নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ছাইদুর রহমান।অ্যাকোইন্টেন্সরা আরিফ নামে জানে।ব্লগে লিখি “ছায়ীদ ‍আল আরিফ” নামে।কতো ভেরিয়েশন তাইনা? আমিও ঠিক এমনই, ভেরাইটিজ।কোন বিষয়ে স্পেশালিটি নাই বাট নানান বিষয় জানতে ভালো লাগে...\nস্বপ্ন দেখি সুন্দর কিছুর...

ছায়ীদ আল আরিফ

আকাঙ্ক্ষা, জীবন কাটে যেন জ্ঞান অন্বেষণে।

ছায়ীদ আল আরিফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসার হাহাকার এবং প্রকৃত ভালোবাসা

১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৪৮

প্রায় আধামাস।একটি নতুন চাকরিতে যোগ দিয়েছি।আমার জীবনে এটাই প্রথম চাকরি।কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা মোটেও ছিল না আমার।অনভিজ্ঞ আমার ঝুলিতে এখন প্রতিটি কর্মদিবসেই (মাসের তিরিশ দিনই আমার কর্মদিবস।সাপ্তাহিক, মাসিক কোন ছুটি আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নহে।) জমা হচ্ছে নানা রকমের অভিজ্ঞতা।অর্জন হচ্ছে চোখের আবডালে থাকা বৈচিত্র্যময় শিক্ষা। কোনটা সুখের, কোনটা দুখের।আবার কোনটা সুখে দুখে মিশ্রিত।এর মধ্যে সবচেয়ে বড় শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার কথা-আমি একটি শব্দের মর্মার্থ উপলব্ধি করেছি এবং করছি।শব্দটি আমাদের চিরচেনা।চাকরি।আমার সুস্পষ্ট ধারণা এবং দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে, "চাকুরি- চাকর"শব্দদয়ের উদ্ভব সম্পর্কে।সুতরাং আমি চাকরগিরি করছি বলতে দ্বিধা নেই।
যেখানে "মালিক শ্রমিককে এবং ঊর্ধ্বতন অধঃস্তনকে শোষণ করবে" এই জঘন্য ইতিহাস এখন স্বচক্ষে দেখছি এবং নিদারুন উপভোগ করছি।যেখানে প্রেম ভালোবাসা, সহযোগিতা সহমর্মিতা এবং মানবতার বিন্দুমাত্রও উপস্থিত নেই।সেখানে মালিক স্বার্থান্ধতায় বুঁদ হয়ে শ্রমিকের উপর করে অবিচার।ঊর্ধ্বতনও অভিন্ন কারণে অধঃস্তনকে করে অত্যাচার।মোট কথা এখানে স্বার্থহীন কেউ কারো আপন নয়।আপন ভাবাও পাপ।হতভাগ্য যখন আমাকেও এই ময়দানে তাড়িয়ে এনেছে তাই আমিও সবার পর।
.
মানুষ যখন চরমভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়ে তখন সামান্য উদারতাকে তার মনে হয় এক আকাশ উদারতা।যেমন প্রচণ্ড তৃষ্ণায় গলা শুকিয়ে যখন কাঠ,বুক ছটফট করছে এক ফোঁটা পানির জন্য ঠিক এমন মুহূর্তে এক গ্লাস পানিকে মনে হয় এক সমুদ্র পানি।
আজকাল আমার অবস্থা এরচেয়ে কোন অংশে কম নয়।আমাকে এক আকাশ নয় এক বুক উদারতা দেখানোর কেউ নেই, এক সমুদ্র নয় এক গ্লাস পানি পান করাবার কেউ নেই।
আমার এই একাকিত্ব এবং সংকটাপন্নের এখন অমাবস্যা রজনী।জানি না সুবহে সাদিকের উদয় কবে হবে।
.
অমাবস্যা রজনীতে চাঁদ-তারা কোনটারই জেগে থাকার নিয়ম নেই।কিন্তু আমার জীবনের অমাবস্যা রজনীতে এ নিয়ম ভঙ্গ হলো।পশ্চিম দিগন্তে অকস্মাতই উদয় হলো একটি ধ্রুবতারার।ঝলমলে আলোকোজ্জ্বল।সেখান থেকে টর্চ লাইটের আলোর মতো ছোট্ট পরিসর বেয়ে নেমে এল এক নরম আলোকরশ্মি।ঠিক আমার হৃদয়ের মণিকোঠায় গিয়ে জায়গা করে নিল।দিলের সব অন্ধকার ধুরীভূত হলো।সৃষ্টি হলো এক আলো ঝলমল শীতল রাজ্যের।সেই শীতল পরশে হৃদয়ে এক অপার্থিব শিহরণ জেগে উঠলো।যেন পিপাসার্ত মরুপথিকের সামনে অযাচিত পানির নহর প্রবাহিত হলো।ক্ষণিকের জন্য হলেও।
.
পলাশ রহমান।কলম-জগতের এক পরিচিতমুখ।এক মহারণবীর।এক কৌশলী কলমযোদ্ধা।অনলাইন-অফলাইনে লিখে যাচ্ছেন যিনি সমান তালে।এ জগতে তাঁকে এখন অগ্রজ বা প্রবীণ বলা যায়।তাঁর সবচেয়ে পছন্দের বিভাগ হলো ফিচার, প্রবন্ধ, নিবন্ধ, বিশ্লষণধর্মী লেখা ইত্যাদি।এ সবেই তিনি খুব আয়েশ পান।
ফেসবুকের কল্যাণে অনেক আগে থেকেই তাঁর ছোহবত পেয়ে আসছি।কিন্তু এতো লম্বা সময়েও তাঁর সাথে কথা হয়নি কোনদিন। সম্প্রতি তাঁর কিছু লেখা পড়ে...
গত দু'দিন আগে তার ফেসবুকে ইনবক্স করি।কোন ভূমিকা ছাড়াই আমার লেখালেখির অগ্রগতির বিষয়ে তার সহায়তা কামনা করি।তিনি উদারচিত্তে সাড়া দেন।সময় নিয়ে আমাকে ফোন করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।এখানে এসে একটা কথা না বললেই নয়, তিনি ইতালির প্রবাসী।প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা আমার নেই।তবে, বোধ করি নির্বাসন দণ্ডের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।চাট্টে ভালো খাবার, ভালো পরার এবং ভবিষ্যতে একটু আরাম আয়েশে কাটানোর বাসনায়ই এ মহাদণ্ড কাঁধে নিয়ে ছুটে যান বিদেশ বিভুঁইয়ে।হেলে বসে ঘুমাবার জন্য নয়।অনেকেরতো এমন শুনেছি, দিবস রজনী মিলে বড়জোর তিন, চার ঘন্টা ঘুমাবার ফুরসত পান। এইতো তাদের কর্মব্যস্ত আপনজন বিচ্ছিন্ন জীবন।
আমার জানা মতে পেশাদার কলমসৈনিক তিনি নন,বরং নেশাদার।অথবা দায়িত্ববোধ নিয়ে লিখেন।কিন্তু আমি ভাবতেই ভয় পাই এবং বিস্ময় বোধ করি ভিন্ন পেশার একজন মানুষ কীকরে এতো নিপুণভবে কলম চালান!এতো বিস্তর সময় তিনি কোথায় পান!?
.
একদিন পর।গতকাল রাত দশটা একচল্লিশ মিনিট।বিদেশি নম্বর থেকে একটা ফোন আসে।আমি ধরেই নিই পলাশ ভাই হবেন।হলোও ঠিক তাই।তারপর দীর্ঘ পঁচিশ মিনিট তাঁর সঙ্গে কথা।কথার ভেতর দিয়েই উপলব্ধি করি তাঁর চিন্তার বিশুদ্ধতা, ভাষার সারল্যতা, উদার মানসিকতা, অসীম আন্তরিকতা এবং সঠিক নির্দেশনা।অজানা, অচেনা এবং অদেখা এই মানুষটি যেন আমার হাজার বছরের পরিচিত।তাঁর এই অনিন্দ্য মধুর আচরণ আমাকে প্রবলবেগে মুগ্ধ করে।আমার কিছুদিনের পুঞ্জীভূত একাকিত্ব এবং সংকীর্ণতা যেন মুহূর্তে দূর হয়ে যায়।মন মস্তিষ্ক সাথে সাথেই ফুরফুরে হয়ে ওঠে।এক অপার্থিব সুখ এসে আঁচড়ে পড়ে আমার হৃদয়তটে।
কথার সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ভালোবাসার বন্ধন অটুট হতে থাকে।এক সময় আবদারের সুরে বলেই ফেলি "পলাশ ভাই! এখন থেকে মাঝে মাঝেই বিরক্ত করবো কিন্তু"।তিনি হাসি ও প্রত্যয়ভরা স্বরে বলেন "অবশ্যই! আমার সাধ্যে যতটুকু কুলোয় পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ"। প্রবাসের অপরিসীম বাধ্যবাধকতার জীবনের ফাকে আমার মতো অনুজকে তাঁর মূল্যবান দিয়েছেন; এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।
.
সত্য বলতে কী, আমার ফেসবুক বন্ধু তালিকায় শ'য়ে শ'য়ে কবি, লেখক, পাঠক, বিশ্লেষক, আলোচক, সাংবাদিক বা এই গোছের মানুষ আছেন।কিন্তু খুবই কম পেয়েছি এমন নিঃস্বার্থ ভালোবাসা বিলানোর মানুষ।যে ভালোবাসার বিনিময় এমন হাজার পৃথিবী দিয়েও শোধ করা সম্ভব না।
প্রকৃতপক্ষে, এ ধরায় ঐসব মানুষের অভাব খুবই প্রবল।বিশেষকরে আমার বর্তমান ঠিকানায় এর অভাব সীমাহীন।তবুও জীবন নদী বয়ে চলছে নিশীদিন।
.
পুনশ্চঃ পলাশ ভাইয়ের ফোনের বিলটা হয়তো আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব :-Dকিন্তু ভালোবাসার বিল?সেই একই কথা,এমন হাজার পৃথিবী দিয়েও সম্ভব না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.