নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ

সরোজ মেহেদী

The inspiration you seek is already within you. Be silent and listen. (Mawlana Rumi)

সরোজ মেহেদী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোথায় যাচ্ছি আমরা!

০৬ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:০৭


মাঝেমধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসে। নিজের চারপাশে মানুষের অভিনয়, অনাচার আর অসভ্যতা দেখে নিজেকে বড় অসহায় লাগে। আমার এ ছোট্ট ও সাধারণ জীবনে একটা শিশুকাল আছে। সেখানে ফিরে যাই, একটু শান্তির খোঁজে। এইতো সেদিনের কথা, গ্রামের একটা ছেলে নানাবাড়ি, দাদাবাড়ি, খালাবাড়িতে হৈ-হুল্লুর করে বেড়ে উঠছে। কে হিন্দু আর কে মুসলমান তা চেনার সময় তার কোথায়!

অথচ আজকের শিশুরা কথা বলার আগে ধর্মের নামে বিভেদ শিখে, বিভাজন করে ফেলে। আমি হিন্দু, সে মুসলমান। ফলে শুরু হয় হিন্দুর জল আর মুসলমানের পানির মধ্যে সংঘর্ষ। আর শিশুরা বঞ্চিত হয় জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময়ের নির্মল আনন্দ থেকে, স্বর্গীয় বন্ধুত্বের স্বাদ থেকে। এই প্রজন্মের আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কেউ জঙ্গী হওয়ার খবর শোনে আমি তাই অবাক হই না। ওদের কাছে জীবন মানে যা তা দিয়ে আসলে জীবন চলে না। জীবনের রংটা এখানে বড্ড ধূসর, অর্থটা অর্থহীন, ধ্বংশের কাঁধে ভর দিয়ে যে চলে।

এই জীবন সমাজ মানে না, সংশোধন মানে না। যুক্তির কাছে যায় না, শ্রদ্ধার ধার ধারে না। এই জীবনে ধর্ম থাকে। মানবিকতা ‘নাই’ হয়ে যায়। মানসিকতা হয়ে যায় বিকৃত, বৃত্তি হয় পশুর। তাই কারো রক্ত দেখে তারা উল্লাস করে, টিপ্পনি কাটতে বাঁধে না। অথচ এই ওরাই আবার সিরিয়ার রক্তাত্ত্ব শিশুর ছবি দিয়ে আহাজারি করে। এই একই মানুষ জায়গা ভেদে কতোটা ভয়ঙ্কর আর অসভ্য হয়ে উঠে। ভাবি কে তাদের এমন বোধহীন বোধওয়ালা বানায়। প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে সিরিয়ার শিশুর যে রক্ত তাকে কষ্ট দেয়, নিজ দেশের এক বুড়ো শিক্ষকের রক্ত তাকে কী করে আনন্দ দেয়? যে আদর্শ এমন বিকৃতি শেখায় তা কী করে মানুষের মুক্তি আনতে পারে? তা যদি কোনদিন সামাজিক নিয়মে পরিণত হয় তাহলে সে সমাজে কী করে মানুষ বাস করবে? কে ব্যাখা করবে আমাকে একজন রক্তাত্ব মানুষকে নিয়ে এভাবে বিকৃত উল্লাসে যৌক্তিকতা?

মরা মানুষকে নিয়ে খারাপ কথা বলা নাকি ধর্মে নিষিদ্ধ। জীবনে বহুবার মুমিন মুসলমানদের মুখে শুনেছি, পড়েছি সেসব কথা। অথচ তাদেরই দেখলাম মায়ের বয়সী এক মহিয়সী নারীর মৃত্যু নিয়ে উল্লাসে মাততে। আগেও কি বাঙালি ধার্মিকেদের রুচি এমন বিকৃত ছিল। নাকি ফেসবুকের মতো নানান কিসিমের আধুনিক যন্ত্রপাতি তাদের এমন মানুষে (অ) পরিণত করেছে। একটা ধর্ম কীভাবে একজন মানুষের মৃত্যুর খবরে উল্লাস করতে শেখায় বুঝি না। নিজেকে ধার্মিক দাবি করে যে একজন মানুষের মৃত্যুর খবরের নিচে হাসির ইমো দেয় তাকে কী আমাকে সুস্থ মস্তিস্কের বলে ধরে নিয়েই চলতে হবে!

আসলে কী শুধু সেই ইমুওয়ালার নাকি পচন ধরেছে পুরো সমাজ ব্যবস্থায়। আমি চারপাশে চোখ মেলে তাকাই। কোথায় বিবেক বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষে দেখি না। কোথাও ডাক্তার দেখি, কোথাও সাংবাদিক, কোথাওবা রাজনীতিবীদ। সর্বত্র দেখি ধার্মিক হিন্দু আর ধার্মিক মুসলমান, যারা ধর্মের জন্য ধর্ষণকে উৎসাহিত করে। যারা ধর্মের নামে মানুষের রক্ত দেখে উল্লাস গীতি গায়, যারা ধর্মের নামে একজন মানুষের মৃত্যুতে আলহামদুলিল্লাহ বলে।
অদ্ভূত এক উটে সওয়ার হয়ে কোথায় যাচ্ছি আমরা। এই উট আবার সাগরে ডুবে গাট্টি বোস্কা সহ স্বর্গবাসী হবেনোতো। কেউ কি আছেন যে এই প্রশ্নটা তুলবেন! যেখানে সেখানে বালতি বালতি চেতনা প্রসব করা সরকার মশাইয়ের কি এসব নিয়ে ভাববার ফুরসৎ হবে???

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:১৯

আবু আফিয়া বলেছেন: ধর্ম অশান্তি চায় না, ধর্ম শান্তি চায়, গুটিকত উগ্র ধর্মান্ধদের দ্বারাই অশান্তি ও বিভেদ সৃষ্টি হয়। ইসলাম এমন এক শান্তিপ্রিয় ধর্ম যেখানে সবার রয়েছে সম্মানের স্থান, ইসলাম কাউকে কষ্ট দেয়ার শিক্ষা দেয় না।
লেখককে ধন্যবাদ

২| ০৬ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:৩৯

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: যারা প্রকৃত ধর্মপ্রাণ তারা কখনই ধর্মান্ধ বা উগ্রপন্থী নয়। সব দেশেই উগ্রপন্থী ধর্মান্ধ আছে। পার্শ্ববর্তীদেশ মায়ানমার এবং ভারতে ধর্মান্ধ বা ধর্মীয় উগ্রতা প্রকট। মূলত এসব দেশ থেকেই ধর্মীয় উগ্রতা আমাদের দেশে ছড়িয়ে পরছে। এর আরো কারণ আছে। আমাদের শিল্প, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির ওপর পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর আগ্রাসন।

৩| ০৬ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:৫৮

পবন সরকার বলেছেন: ধর্মের কারণে অশান্তি নয় ধর্মান্ধর কারণে অশান্তি। ধর্মকে ভালোভাবে না জেনেই তারা উগ্রতা প্রকাশ করে।

৪| ০৭ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: আমরা ব্যাথা পেলে বা কষ্ট হলে মা কেই ডাকি ৷ সে ডাক মা শুনুক আর না শুনুক .

৫| ০৭ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:১৬

মো মুসফিকুর রহমান রুম্মান বলেছেন: কাজী নজরুল ইসলাম আজীবন আমাদের এই শিক্ষায় দেওয়ার চেস্টা করে গেছেন...
মানবতাই আগে সেটা আমিও মানি। আর ইসলাম ধর্মও ভালোভাবে বুঝে মানি। তাই বলে তো আমি উগ্রবাদী নয়।
কিন্তু একটা বিষয় আপনার থেকে জানতে ইচ্ছা করছে আপনি মানবতা বিবেককে কাজে লাগিয়ে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করেন নাকি করেন না?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.