নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
The inspiration you seek is already within you. Be silent and listen. (Mawlana Rumi)
সম্প্রতি ফেসবুকে একজন সিনিয়র টিভি সাংবাদিককে দেখা গেল স্ট্যামফোর্ডের সাংবাদিকতা বিভাগের মান নয়ে নিয়ে প্রশ্ন তুলতে। সাংবাদিকতায় দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া এ সাংবাদিকের ক্ষোভের কারণটা কোনভাবেই অযৌক্তিক না, বরং আমলযোগ্য। দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতায় স্নাতক করা, পরে বিদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পড়তে এসে আমার মনে হয়েছে আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার আশু সংস্কার জরুরি, খুব জরুরি ভিত্তিতে জরুরি। এই সাংবাদিক নেতার ক্ষোভের জায়গাটা ছিল সাংবাদিকতায় পড়া একটা ছেলে সাংবাদিকতা জ্ঞান বিষয়ে। তার প্রশ্ন ছিল কেন সাংবাদিকতায় স্নাতক পাশ করার পরও একটা ছেলে এ বিষয়ে ভালো জানবে না, ব্যাসিকগুলো অন্যদের চেয়ে ভালো হবে না। তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন শিক্ষকদের শিক্ষকতা যোগ্যতা নিয়েও।
কথা হচ্ছে, একা স্ট্যামফোর্ডকে দোষ দিয়ে কী হবে! আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাটাইতো এমন। অ্যাসাইনমেন্ট, মিডটার্ম, ফাইনাল আর ফাইনালে সময় শেষ। পাবলিকের কিছু ছেলে ইউনি করেসপন্ডেন্ট হয়ে, ফিচার পাতায় টুকটাক লেখে, কিছুটা শেখে (আমার অভিজ্ঞতা)। অবশ্য শেখার চেয়ে বেশি ঔদ্ধত্য দেখায়। আমি কী হনুরে টাইপ। প্রাইভেটেরগুলা এই সুযোগটাও পায় না। একটা ছেলে অনার্স, মাস্টার্স পাশ করে কিন্তু রিসার্চ জিনিসটা কি তাই জানে না! আসলে শেখানো হয় না, বা আমাদের উচ্চশিক্ষা কারিকুলামে রিসার্চ ব্যাপারটাকে নাই করে দেওয়া হয়েছে। কেন এমনটা করা হয়েছে, এটা আমার কাছে একটা বিশাল প্রশ্ন ও রহস্য। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা একদমই তত্ত্বভিত্তিক, মুখস্থ বিদ্যা। প্রায়োগিকের সুযোগ রাখা হয়নি। এমনকি কেউ নিজে আগ্রহী হলেও, সে চর্চার ব্যবস্থা নেই।
উন্নতমানের শিক্ষায় সিঙ্গাপুর বিশ্বের সেরা, ইউরোপের চেয়ে এশিয়া এগিয়ে
আসল কথা হচ্ছে, জার্নালিজম পড়বে বলেই জার্নালিজম/কমিউনিকেশন/মিডিয়া সাবজেক্টটা বেছে নেয় এমন ছেলে-মেয়ের সংখ্যা বাংলাদেশে নেই বললেই চলে। সবাই বাই চয়েস সাবজেক্ট মানে আগেরটা পায় না বলে এটা নেয়। এক্ষেত্রে এমনও ছেলে পড়তে আসে যে বাংলাটা লেখতেও জানে না। প্যাশন একটা বড় ব্যাপার, আমি আমার ডেপ্টে এমন কাউকে দেখেনি, জার্নালিস্ট বা মিডিয়া প্রফেশনালিস্ট হবে বলে সে এই সাবজেক্টে পড়তে এসেছে।
শিক্ষার সার্বিক মান যা, শিক্ষকদের মানও তাই হবে। আর শিক্ষকরা শিক্ষার্থীর জ্ঞান চর্চা দেখে খুশি হতে পারেন না বা অ্যাপ্রিশিয়েট করেন না। আমার মনে হয় এটা তারা করতে চান না এজন্য যে এতে তাদেরও অস্বস্তিতে পড়তে হয়। আর একটা কারণ হতে পারে জাতি হিসেবে আমাদের পরশ্রীকাতর মানসিকতা।
আমার মনে হয়, এই অঙ্গনে আমূল পরিবর্তন দরকার। সিঙ্গাপুর, চীন, হংকং, কোরিয়া, জাপান, ভারত (শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে এসব দেশ এখন পশ্চিমাদেরও ছাড়িয়ে যাচ্ছে), এসব দেশ থেকে আমাদের কর্তারা শিখে যদি এটা আমাদের দেশে প্রয়োগ করতেন তাহলে সময়ের ব্যবধানে ফলও আসত। সিঙ্গাপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচি আমাদের কাছে রুপকথার গল্পের মতো মনে হবে। কিন্তু এটা করার আগ্রহ বা সদিচ্ছা কারো আছে বলে মনে হয় না। করতে গেলে টাকা খরচ করা লাগবে, টাকা খরচ করতে গেলে হয়তো কারো ব্যক্তিগত পকেটে যাওয়া ভাগে টান পড়বে। সুতরাং দিল্লী বহুত দূর। যদি কেউ বলতে চায়, এসব দেশ আমাদের থেকে খুব উন্নত, বড়। তাদের সাথে আমাদের তুলনা চলে না। তাহলে অন্য উদাহরণ আছে, আমরা বরং শ্রিলংকা, পাকিস্তান, মিশর, ভিয়েতনাম বা আফ্রিকার গাম্বিয়া, কেনিয়ার মতো দেশগুলো থেকে ঘুরে আসতে পারি। দেখব তারা কিভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। উচ্চশিক্ষায় কেন তারা আমাদের থেকে এগিয়ে, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের ইংরেজি জ্ঞান কেন আমাদের চেয়ে ভালো। (একটা দেশের শিক্ষাপদ্ধতি গ্রহণ করার জন্য সে দেশের মতো ধনী বা বড় আয়তনের হওয়াটা কোন বিষয় না, বিষয় হচ্ছে গ্রহণ করার ইচ্ছাটা থাকা। এক্ষেত্রে, সিঙ্গাপুর-কোরিয়া-চীনতো এখন পশ্চিমাদের কাছেই অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে।)
পশ্চিমারা যদি নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে সিঙ্গাপুরের শিক্ষা পদ্ধতিকে অনুসরণ করতে পারে, শিক্ষায় সিঙ্গাপুরের সাফল্য নিয়ে গবেষণা শুরু করতে পারে তাহলে আমাদের সমস্যাটা কোথায়! মানসিকতায় নাকি অন্য কোথাও?
তবে আমি আশাবাদী। এমনকি এ খাত নিয়ে যাই পারি না কেন কাজ করার স্বপ্নও দেখি।
IISc becomes first Indian university to be ranked among top 10 in world
১২ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩০
সরোজ মেহেদী বলেছেন: চাঁদগাজী ভাই শহীদ না হয়ে যাওয়া পর্যন্ত আমরা এ আশা করতেই পারি। পরিবর্তন আসুক সর্বত্র।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: সবাই বাই চয়েস সাবজেক্ট মানে আগেরটা পায় না বলে এটা নেয়। এক্ষেত্রে এমনও ছেলে পড়তে আসে যে বাংলাটা লেখতেও জানে না। -- এমনটা হলে সে ছাত্র পরবর্তীতে তার পেশার প্রতি আর কতটুকুই বা কমিটেড থাকবে!
জরুরী ভিত্তিতে দেশের শিক্ষা কার্যক্রমে পরিবর্তন আনা দরকার, এটা সবাই বুঝলেও আগ্রহের অভাব, কারণ দেশের হর্তা কর্তাদের সু(?)সন্তানেরা দেশে পড়েনা।
আমাদের চাঁদগাজী সাহেব যদি কোনদিন দেশের শিক্ষা মন্ত্রী হন, তবেই আশাকরি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন দেখতে পাবো!!