নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আগের অংশের পর
৭.
কাল রাতে আমার কী যেন হয়েছিলো। বারান্দায় বসে মনে হলো তিথীর পারফিউমের ঘ্রাণ পাচ্ছি। হঠাৎ খুব ভয় লাগলো। গা শিরশির করতে লাগলো। মনে হলো ঘরের ভেতর তিথী বসে হার্মোনিয়াম বাজাচ্ছে। চুপ করে বসে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পড়লাম বারান্দায়ই।
ঘুম ভাঙলো এগারোটায়! অফিস ছিলো নয়টা থেকে। থাক আজ আর যাবো না। সন্ধ্যা না খেয়ে বসেছিলো। হোটেল থেকে খাবার দিয়ে গেছে। বাপ বেটিতে নাস্তা সেরে নিলাম।
সন্ধ্যা দেখলাম নিজে থেকেই বারান্দায় তিথীর গাছগুলোতে জল দিচ্ছে।
আমি ফেসবুকটা চালু করলাম। শৈলী মেয়েটা আবার ম্যাসেজ পাঠিয়েছে। সে আমার ফোন নম্বর চায়। আচ্ছা মেয়েটার ঘটনা কী?
সন্ধ্যাকে বললাম, "আম্মু সেদিন যে ফুপীর বাসায় গিয়েছিলা, সেখানে শৈলী নামের কোনো মেয়ে ছিলো?"
সে বল্লো, "ও শৈলী আপু! আমাকে অনেক আদর করেছে!"
আপু?! আপু ডেকে ফেললো! আশ্চর্য। বললাম, "আপু না। ইয়ে। আন্টি বলে ডাকবি। ঠিক আছে?"
সন্ধ্যা বল্লো, "আচ্ছা।"
কাল রাতে শৈলীর সাথে কথা বলে যা যা জেনেছি তা হলো শৈলীর নিজের জীবনের সন্ধ্যার মত ঘটনা ঘটেছে। ওর মা ও ওর বাবাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলো ওর ছোটবেলায়। ওর বাবা আরেকটা বিয়ে করেছিলেন। এ থেকেই বুঝেছিলাম আমার প্রতি আগ্রহের কারণ আর কী কারণে আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছিলো।
অফিসে এক বার ফোন করে বল্লাম আজ আর যাবো না। তখনই একটা ফোন এলো। ওয়েইটিং দেখে কেটে দিলো।
কথা শেষ করে ব্যাক করলাম। ভেবেছিলাম শৈলী। কারণ মাত্রই তাকে ফোন নম্বর দিয়েছি ফেসবুকে। কিন্তু আমাকে ফোন করেছে তানিয়া বুবু। যেতে বললো।
অগত্যা কন্যাকে নিয়ে বের হলাম।
বোনের বাসায় ঢোকার মুখে আজ আবার সেই জুতোজোড়া চোখে পড়লো। ঠিক তিথীর এক জোড়ার মত! এখন বুঝলাম, জুতোজোড়া শৈলী নামের মেয়েটার।
দেখলাম শৈলী আর তন্ময় ড্রয়ং রুমে বসে আছে। দুলাভাই বোধয় অফিসে। শৈলী আমাকে দেখে দাঁড়িয়ে পড়লো। আমি বল্লাম, "আরে, ক্যামন আছো? সকালে কোচিংএ যেতে পেরেছিলে? ঘুম ভেঙেছিলো?"
সে আস্তে করে বল্লো, "হ্যাঁ।"
আহা। কী কোমল কণ্ঠ! মেয়েটা কি গান গাইতে পারে? চুপ করে বসে থাকাটা অস্বস্তিকর। তাই বলেই ফেললাম, "আচ্ছা তুমি গান গাইতে জানো? সন্ধ্যা কিন্তু গান গাইতে জানে।"
শৈলী আমার চোখের দিকে একবার তাকালো। আহা! কী গভীর দৃষ্টি! আবার মাথা নিচু করে বললো, "শেখার ইচ্ছে ছিলো।"
সন্ধ্যা এরই মধ্যে মাতব্বরী করে বল্লো, "বাবা তোমাকে গান শেখাবে, শৈলী আআআ...ন্টি!"
তন্ময় হিহিহি করে হাসতে শুরু করলো। শৈলীও অবাক হয়েছে হয়তো।
সেদিন রাতেই শৈলী আমার ফোনে SMS করলো, "ki korchhen?"
আমি ওকে কল দিলাম। ভোর চারটা পর্যন্ত কথা হলো। খুব তরতর করেই কথা এগিয়ে গেলো সে রাতে। ঠিক হলো তাকে আমি গান শেখাবো। আর সে আমাকে অফিসে যাবার জন্যে ঘুম থেকে তুলে দেবে!
৮.
শৈলী গান শিখতে এসেছে।
সন্ধ্যা আর তন্ময় ও সাথে আছে। শৈলীকে সরগম শিখিয়ে শুধু বলে দিলাম প্রতিদিন ভোর বেলা ছাদে যেয়ে দীর্ঘ দম নিয়ে সা রে গা মা পা ধা নি র্সা আবার র্সা নি ধা পা মা গা রে সা করে নিতে কয়েক বার। শর্ট কোর্সে আপাতত এটুকুই চলবে।
তবে সুখের কথা হচ্ছে, ওর কণ্ঠে সুর আছে!
প্রথম দিন গান শিখতে এসেছে, সরগম শিখিয়ে বল্লাম, "তুমি বসো, আমি একটু চা করে আনি।"
সে বল্লো, "না না, আপনি করতে যাবেন না। আমাকে দেখিয়ে দিন। আমি চা করে দিই।"
সাত পাঁচ ভেবে বল্লাম, "আচ্ছা চলো!"
সন্ধ্যা আর তন্ময়কে ওখানে বসিয়ে রেখে শৈলী আর আমি রান্নাঘরের দিকে এগুলাম।
রান্নাঘরটা ত্যামন বড়ো না। আমি আর শৈলী খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছি। আমি ওর শরীরের মিষ্টি ঘ্রাণ পাচ্ছি। ওকে সব দেখিয়ে যখন ফিরবো, পেছনে ঘোরার সময় দুজনের চোখাচোখি হলো। দুজনেই চুপ হয়ে থেমে গেলাম। ওর মায়াবী চোখ থেকে চোখ সরাতে পারছি না। আমার বুক ধুকপুক করছে। আমি কি এই মেয়ের প্রেমে পড়েছি?
তখন তন্ময়ের ভয়ার্ত গলার চিৎকার শোনা গেলো ,"মামা....."
আমি ছুটলাম। পেছন পেছন শৈলীও।
(চলবে....)
সন্ধি মুহিদ
আগের অংশগুলো আমার ব্লগে আছে।
২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৪৯
ডরোথী সুমী বলেছেন: মুহিদ এতো তারাতারি শৈলীর প্রেমে পরে যাবে। প্রেম এত সহজ। হয়তো তাই।.........কাছের মানুষকে ভুলে যেতে সময় লাগেনা..........।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৩
সন্ধি মুহিদ বলেছেন: প্রেম না। এইটা মোহ ছিলো
৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৬
ইকরাম বাপ্পী বলেছেন: মোহ হলেও আমার তো মনে হচ্ছে কাছের মানুষকে ভোলার জন্যই এমনটা করছে... পরের পর্ব পড়ে দেখি... ... তবে এত তাড়াতাড়ি কার সাথে এমন সময় পার করার বিষয়টা খারাপও লাগে নি... ... ভুলে থাকার জন্য মানুষ অনেক কিছুই করতে পারে... আবার সে যে কী করছে তা সে মনে হয় নিজেও জানে নাহ......
ভালো থাকবেন......
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৩০
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: