নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
The inspiration you seek is already within you. Be silent and listen. (Mawlana Rumi)
সব বিবেচনায় খুব সাধারণ এ ছবিটার সাথে মিশে আছে অসাধারণ এক স্বাদ আর শ্বাশ্বত আবেগ। এই লেখাটা লিখছি মধ্যরাতে। একটা মোহময় ঘ্রাণে আবদ্ধ নাক আর ঝালে হুহা করা মুখের অনুভূতির যে সমন্বয় কিবোর্ডে হচ্ছে, তা হচ্ছে এ কথা বলতে যে আবার ৮ মাস তিনদিন পরে। ঠিক আট মাস তিনদিন পর পেটে গেল বাংলাদেশী খাবার! বহুদিন পর হঠাৎ একবার খাই বলেই হয়তো স্বাদ এমনিতেই বহুগুণ বেড়ে যায়। তবে এবারের রান্নাটাও অসাধারণ ছিল। শুরুতেই রাঁধুনী ম্যাডামকে ধন্যবাদ না দিলে লেখাটা অপূর্ণ থেকে যায়।
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় বেশ কয়েকজন বাঙালি গিয়েছিলাম একটা কাজে। কিছুটা চাপ, কারো মন খারাপ আর কারো মন ভালো এই নিয়ে আর ক’টা সন্ধ্যার মতো নিয়ম মেনে অতীত হওয়ার কথা ছিল ২৭ মার্চ সন্ধ্যাটিও। কিন্ত তা রুপ নিল এক পার্টিতে, তুমুল আড্ডা আর গানে। আসলে রুপ দিলেন মাহমুদ স্যার। জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান। এখানে এসেছেন পিএইচডি করতে, আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সারাদিনের ক্লান্তি ঝেরে ফেলে সন্ধ্যায় আমরা ক’জন গেলাম স্যারের বাসায়। গিয়ে দেখি চায়ের দাওয়াত দিয়ে পুরো চকবাজারের এলাহি কারবার। সিমের বিচী দিয়ে ভর্তা করেছেন, সাথে আছে সবজি ও ভাজি। মুরগি বা মাছের সাথে আছে ডালও। সবকিছুতেই দেশের স্বাদ, দেশী ভাষায় কথা ফাকেঁ ফাঁকে দেশী মানুষদের সাথে বসে খাওয়া। আহা, জীবন কখনো কখনো এত সুন্দর হয়ে যায় কেন! বিদেশে বসে বাংলাদেশের এতগুলো খাবার একসাথে যোগারযন্তু করা খুব সহজ কাজ না। বিশেষ করে তুরস্কের মতো দেশে, যেখানে বাংলাদেশের কোনকিছুই পাওয়া যায় না। এগুলো করতে গেলে কতটা ঝামেলা পুহাতে হয় আমরা যারা ব্যাচেলর তারাও বুঝি। তবু বিবাহিতদের, বা পরিবার নিয়ে থাকেন এমন পরিচিতজনদের বাসায় মাঝেমধ্যে হানা দেই একবেলা দেশী খাবার খাব বলে। খেতে খেতে বলব বলে, অসাধারণ। আহা আবার কবে যে খাব। সত্যিই অসাধারণ। অসাধারণ। ধন্যবাদ। অনেক ধন্যবাদ। ধন্যবাদ।
কাঠাল না সিম দিয়ে বানানো ভর্তা তা বুঝার উপায় ছিল না। আমরা ভেবেছিলাম কাঠালের। স্যারকেও বললাম, কতদিন পর কাঠালের বিচীর ভর্তা খাচ্ছি। স্যার হাসি দিয়ে বললেন কাঠাল না সিম (তুর্কিশ সিম আমাদের সিম থেকে স্বাদে একদমই ভিন্ন)। কিন্তু শোনার পরও যেন সিম জিভে গিয়ে কাঠাল হয়ে যায়। প্রচণ্ড ঝাল ছিল ভর্তাটা। সবায় খেয়ে উঠে যাওয়ার পর আমি স্যারের কাছে আর একটু ভর্তা চেয়ে নিলাম। আর একজন চেয়ে নিল একটু ডাল। তারপর দু’জন একসাথে খেলাম সেই ভর্তা-ডাল। ভর্তার ঝাঁজ কয়েক ঘন্টা পারও আমার মুখে। আর হাত থেকে ছড়াচ্ছে রকামারি খাবারের সুবাস।
কাজ শেষ, কথা শেষ। এবার নীড়ে ফেরার পালা। আঙ্কারাকে পেছনে ফেলে ছুটে যাচ্ছি নিজের বাসস্থান ইস্তাম্বুলের দিকে। কিন্তু পেছনে চোখ ফেরালে দেখি সুখস্মৃতি। যা শান্তি দেয়, জাগিয়ে দেয় স্বদেশ প্রেম। আহা বিদেশ, আমি তোমার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। দেশ না ছাড়লে বুঝাই হত না নিজের ভেতরে লুকিয়ে থাকা দেশপ্রেম। দেশ না ছাড়লে জানাই হতো না দেশটা কত আপন। জয়তো বাংলদেশ। শান্তি ও সমৃদ্ধিতে তুমি হও পৃথিবীর রোলে মডেল। স্বাধীনতার এই মাসে এই এটুকুই চাওয়া।
২৯ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৩:৪৮
সরোজ মেহেদী বলেছেন: ধন্যবাদ পরামর্শের জন্য। রান্না করতে পারলে ভালই হতো। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এখানে বাংলাদেশী বা ইন্ডিয়ান মশল্লা বলতে যা বোঝায় তা একদমই পাওয়া যায় না। বাংলাদেশী যেসব পরিবার থাকে তারা দেশ থেকে কিনে আনে, আর তারা সংখ্যায় খুবই কম। তবে মূল সমস্যা হচ্ছে, আমরা থাকি সরকারি ব্যবস্থাপনায় ডর্মেটরিতে। সেখানে রান্না নিষিদ্ধ।
২| ২৮ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি পৃথিবীর যে দেশেই যান- বাঙ্গালী খাবারের তুলনা কোনো খাবারের সাথেই করতে পারবেন না। নো নেভার।
২৯ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৩:৪৯
সরোজ মেহেদী বলেছেন: আমার মনে হয় স্বদেশীর কাছে সে দেশের খাবার। সেটা বাঙালি, ইন্ডিয়ান বা এরাবিয়ান...
৩| ৩০ শে মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১২
আমি ইহতিব বলেছেন: ভাই এটা দেশপ্রেম না খাদ্যপ্রেম মজা করলাম, কিছু মনে করবেন না
দেশের বাইরে গেলেই বুঝা যায় যে আমরা দেশকে কতটা ভালোবাসি যেমন করে আমরা মেয়েরা শশুরবাড়ী গেলে বুঝি বাবা মা কি ছিলেন আমাদেের জন্য।
৩১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৩:০৩
সরোজ মেহেদী বলেছেন: আমিও চিন্তা করতেছি, বিয়ার পর শ্বশুর বাড়ি চলে যাব! কী বলেন? লল।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:৪০
করুণাধারা বলেছেন:
বাংলাদেশি খাবার খেতে আট মাস তিন দিন অপেক্ষা করতে হল! আমি ভেবেছিলাম আপনি বোধহয় উত্তরমেরুতে আছেন। ইউটিউববে খুঁজলেই যাবতীয় রান্নার রেসিপি পেয়ে যাবেন। রান্নার চেষ্টা করেই দেখুন না।