নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ

সরোজ মেহেদী

The inspiration you seek is already within you. Be silent and listen. (Mawlana Rumi)

সরোজ মেহেদী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যা কই!

২২ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:০১

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শিক্ষক পরীক্ষার আগে প্রশ্ন বলে দেয়, বা সহজ প্রশ্ন করে, ক্লাসে উপস্থিত না থাকলেও এটেন্ডেন্স দিয়ে দেয় আর পরীক্ষা শেষ সবাইকে ভলো গ্রেড দেয় সেই সবচেয়ে ভালো বা জনপ্রিয় শিক্ষক। বাংলাদেশে এটাই কমন প্র্যাকটিস। ভালো পড়ানোটা একটা গুণ বটে। তবে সেমিস্টার শেষে ভালো মার্ক না দিলে সেই গুণ অথৈই জলে তলিয়ে যায়।

স্টুডেন্টরা মার্ক ছাড়া অন্য কিছু বুঝতে চায় না। শিক্ষকের শাসনকে ‘মিসবিহ্যাভ’ বুঝে। টাকা দিয়ে পড়তে এসে এসাব কেন সহ্য করবে প্রশ্ন তুলে! শিক্ষকরাও চাকরির ভয়ে তাদের ঘাটাতে চায় না। কর্তৃপক্ষ শিক্ষককে প্যারা দেওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। ফলে বাকি সবকিছু হলেও ঠিকঠাক মতো পড়াশোনাটা হয় না। শিক্ষকদের ধোয়া তুলসি পাতা বলছি না। তবে তুলনামূলক স্যারের দল নিরীহ। ম্যাডামদের বিষয়টা (একটা অংশ) ভিন্নভাবে ব্যাখা করা যেতে পারে।

পাবলিকের অবস্থা ভালো বলার সুযোগ দেখি না। সেখানে খুব বেশি চলে ফকিন্নীর পুত শিক্ষক হয়ে জমিদার বনে যাওয়ার বাড়বাড়ন্ত। না ক্লাস, না পরীক্ষা কিছুই তাদের নেওয়া লাগে না। ক্যাম্পাসেও আসা লাগে না। ছাত্ররা সুযোগ পেলে শিক্ষককে ঠ্যাঙায়। স্টার শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বেশি জ্বালায়। শিক্ষক পলিটিক্যাল হলেতো যথারীতি মাস্তান। তবে পাবলিকের জীবনে প্রাণ আছে। ছেলেরা নিজের চেষ্টার বহুদূর যায়, যেতে চায়, যাচ্ছে। দিনশেষে প্রাইভেটের মতো কেবল টাকার হিসাবে সবকিছু সীমাবদ্ধ থাকে না।

পাবলিকে পড়ুয়া সংখ্যাগরিষ্ঠরাও নাম্বার বা নোট ছাড়া অন্য বুঝতে চায় বলছি না। তবে পরিস্থিতি প্রাইভেটের মতো সূচনীয় না। পাবলিকেও পা চাটা ছাত্রকে প্রশ্ন বলে দেওয়া, বেশি নাম্বার দেওয়া, ভাইবা বোর্ড পার করে দেওয়া একটা কমন বিষয়। ভালো ছাত্র অপ্রিয় হলে তাকে বাঁশানোটাও শিক্ষক মহোদয়দের পবিত্র কর্তব্য।

আমার কথার ব্যতিক্রম নেই বলি কী করে। আছে… তবু আমাদের প্রাইভেট বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হয় বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ, নয়তো আশু সংস্কার।

যা বলছি তার জন্য শিক্ষক বা ছাত্র কাউকে দায়ী করি না। সমস্যাটা আসলে গোড়ায়। সিস্টেমে, রাষ্ট্রে। রাষ্ট্র নিজেই ক্যান্সারে আক্রান্ত। তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ভালো চলবে কী দিয়ে! এই সিস্টেমের মধ্যেও অনেকে সফল, আইকনিক পার্সোনালিটিতে পরিণত হয়। তাদের বড় হওয়া দেখে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গর্ব করতে পারে, গর্বিত হতে পারে কিন্তু ঐ ছেলে বা মেয়েটাকে আমরা গড়ে দিয়েছি এ কথা বলতে পারে না। আমাদের সিস্টেম কেবল ভাঙে, কখনো গড়ে না। বরং তারা ব্যতিক্রম। অবশ্য রাষ্ট্র তাদের গড়ে দেওয়ার ক্রেডিট দাবি করলে অবাক হওয়ার কিছু থাকে না। ইজ্জ্বত এ দেশে পানির দড়ে বিকিকিনি হয়।

গত ৫০ বছরে হাস্যকর অহংকার ছাড়া আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা জাতিকে আর কিছু উপহার দিয়েছে বলে আমি মনে করি না। পাবলিকের বহু শিক্ষার্থীকে দেখেছি অহংকারে পা মাটিতে পড়ে না। অথচ কিবোর্ড টিপতে জানে না, একটা মেইল করতে বললে কাঁপন শুরু হয়, একটা দরখাস্ত কীভাবে লিখতে হয় মাস্টার্সে এসেও শিখেনি। ইংরেজিতে ফটর ফটর করতে চায় কিন্তু পেটে চাপ দিলে মল ছাড়া আর কিছু বের হয় না। অহংকারের জ্বালায় বিদ্যা পেটে ঢোকার সুযোগ পায়নি, ঢুকলেও টিকতে পারেনি।

আরকেটা বিষয়, বাংলাদেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠেনি। ব্র্যাক-সহ যে ক’টাকে ভালো বলি এগুলো আসলে কালোবাজারি, মাফিয়া। বাকিগুলো টং দোকান বা খেয়া ঘাটের নৌকা। দুই টাকা পেলে যারে পায় তারেই নদী পার করায়।

পাবলিক যেগুলো আছে এগুলোও বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে বলার সুযোগ নেই। কিন্তু, অনেকটা ফ্রিতে পড়া যায়, হলে থাকা যায় বলে ‘এতিম খানা ও মাদ্রাসা’র ‘লিল্লাহ বোর্ডিং’ থেকে অনেক ভালো, এমন তুলনায় দুঃখ মোচন হয়। পাবলিকে অনেকটা ফ্রি পড়া যায় বলে তুলনামূলক গরীব মেধাবীরা পড়তে আসে। পাবলিকের মূল শক্তি বা স্বস্তি বলতে আমার কাছে এটাই।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৫১

মাসউদুর রহমান রাজন বলেছেন: কোথায় জানি পড়ছিলাম, "বিশ্ব বিদ্যা লয় যেখানে- বিশ্ববিদ্যালয়।"

২২ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১২

সরোজ মেহেদী বলেছেন: মানে কি দাঁড়াল! আরেকটু ব্যাখা করা যায় ভাই?

২| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১২:০৬

মাসউদুর রহমান রাজন বলেছেন: এটা সম্ভবত রবি ঠাকুরের কথা: যেখানে বিশ্ব-বিদ্যা-লয় পায়, এরই নাম বিশ্ববিদ্যালয়। লয় শব্দের অর্থ বিলুপ্তি। এতটুকু ব্যাখ্যা দিতে পারবোরে ভাই।

২৭ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১৫

সরোজ মেহেদী বলেছেন: আচ্ছা, ধন্যবাদ।

২৭ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১৬

সরোজ মেহেদী বলেছেন: আসলেইতো তাই! রবী ঠাকুর বলে কথা।

৩| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: একটা কৌতুক শুনুন-

নায়কঃ ডাক্তার ছাব, আমার মায় বাচব তো??
ডাক্তারঃ খুব দ্রুত অপারেশন করতে হবে।অপারেশনের জন্য ৪০ লাখ টাকা লাগবে।
নায়কঃ আপনে কুনু চিন্তা করবেন না ডাক্তার ছাব! আমি রিকশা চালাইয়া, ইট ভাইঙ্গা, ঠেলাগাড়ি ঠেইল্যা দুই দিনের মইধ্যে আপনের সব টাকা জোগাড় করুম !!!








ডাক্তারঃ আগে কোবি তো! তাইলে এত টাকা খরচ কইরা ডাক্তারী না পইড়া ঠেলাগাড়ি চালাইতাম ।

২৭ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১৬

সরোজ মেহেদী বলেছেন: হাহাহাহা। বাংলা ছবির মহানায়ক।

৪| ২৭ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:২৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: বিশ্ব বিদ্যা লয় চমৎকার বলেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঘুরাফেরা করলেও অনেক জ্ঞান লাভ করা যায়। শিক্ষক আর ছাত্ররাজনীতি অনেক সময় নেক্কারজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। কিন্তু যে বেড় হওয়ার সে বেড় হয়ে আসে প্রচেষ্টায় । বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলে অধ্যায়নের দায়ভার মূলত ছাত্রের উপর বর্তায়। শিক্ষক সেখানে মেন্টর মাত্র। ভাল শিক্ষকও কিন্তু আছে।

২৫ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ৯:৪৯

সরোজ মেহেদী বলেছেন: ভালো নেই বলছি না। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক বিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠতে পারল কি না এটা বোধহয় বড় প্রশ্ন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.