নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সন্যাসীর স্বপ্ন

শিক্ষা যেখানে অসম্পূর্ণ, জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

সন্যাসী

পরিবর্তন চাই- আপদমস্তক পরিবর্তন চাই। কুঠারাঘাত দিয়ে হলেও ভাঙতে চাই স্থবিরতার শৃঙ্খল।।

সন্যাসী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবান্তর(!?) ভাবনা অথবা আষাঢ়ে চিন্তা

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:০৯





ব্লগজগতে এসে আমাকে যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে তা তারুণ্য। (বয়সভিত্তিক তারুণ্য নয়, চেতনায় তারুণ্য)। তারুণ্যের অফুরন্ত জোয়ার ব্লগ। বিভিন্ন ইস্যুতে ব্লগে যেভাবে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে, দ্বিতীয় কোন মাধ্যমে বোধ হয় সেরকম আর ওঠে না। এর প্রধান কারণ তারুণ্য। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যু থেকে শুরু করে সরকার বা বিরোধীদলের কোন কার্য বা মন্তব্য যা আমাদের দেশের জন্য ক্ষতিকর বা অমর্যাদাকর বলে বিবেচিত হতে পারে, সেধরণের ইস্যুতে ব্লগে যে পরিমাণ সমালোচনা ও পোস্ট দেখা যায় তা আমাকে মুগ্ধ করে। আমি এই ভেবে আবেগী হয়ে যাই যে আমাদের দেশে দেশকে নিয়ে ভাবার মত এখনো অনেক মানুষ আছে, ভাল লাগায় আমার মনটা ভরে যায়। চেতনায় লালিত তারুণ্যই যে এর প্রধান কারণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।



পরক্ষণেই হতাশ হয়ে যাই যখন দেখি যারা চেতনায় তারুণ্যকে লালন করছে এবং বিভিন্ন ইস্যুতে দেশের পক্ষে কথা বলছে তারা ক্ষমতাহীন। তাদের সমালোচনাকে তখন বাগাড়ম্বর বলে বোধ হয়। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে- "অসারের তর্জন-গর্জনই সার"। কিন্তু আমি তারুণ্যকে কিছুতেই অসার বলতে পারি না। আমাদের ভাষা আন্দোলন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ অনেককিছুকেই আমি অসারের তর্জন-গর্জন বলতে পারি না। নেতৃত্ব যে বা যারাই দিয়ে থাকুক দেশের প্রয়োজনে তরুণরাই যে অস্ত্রের মুখে, মৃত্যুর মুখে ঝাপিয়ে পড়েছে তা অনস্বীকার্য। তাহলে কেন আমরা আজ অসার হয়ে পড়ে আছি? কেন আমরা যারা তারুণ্যের জয়গান গাই তারা আজ কেবলই তর্জন-গর্জন দিয়েই আমাদের কাজ শেষ বলে হতাশ হয়ে ঝিমাই?



এর প্রধান কারণ আমরা ক্ষমতাহীন। আমাদের ক্ষমতা থাকলে আমরা কেবল তর্জন-গর্জন করে থেমে থাকতাম না। আমরা আমাদের দাবী আদায়ে রাস্তায় নামতাম যেমনটি করেছে আমাদের পূর্বাপররা। আজ আমরা তা পারি না বা ভয় পাই তেমনটি করতে।



আমাদের দেশের বেশিরভাগ ছাত্র ও যুবসমাজ, যারা দেশের যেকোন প্রয়োজনে ন্যায় ও সত্যের পথে অগ্রগামী ছিল তারা আজ আর তরুণ নেই। তাদের চেতনায় লোভ নামক এক ভয়ংকর বার্ধক্য-ব্যাধি প্রবেশ করেছে। তাদেরকে লোভ দেখিয়ে দেখিয়ে বিভিন্ন দল বিভিন্নভাগে ভাগ করিয়ে রেখেছে। সবচেয়ে বড় যে লোভটি দেখানো হয়েছে তা টাকা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের (যার অপর নাম আসলে টাকা-ই), দ্বিতীয়ত পরকালের। লোভ নামক এই ব্যাধিটি আমাদের তরুণ সমাজকে সবধরণের প্রোডাক্টিভ কাজ থেকে বিরত রাখছে। আমি বা আপনারা যারা ব্লগ কিংবা ফেসবুকে এখনো দেশকে নিয়ে মেতে উঠি তারা হয়তো এখনো লোভে পড়িনি কিংবা নিজস্ব কিছু শিক্ষা দিয়ে বুঝতে শিখেছি যে লোভ মানুষের মনুষ্যত্বের নাশ ঘটায়।



তাহলে দেশের তরুণ সমাজকে দু'ভাগে ভাগ করা যায়।

১. বয়সে তরুণ কিন্তু চেতনায় বার্ধক্য: যাদের ক্ষমতা আছে কিন্তু দেশের জন্য ভাবার বা কিছু করার মত ইচ্ছা, আবেগ বা চেষ্টা নেই। এরা দেশের বা দেশের মানুষের ক্ষতি করেই নিজেদের উন্নতি করে।

২. চেতনায় তরুণ: যারা দেশকে নিয়ে ভাবে কিন্তু কিছু করার ক্ষমতা নেই। ক্ষমতা না থাকায় এদের প্রধান কাজই হয়ে দাঁড়াচ্ছে সমালোচনা। সমালোচনা করতে করতে এরা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে যে বর্তমানে ভাল-মন্দ সবকিছুরই সমালোচনা করা এদের প্রধান এবং একমাত্র কাজ। এদের কাছে সরকারের সকল কাজই সমালোচনার বস্তু।



এবার বলুন- তাহলে দেশের জন্য কাজ করবে কে?



যেহেতু আমরা একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে বাস করছি তাই এদেশের তরুণদের প্রধান কাজ হওয়া উচিত ছিল শিক্ষা। স্বাধীনতার পর অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে আজ আমরা যে গণতান্ত্রিক অবস্থানে পৌঁছেছি তাতে আমাদের দেশে এখনো ছাত্ররাজনীতি থাকার যৌক্তিক কারণ নেই বললেই চলে (একই সাথে শিক্ষক রাজনীতিও)। তবুও আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো একে টিকিয়ে রেখেছে তাদের নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য। রাজনীতিবিদরা নিজেদের প্রয়োজনে ছাত্রদের হাতে কলমের পরিবর্তে তুলে দেয় অস্ত্র। ছাত্ররাও অল্প ক'দিনের লাভে ও লোভে হয়ে যায় রাজনীতিবিদদের গোলাম। এভাবেই অস্ত্রবাজ ছাত্রনেতারা একসময় হয় রাজনীতিবিদ। এই ধারাই চলতে থাকবে।



--------------------------------



আপনারা যারা এখনো চেতনায় তরুণ আছেন তারা কি দেশের জন্য সত্যিকারের কিছু করতে পারেন না? দেশের এই নষ্ট ধারা বা দুষ্ট চক্রকে নস্যাৎ করার জন্য যদি সত্যিই কিছু করতে চান তাহলে প্রয়োজন ক্ষমতা। ক্ষমতার একমাত্র হাতিয়ার রাজনীতি। সমালোচনা দিয়ে কোন পরিবর্তন সম্ভব নয়। পরিবর্তনের জন্য নিজের হাতে হাতিয়ার তুলে নেয়া আবশ্যক।



যারা এখনো দেশের জন্য ভাবেন তাদের বেশিরভাগই রাজনীতিতে একেবারেই অক্রিয়। সুশীল সেজে যারা দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেন তাদেরকেই নামিয়ে আনুন রাজনীতিতে। তাদের হাতে ক্ষমতা দেয়ার ব্যবস্থা করুন, নিজেদের হাতেও ক্ষমতা নেন। নিজেদের ইচ্ছেমত দেশকে গড়তে সুস্থ রাজনীতির বিকল্প নেই, এটা মানতেই হবে।



আমাদের দেশের তরুণ সমাজকে বিভ্রান্তির পথ থেকে সরিয়ে সহজ স্বাভাবিক পথে আনতে তৃতীয় কোন রাজনৈতিক শক্তির বিকল্প নেই। আপনারা কি সেই তৃতীয় শক্তি হতে পারেন না? আমি মনে করি আমরা তরুণরা তা পারি। এর জন্য দরকার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন। আমি মনে করি একবার অন্তত আমাদের ডাক দিয়ে দেখা উচিত। সারা দেশ জুড়ে প্রতিটি জেলায় জেলায় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইয়্যুথ কনফারেন্স বা এরকম কিছু আয়োজন করে একটা ন্যাশনাল কনফারেন্স আয়োজন করা যায়। চেতনায় যাদের তারুণ্য রয়েছে, যারা এখনো বর্তমান রাজনৈতিক কলুষতায় কলুষিত হননি সেরকম বয়েসী বুদ্ধিজীবি বা রাজনীতিবিদদের দলে ভেড়ানো প্রয়োজন। সবকিছুর জন্য প্রয়োজন একটি বিশাল কর্মপরিকল্পনা। তারপর তার বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন কিছু নিবেদিতপ্রাণ মানুষ। অসম্ভব নয় বলে মনে করি।



তারুণ্যের সাথে বার্ধক্যের লড়াইয়ে তারুণ্যের জয় অবশ্যম্ভাবী। রাজনীতির ক্ষেত্রে অবশ্য বেশ ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষও বটে।



ওরে তরুণ, ওরে অরুণ, ওরে আমার কাঁচা

আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +১১/-১

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:২২

মিটুলঅনুসন্ধানি বলেছেন: পুরোটাই উপহাস দাদা....

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৩৩

সন্যাসী বলেছেন: ভাই, এ কেবলই আষাঢ়ে চিন্তা....

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:২৪

বাদ দেন বলেছেন: ছাত্ররাজনীতি থাকার যৌক্তিক কারণ নেই

একমত নই

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৩১

সন্যাসী বলেছেন: ছাত্ররা রাজনীতি না করলেই বরং জাতীয় কোন ইস্যুতে একত্রিত হতে পারত। বর্তমানে যে কোন ইস্যুতেই তো বিভাজন। গাড়ি ভাঙা বা পরীক্ষা বন্ধ এ জাতীয় ইস্যুতেই কেবল তাদের একমত দেখা যায়। দেশের কোন ইস্যুতে দেখা যায় না।

৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৩১

কালপুরুষ বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৩৫

সন্যাসী বলেছেন: কালপুরুষদা, এ আমার অবান্তর ভাবনা। ভাল-মন্দর বিষয় নয়। ভাল থাকবেন।

৪| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৩৩

সাজজ্াদ রানা বলেছেন: ছাত্র রাজনীতি বিলুপ্ত করার চেয়ে , ছাত্র রাজনীতি সংশোধন করাই বোধহয় দেশের জন্য অপেক্ষাকৃত ভাল।
বাংলাদেশে যতদিন না মানুষ সুশিক্ষিত হচ্ছে ততদিন প্রথাগত শক্তিশালি দলগুলোর বাইরে থেকে ক্ষমতা অর্জন কতখানি সম্ভব ভেবে দেখার বিষয়।

৫| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৪৯

নিহন বলেছেন: +

৬| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৫১

অরণ্যদেব বলেছেন: চেতনা কথাডা শুনলেই ডর্ল্লাগে :( । চেতনার খেতা পুইরা আর কিচু থাক্লে দেন দাদা।
ছাত্র রাজনীতি লৈয়া সুশীল সাজেন ক্যা? সুশীলগো ভেক ছাইরা রাস্তায় নামেন। দেক্পেন সব চেতনা ঐখানে গড়াগড়ি যাইতেছে =p~
তয় পুষ্ট ভালৈছে।

৭| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ২:৫৪

ভীম-রুল বলেছেন: ভালো লিখেছেন। আমি ইতিবাচক মানুষ।

ছাত্র রাজনীতি অন্তত পরীক্ষামুলক ভাবে হলেও ৫-১০ বছর পুরো বন্ধ করে দেখা দরকার। তবে তৃতীয় ধারা সৃষ্টি তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক কোন দিক দিয়েই সমর্থন করি ন। আমাদের বরং ধারা গুলোকেই রিশেপিং করতে হবে, তাদেরকে টেনে নিয়ে যেতে হবে কাঙ্খিত দিকে। নেতারা দলকে টেনে নিয়ে যায়, সমর্থকরা সেই দিকে যায়। কাজেই সৃষ্টির চেয়ে বিবর্তনে আমি জোর দিতে চাই।

৮| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ ভোর ৪:২৭

অনন্ত দিগন্ত বলেছেন: ঘুনে ধরা সমাজ ব্যাবস্হা, অনিয়মই যেখানে নিয়ম হিসেবে বিবেচিত , সেখানে চেতনা আর মুল্যবোধের অবস্হানই বা কোথায় ?

৯| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:৩১

শয়তান বলেছেন: নেতৃত্ত্ব নিয়ে হতাশার কিছু নেই । এটা আসবে হটাত করেই । আটঘাট বেধে করা প্ল্যান প্রোগ্রাম থেকে সৃষ্ট নেতৃত্ত্বের উপর বিশ্বাষ নেই আমার ।

১০| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:২৪

ছাইরাছ হেলাল বলেছেন:

নেতা ও নেতৃত্বর ব্যাপারটা আমাদের এখানে বেশ গোলমেলে, ক্ষানিকটা ধোয়াটেও বটে।

আপনার লেখা পড়ি ।

ধন্যবাদ ।

১১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৩১

হানিফ রাশেদীন বলেছেন: ছাত্র রাজনীতি খারাফ বলে একে ''না'' বলা যায় না। এর প্রয়োজনিয়তা আমরা জানি, সর্বত্রই। ছাত্র রাজনীতি নষ্টের মূল কারণ মেইনষ্ট্রিমের রাজনীতি, জানা আমাদের। তো, এখন আসল কথা হচ্ছে প্রচলিত যে-রাজনীতি আমাদের, এখানেই গলদ আছে। আর এর থেকে বের হতে এর মধ্য দিয়েই আমাদেরকে নতুন বা ভিন্ন প্লাটফর্ম তৈরি করতে হবে।

আপনার লেখাটি, সন্যাসি ভাই, খুবই আবেগপ্রবণ একটি লেখা, কোথাও কোথাও আমার মনে হয়েছে, অনেক অনেক দিন ধরে বুকে পহাড়-সমান পাথড় চাপা কষ্টের কথা লিখেছেন হৃদয় নাঙ্গড়ানো রক্তের ফোটায় ফোটায়। লেখাটিতে আপনার যে-মানস চিত্র ফুটে উঠে এর জন্যে আপনার প্রতি অনেক শ্রদ্ধা রইলো। তবে দুঃখ ও লজ্জার বিষয় হলো যে, যারা জগৎ উদ্ধার করে, এরপরও তাদের বোধদয় হয় না।

১২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:৪৯

সহৃদয় বলেছেন: তাদের বেশিরভাগই রাজনীতিতে একেবারেই অক্রিয়......

koments ta muchhe deben please.......

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১২:০৪

সন্যাসী বলেছেন: নিস্ক্রিয় হবে। মাঝে মাঝে শব্দ খুজে পাই না। প্রায়ই এই সমস্যা হয় আমার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.