নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
The inspiration you seek is already within you. Be silent and listen. (Mawlana Rumi)
ফারুক ভাই মরে গেছে। এখন সাড়ে তিন হাত কবরে একা একা শুয়ে আছে মানুষ হাসানোর এক অসাধারণ ক্ষমতা নিয়ে জন্ম নেওয়া এই সিনিয়র সাংবাদিক। তার মৃত্যুতে রক্ত সম্পর্কের বাইরে কেউ হারালো বড় ভাই, কেউ প্রিয় কলিগ, কেউবা বন্ধু আর আমি হারালাম একটা শক্ত আশ্রয়, আমার বাউণ্ডুলে জীবনের নিরব ও সরব এক সমর্থককে। আহারে মানবজীবন।
আমাদের সম্পর্কটা ছিল নিরেট ভালোবাসার। দেশ ছাড়ার পর যে অল্প ক’জনের সাথে নিয়মিত বিরতিতে কথা হতো তাদের একজন ফারুক ভাই। বহুবার বলেছি, মানুষ হিসেবে ঢাকাইয়াদের খুব ভালো লাগে আমার। এই ভালো লাগাকে ভালোবাসার পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
ছিলেন ততটাই নিরাপদ যতটা হলে নির্ভয়ে মনের কথা বলা যায়। আমাদের কথা হতো, সাংবাদিকতা, স্বদেশ থেকে বিদেশ হয়ে স্বজীবন নিয়ে। জীবনের আলোচনায় এসে আমি চুপ থাকতাম তিনি বলে যেতেন। শুনতে না চাইলেও শুনাতেন। আমাকে ঢাকার জামাই বানাবেন! তার এই সখের কথা দেশে থাকতেই বারবার করে বলেছেন। দেশ ছাড়ার পর প্রবাসী এক আঙ্কেল ছাড়া ভাই দ্বিতীয়জন, যিনি ‘দ্বিতীয় জীবন’ প্রসঙ্গে খুঁচাতেন। ক’দিন আগেও কথা হলো, বলল দেশে আসো। তোমাকে নিয়ে আমার চিন্তা আছে।
আর আমার সাংবাদিকতা? ইস্তাম্বুলে থাকাকালীন অন্তত একটা মিডিয়ার সাথে প্রফেশনালি কাজ করি এটা তিনি খুব করে চাইতেন। করব করব বলতাম কিন্তু করছি না। একদিন আরেক সিনিয়রকে দিয়েও ফোন দেওয়ালেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রফেশনালী আমার কাজ শুরু করা হলো না। তিনি কষ্ট পেয়েছেন বুঝেছি, এর আগেও নানাভাবে কষ্ট দিয়েছি। শুক্রবার দুপুরে ভাবির হাতের রান্না খাব বলে তাকে অপেক্ষায় রেখেছি, যেতে পারিনি। কিন্তু এসবের কোনকিছুই তার স্নেহ থেকে আমাকে বঞ্চিত করেনি! ভালো মানুষ সবায়কেই ভালোবাসে। আমিও হয়তো সে কারণেই তার স্নেহ-ভালোবাসা পেতাম।
কত স্মৃতি ভাইয়ের সাথে আমার। কত পরিকল্পনা। তিনি ইস্তাম্বুলে ঘুরতে আসবেন। আমি দেশে আসলে একসাথে আবার ঢাকার রেস্টুরেন্টে ঘুরে ঘুরে খাব। পুরো দেশ চষে বেড়াব। তাকে আমি বলতাম, আপনি আমার ফ্রেন্ড, বড় ভাই না। তিনি হাসতেন। একটু থেমে আবার বলতাম আপনি বড়জোড় সিনিয়র ফ্রেন্ড। তিনি এবেলাও হাসতেন। তারপর বলতাম অ্যাক্সিলেন্ট সিনিয়র ফ্রেন্ড, এবার তিনি হুহু করে হাসতেন। আমিও হাসতাম। সে হাসি ছিল নির্মোহ, যে হাসির কাঁধে মাথা রেখে নিরাপদে পথ চলা যায়। এই মানুষটা আজ আর নেই। কীভাবে মেনে নেব এ সত্যটা আমি! আমার প্রিয় মানুষগুলোইবা কেন এত তাড়াতাড়ি চলে যাচ্ছে, এই প্রশ্নের উত্তর আমি কার কাছে খুঁজব?
খুব অতৃপ্তি নিয়ে যুগান্তর ছেড়ে যেতে হয়েছিল সাদা মনের এই মানুষটাকে। তবে বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে বাংলা ট্রিবিউনে সুখীই ছিলেন। তুরস্কের ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের দিন আমাকে কয়েকবার উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, 'বড় পত্রিকার আবেগ না ছাড়লে পরে পস্তাবা। আমার জীবন থেকে শেখ।' আমি অনেক কিছুই পেয়েছি তার কাছ থেকে, শিখেছি, তিনি শিখিয়েছেন। কিন্তু আরও অনেক কিছু যে শেখার ছিল ভাই, অনেক কিছু জানা ও বোঝার ছিল। আমি হয়তো এই দেশে বহু জ্ঞানী মানুষের দেখা পাব। কিন্তু আপনার মতো আমাকে এতএত ভালোবাসে এমন মানুষ কই পাব? কে আমাকে বাইকের পেছনে করে ঘুরাতে ঘুরাতে হঠাৎ রাস্তার মাঝে নামিয়ে বলবে চলো খাই! আই লাভিউ সো মাচ ভাই। আপনাকে নিয়ে লিখতে গিয়ে কাঁদছি। এই কান্না হয়তো আপনার একলা ঘরের একা জীবনে কোন কাজে আসবে না, তবু নির্বাক অশ্রু ফোটাগুলো শ্রদ্ধার অঞ্জলী হিসেবে গ্রহণ করুন। আই উইল বি মিসিং ইউ ভাই। আই শ্যাল
খবরের লিংক- বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক ওমর ফারুক আর নেই
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৩
সরোজ মেহেদী বলেছেন: নিচে একটা লিংক শেয়ার করছি ভাই। হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল, ৫১ বছর।
২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি পোস্ট দিলেন, তাপর আবার নীচের লিংকের কি দরকার? আপনার কি বুদ্ধি কম যে, আমাকে অন্য লিংকেও যেতে হবে?
আপনি কি সাংবাদিকতা করেন?
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:০০
সরোজ মেহেদী বলেছেন: বুদ্ধী কারো কম কারো বেশি এই নিয়েইতো মানবজীবন বস। সবাইকে আপনার মতো মেধাবী, বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান ভাবলেতো সমস্যা। টুকটাক সাংবাদিকতা করি, তবে আপনার কাছ থেকে শিখতে পারলে কৃতজ্ঞ থাকব।
৩| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৯
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: মরতে হবে যে চীরন্তন। আপনাকে আমাকে সাইকেই মরতে হবে। দোয়ার করুণ তার বেদেহি আত্না যেন মুক্তি প্রাপ্ত হয়।
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:০১
সরোজ মেহেদী বলেছেন: এসব ভেবে মাঝেমধ্যে অস্থির হই!
৪| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:২৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
যাক, সাংবাদিকতা যেমনি সন্মানজনক, তেমনি দায়িতবশীল প্রফেশান
৫| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:০৯
তারেক ফাহিম বলেছেন: প্রিয়জন হারানোর শোক অনেক কঠিন হয়। ভাই আপনার প্রদত্ত লিংকে তারিখ খুঁজে পাই নাই
০১ লা মে, ২০১৭ রাত ১২:২৬
সরোজ মেহেদী বলেছেন: নিউজের শুরুতেইতো দেওয়া আছে! 'বাংলা ট্রিবিউনের বিশেষ প্রতিনিধি এবং নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ওমর ফারুক আর নেই। আজ (রবিবার) ভোররাত সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন )। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৫১ বছর।'
৬| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: আমি কয়েক মাস যুগান্তরে ফোটোসাংবাদিল হিসেবে কাজ করেছি। তখন দুই একবার তাকে দেখেছি কিন্তু কোনো কথা হয়নি।
০১ লা মে, ২০১৭ রাত ১২:২৭
সরোজ মেহেদী বলেছেন: কবে কাজ করেছিলেন আপনি? আমাকে দেখেছেন নাকি কখনো অফিসে?
৭| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৩৯
ক্লে ডল বলেছেন: পৃথিবীর বাইরে হলেও ফারুক সাহেব যেন ভাল থাকেন।
০১ লা মে, ২০১৭ রাত ১২:২৮
সরোজ মেহেদী বলেছেন: ভালো থাকুক এই কামনাই করি।
৮| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৫৭
জল্লু ঘোড়া বলেছেন: উনাকে চিনি না, নামও শুনিনি আগে কখনো। তার মৃত্যুতে আমার কোনো দুঃখবোধ নেই। বেচারা আরো কিছুদিন বেঁচে থাকলে আরো কিছু পাপ করতো।
সাংবাদিকদের ভাষাজ্ঞান আমাকে মুগ্ধ করেছে। আচ্ছা কোথা থেকে কিভাবে সাংবাদিক হওয়া যায়?
০১ লা মে, ২০১৭ রাত ১২:৩১
সরোজ মেহেদী বলেছেন: কতটা পাপ করেছে বা করত জানি না, তবু আমরা প্রিয় মানুষের প্রিয় মুখটাই প্রতিদিনকার জীবনে দেখতে চাই। কোন সাংবাদিকের ভাষা জ্ঞান আপনাকে মুগ্ধ করেছে জানাবেন?
৯| ০১ লা মে, ২০১৭ সকাল ৯:৪১
জল্লু ঘোড়া বলেছেন: রাজীব নুর বলেছেন: আমি কয়েক মাস যুগান্তরে ফোটোসাংবাদিল হিসেবে কাজ করেছি। তখন দুই একবার তাকে দেখেছি কিন্তু কোনো কথা হয়নি।
০১ লা মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৩২
সরোজ মেহেদী বলেছেন: হুম।
১০| ০১ লা মে, ২০১৭ বিকাল ৪:৪০
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: তবু যে আপনি তাকে স্মরণে রেখেছেন, এটা ভাল দিক। আল্লাহ তাঁকে পরপারে শান্তিতে রাখুন- আমিন।
০১ লা মে, ২০১৭ রাত ১০:২৫
সরোজ মেহেদী বলেছেন: আমিন।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
জন্মিলে মরিতে হয়; কত বয়সে, কিভাবে কি হলো?