপ করে আছে।
৪.
সন্ধ্যাকে নিয়ে বাসায় ফিরেছি। তন্ময়কেও নিয়ে এসেছি। এক রাত থাকবে। কাল সকালে আবার চলে যাবে। তন্ময়ের বয়স আট। সন্ধ্যার চে এক বছরের বড়।
বুবুর বাড়ি থেকে রাতের খাবার খেয়েই ফিরেছি। তাই বাসায় ফিরে আর খাওয়ার জন্য ভাবতে হলো না। সবগুলো ঘরে আলো জ্বেলে দিলাম। তবু যেন একটা অন্ধকার ভাব রয়ে গেল!
সন্ধ্যা আর তন্ময় টিভি ছেড়ে বসে গেছে। ভাবছি মেয়েটা এত স্বাভাবিক থাকছে কীভাবে। আমি ধীরপায়ে বারান্দায় চলে এলাম। পকেট থেকে এক প্যাকেট সিগারেট বের করলাম। আমি এম্নিতে সিগারেট খেতাম না। তবে প্রচুর সিগারেটখোরদের সাথে মিশেছি। তাই প্রথম সিগারেটে একটা টান দিয়ে তেমন খারাপ লাগলো না। বাহ! এইতো বেশ! বুকের শুণ্যতাটা ধোঁয়ায় উড়িয়ে দিলাম!
আরেকটা টান দিতে যাব, তখনই সন্ধ্যা আর তন্ময় এসে হাজির। আমি তাড়াতাড়ি সিগারেট দেয়ালে চেপে নিচে ফেলে দিলাম।
তন্ময় বললো, "মামা তুমি সিগারেট খাচ্ছো?"
আমি বললাম, "কই না তো। বোধয় বাইরে থেকে গন্ধ আসছে।"
সন্ধ্যা বললো, "বাবা, চলো তন্ময়কে গান শিখাই।"
অগত্যা যেতে হলো। ভাগিনার কণ্ঠে যথেষ্ট সুর আছে বোঝা গেলো! সে সা রে গা মা কে বলছে সে রে গে মা! শোনাচ্ছে যেমন 'ছেড়ে দে মা!"
এক সময় হাল ছেড়ে দিয়ে ঘুমিয়ে গেলো বাচ্চারা। আমি তখন মোবাইল থেকে স্ত্রীর ছবিগুলো দেখছি। ডিলিট করে ফেলবো?
থাক। ফেসবুকে ঢুকে গেলাম কয়েকদিন পর আবার। দেখলাম তিথী নিজেই আমাকে আনফ্রেন্ড করে দিয়ে গেছে। এখন তার প্রোফাইলে শোভা পাচ্ছে "ইন আ রিলেশনশিপ উইথ আবীর সোহান।"
মেয়েরা পারেও! এত তাড়াতাড়ি! কী যুগ পড়েছে রে বাবা। আবীরের সাথে তিথীর ছবিটা দেখে খুব খারাপ লাগলো। লগ আউট করে ফেললাম। আমি তখনো জানতাম না শৈলী তাসনীম নামের এক জন আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট দিয়েছে ঠিক তখনই!
(চলবে...)
গল্পের প্রথম অংশের লিঙ্ক Click This Link
২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১৪
ইকরাম বাপ্পী বলেছেন: আগে দেখিনি ... কারন নিয়মিত আসা হয় না ব্লগে...... পরের পর্ব পড়ে দেখি কেমন হয়েছে......
ভালো থাকবেন
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:১৪
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: