নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
(আগের পর্বের পর)
৫.
শুক্রবার। অফিস নেই। তাই ঘুমুচ্ছিলাম সকালেও। ঘুম থেকে উঠে দেখি সন্ধ্যা গল্পের বই পড়ছে। আমি ফেসবুকে ঢুঁ মারলাম। দেখি শৈলী তাসনীম নামের এক জন ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছে। মিউচুয়ালে আমার বোন তানিয়া। এড করে নিলাম। বোনকে ফোন দিলাম।
"হ্যালো বুবু"
"বল"
"শৈলী তাসনীম কে? আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট দিয়েছে। মিউচুয়ালে তুই। তাই এক্সেপ্ট করে ফেললাম।"
"শৈলী আমার এক বান্ধবীর ছোট বোন, এখন আমার বাসায় আছে, ঢাকায় এসেছে ভার্সিটি এডমিশন কোচিং করতে।"
"তোর কোন বান্ধবী?"
"ঐ যে মুকুকে মনে আছে? আমাদের বাসায় তো খুব আসতো। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো।"
"ও! মুকু আপুর বোন। তাইলে তো তার মতই অনেক সুন্দরীই হবে!!"
"হ্যাঁ। সুন্দরীই! তারপর খাওয়া দাওয়ার কী ব্যবস্থা করলি?"
"এই- নিচের হোটেলে বলে এসেছি। খাবার দিয়ে যাবে। আমার অতটা সমস্যা নাই। কিন্তু সন্ধ্যা এখন থেকেই হোটেলের খাবার খাবে, এটা ভেবে ক্যামন জানি লাগছে। ব্যাচেলর লাইফে ফিরে গেছি মনে হচ্ছে।"
"তিথীরে ভুলেই গেলি নাকি এত তাড়াতাড়ি?"
"হ্যাঁ, প্রায় ভুলে গেছি। আমাকে তো জানিসই। এখন পর্যন্ত চার জনকে ভুলতে হলো। অভ্যেস হয়ে গেছে!"
"চোপ। থাপ্পর খাবি। আমার সাথে ভাব নিস না। আমি জানি তুই কষ্টে আছিস।"
"ইয়ে, আচ্ছা এখন রাখি। একটু পর তোমার বাসায় আসব।"
সন্ধ্যাকে বল্লাম, "আম্মু চলো ফুপীর বাসায় যাই।"
বাপ বেটিতে আবার বের হলাম। হেঁটে হেঁটেই। শুক্রবার বেলা এগারোটা। রমরমে অবস্থা।
হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলাম শৈলী নামের মেয়েটা আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছিলো কী কারণে!
যেহেতু শুক্রবার, দুলাভাইও ছুটিতে! আমাকে দেখেই হেঁকে বসলেন, "এই যে মুহিদ! কী অবস্থা তোমার? তিথীর সাথে নাকি ঝগড়া করেছো?"
তানিয়া বুবু আড়চোখে দুলাভাইকে চুপ থাকতে বললেন। দুলাভাই তাই চুপ হয়ে গেলেন। সন্ধ্যা ভেতরে চলে গেলো। উঁকি দিয়ে ভেতরের দিকে দেখলাম। মনে হলো সুন্দরী একটা মেয়েকেই দেখলাম এক পলক! চোখাচোখি হলো। সেও আমাকে দেখে থমকে গেলো। দূর থেকেই মনে হলো, এর চোখে মায়া আছে।
তখন বুবু চা নিয়ে এলো। দুলাভাইয়ের কাছ থেকে পত্রিকাটা টেনে নিলাম। ছোট্ট একটা খবরে চোখ আটকে গেলো।
"সড়ক দুর্ঘটনায় দম্পতীর মৃত্যু। পরিচয় অজ্ঞাত।"
পুরো খবরটা পড়লাম কী মনে করে। মনে হলো তিথী আর আবীরের কিছু হয় নি তো।
দুলাভাইকে এড়িয়ে বারান্দায় আসলাম। তিথীর নম্বরটা ডিলিট করে দিয়েছি। কিন্তু মুখস্ত রয়ে গেছে। ডায়েল করলাম। বল্লো, "দুঃখিত, আপনার ডায়েল্কৃত নম্বরে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর আবার…" নাম্বার চেঞ্জ করে ফেলেছে নাকি?
আমি ভেবেছিলাম এই সাত দিনেই তিথীকে ভুলে গেছি। মেয়েকে নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। ওর সব কিছু এখন আমাকেই দেখতে হচ্ছে। কিন্তু তিথীর কথা ভেবে হঠাৎ ক্যানো জানি বুক ধড়ফড় করছে।
আবীরকে একটা ফোন করবো? কী মনে করবে?
কল দিলাম। সেই... "দুঃখিত, আপনার…"
ওদের কিছু হয়নি তো? ধুর! হলে হবে। আমার কী।
৬.
রাত একটা। কাল অফিস আছে। ঘুমানো প্রয়োজন। ঘুম আসছে না। তিথী ঘুমিয়ে পড়েছে। আমি বুকের শূন্যতা নেভাতে সদ্য শুরু করা সিগারেট জ্বালিয়েছি।
ল্যাপ্টপে ফেসবুক খোলা। তিথী আর আবীরের প্রোফাইল ঘুরে দেখলাম। গত দেড়দিনে কেউই লগ ইন করে নি। আচ্ছা, নাম্বার চেঞ্জ করলে নিশ্চয়ই ফেসবুকেও ব্লক করে ফেলতো। ধুর। চিন্তাটা মাথা থেকে যাচ্ছে না।
হঠাৎ সেই শৈলী মেয়েটা নক করলো,
"hi"
"হেলো", অভ্রতে বাংলায় রিপ্লাই দিলাম। মেয়েটা মোবাইল থেকে অনলাইনে আছে। জেগে আছে ক্যান কে জানে।
"কেমন আছেন?"
"ভাল আছি তো। আপনি?", হাসিমুখের ছবি জুড়ে দিলাম।
"বেঁচে আছি। আপনি সত্যি ভালো আছেন?"
"খারাপ থাকবো কী জন্য?"
"কিছু মনে করবেন না। তানিয়া আপু আমাকে আপনার কথা বলেছে। আমি জানি আপনি কষ্টে আছেন।"
আপু এরই মধ্যে একেও বলে ফেলেছে! আজব। মেয়েটার সাথে চ্যাট করতে লাগলাম। আর একের পর এক সিগারেট চলতে লাগলো। ঘুম আসে নি। চ্যাট শেষ হলো রাত চারটায়। সে বিদায় নিলো, সকালে তার কোচিং আছে। বিদায় দিলাম। অনেক কথাই হলো। সময়ে সে প্রসঙ্গে আবার আসা যাবে।
বারান্দায় এসে বসলাম। নির্জন রাত। আকাশে নীলাভ আবছা আলো। হঠাৎ ঠাণ্ডা বাতাসে গা শিরশির করলো। চমকে উঠলাম। আচ্ছা, তিথীর পারফিউমের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে না?
(চলবে...)
আগের অংশ আমার ব্লগে আছে।
সন্ধি মুহিদ
২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪০
ইকরাম বাপ্পী বলেছেন: চলুক... পরের পর্ব পড়ে দেখি কেমন হয়েছে... ... এখন পর্যন্ত ভালোই লেগেছে...... ভালো থাকবেন...
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:২৭
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন:
চলুক.....পরের পর্বের অপেক্ষায়...