নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাই সেকেন্ড ম্যারেজ

১৬ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৩০


— ওজন ২৫ কেজি।
স্যুটকেসটা ওজন করে নিবেদিতা জানান দিল। আমরা সবাই ড্রইং রুমে বসে আছি। গল্পগুজব আর প্যাকিং চলছে। কালকে আমার ফ্লাইট। সো, শেষ মুহূর্তের গোছগাছ চলছে। ব্যাগে একটা জিনিস ঢোকানো হচ্ছে, আর ওজন মাপা হচ্ছে। এইমাত্র ওজন হয়েছে ২৫। হাতে এখনও আরও পাঁচ কেজি আছে। বাট আর কিছু ঢোকানো যাবে না। মা’র খুব ক্লোজ দুই বান্ধবীর কাছ থেকে দুটো প্যাকেট আসবে, উনাদের আমেরিকা প্রবাসী পুত্র কন্যার জন্য। ব্যাপারটা একতরফা না। ভাইসে ভার্সা। উনাদের পুত্রকন্যাদের ব্যাগে আমার জন্যও জিনিস যায়।
দক্ষ হাতে সব কিছু সামলাচ্ছে নিবেদিতা। ওকে দেখে কে বলবে, দ্যা স্টোরি ইজ ওভার। যা বুঝতে পারছি না, তা হচ্ছে ও কি চাচ্ছে? ক্লোজ আত্মীয় স্বজনরা শেষ মুহূর্তের দেখা করতে আসছেন। নিবেদিতার বাবা মা ও এসেছিলেন আজকে। সবার সাথেই হাসিমুখে কথা বলেছে নিবেদিতা। মনে হচ্ছে, পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী একটা মেয়ে।
সকাল থেকে হাসি হাসি মুখ রাখবার আপ্রাণ চেষ্টা করে রণে ভঙ্গ দিলাম।
শরীর খারাপ লাগছে বলে নিজের রুমে ফিরে এলাম। ব্যালকনিতে যাব ভেবেছিলাম, কিন্তু রোদের জন্য পারলাম না। রুমে সাধারনতঃ স্মোক করি না। ঘুমাবার চেষ্টা করব কি না ভাবছি। ল্যাপটপ নিয়ে বসলাম। নেটে এদিক ওদিক ঘুরছি। মন বসছে না। হাল ছেড়ে দিলাম। একবার শিশিরের সাথে কথা বললে কেমন হয়? ফোনটা খুঁজলাম। হাতের কাছে পেলাম না। বিছানা ছেড়ে উঠতেও ইচ্ছে করছে না। ল্যাপটপ বন্ধ করে শুয়ে পড়লাম।
কখন ঘুমিয়ে পড়েছি, টের পাইনি। ঘুম ভাঙল একটা আলতো ছোঁয়ায়। চোখ খুলে দেখি নিবেদিতা। বিছানায়, আমার পাশে বসে আছে। ঠোঁটে স্মিত হাসি। অবাক লাগল। কিছু কি বলতে চায়?
— চা খাবে?
অভিমান উথলে উঠল। মাথা নেড়ে না সূচক উত্তর দিলাম।
—গল্প?
— মানে?
— গল্প শুনবে?
— কিসের?
— এক রাজকন্যা আর তিন রাজপুত্রের?
উঠে বসতে বসতে বললাম,
— তিন? না চার?
— তিন।
সো, দ্যা রাইট টাইম কেম। পুরনো নিবেদিতা ইজ ব্যাক। বাট শী ইজ নো মোর মাইন।
— সিগারেট খেতে ইচ্ছে করছে
— অ্যাশ ট্রে এনে দেব?
— নাহ, ব্যালকনিতে চল।
ধীরে ধীরে ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। নিজে থেকেই অফার করলাম
— নেবে?
মাথা নেড়ে জানাল, না।
— ক্যান আই স্টার্ট?
আবার ওর দিকে তাকালাম। দারুণ মিষ্টি লাগছে দেখতে। চেহারায় কেমন একটা শিশুর সরলতা। ও বলতে লাগল
— ইউনিভার্সিটিতে ঢুকলাম। সুন্দরী মেয়েগুলো দুমদাম প্রেমের প্রস্তাব পেতে থাকল। আমি ততোটা পেলাম না। প্রোবাবলি গায়ের রঙ। তেমন কেয়ার করিনি। বাট দেন হ্যাপেন দ্যা মিরাকল। ফাইনাল ইয়ারের এক ব্রিলিয়ান্ট গাই প্রপোসড মি। অ্যান্ড দেন, আই বিকেম স্টার ওভারনাইট। বোর লাগছে?
হেসে ফেললাম। বললাম
— না। এঞ্জয়িং।
— ওকে। এরপরে যেমনটা হয়, আমারও তেমনটাই হল। জীবনটা উড়ে উড়ে চলতে লাগল। প্রতীক যা করে, তাতেই মুগ্ধ হই। যা বলে তাই ভাল লাগে। উই স্লেপ্ট। অ্যান্ড দেন…উই ব্রোক।
— এনি থার্ড পারসন?
— নাহ। পলিটিক্স। ও দেখতে যেমন সুন্দর ছিল, তেমন সুন্দর বক্তাও। জিএস ইলেকশানে দাঁড়াল। জিতে গেল। এরপরে রাজনীতিতে এতোটাই সময় দিতে লাগল যে আমার জন্য আর ওর সময় ছিল না। সেই সময় রিফাতের সঙ্গে ক্লোজ হয়ে যাই। রিফাত ওয়াজ ক্লাসমেট।
— দেন কেম দ্যা রিউমার স্টোরি।
স্মিত হাসি। এটা সম্মতির।
— হ্যাঁ। আমরা বন্ধুই ছিলাম। বাট সেই রিউমার অ্যান্ড প্রতীকের সঙ্গে আমার রিলেশানের গল্প ছড়িয়ে গেলে রিফাতের দৃষ্টিও পাল্টে যায়। হি থট… আই অ্যাম আভেইলেবল। একদিন প্রপোজও করে। ওয়ান্টেড টু স্লিপ উইথ মি।
গল্প সিরিয়াস টার্ন নিতে শুরু করেছে। ওর মুখে স্মিত হাসি আর নেই। গম্ভীর, থমথমে একটা মুখ। ও বলে চলল
— অ্যান্ড দেয়ার এন্ড দ্যা স্টোরি অফ মাই সেকেন্ড রোমিও।
আমার দিকে এবার তাকাল। ঠোঁটে একটা হাসি, কিন্তু সেটায় একরাশ কষ্ট মেশানো।
— একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি?
মাথা দুদিকে নেড়ে বোঝাল, না।
— গল্পটা শেষ করি, তারপর।
মেনে নিলাম। বললাম
— ওকে। ক্যারি অন।
— এরপরে পুরো স্টুডেন্ট লাইফে আর কোন রিলেশানশিপ হয়নি। বেশ ভাল রেজাল্ট নিয়েই পাশ করলাম। মাস্টার্সে থাকতে বেশ ভাল কিছু প্রপোজালও আসল বিয়ের, বাট নাথিং ক্লিকড। বাবার একটু নাক উঁচু। সো যেসব পাত্র উনি সিলেক্ট করলেন, তাঁরা আবার আমাকে পছন্দ করল না। কিছু রিজেক্ট করল গায়ের রঙের জন্য, কিছু করল ক্যারেক্টারের জন্য। মাস্টার্সেও রেজাল্ট ভাল ছিল। সো, বেরিয়েই চাকরি পেয়ে গেলাম একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে। অ্যান্ড দেয়ার আই মেট শমিত। একই ডিপার্টমেন্টে। আমরা প্রায় সমবয়সী। একই সাথে চাকরি পেয়েছিলাম। একটু লাজুক টাইপ, বাট নাইস ওয়ান। বোর লাগছে?
— নাহ। চলুক।
— তো দ্যাট সাই গাই, লাইকড মি, বাট নেভার টোল্ড মি। হয়তো কোনদিন বলতোও না। একদিন আমিই প্রপোজ করলাম। উইথ অল মাই ডিটেলস।
— পালাতে হল কেন?
গরিব ফ্যামিলির, সো বাবা রাজি হবেন না জানতাম। ডিসাইড করি পালিয়ে বিয়ে করব। একদিন রাতে দুজন পালালাম। সিলেটে ওর এক বন্ধুর বাসায় উঠলাম। প্ল্যান ছিল পরের দিন বিয়ে করব। সব ঠিকঠাক করে রেখেছিল বন্ধুটা। এমন সময় সকালে খবর আসল, ওর বৃদ্ধ বাবাকে পুলিশে ধরে নিয়ে গেছে। ওর সেই অসহায় চেহারার দিকে তাকিয়ে আই চেঞ্জড মাই ডিসিশান।
— বাকীটা বোধহয় জানি।
নিবেদিতা আমার দিকে আড়চোখে তাকাল। আমি ওর দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে সামনের দিকে তাকালাম।
— এরপরে এক রাক্ষস এসে রাজকন্যাকে হরণ করে নিয়ে যায়। নিজের বন্দীশালায় বন্দী করে রাখে। একদিন সেই রাজপুত্র খোঁজ পায় কোথায় আছে সেই রাজকন্যা। এই তো?
— নাহ। রাজপুত্র প্রথম থেকেই জানত, রাজকন্যা কোথায় আছে। তাঁদের মধ্যে নিয়মিত কথাও হত। সমস্যা হয়ে গেল রাজকন্যাকে নিয়ে নিয়ে। রাজকন্যা রাক্ষসের প্রেমে পড়ে গেল। কিন্তু রাক্ষস পড়ল না। রাজকন্যাকে পছন্দ করে, তবে ভালোবাসে না। এমন সময় রাক্ষসের প্রথম বউ ফিরে আসল। রাক্ষস পড়ল না। সে পড়ল আরেক সমস্যায়। প্রথম বউকে সে ভালোবাসে। ওর কাছে ফিরে যেতেও চায়। কিন্তু পারছে না রাজকন্যার জন্য। রাক্ষস ভাবছে, এই কালো, ক্যারেক্টারলেস মেয়েকে যদি ছেড়ে দিই, তবে ওর কি হবে। তাই দয়া করে সে রাজকন্যার সাথে সংসার করতে লাগল।
নিবেদিতার দিকে তাকালাম। ওর মুখ থমথমে। আর কিছু বলবে কি না, বুঝতে পারছি না। নিজেই তাই জিজ্ঞেস করলাম
—এরপর?
— আজকে সেই তৃতীয় রাজপুত্র রাজকন্যাকে ফোন করেছিল।
এবার নিবেদিতা আমার চোখে চোখ রাখল। অ্যান্ড দেন, অল অফ অ্যা সাডেন দ্যা হোল স্টোরি টার্নড আপসাইড ডাউন।
— আমেরিকার এক ইউনিভার্সিটিতে ও একটা স্কলারশিপ পেয়েছে। হি ইজ অলসো কামিং টু আমেরিকা।
চলবে

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৫২

শুভ_ঢাকা বলেছেন: উই স্লেপ্ট। অ্যান্ড দেন…উই ব্রোক।........ওয়ান্টেড টু স্লিপ উইথ মি। .......হে হে হে বাংলাদেশ তো ভাই আমেরিকা হইয়া যাইতাছে। বাট দ্যাট ইজ আ ফ্যাক্ট। আমার বন্ধু বান্ধবের কাছ থেকে একিই ভাইবজ পাই। চালিয়ে যান। পড়ে মজাই পাচ্ছি।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৪৯

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হায়রে! আমেরিকায় যেয়ে তো আরো গন্ডোগোল বাঁধবে মনে হচ্ছে। দেয়ার ইজ নো এন্ড টু ইট!
অবশ্যই পরের পর্বের অপেক্ষায়.......

১৬ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৪৯

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.