নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
The inspiration you seek is already within you. Be silent and listen. (Mawlana Rumi)
চাকরিসূত্রে আব্বা থাকতেন নারায়ণগঞ্জে। আমরা স্বপরিবারে কুমিল্লায়। প্রতি মাসে মাসে তিনি বাড়ি আসতেন। ছোট বেলায় আব্বা মানে ছিল আদরের খনি, টাকার বস্তা আর আবদার সস্তা। খুব রেগে গেলে মাঝে মধ্যে মারতেন না তা কিন্তু না। তবু আম্মার তুলনায় আব্বাকে ফাঁকি দেয়া ছিল অনেক সহজ।
ডিসেম্বর এলেই আব্বার কাছে বেড়াতে যেতাম। আম্মা বাড়ি থেকে প্রতিমাসের জন্য মাছ সহ নানা কিছু কিনে দিতেন আব্বাকে। ২ হাজারের বন্যা হবে বোধহয়। আমি বায়না ধরলাম আব্বার সাথে ঢাকায় (নারায়ণগঞ্জকে তখন ঢাকাই ভাবতাম) যাব। আব্বা নিতে চাইলেও আম্মার চোখ রাঙানিতে তা আর সম্ভব হলো না। আমি কাঁদতে কাঁদতে আকাশের দিকে চেয়ে উড়ো গালাগাল করলাম।
সকালে আব্বা গেছেন। এরপর থেকে মন খারাপ। দুপুরে খাইনি। কারো সাথে কথাও বলিনি। তখন বিকাল। হঠৎ দেখি আব্বা। আমাকে হাসি দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন।সত্যি সত্যি টেনে নিয়ে তার সঙ্গে নিয়ে যাওয়া ভাজা মাছ দিয়ে খাওয়াতে বসালেন। আম্মা প্রচণ্ড রাগ করলেন। নির্বিকার আব্বা খালি হাসলেন। আমার মলিন মুখ সহ্য করতে পারেননি তিনি।তাই মাঝ পথ থেকে ফিরে এসেছেন। পরদিন আমাকে নিয়ে ‘ঢাকায়’ রওয়ানা দিলেন। আমি খুশী। এখন বুঝতে পারি আম্মাও কম খুশী হননি সেদিন।
আমি এখন কত্ত বড় হয়ে গেছি। থাকি মরু শহর ঢাকায়।আর আব্বা ছোট হতে হতে একেবারে শিশু। গত ১৫দিন ধরে আব্বার শরীর খারাপ। আম্মা ফোন দিয়েছেন বার কয়েক। কাজের ব্যস্ততা দেখিয়ে সেই আব্বাকে দেখতে যাওয়া হয়নি। ওহ, আমাকে ছাড়াই তুমি আমার সাদা-সরল আব্বাকে ভাল রেখ খোদা। আব্বা আপনার জন্য সেই ছোট্ট মিতুর ভালোবাসা…
©somewhere in net ltd.