![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গব্বুদের বাড়িতে হুহুনানা বেড়াতে এসেছিলেন আজ থেকে সাত সপ্তাহ আগে। সে কি আনন্দ তার, যেন ধেই ধেই করে নাচে। গব্বুর মা বললেন ওরে তোর বড়নানা বেড়াতে এসেছেন কই বসতে দিবি তা না, তুই লোকটাকে নিয়ে কি কান্ড শুরু করেছিস রে? তোর এইসব হৈচৈ বাদ দিয়ে হাত পা ধুয়ে পড়তে বসগে।
হুহুনানা গব্বুদের বাড়িতে আসলেন সে অনেক বছর আগের কথা। তখন শহরের মধ্যে তুমুল মারামারি হানাহানি লেগে গিয়েছিল হুহুনানাকে দাওয়াত খাওয়ানোর প্রতিযোগীতায়।
হুহুনানা গব্বুর মায়ের বাবার ভাল বন্ধু। জাপানের মিলিটারিতে একসাথে জব করতেন। সেখান থেকেই ঘনিষ্টতা আর একসময় যখন গব্বুর নানা মারা গেলেন, তখন বিপদে আপদে হুহুনানাই এগিয়ে আসেন সবার আগে।
সে অনেক কথা। তো এবার নানা একটা মজার জিনিস শিখে এসেছেন। গব্বুর দুষ্টু বন্ধুরা প্রথমে নানাকে জোর করে ননিদের বাড়িতে নিয়ে গেলেও পরে প্রায় তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। মজার সেই জিনিসটা কি সেটা একমাত্র গব্বুই জানে। নানার কথাই শুনতে কেউ রাজি নয়।
নানা অদ্ভুত মন্ত্র পড়ে ফু দেন তার সাথে থাকা একটা বাক্সে। আর মন্ত্র পড়ার তালে ননি, ফকু, মনা দেওয়ালে মাথা ঠোকড়াতে শুরু করে। কেউবা পানিতে মাথা ডুবিয়ে মন্ত্র না শুনার জন্য অনেকক্ষণ বালতির মধ্যে ডুবন্ত থাকে। কেউ তড়িঘড়ি করে ঘরের যত সব বালিশ কাঁথা আছে সব দু কানে দিয়ে মন্ত্র না শোনার জন্য কসরত করে।
এই যখন ননি, মনা, ফকুর অবস্থা তখন গব্বু নানার ভাবশিষ্য হয়ে দু গালে হাত দিয়ে শুনে নানার বিড়বিড় করা মন্ত্র। "অয়ৈয় অ অউয়ৈ, অয়ৈয় অ অউয়ৈ, য়েমা য়ৈ ওৈ ঐয়ৈয় অ অউয়ৈ, য় অঅয়ৈ অউয়ৈ, ঐ ঐ ঐ"
নানা নাতির এই অদ্ভুততুড়ে কাজকারবার চলতে থাকে দিনের পর দিন। এর মধ্যে ফকু কোথা থেকে এটমবোমা একটা নিয়ে এসে নানার বসা চেয়ারের নিচে রেখে দিয়ে সটকে পড়েছিল। গব্বু পরের দিন সকালে সেটা আবিক্সার করে। আশ্চর্যের কথা হলো! গব্বুর নানার মন্ত্রের গুণে ঐ মিসাইল বোমাও ফ্রিজ হয়ে গিয়েছিল।
এরপরেরদিন ননি শুধু মরিচ দিয়ে ভাত, তরকারি, পরোটা গোসত বানিয়ে নানাকে খাইয়ে দিতে চেয়েছিল। ভ্যাগিস গব্বু সময়মত এসে হাজির, তাই এদিনও ননি বেচারী বিফল হয়ে ফিরেছিল।
ফকাও কি আর কম যায়? সে একটি হেলিকপ্টার ভাড়া করে নানার রুমের ওপর একটার পর একটা বোমা ফেলতে লাগল। আর বোমাগুলো টাপুস টুপুস করে নানার জাদুর বাক্সের পাশে ভুস করে বসে পড়ে। এভাবে ৭০টি বোমা ফেলার পর যখন আর একটা বোমাও অবশিষ্ট থাকল না, তখন ফকা বেচারা যেই পালাতে যাবে, অমনি হেলিকপ্টার বন্ধ হয়ে ঠিক ঘরের সামনে খাড়া হয়ে থাকল। এরপর ফকা-র সে কি কান্না। আকাশ থেকে নামতেই পারে না। এত উপর থেকে তাকে কে নামাবে। শেষমেষ বিমানবাহিনির আরেকটি হেলিকপ্টার এসে উদ্বার করে ফকা মিয়াকে। কিন্তু হেলিকপ্টার? নট নড়ন চড়ন। পাখা ছিড়বে তবু এক চুলও সরবে না।
আশপাশের মানুষেরা দলবেঁধে অপেক্ষা করতে লাগল গব্বুদের বাড়ির গেটে। হুহু নানা কখন বেরুবেন আর তারা চমৎকার কোন নতুন জিনিস দেখতে পাবে।
কিন্তু মাস হয়ে গেল, হুহু নানা সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত খালি মন্ত্রই পড়ে যান, আর গব্বুর সাথে নানান পরামর্শ করেন। টুকটাক কথাবার্তাও বলেন গব্বুর মা-বাবার সাথে। আর কাউকে বাড়িতে ঢুকতে তিনি দেন না। রাস্তায় অপেক্ষারত মানুষের সংখ্যা যখন এক কোটির কাছাকাছি হবে তখন একদিন বের হলেন হুহু নানা।
তার সামনে মরা শিমুল গাছ। তিনি বের হয়ে গাল ফুলিয়ে ফুলিয়ে হাসতে হাসতে মন্ত্র পাঠ করলেন- "অয়ৈয় অ অউয়ৈ, অয়ৈয় অ অউয়ৈ, য়েমা য়ৈ ওৈ ঐয়ৈয় অ অউয়ৈ, য় অঅয়ৈ অউয়ৈ, ঐ ঐ ঐ.
সাথে সাথে গাছটা একটু নড়ে ওঠল।
সবাই একসাথে বলে ওঠল "অয়ৈয় অ অউয়ৈ, অয়ৈয় অ অউয়ৈ, য়েমা য়ৈ ওৈ ঐয়ৈয় অ অউয়ৈ, য় অঅয়ৈ অউয়ৈ, ঐ ঐ ঐ"।
গাছটাও বলে ওঠল- "অয়ৈয় অ অউয়ৈ, অয়ৈয় অ অউয়ৈ, য়েমা য়ৈ ওৈ ঐয়ৈয় অ অউয়ৈ, য় অঅয়ৈ অউয়ৈ, ঐ ঐ ঐ"।
এইভাবে বেশ কিছুক্ষণ পর দেখা গেল গাছটায় কচি পাতা গজাচ্ছে। সবাই মিলে যখন এইভাবে মন্ত্র আওড়াচ্ছে তখন ফকা একটা মাঝারি সাইজের গাছ নিয়ে বিশালকারের লাঠি বানিয়ে হুহুনানাকে মাথার ওপর বাড়ি দিতে তেড়ে আসল তখন নানা হাত দিয়ে সেই গাছ আটকে বললেন- "অয়ৈয় অ অউয়ৈ, অয়ৈয় অ অউয়ৈ, য়েমা য়ৈ ওৈ ঐয়ৈয় অ অউয়ৈ, য় অঅয়ৈ অউয়ৈ, ঐ ঐ ঐ"
সাথে সাথে সেই গাছ ফকার পিছে বাড়ি দিয়ে সোজা হয়ে মাটিতে গেঁতে গেল। পাশে দাঁড়ানো ননি আর মনাকেও দিড়িম দিড়িম করে ঘা লাগাল।
এরপর সবাই হা করে তাকিয়ে দেখল মাঝারি সাইজের গাছও মুখ খুলে বলছে- "অয়ৈয় অ অউয়ৈ, অয়ৈয় অ অউয়ৈ, য়েমা য়ৈ ওৈ ঐয়ৈয় অ অউয়ৈ, য় অঅয়ৈ অউয়ৈ, ঐ ঐ ঐ"।
আর তার গায়ে কচি সবুজ পাতা জন্মাতে শুরু করল।
হুহুনানা এককোটি লোককে নিয়ে দেশজুড়ে ঘুরতে বেরুলেন। দেশের সব মরা গাছকে তাঁরা- "অয়ৈয় অ অউয়ৈ, অয়ৈয় অ অউয়ৈ, য়েমা য়ৈ ওৈ ঐয়ৈয় অ অউয়ৈ, য় অঅয়ৈ অউয়ৈ, ঐ ঐ ঐ" পড়ে পড়ে সজাগ করে তুলতে লাগলেন।
দুষ্টু বন্ধুরা মুখ চুন করে তাকে গালমন্দ করলেও গব্বু মহা উৎসাহে হুহুনানার সাথে ঘুরে বেড়াতে লাগল। আর সবুজে সবুজে ভরে ওঠল সারা দেশের মরা গাছ। এমনকি বিল্ডিংগুলোও সবুজ কুঁড়ি বের করে হাসতে লাগল।
২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১২
গব্বু বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ রইল।
২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৪
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: গল্পটা ভালই লাগলো ।
২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৫২
গব্বু বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ রইল।
৩| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:১৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
ব্লগে শিশু নেই; ফলে, পাঠক পাওয়া মুশকিল হবে।
২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২৭
গব্বু বলেছেন: লেখার জন্য চেষ্টা করছি ভাই।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১৯
কঙ্কাবতী রাজকন্যা বলেছেন: খুব সুন্দর সবুজ কুঁড়ির গল্প।