নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন একটি মুখোশ

শেরিফ আল সায়ার

মানুষ। বড় আজব এই মানুষ। মানুষ নাকি ফানুষ তাও এখন আর বোঝার ক্ষমতা আমি রাখি না। সব ক্ষমতা হারিয়ে গেছে। হারিয়ে দিন যাচ্ছে নির্জনে। নির্জনে থাকি নিজের সাথে। ধীরে ধীরে নির্জনতা প্রিয় মানুষে রুপান্তরিত হচ্ছি। হয়তো হয়েও গেছি। ইদানিং চলাফেরা করতেও ভয় হয়। চারিপাশে মানুষ দেখি না। দেখি শুধু মুখোশ। মুখোশে-মুখোশে ছেয়ে গেছে গোটা পৃথিবী। নিজের বিভৎস চেহারা সামনে একটি মসৃন আবরন। সেটাই মুখোশ। নিজেকে লুকিয়ে রেখে ভালো মানুষি মুখোশটাকে ইদানিং দেখা যায় বেশী। স্বার্থ এমনই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। স্বার্থ ফুরালেই সব শেষ। মুখোশটা ঠিক তখনই উন্মোচন হয়। বিভৎস সেই চেহারা দেখে বমি চলে আসে। থুথু ছিটিয়ে প্রতিবাদ করতেও উদ্ধত হই। কিন্তু তাও পারি না। এত কাছের মানুষকে তাও করা সম্ভব হয় না। তাইতো নির্জনে চলে গেছি। একদম নির্জনে। হাজার অবিশ্বাস নিয়ে এখন আমিও মুখোশধারীদের মতো হয়ে গেছি। মুখোশটাই হয়ে গেছে জীবনের মূলমন্ত্র। কারণ, জীবন একটি মুখোশ।

শেরিফ আল সায়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: "গার্লফ্রেন্ড"

১৯ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ২:৪১



বেশ কয়েকবছর ধরে ঢাকা শহর জুড়ে একধরনের বন্ধু একটু বেড়ে যাচ্ছে। সে সকল বন্ধুদের আবার ইংরেজী শব্দ দিয়ে সম্মধন করা হয়। ইদানিং সে সকল বন্ধুগণদের সংখ্যা ঢাকা পেরিয়ে সারা বাংলাদেশেই বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে এই বন্ধুরা অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাদের জন্য ঢাকা শহরে চলাফেরা করা ভার হয়ে উঠছে। তারা যেনো এখন ঢাকা শহরের ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। অবশ্য একটা সত্যি কথা হচ্ছে, তারা এখন সকলের সুখ দুঃখের সাথি হয়ে উঠেছে। যাদের এই বিশেষ বন্ধু থাকে না। বিশেষ করে ছেলেদের কথাই বলছি। তারাই যেনো ব্যাকডেটেট। যাই হোক। এতো প্যাচাল না করে সেই বন্ধুদের কথাই বলি।

বাংলায় ওরা মেয়ে বন্ধু। তবে মেয়ে বন্ধু মানে শুধুই বন্ধু। তবে যদি তা ইংলিশে প্রনাউন্স করা হয়। তবেই কিন্তু হয়ে গেলো বিশেষ বন্ধু। মানে গার্লফ্রেন্ড। গার্লফ্রেন্ড মানে একটু বিশেষ আহলাদি বন্ধু। এক্সট্রা একটু সম্পর্ক। কথায় কথায় বেবি সম্বধণ। যেমন, ফোন করেই তারা বলবে, বেবি তুমি কি খেয়েছো?

আর ওপাশ থেকে ছেলেটি, হ্যা বেবি, আমি তো খেয়েছি। তুমি কি খেয়েছো?

এভাবে আহলাদি ভঙিতে গার্লফ্রেন্ড চালিয়ে যায় তাদের কথা। তবে এই লেখায় একটা অবিচার করছি। সেটা হচ্ছে, আমি গার্লফ্রেন্ডকে নিয়েই কেনো বলছি। এখানে তো বয়ফ্রেন্ডের কথাও আশা উচিত। তাই অনেকে হয়তো বলেই ফেলবেন, বেটা পুরুষশাসিত সমাজের দালাল.....শুধু মেয়েদের নামেই গীবত গাস।

আসলে সত্যিকথা বলতে কি, আমি কিন্তু কারও গীবত গাওয়ার জন্য গল্প লিখতে বসিনি। আমি বসেছি, এই গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে গল্প লিখতে। তাই বয়ফ্রেন্ডের নাম আনার খুব প্রয়োজন আনার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।

এই সম্পর্কটার সরাসরি নাম হচ্ছে প্রেম। এক সময় শুনেছি, প্রেমিক নাকি প্রেমিকার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতো দেখা করার। তারপর দেখা হতো মিনিট পাচেক এর জন্য। তারপর চিঠি চালাচালি। চিঠির মাধ্যমে প্রেম। দীর্ঘসময় পর প্রেম হতো। আবার তারও দীর্ঘসময় পর হতো প্রেমের বিয়ে। তাই প্রেমের বিয়ে হতে দেখলেই সকলে বলতো, যাক ওদের প্রেম সফল।

এই বিষয়টা নিয়েই একটা খোচা মারার দরকার আছে। প্রেম করে বিয়ে করলেই যেনো প্রেম সফল। এ যেনো তিনঘন্টার কোনো সিনামা। পুরো সিনামা জুড়ে প্রেমকে জয় করার এক যুদ্ধ চলতে থাকে। তারপর শেষে এসে প্রেম সফল। তারপর বড় পর্দায় বড় বড় করে লেখা উঠবে “সমাপ্ত” । এবার আপনারাই বলুন। বাস্তব জীবনটা কি এমন?

বাস্তব জীবনে কি বিয়ে করা মাত্রই সকল কিছুর সমাপ্ত হয়। মানে, বিয়ে মানেই কি প্রেমের সমাপ্তি?

আপনাদের কথা জানি না। তবে আমার মতে, প্রেমের আসল অধ্যায়টাই শুরু হয় বিয়ের পর। মৃত্যুর শেষ পর্যন্ত যখন দেখা যাবে তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করেছে ঠিক তখনই দীর্ঘনিশ্বাস নিয়ে বলা যাকে, ইয়েস.....এটাই প্রেম। এটাই জীবন। অসাধারণ জীবনের অধ্যায় সমাপ্ত। আর সেই সাথে তাদের প্রেমটাও সার্থক।

যাইহোক, ওসব কথা বাদ দিয়ে আসল কথায় আসি। আমার এই এক সমস্যা। কিছু নিয়ে যখন লিখতে বসি তখন নিজের মূল ভাবনা ছিটকে অন্য ভাবনায় চলে যাই। বিশ্বাস করুন আমি কিন্তু গল্প লিখতেই বসেছিলাম। তবে এখনও কিন্তু শুরুই করতে পারছি না। এখনও অন্য প্যাচাল পেকে যাচ্ছি।

প্রেম বিষয়ক কথা বলতে গেলেই গার্লফ্রেন্ড আসবে। আমার এক বন্ধু আছে, কথায় কথায় বলবে, মাই গার্লফ্রেন্ড ইজ.....

মানে সব কথায় ওর গার্লফ্রেন্ডের প্রসঙ্গ টানতেই হবে। আবার সুন্দরী মেয়ে দেখলেই বলতে, ওয়াও শি ইজ হট। বাট মাই জিএফ ইজ মোর হট।

ওহ। গার্লফ্রেন্ডের একটা শর্ট টার্ম আছে। সেটা হচ্ছে, জিএফ। তো, এই জিএফ গোষ্ঠীর আগোচরে তাদের বিএফরা যে অন্য মেয়েকে চোখ দিয়ে চুষে দেখে এমনটা কিন্তু কেউই বলতে পারবে না।

একটু স্মার্ট হ্যান্ডসাম ছেলে-মেয়ে একসাথে হাত ধরে ঘুরে বেড়াবে। রাস্তায় এই দৃশ্য এখন খুব সাধারণ একটা ব্যাপার। দেশের জনগণ তা দেখবে আর মুচকি মুচকি হাসবে তাদের কান্ড দেখে এটাও খুব সাধারণ। তারা ড্যাট করার জন্য এখন ব্যবসায়িক সমাজ বিবিধ হাইফাই ফাস্টফুড ক্যাফেও গড়ে তুলছেন। তাদের ঘিরেই কিন্তু এখনকার ঢাকা অত্যন্ত রমরমা। এখানে ড্যাট বলে একটা ইংলিখ শব্দ আমি ব্যবহার করেছি। এর বাংলাটা ঠিক আমরও জানা নাই। যাইহোক, আবার ধরেন, একটা মেয়ে আর ছেলেকে একসাথে সি.এন.জি ভাড়া করতে গেলেও একটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। যেমন, আমার এক বন্ধু সে তার গার্লফেন্ডকে নিয়ে ঘুরতে বের হওয়ার আগে ভাড়ার জন্য আলাদা বাজেট করতে হয়। কারণ, আমাদের শহরের সিএনজির ড্রাইভাররা অতি চালাক হয়ে উঠেছে। তারা সম্পর্কের মাপকাঠি বুঝে গেছে। তাই রেটও হাই যায়। যে জায়গায় ৫০ টাকা ভাড়া হবে সেখানে তারা চেয়ে বসে ১০০ টাকা। অনেক সময় তা আরও বেড়ে যায়।



নাহ। গল্প শুরু করা দরকার।



গল্প নং এক:

আমার স্কুলের এক মেয়ে বন্ধু ছিল। আপনাদের কিন্তু শুরুতেই বলেছি, মেয়ে বন্ধু মানে শুধু বন্ধু। আর যখন তা ইংলিশে উচ্চারণ করবেন তখনই কিন্তু সম্পর্কের বৈশিষ্টটা পাল্টে যাবে। যাইহোক, তো, সেই বন্ধুর প্রেম হয় আমরা যখন কলেজে উঠি। তখন থেকেই তাদের প্রেম। সে প্রেম কি! বলতে হবে মহা প্রেম। মিনিটে মিনিটে ফোন। জানু আমি এখন ক্লাসে যাচ্ছি। জানু আমি এখন লাঞ্চ করছি। জানু আমি এখন বাসায় যাবো। জানু আমি এখন বাস খুজছি।

কি আশ্চর্য। প্রতিটি ঘটনার বর্ণনা দেয়া হতো। আর জানু ছাড়া কোনো কথাই নেই। জানু জানু জানু।

একদিন আমি দুষ্টামি করে বলেছিলাম, দোস্ত তুই কি টয়লেটে যাওয়ার আগেও ফোন দিয়ে বলিস, জানু আমি এখন টয়লেটে যাচ্ছি। তারপর আরও কিছু বলেছিলাম তবে তা আপনাদের বলবো কেনো?

যাইহোক। কলেজের শেষের দিকে হঠাৎ একদিন আমাদের সব বন্ধুদের এক বিশাল আয়োজন করে একটি কথিত হাইফাই রেষ্ট্রুরেস্টে খাওয়ানো হয়। তারা আমাদের সব বন্ধুদের ট্রিট (ট্রিট শব্দটাও কিন্তু ইংরেজী। কোনো বিশেষ কিছু হলেই কিন্তু বন্ধুরা বলে, ট্রিট দে) দেয়। উদ্দেশ্য তাদের নাকি দুই বছর পূর্তি। ব্যপারটা হাস্যকর ছিল তখনই। প্রেমের দুই বছর পূর্তি এ যেনো এক বিশাল সফলতা।

তো, সেই বন্ধুর সাথে কলেজ ছাড়ার পর আর তেমন যোগাযোগ হয়নি। হঠাৎ অনেক বছর পরই বলতে হবে, আমাকে সেই মেয়ে বন্ধুটি ফোন দেয়। আমি একটু হকচকিয়ে যাই। ঘটনা কি! হঠাৎ ফোন। আমি হকচকিয়ে গেলেও সে কিন্তু খুব নরমাল। এবং খুব সাধারণভাবেই আমাকে একটা পার্টির দাওয়াত দেয়। বলে, দোস্ত আমাদের ১ বছর পূর্তি। চলে আসিস। তোকেও অনেকদিন দেখি না। দেখাও হলো। খাওদাওয়াও হলো।

কথাটা শুনে আমি নিজেও একটু ভড়কে যাই। আরে বলে কি! হিসাব অনুযায়ী আমি ওর প্রেমের দুই বছর পূর্তিটা খেয়েছি। আর হিসাব কষলে দেখা যাবে, ঐ প্রেমের বয়স হবে, ৬ বছর।

তাহলে, এক বছর কীভাবে হয়?

প্রশ্ন করতে কিন্তু আমি ছাড়ি নাই। আমি বলেছি, এর মানেটা কি?

আমার মেয়ে বন্ধুটিরও সাবলিল উত্তর, ধুর শালা। তুই এখনও ঐ ইতিহাস নিয়ে বসে আছিস। হি ইজ নাও ওয়াজ। ওর সাথে ব্রেকাপ হয়েছে ৩ বছর হয়ে গেছে। অনেক বছর একা কাটালাম। এখন জুয়েলকে পেয়েছি। অসাধারণ একটা ছেলে। ওর মতো ছেলে পেয়ে মনে হচ্ছে প্রেম কাকে বলে। হি ইজ নাইস পারসন। তোরও ভালো লাগবে। চলে আসিস।

ফোনের লাইনটা কেটে একটু হাসলাম। হায়রে প্রেম। এই একই কথা ও এর আগের বারও বলেছিল। হি ইউ নাই পারসান। সময়ের সাথে সাথে নাইস পারসানরা বদলে যায়। প্রেমের ডেফিনেসানটাও মনে হয় এরা জানে না। প্রেমকে ধরে রাখার যে আপ্রাণ চেষ্টাটা থাকা উচিত তাই হয়তো ওরা অনুভব করে না। ওদের হাতে হয়তো অপশান থাকে। একজন গেলে কি হলো.....আরেকজন তো আসবেই। আর যে আসবে সে তো এর চেয়ে ভালো হবেই। ব্যাপারটা হয়তো ওরা এভাবেই দেখে।



গল্প নং. দুই:

চারিপাশে বন্ধুদের গার্লফেন্ডের ছড়াছড়ি দেখে আমারও সখ জাগে, ইস যদি আমার এমন এক থাকতো। সারাদিন পুতু। পুতু পুতু আহলাদি কথা বলবে। জানু কি করো? কই যাও। খবরদার ঐখানে যাবা না। খবরদার সিগারেট খারা না।

এমন খবরদারি দূর থেকে তো ভালোই লাগে। তবে কপালের দোষে তা হয়ে ওঠে না। পায়ের জুতো খসে যাওয়া। অনিয়ন্ত্রিত জীবন। হেয়ালী, দায়িত্বজ্ঞানহীন, আনরোমান্টিক একটা ছেলের কপালে কি আর গার্লফ্রেন্ড জোটে!!!

তাই বন্ধুদেরটাই দেখি। দেখি আর হাসি। আমার এক বন্ধু বলে, তুই তো শালা সারা জীবন মজা নিয়ে গেলি। অন্যেরটা দেখে মজা নেস। যেদিন ফাঁদে পড়বি দেখবি তোর মজা সবাই নেবে।

ওর কথা শুনে আমিও হাসতাম। আমার এই বন্ধুটি অত্যন্ত লাল্টু টাইপ। বড়লোক পিতার একমাত্র ছেলে। নিজগাড়ি ড্রাইভ করে আর পটাপট ইংলিশে কথা বলে। ওর সাথে থাকলে আমার একটা লাভ হয়। স্মার্ট হওয়ার একটা সুযোগ থাকে। ওর সাথে পটাপট ইংলিশ ছাড়তে যাই। নির্ভূলভাবে ইংলিশ বলে নিজেই গর্বিত হই নিজের দক্ষতা দেখে।

যাইহোক। আমার সেই বন্ধুরও একটি গার্লফ্রেন্ড আছে। অতি স্মার্ট গার্লফ্রেন্ড। সেই একই নেকামি টাইপ গার্লফ্রেন্ড। জানু আর বেবি ছাড়া কথাই বলতে পারে না।

তাদের সাথেই ঘুরতে বের হয়েছিলাম একদিন। কি প্রেম তাদের। আমি গাড়ির পেছনের সিটে চুপচাপ নিজেই বিব্রতবোধ করছিলাম। নিজেকে মনে হচ্ছিল, একটা মুরগী। ওদের অতিমাত্রায় প্রেমে আমিও নিজেও বিগলিত। আর মনে মনে আফসোস। হায়রে। কেন যে আমার গার্লফ্রেন্ড নাই। কত্ত সুখ এই প্রেমে।

এই সব ভাবতে ভাবতে দেখি সামনের সিটে চিৎকার চেচামেচি। ঘটনাটা ঠিক মত দেখলামই না। হঠাৎ রাস্তায় গাড়ীটা থামানো হলো। আর আমি স্পষ্টভাবে শুনলাম, তুই তুকারি করে তারা একে অপরকে বলছে। এক পর্যায়ে মেয়েটাকে গাড়ী থেকে জোর করে নামিয়ে দেয়া হলো। আর সো করে গাড়িটিকে টানা হলো।

আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। পেছন থেকে শুধু বলছি, দোস্ত মেয়েটা ওঠা।

সে পেছন থেকে বলল, তুই চুপ থাক।

আর বার বার ফোন। বার বার ফোন। আমি শুনছি মেয়েটির কান্নার আওয়াজ। বার বার ফোন দিচ্ছে আর আমার বন্ধুর ধমকে লাইন কেটে যাচ্ছে। আবার ফোন। বার বার ফোন। কথা একটাই, প্লিজ আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও। আমি কিচ্ছু চিনি নাতো।

আর আমার বন্ধু খুব গম্ভীর ভাষায়, ট্যায়েক এ সিএনজি। এন্ড গো হোম।

মেয়েটারও নেকামী যায় না। বার বার ফোন দিয়ে একটাই কথা। আমি একা কিভাবে যাবো। মনে হয়, এই ঢাকা শহরে তার একা চলে কোনো অভ্যাস নাই।

শেষে আমিও অনুরোধের বাতি জালাই। বেচারা আমার বন্ধু শেষে বাধ্য হয়ে আবার গাড়ী ঘুরিয়ে সেই জায়গায় পৌছায়। যেখানে মেয়েটি নামিয়ে দিয়েছিল।

বেচারি গাড়ী উঠেই অঝোরে চিৎকার করে কাদতে থাকে। তার একটাই প্রশ্ন। আমাকে তুমি এভাবে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দিলে। এভাবে কিভাবে পারলে। হাউ ক্যান ইউ ডু দিস।

আমি পেছন সিটে চুপচাপ বসে আছি। সামনে কান্না আর প্রশ্ন। আর আমার বন্ধু তখন গাড়ী ড্রাইভে মনোযোগ দিয়ে আছে।

---------------------------------------------------------------------------



হ্যা প্রেম। এগুলোই প্রেম। আমাদের প্রেমগুলো এমনই হয়ে গেছে। সম্পর্কের নূন্যতম মর্যাদা এখন আর নেই। রিলেশান নামক বিষয়টা যেনো এখন স্টাইল আর ফ্যাশান পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন আর কেউ কারও জন্য অপেক্ষা করে সময় নষ্ট করবে না। এখন কেউ প্রেমের জন্য সব কিছু সেকরিফাইস করবে না। এখন যুগ পাল্টেছে। এখন এগিয়ে যাওয়ার সময়। তাই এই সম্পর্কগুলোও এগিয়ে যাচ্ছে। সন্দিহান সম্পর্কগুলোর উদ্দেশ্যহীনতা নিয়ে কেউ ভাবছে না।

আমার এক শিক্ষক বলেছিলেন, হিন্দি সিরিয়ালগুলো সম্পর্ক নামক বিষয়টাকে খেলা বানিয়ে দিয়েছে। তার সেই খেলা আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে বাস্তব হয়ে।

আর প্রজন্ম এখন এই খেলায় মেতে উঠেছে। প্রেমকে এখন আর ভালোবাসা দিয়ে জয় করতে পারে না। ভালোবাসা কি তবে এতই মূল্যহীন হয়ে গেছে?

মন্তব্য ৩৪ টি রেটিং +২২/-১

মন্তব্য (৩৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুলাই, ২০০৯ ভোর ৪:৩৩

এইচ, এন আশীকুর রাহমান বলেছেন: আমি তথাকথিত প্রেমের লাইনে একেবারেই অজ্ঞ। মাঝে মাঝে যে মনে হয়নি যে কেউ এসে আমার হাত ধরবে তা নয়, হয়েছে। কিন্তু আমি তা আমার ফেরোমেন হরমনের উপর দোষ দিয়ে নিজেকে প্রবধ দেয়ার চেষ্ঠা করেছি। আমি নিজেকে নিয়ে একটু গর্ববোধ করি কারণ যে সময়টাতে আমার বয়সী ছেলেমেয়েরা গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড জটিলতা নিয়ে ব্যাস্ত সময় কাটাত আমি তখন কিছু বাস্তব কাজের স্বপ্ন দেখতাম। তারপরেও আমিও তো মানুষ, মনের কোনে তো কার ছবি উঁকি দেয়, কিন্তু হ্যাঁ সে ছবির ফ্রেম আকটাই আর তাতে মানবী-ও এয়াকজনই। এটাই কি উচিত না?।

আসুন একটু চিন্তা করি। আমদের-ও তো পরবর্তী প্রজন্ম আছে। আমরা তাদের কি শিক্ষা দিব। আমাদের আদর্শ কোথায় যাবে। এখন যে আবাধ তথাকথিত প্রেমের জোয়ার চলছে তা কি প্রকারন্তরে আমাদের আদর্শকেই বিপন্ন করছে না? এই আকালপক্ক প্রেমের হোলিখেলা কি আবাধ যৌনতার ভয়াবহতার জন্ম দিতে পারে না?। কি জবাব দেবেন আপনি আপনার ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে?

আমি প্রেমের বিপক্ষে নই। শুধুমাত্র মাল্টিপ্রেমের যে ভয়াবহতার ইঙ্গিত আমার কলেজ জীবনের আন্যতম শ্রেষ্ঠ বন্ধুটি তার ভাষায় তুলে ধরেছে তাতে গলা মেলালাম

২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:০৮

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: দোস্ত, তোর কমেন্ট পড়ে আমি মুগ্ধ। অসাধারণ বলেছিল। তাই প্রতিউত্তরে কিছুই বলবার নেই।
ভালো থাক।

২| ১৯ শে জুলাই, ২০০৯ সকাল ৯:৩৩

রাতের বৃষ্টির শব্দ বলেছেন: কেন যে আমার গার্লফ্রেন্ড নাই। কত্ত সুখ এই প্রেমে।
সুখটা টের পাবেন ভাল মত....

২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:০৮

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: আমারে কি হুমকি দিলেন? ;)

৩| ১৯ শে জুলাই, ২০০৯ সকাল ১০:৩৫

সাহোশি৬ বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে মনে হলো আপনি ঊনবিংশ শতাব্দীর মানুষ, ভুল করে একবিংশ শতাব্দীতে চলে এসেছেন।

রাতের বৃষ্টির শব্দ এর সাথে একমত।

২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:১১

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: কি আর করার ভাই।
উনবিংশটাই যদি সভ্য হয় তবে না হয় সেখার মানুষই হলাম। সমস্যটা কোথায়।

৪| ১৯ শে জুলাই, ২০০৯ সকাল ১০:৪৭

আহমেদ রাকিব বলেছেন: কি বলবো বুঝি না। যাই হোক, লেখার স্টাইল ভালোই।

২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:১৪

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: ধন্যবাদ রাকিব ভাই। আসলে সত্যের মুখোমুখি কেউ কিছুই বলতে পারে না।

৫| ১৯ শে জুলাই, ২০০৯ সকাল ১১:২৬

জেরী বলেছেন: হিন্দি সিরিয়ালগুলো সম্পর্ক নামক বিষয়টাকে খেলা বানিয়ে দিয়েছে.......।১০০% সত্যি কথা

২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:২২

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: আমার মাঝে মাঝে সিরিয়ালগুলোর ডিরেক্টারদের প্রশ্ন করতে মন চায়, সম্পর্ককে শুধু শুধু তারা কেনো এতো জটিল করে তোলে।
পৃথিবীতে যদি সম্পর্ক এতো জটিল হতো তবে তো মানুষ হাসতেই ভুলে যেতো।

৬| ১৯ শে জুলাই, ২০০৯ দুপুর ১:১৩

অলস ছেলে বলেছেন: লেখা সুন্দর। প্রেম জাদুঘরে।

২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:২৬

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: হুমম...প্রেম জাদুঘরে।
:) ধন্যবাদ।

৭| ১৯ শে জুলাই, ২০০৯ দুপুর ১:১৬

কাঙাল মামা বলেছেন: ভালো লিখচেন

২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:৩৭

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: :)

৮| ১৯ শে জুলাই, ২০০৯ দুপুর ১:৪১

কালো রঙের পাকা চুল বলেছেন: মেয়েটাকে আপনার বন্ধু এভাবে রাস্তায় নামিয়ে দিল কী করে ???? ওরে থাপ্পড় মারলেন না কেন???? গাড়িতে উঠাইছে যখন ও, পোউছে দেবার দায়িত্বটাও তারই। লাস্টের ঘটনা শুনে মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল।

যাউক, গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ফালাফালি বা রিলেশন নিয়ে মাতামাতিটা আসলে পাশ্চাত্য রীতি, যদিও অনুভূতিটা একান্তই মানুষের নিজের।

মনের মত একজনকে খুঁজে বেরানোর আপ্রাণ চেষ্টা। না বললি কী করে !!! আবার, এভাবে খুঁজতে খুঁজতে নিজেকেই হারিয়ে ফেলছে, এটার পক্ষেই বা যাই কী করে !!

২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:৪১

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: ওরে ভাই আপনে এতো খেপলেন কেনো?
এইটাতো গল্প। লিখছি সত্যি ঘটনার মতো। ;)

৯| ১৯ শে জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৫:০৯

সোহানা মাহবুব বলেছেন: বিশ্লেষণ ভাল লাগল.......আসলেই প্রেম এখন একটা ফ্যাসনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
+++

২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১০:০৫

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: কেমন আছেন আপনি?

১০| ১৯ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১১:৪৯

ভাঙ্গা পেন্সিল বলেছেন: কি জানি? আমি এই ডিপার্টমেন্টের না/:)

২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১০:০৮

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: ভাঙা পেন্সিল ভাই, কি যে বলেন.....এই ডিপার্টমেন্টে এখনো ঢুকতে পারলেন না?
ঢুকেন ঢুকেন....টের পাবেন... ;)

১১| ২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:৩৪

জনৈক আরাফাত বলেছেন: গল্প এক-এর অভিজ্ঞতা শোনার কাহিনী কম নেই আমারও!

২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১০:০৯

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: তাহলে অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
আমরা শুনি। :)

১২| ২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:৫৬

সাইফ ইমাম বলেছেন: পুরোটা পড়লাম, বেশ ভালো লাগলো!!

২০ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১০:১০

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

১৩| ২৮ শে আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫৭

লালসালু বলেছেন: আমি গরিব মানুষ অত শত বুঝি না।

২৯ শে আগস্ট, ২০০৯ সকাল ১০:৪১

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: আমিও ভাই গরিব। তারপরও গরিব হইলেও বুঝতে হয়। :)

১৪| ২৮ শে আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:০৮

নাঈম বলেছেন: অসাধারণ একটা লেখা, একেবারে আমার মনের কথা, অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর এই লেখাটির জন্য।

৩০ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:৫০

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: নাঈম ভাই, কেমন আছেন?
ধন্যবাদ।

১৫| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৩২

পেন্সিল বলেছেন: লেখাটা ভালো হয়ছে কিন্তু ভাই এইসব মাল্টি প্রেম করা আমার এক বন্ধুর নিঃসঙ্গতা মাঝে মাঝে আমি টের পাই...ওর অনেক গার্লফ্রেন্ড,তারপরেও ছেলেটার একাকীত্ব দেখলে মায়া হয়।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:০৮

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: মাল্টিপ্রেম যারা করে তারা নিজের মনের কাছে মারাত্মক রকম অসহায়।

১৬| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:২৪

যুধিষ্ঠির বলেছেন: ভাল লাগ্ল। জানিনা কপালে কি আছে... প্রেম করছি এবং তা ধরে রাখার জন্যই চেষ্টা রত।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:১০

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: ইনশাল্লাহ ভালো থাকবেন।
একে-অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধটাই আসল। তা যদি থাকে তাহলে দেখবেন অনেক সুখী হতে পারবেন।
ভালো থাকুন সবসময়।

১৭| ১৭ ই অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ১০:২৮

জইন বলেছেন: ভাই এখনও কিছু লোক আছে যারা প্রেমের জন্য সব কিছু করতে পারে।

২০ শে অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ১০:৫২

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: জি....আপনার কথাও ঠিক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.