নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আওয়ামী কেক ওয়াক? অর সামথিং ডিফ্রেন্ট?

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৩৯

এদেশের রাজনীতিতে দুটো ক্যাম্প ক্লিয়ার কাট। একদিকে আওয়ামী অ্যান্ড গং অন্যদিকে বিএনপি অ্যান্ড গং। দুই গংয়েই, রাজনৈতিক দলগুলোকে দুটো গ্রুপে ভাগ করা যায়। একটা হচ্ছে মূল দল। আর এটা ছাড়া যা আছে, তাঁরা দুধভাত টাইপ। স্পেশালি আওয়ামী ক্যাম্পে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর যারা আছে, তাঁরা থাকলেও চলে আবার না থাকলেও ক্ষতি নাই। এই ক্যাম্পের বাকী যারা আছেন, তাঁরা একটা পারপাসই সার্ভ করেন, আর তা হচ্ছে, অন্য গ্রুপে যাচ্ছে না।
ভোট কিছু যোগ করে কি না তা নিয়ে কিছু উপাত্ত আছে। যখন এঁরা জুটি ছিল না, তখন আওয়ামীরা বেশ কিছু এলাকায় অল্প ব্যাবধানে হেরেছিল আর এই দুধভাতদের ভোট যোগ করলে যোগফল বিজয়ী প্রার্থীর চেয়ে বেশি হত। এই ফর্মুলার কারণে, এরপর থেকে আওয়ামীরাও আর জোট ভাঙেনি। দুধভাত গ্রুপটাও এই সুযোগ দুহাত পেতে নেয়। তবে এই দুধভাতরা বেশি কাজে দেয়, জোট জোট ফিলিংস তৈরিতে। 'বহু মতের লোক দেশ রক্ষায় একসাথে হয়েছে’ টাইপ একটা ব্যাপার আর কি।
অন্যদিকে, দ্যাট ইজ, বিএনপি অ্যান্ড গঙয়ে, গঠনটা একটু ডিফ্রেন্ট। এখানে যথারীতি মূল দল বিএনপি। তবে বাকীদের ভেতরে একজন ছাড়া সবাই দুধভাত। আর সেই একজন হচ্ছে গ্রুপের সেকেন্ড বড় দল জামায়াত।। দুধভাত গ্রুপকে জোটে রাখার সুবিধা ঐ একই রকম। অন্য জোটে যাচ্ছে না অ্যান্ড ‘জোট জোট’ ফিলিংস। এদের মূল শক্তি, অ্যান্টি আওয়ামী ফিলিংস। আর ক্ষমতায় না থাকলে এক্সট্রা হিসেবে পায়, অ্যান্টি সরকারী ফিলিংস।
আর আছে কিছু মাঝামাঝি গ্রুপ। এই গ্রুপটা বেশ মজার। শুধু মজার না, বলা যায় পাজলিং। কখন কোন ক্যাম্পে যাবে, কোন ঠিক নেই। শুধু তা ই না, যে ক্যাম্পে আছে, সেই ক্যাম্পেই যে থাকবে, তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। রাজনীতির ভাষায় বললে বলা যায়, এদের অবস্থা বেশ ফ্লুয়িড।
এদের আরও কিছু স্পেশালিটি আছে। এঁরা তত্ত্ব খুব ভাল বোঝে। আর তত্ত্বে গরমিল হলেই এঁরা দল ভাঙ্গে। আর পরের দিনই মজার কোন তত্ত্ব আবিষ্কার করে, জোট বাঁধে। ফেসবুক, আর ব্লগে এঁরা দাপিয়ে বেড়ায়। কিন্তু দল হিসেবে নেহাত নগণ্য। দুধভাত কিসিমের দলগুলোর মতই এদের ভোটব্যাংক।
দেশের বর্তমান রাজনীতিতে, হঠাৎ করেই এঁরা লাইমলাইটে এসে গেছেন। এদের মূল যে অসুবিধা, সেটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে এদের আলোচনায় আসবার কারণ। এঁরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না, কোন ক্যাম্পে যাবেন। যদিও বলছেন, এঁরা কোন ক্যাম্পেই যাবেন না, আসলে এঁরা সেটাও করছেন না। এঁরা আসলে যা করছেন, তা হচ্ছে, কোন ক্যাম্পে গেলে সুবিধা বেশি, তাঁর হিসেব করছেন। এবং যথারীতি সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। আর তাই তাঁরা না বিএনপির দিকে ঘেঁষতে পারছে, না পারছে আওয়ামী ক্যাম্পে যেতে।

দেশ যখন পরবর্তী নির্বাচনের জন্য তৈরি হচ্ছে, তখন উদয় হয়েছে নতুন আরেক ক্যাম্পের, 'ঐক্য প্রক্রিয়া'। কেউ ডাকছেন, ‘যুক্তফ্রন্ট' কেউ ‘জিরো প্লাস জিরো’। এই ক্যাম্পে যারা আছেন, এক সময়ে এঁরা বড় নেতা ছিলেন। আবার এটাও ঠিক, এই মুহূর্তে উনারা ‘জিরো'। দুই বড় ক্যাম্প থেকে কোন না কোন সময়ে উনাদের ঘাড় ধাক্কা দেয়া হয়েছিল। সেই স্কোর সেটল করার একটা সম্ভাবনা উনারা দেখতে পাচ্ছেন।
যাই হোক, এমন ‘জিরো' টাইপ কয়েকজন নেতা মিলে শুরু করা এই চেষ্টা আদৌ কাজে দেবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও, বেনিফিট অফ ডাউট দিতে আগ্রহী লোকের সংখ্যাও কম না। স্পেশালি, ব্যাপারটা যখন আলোচনায় আসছে, পত্র পত্রিকা মাথা ঘামাতে শুরু করেছে, তখন অনেকেই উনাদের দিকে প্রত্যাশার দৃষ্টিতে তাকাচ্ছেন। আর শর্ত সাপেক্ষে সেটায় বিএনপিকে সেটায় যোগ সুযোগ দিয়ে উনারা যেভাবে বিএনপিকে ধন্য করেছেন, তাতে রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোড়ন তৈরি হয়। আলোড়ন আরও বেড়ে যায় যখন 'জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ’ শর্তে বিএনপি নিমরাজি হয়ে যায়।
কাহিনী অবশ্য এরপরে আর এগোয়নি। বিএনপি আদৌ ‘সম্পর্কচ্ছেদ’ করবে কি না তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা চলছে। এদিকে ঐক্য প্রক্রিয়া এক পা আগায় তো দু পা পেছায় অবস্থা। কখনও মাহি বি চৌধুরী দেড়শ আসন চান তো কখনও নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দল হয়। এরমধ্যে বিএনপি শর্ত ফর্ত মেনে জনসভা করে যখন দেখিয়ে দেয়, তাঁর জনবল এখনও আছে, তখন তাঁদের ভাষাও পাল্টে যায়। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখন বেশ ভোলাটাইল। বোঝা যাচ্ছে না, কাহিনী কোনদিকে গড়াবে।

যাইহোক, দেশের বর্তমান যা পরিস্থিতি, তাতে আর কিছুদিনের ভেতরেই ইলেকশান করতে হবে সরকারকে। বিএনপি ক্যাম্প চাইছে, নির্দলীয় একটা সরকারের অধীনে ঘটনাটা ঘটাতে। আর আওয়ামীরা চাইছে নিজেরা ক্ষমতায় থেকে কাজটা করতে। বাম ক্যাম্পের দাবীও বিএনপি ক্যাম্পের মত, তবে বিএনপির সাথে একসাথে, এক মঞ্চে এসে কথাটা বলা ওদের জন্য সমস্যার। সবাই তাঁদের অ্যান্টি আওয়ামী ভাববে। এতে তাঁদের আবার জাত যাবে।
এমন পরিস্থিতি এর আগেও তৈরি হয়েছিল। ২০১৪তে। তখনও সব বিরোধীরা এক প্ল্যাটফর্মে আসতে পারেনি। ফলে তখন আওয়ামী ক্যাম্প জিতেছিল। এবার? মিলিওন ডলার কোয়েসচেন। তবে আপাততঃ পাল্লা আওয়ামীদের দিকেই ঝুঁকে আছে।
আওয়ামীদের বেশ কিছু সুবিধা আছে। প্রথমতঃ ক্ষমতায় তাঁরা। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাঁদের হাতে। সংবিধান, তাঁদের ফেভারে। বিরোধী ক্যাম্পের ভগ্নদশা। বিএনপির নেতৃত্বের কিছু জেলে কিছু দেশান্তরে আর কিছু আওয়ামীদের সাথে লিয়াজো করে বাইরে। ফলে, আন্দোলন করে আওয়ামীদের বাধ্য করবার মত অবস্থায় বিএনপি নেই।
বামদের সেই অর্থে তেমন কোন চাওয়া পাওয়া নেই। ক্ষমতায় এঁরা কোনদিন যে যেতে পারবে না, তা এঁরা জানে। আর কোন দলের লেজ হিসেবে থাকলে যতটুকু সম্মান দেয়া হয়, ওদের ধারনা, দে ডিসারভ মোর। এতো অল্পে এদের জাত যায়। আত্মসম্মানে আঘাত লাগে। তাই সেভাবে থাকতেও এঁরা নারাজ।
জনগণের কাছেও যাবে না, ফিল্ডে কাজও করবে না কিন্তু রাজনৈতিক দল হিসেবে আবার সম্মান চাইবে। মাঝে মাঝে আন্দোলন করে। হরতালও ডাকে। তবে এদের দৌড় রামপাল আর বন্দর রক্ষা আন্দোলন পর্যন্ত। এদের নিয়ে মূল সমস্যা হয়, যখন ডিসাইসিভ কোন অবস্থান চাওয়া হয়, 'আইদার ওর’ সিচুয়েশান তৈরি হয়, তখন শুরু হয়ে যায় এদের গাইগুই।
আই গেস, কোনদিকে যদি ঘেঁষতেই হয়, তাহলে নীতিগত ভাবে এঁরা আওয়ামী ক্যাম্পে যাওয়ার ফেভারে। আর কোন এক বিচিত্র কারণে, এঁরা সেটা প্রকাশ্যে করে না। করে লুকিয়ে। আর বাইরে বাইরে এদের সার্বক্ষনিক অবস্থান হচ্ছে, বিএনপি ক্যাম্পের জন্য মুলা ঝুলিয়ে রাখা। 'আলোচনার দরজা খোলা', টাইপ। এখনও এঁরা সেটাই করছে।

এনিওয়ে, আবার ইলেকশানের সময় হাজির হয়েছে। কমবেশি সবাই অ্যান্টিসিপেট করতে শুরু করেছে, কি হয়। আওয়ামীদের দিকেও যেমন অনেকে নজর রেখেছে, বিএনপির দিক থেকেও কেউ দৃষ্টি সরায়নি। বিএনপির ব্যাপারে আসলে জানবার ব্যাপার ছিল দুটো। ইলেকশান করবে কি না, আর জামায়াতকে ছাড়বে কি না।
জামায়াতকে ছাড়বার ব্যাপারে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ চাপ বিএনপির ওপর ছিলই। এরপরেও বিএনপি রিজিড ছিল। বিএনপি ব্যাপারটাকে ডিভাইড অ্যান্ড রুল হিসেবেই দেখছিল। জোট ভাঙলে, বিএনপি আরও দুর্বল হয়ে যাবে, টাইপ একটা ব্যাপার হিসেবে দেখছে বিএনপি ক্যাম্প।
তবে আওয়ামীরা হাল ছাড়েনি। কখনও নিজেরা, কখনও তাঁবেদার বুদ্ধিজীবী, সবাইকে দিয়ে কটাক্ষ করার মাধ্যমে বিএনপিকে ঘায়েল করাই ছিল আওয়ামীদের ফর্মুলা। পরিস্থিতি বিএনপির জন্য বেশ প্রতিকূলই ছিল। বুদ্ধিজীবীবাহিনী মারফত বিভিন্নভাবে বোঝানো হচ্ছিল যে, ‘জামায়াত ছাড়’। এই কোরাসে সম্প্রতি গলা মিলিয়েছে ‘ঐক্য জোট’ আর বাম রা।

সামনের ইলেকশান কেমন হবে, আগামী কিছুদিন এসব অ্যানালাইসিসই চলবে। সব মিলিয়ে শক্তি কার বেশি, আর বিএনপি কিভাবে এই যুদ্ধে বিজয়ী হবে, তা নিয়ে বুদ্ধিদাতার সংখ্যাও যেমন দিন দিন বাড়ছে। তেমনি আওয়ামীদের কোন ভয় নেই, এমন নসিহত দেয়ার লোকও নেহাত কম না। সাম্প্রতিক বিভিন্ন আন্দোলন আওয়ামীরা যেভাবে সামলেছে, তাতে বিএনপি ক্যাম্প মোকাবেলা করা আওয়ামীদের জন্য কোন ব্যাপার না, এমন বক্তব্যেও একমত হচ্ছে অনেকে। আর তাই পত্রিকায় সবাই দুকলম লিখে কমবেশি সবাই নিজের বুদ্ধিমত্তার নজির রাখছেন।
বাট জনতা? কার কথা বিশ্বাস করছে? কথাটা কেউই হলফ করে বলতে পারবেন না। সবাই আসলে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আগামী কিছুদিনের ভেতরে কি হবে তা দেখার জন্য? হোয়াট ইজ রাইটিং অন দ্যা ওয়াল? আওয়ামীদের জন্য কেক ওয়াক? না সামথিং ডিফ্রেন্ট?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.