![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সম্প্রতি গরুর গোশত খাওয়ার গুজবে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের হাতে এক মুসলিমের মৃত্যু হয়। গত মাসের হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ও সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ভারতের মানুষের আচরণের বিষয়টি আবারও আলোচনায় আসে।
হিন্দু চিন্তাধারায় সব সময় গরুর গোশত খাওয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হতো না, এটা লিখে ইতিহাসবিদ দ্বিজেন্দ্র নারায়ণ ঝা হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছ। সে বলে, ‘দেশে ক্রমবর্ধমান হারে অসহনশীলতার প্রবণতা বাড়ছে।’
দিল্লি ইউনিভার্সিটির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক দ্বিজেন্দ্র বলে, ভারতের খাদ্যতালিকায় গরুর গোশত সংক্রান্ত ২০০১ সালে তার লেখা একটি বই প্রকাশ হলে তিনি মৃত্যুর হুমকি পেয়েছিল। ‘দ্য মিথ অব দ্য হলি কাউ’ নামের বইটি প্রাচীন লেখার ওপর ভিত্তি করে রচিত।
এ বিষয়ে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সঙ্গে কথা বলেছে ইতিহাসবিদ দ্বিজেন্দ্র নারায়ণ ঝা।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল : গরুর পবিত্রতা ধারণাটি হিন্দু বিশ্বাসে কোত্থেকে এলো?
দ্বিজেন্দ্র নারায়ণ ঝা : ভারতে বৈদিক যুগে (আনুমানিক খিস্ট্রপূর্ব ৮০০-১৫০০ সাল) পবিত্র গরু ধারণাটি ছিল না। বৈদিক আর্যরা গরু বলিদান করত এবং এর গোশত খেত।
বৈদিক লেখায় গরুকে সবচেয়ে বেশি উপমা ও রূপক হিসেবে ব্যবহার হয়েছে এবং সময়ের পরিক্রমায় এগুলোকে আক্ষরিক অর্থে ধরে নেওয়া হয়।
পরের কয়েক শতকে গরুর পবিত্রতার আংশিকভাবে ধারণা তৈরি হয় এবং প্রাচীন ভারতীয় লেখায় উল্লিখিত বলিদানের উদ্দেশে গরু হত্যা—দুটো বিষয়ই পাশাপাশি চলতে থাকে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল : হিন্দুরা কখন গরু খাওয়া ছেড়ে দিল?
দ্বিজেন্দ্র নারায়ণ ঝা : খ্রিস্ট শতকের শুরুর দিক থেকে, প্রথম সহস্রাব্দের মধ্যভাগে ব্রাহ্মণদের লেখায় গরু খাওয়ায় নিরুৎসাহ এবং গরু জবাই নিষিদ্ধ করা আরম্ভ করে।
মৌর্যযুগ-পরবর্তী গ্রামীণ সমাজে, বিশেষ করে প্রথম সহস্রাব্দের মধ্যভাগে অভূতপূর্ব কৃষি সম্প্রসারণ হয়েছিল; আর এই সময়ে রূপান্তর ঘটে—এ থেকে মানুষের আচরণ পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট তৈরির বিষয়টি বোঝা যাবে। ভূমির মালিক ব্রাহ্মণদের সামন্তপ্রভু হিসেবে উদ্ভব হয়, তারা আরো বেশি কৃষিকাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে, যা আগের সময়ে ছিল না। ব্রাহ্মণদের হাতে গরু হত্যা নিষিদ্ধ এবং প্রাণীরক্ষার ক্ষেত্রে এই বিষয়টিই কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল : আজকাল গরুর গোশত খাওয়া কি হিন্দুধর্মের মানানসই নয়?
দ্বিজেন্দ্র নারায়ণ ঝা : প্রাচীন ভারতে বহু শতক ধরে গরুর গোশত খাওয়ার রেওয়াজ চালু ছিল, তার প্রমাণ প্রাচীন ভারতীয় লেখায় বলিষ্ঠ প্রমাণ রয়েছে। ‘গরু-বলয়’ নামে পরিচিতি এসব অঞ্চল থেকে ক্রমেই এ রেওয়াজ উঠে যায়। তবে দেশের অনেক অংশে যেমন কেরালা ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে এখনো এই অভ্যাস (গরু খাওয়া) চালু আছে। কেরালায় ৭২টি সম্প্রদায় গরু খায় এবং এদের অনেকেই হিন্দু। সুতরাং আমি বলব না যে গরুর গোশত খাওয়া হিন্দু-আদর্শের সঙ্গে বেমানান। তবে একই সঙ্গে অনেক হিন্দু আছে যারা গরু স্পর্শ করে না, এমনকি কোনো মাছ-গোশতও খায় না। যা এক শ্রেণির হিন্দুর কাছে গ্রহণযোগ্য, আরেক শ্রেণির কাছে নয়।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল : ভারতে গরুরক্ষা নিয়ে যে বিতর্ক চলছে সে বিষয়ে কী মনে কর?
দ্বিজেন্দ্র নারায়ণ ঝা : নাগরিকদের খাদ্য অভিরুচি নিয়ে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই। এই নিষেধাজ্ঞায় একটি বিষয় অবজ্ঞা করা হয়েছে যে, নিম্ন বর্ণ ও দরিদ্রদের জন্য আমিষের সস্তা উৎস হচ্ছে গরু। এ ছাড়া গোশতশিল্পের সঙ্গে জড়িত লোকজনের জীবন-জীবিকার ওপরও নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং এটা ভারতের অর্থনীতিতে নানাভাবে জড়িয়ে আছে।
২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:০৫
সাঈদ জামিল বলেছেন: ভাই এইটা দৈনিক আনন্দ বাজারের একটা প্রতিবেদন নিউজ
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:০০
ধমনী বলেছেন: মানবজাতি গোমাতার সন্তান কীভাবে হয়? ব্রাহ্মণদের হাত থেকে চাষের গরু বাচাতেই গোমাতা ধারণা তৈরী করা হয়েছিল।