নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
The inspiration you seek is already within you. Be silent and listen. (Mawlana Rumi)
সিরিয়া ইস্যুতে ইরান-তুরস্ক দুই বিপরীত মেরুতে অবস্থানের কথা আমরা জানি। এ বেলা কে ঠিক আর কে বেঠিক এ নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু বাশার আল আসাদের বিরোধীদের ঢালাউভাবে তাকফিরী (আইএস), সন্ত্রাসী, দখলদার, ভাড়াটে খুনী, ধর্ষক, পশ্চিমাদের ক্রীড়নক প্রভৃতি সাজানোর চেষ্টা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
রাষ্ট্র ইরান ও তার দেশের মিডিয়া সে কাজটাই দীর্ঘদিন ধরে করে যায় ও যাচ্ছে। ইরানি মিডিয়াগুলোর অবস্থা দেখলে মনে হয়, তারা ছাড়া দুনিয়ার আর সব মানুষ মগজ ছাড়া। এখন ইয়েমেন ইস্যুতে তাদের খবর দেখলে মনে হয়-হুতিরা হচ্ছ বে-গুনাহ, মাসুম। ওদের কোনো দোষ থাকতে পারে না। অথচ সৌদি ইয়েমেনে যত অপরাধ করেছে। শিয়া হুতিরা করেছে আরও বহুগুণে।
সিরিয়া সংকট শুরুর পর, আমি ইরানি মিডিয়ায় বহু খবর পড়েছি যেখানে তুরস্ককে সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষক, এরদোয়ানকে ব্যক্তিগত আক্রমণ, তেল চুরিসহ তুর্কি বিরোধী নানা আজগুবি কাহিনী প্রকাশ করতে থাকে। ইরানি মিডিয়াগুলো শুধু সেখানেই থেমে থাকেনি। ২০১৫ সালের দিকে তারা তুরস্কে থেকে পড়াশোনা করেছে এমন একজনকে ভাড়া করে তুরস্কের বিরুদ্ধে তাদের মিডিয়ায় অব্যাহত ক্যুৎসা রটনা শুরু করে। বিষয়টা আমরা কাছে অনেকটা বসুন্ধরা গ্রুপের মিডিয়াগুলোর কয়েকজন ভাড়াটে মোল্লা দিয়ে যমুনা গ্রুপের ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপের ফিরিস্তী তুলে ধরার মতো মনে হয়েছে। তারা সে সময় হাসান নামের এক শিক্ষার্থী-সহ আরও ২/১জনকে ব্যবহার করে রেডিও তেহরান বাংলায় (পার্স টুডে বর্তমানে) দিনের পর দিন তুর্কি বিরোধী প্রচারণা চালায়। লেখাগুলোর শিরোনাম ছিল অনেকটা এরকম, এরদোয়ান মুখে ইসলামের কথা বললেও তার বডিতে ইসলাম নাই, তুর্কিরা মুখে ঈমানের কথা বলে কিন্তু নামাজ পড়ে না, বেপর্দা তুর্কি নারীরা: ইসলামী শরিয়াহ কি বলে! ইত্যাদি ইত্যাদি টিপিক্যাল টাইপ লেখাজোখা। (চরমোনাই পীরের মাইজ্জা ছেলেও এ বেলা ফেইল।)
ইরানিদের এমন কার্যক্রম আমার কাছে রাষ্ট্র ইরানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। রাষ্ট্র হিসেবে নৈতিকভাবে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। একটি কথিত ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্র’ সত্যের উপর দাঁড়িয়ে থাকার মানে তার অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো সে সাক্ষ্য দেবে। কিন্তু ইরানি মিডিয়াকে প্রত্যক্ষ পর্যক্ষেণ করে আমার এ জায়গায় রাষ্ট্র ইরানকে সৎ মনে হয়নি। ফলে আমি তাদের নিয়ে আর আশান্বিত হই না। আমার কাছে মনে হয়েছে, আসলে তাদের বিবেচনায় ইসলাম বা মুসলমান না, নিজের জাতি, রাষ্ট্র স্বার্থ ও সম্পর্ক প্রাধান্য পায়। এর বাইরে কেউ গেলে তাদের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করতেও তাদের বাধে না। এবেলা সত্য বলে কিছু নেই। ‘ইরানের পক্ষে যাওয়াটাই/ইরানি স্বার্থ রক্ষা করাই’ সত্যের একমাত্র পরিমাপক।
সম্প্রতি গাজায় চলমান ইসরায়েলের আগ্রাসনের অবসান হলো। ইসারায়েলের এই গাজা আগ্রাসন নিয়ে ইরানি প্রেসটিভি, পার্স টিভি বা অন্য মিডিয়াগুলোতে এমন সব নিউজ দেখা যায় যা দুনিয়ার আর কোথাও নেই। হামাসের প্রতিরোধকে আমরা হৃদয় থেকেই সমর্থন দেই, আল আকসার জন্য আমাদের প্রাণও সমানভাবে কাঁদে। কিন্তু তাই বলে সত্য ঘটনাকে আড়াল করে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রোপাগান্ডা চালানো কোনো কাজের কথা হতে পারে না।
লক্ষ্য করলে দেখবেন, ইরান হামাস বা ফিলিস্তিনিদের নিয়ে সে কাজটাই করেছে বা করছে। বিপরীত আল জাজিরা, আনাদুলু এজেন্সি, টিএরটি ওয়ার্ল্ড এসব মিডিয়া দায়িত্বশীল সংবাদ প্রকাশ করেছে, যা পশ্চিমা দুনিয়ায় ব্যাপকভাবে ইসরায়েল বিরোধী জনমত তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে। ইরানি মিডিয়ার নিউজ পড়লে মনে হয়, ইসরায়েল বানের জলে ভেসে আসা একটা রাষ্ট্র। হামাস আরেকটা রকেট ছুড়লেই সেই রাষ্ট্রটি ছাই হয়ে আকাশে উড়ে যাবে। ইসরায়েলকে নিয়ে ইরানি মিডিয়ার কথাবার্তা আসলে কোনা থ্রিলারধর্মী উপন্যাস বা কল্পসাহিত্যকেও হার মানায়। ইরানিরা এটা বুঝেনা, তাদের এসব কাণ্ডকারখানা বাকি দুনিয়ার না বোঝার কথা না…
(চলবে)
০৯ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ২:০৮
সরোজ মেহেদী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। সুন্দর মন্তব্য।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১:০৫
ইমরান আশফাক বলেছেন: ইরান দেশটির অর্থ জানেন তো? অর্থ আর্যদের দেশ বা আবাসভূমি। আর্যদের স্বভাবই হলো অন্যদের হেয় প্রতিপন্ন করা। আর্যদের চেহারা, দৈহিক গঠন অত্যান্ত সুন্দর ও বলিষ্ঠ হয়ে থাকে এবং সংস্কৃতি ও খুব উন্নত। তারা সবসময় বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে বুঝানোর চেষ্টা করে যে তারাই সকল দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ। যদিও আর্য জাতী শুধুমাত্র ইরানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।