নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ শুধু মানুষের জন্য না, জগতের সকলের জন্য

গরল

জগতের সকল প্রাণী শান্তি লাভ করুক

গরল › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাখির বাসায় বা পশু-পাখিকে ঢিল ছোড়া আর চলন্ত ট্রেনে ঢিল ছোড়ার মধ্যে মানসিক ব্যাবধান কতটুকু

২৭ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ২:৪৭


কিছুদিন ধরে একটা উপদ্রব শুরু হয়েছে, চলন্ত ট্রেনে ঢিল ছোড়া হচ্ছে, এমনকি বেশ কিছু মানুষ আহত ও নিহতও হচ্ছে। এবং এসব ঢিল ছুড়ছে শিশু কিশোরেরা আর সে কারনেই হয়ত সরকার এটাকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছে না, ভাবছে এসব এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত কোন কার্যকরী পদক্ষেপ বা আইনগত ব্যাবস্থা নিতে সেরক একটা দেখা যায়নি। মিডিয়াগুলোউ খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। এবং এটা মনে হচ্ছে সংক্রামক আকারে একটু একটু করে খুব ধীর গতিতে হলেও বিভিন্ন যায়গায় ছড়িয়েও পড়ছে। আশংকা হচ্ছে যে এটা মহামারি আকারে দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে। কারণ বাংলাদেশে খারাপ কিছু খুব সহজেই মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে। আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এটা নিছক বিনোদনের জন্যই বাচ্চারা এসব করছে। এটা যদি স্যাবটাজ হয়ে থাকে, হতেও পারে যে ট্রেন জার্নিকে বিভিষিকাময় করে তুলার জন্য কেউ এটা করছে কারন ট্রান এখনও সবচেয়ে নিরাপদ, আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী, তাহলে সেটা নিয়ে আসলে আমাদের করার কিছুই নেই কারণ পরিবহন ব্যাবসায়ীরা এই দেশে অনেক শক্তিশালী। তারা এমনকি সরকারকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে আর সাধারণ মানুষকে জিম্মি করতে পারে। বাংলাদেশে ট্রেনটা ধ্বংসের জন্য মূলত তারাই দায়ি এবং তারা যে কোন মূল্যে ট্রেনকে বাংলাদেশে প্রধান যানবাহন হতে দিবে না। তাই মানুষকে ভয় দেখিয়ে বা ট্রেনকে কোনভাবে অনিরাপদ প্রমাণ করতে পারলে যা একটু ঘুরে দারাচ্ছে তাও থমকে যাবে। এটা ঠিক যে এই সরকার রেল এর উন্নয়নের জন্য সামান্য হলেও কিছু করছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া লাইন পূণরায় চালু করেছে এবং সম্পূর্ণ নতুন কিছু লাইনও চালু হয়েছে। আর তাই এটা পরিবহন ব্যাবসায়ীদের জন্য একটা মাথা ব্যাথার কারণ হলেও হতে পারে।

আর এটা যদি স্যাবটাজ না হয়ে থাকে তাহলে তা আমাদের সমাজের মানবিক মূল্যবোধ এর অবক্ষয় চুড়ান্ত রুপই বলতে হবে যার পরিণতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। ছোট বেলায় দেখতাম বা নিজেরাও কিছু কিছু ক্ষেত্রে করতাম তা হল নিছক মজা পাওয়ার জন্য পাখির বাসায় ঢিল মারা, ব্যাঙকে ঢিল মারা, কুকুর বিড়ালকে লাঠি দিয়ে হয়ত একটা বাড়ি দেওয়া, দল বেধে সাপ মারা, বেজী মারা, শিয়াল মারা, ফড়িং এর পাখনা ছিড়ে দেওয়া, পাখি শিকার করা বা এরকম পশু-পাখির উপড় অনেক অত্যাচার চালান। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই বড়রা কখনও মানা করত না এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারাও অংশগ্রহন করত। পশু-পাখিকে কষ্ট দিয়ে আনন্দ লাভ করা যেন আমাদের সংষ্কৃতিরই একটা অংশ, এটা যেন একটা বিনোদন এর মাধ্যম। আমাদের এই বিকৃত বিনোদনের জন্যই দেশের অনেক প্রাজাতির পশু-পাখি বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং আরও কিছু হওয়ার পথে। আমাদের স্কুল কিংবা পরিবারে কখনই শিক্ষা দেওয়া হয় নাই যে পশু-পাখিও কষ্ট পায় এবং তার চেয়েও বড় কথা ওরাও আমাদের পরিবেশ প্রকৃতিতে ভূমিকা রাখে। তদুপরি এটা খারাপ কাজ বা অন্যায় বা সামাজিক অপরাধ যদিও এখন একটা আইন করেছে সরকার যে পশু-পাখিকে বিনা কারণে কষ্ট দেওয়া দন্ডনীয় অপরাধ। কোন আইনই কার্য্যকর হয় না বা রোধ করা সম্ভব হয় না যদি না এটা সামাজিক ভাবে অন্যায় বা অপরাধ হিসাবে আগে স্বীকৃতি না পায়। এগুলোতো আমাদের সমাজে কেউ কোন রকম অন্যায় বা অপরাধ বলেই গণ্য করে না। অতএব এটা খুব অস্বাভাবিক যে পশু-পাখিকে কষ্ট দেওয়াটা কিছু কিছু মানুষের কাছে তখন পানসে হয়ে যাবে এবং আরও বেশি বিনোদন বা উম্মাদনার জন্য তখন তারা মানুষকেও কষ্ট দিতে কুন্ঠাবোধ করবে না। আমরা বোধ হয় দিনে দিনে সেই অবক্ষয়ের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি এবং এই মানসিক ব্যাধিকে কেউ মানসিক ব্যাধি বলে গণ্য করছে না বলেই এই ব্যাধি সারানো সম্ভব হবে না এবং এটা একসময় সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়বে। মাঝে মাঝে ফেসবুকে কুকুর বিড়াল নির্যাতনের যেসব ফটো বা ভিডিও পাই সেগুলো রিতীমত লোমহর্ষক ও নির্মম আর এসব করছে কিন্তু কোমলমতি কিশোরেরাই। আমরা কি এখনও আদিম ও বর্বরই রয়ে গেলাম?

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: ট্রেনে করে সিলেট যাওয়ার পথে শ্রীমঙ্গল আসলেই মানুষ ট্রেনের জানালা দিয়ে চা বাগানের ছবি তুলতে চেষ্টা করে। তখন বাইরে থেকে বড় বড় পাথর ছুড়ে মারে। পাথর লেগে হাত থেকে মোবাইল পড়ে যায়। চলন্ত ট্রেন থেকে কেউ আর নেমে মোবাইল নেওয়া সম্ভব না।
এটা গত কয়েক বছর ধরে এরকম চলছে। তাদের ছোড়া পাথর থেকে অসংখ্য মানুষ আহত হয়।
আমার নিজের চোখে দেখা, আমার পাশে বসা একটি মেয়ের কানের কাছে পাথর লেগে অনেকখানি কেটে যায়।

২৭ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:১৬

গরল বলেছেন: চলন্ত ট্রেনে হাত থেকে মোবাইল পড়লে তো আস্ত থাকার কথা না, মোবাইল নেওয়ার জন্যই কি এমন করে? এ পর্যন্ত যা শুনেছি যে জানালায় ঢিল ছুড়ে খামোখাই, গ্লাস ভেঙ্গে মজা পায়।

২| ২৭ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৯

রিফাত হোসেন বলেছেন: কিছুদিন ধরে একটা উপদ্রব শুরু হয়েছে, চলন্ত ট্রেনে ঢিল ছোড়া হচ্ছে!!

সাহেব আমি তো আজ থেকে অনেক অনেক বছর আগে থেকে এই ব্যাপারে হালকা অভিজ্ঞতা পেয়েছি। কারণ কেউ একজন দ্রুত এসে জানালাগুলি বন্ধ করে দেয়। এটা নতুন নয় তবে স্থান-কাল-পাত্র পরিবর্তন হতে পারে।ব্যাপারটা ভাল লাগার না। কিছু করা উচিত

২৭ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:২০

গরল বলেছেন: ঠিক বলেছেন এটা নতুন কিছু না তবে এখন এর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সম্প্রতি একজন মারাও গেছে। অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

৩| ২৭ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


ট্রেন লাইনের পাশের গ্রামের লোকদের নিয়ে মেলার মতো করে, গ্রামবাসীকে বুঝাতে হবে যে, লাইনটি তাদের

২৭ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:১৯

গরল বলেছেন: চমৎকার পরামর্শ দিয়েছেন, এভাবে হয়ত কাজ হতে পারে। কিন্তু ট্রেন লাইনটা তাদের হলেও ট্রেন টা বা ট্রেনের মানুষগুলো তাদের কেউ না। তবে কিছুটা হলেও কাজ হবে, ধন্যবাদ উপযুক্ত পরামর্শের জন্য চাঁদগাজী ভাই।

৪| ২৭ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:১০

কাইকর বলেছেন: এগুলোর বিরুদ্ধে খুব সহজে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। মানুষের মনুষ্যত্ব যে কবে ঠিক হবে। ট্রেন লাইনের পাশের গ্রামের অধিকাংশ মানুষেরা খুব গরীব ও নিম্নমানের মানুষ।

২৮ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১১:০৪

গরল বলেছেন: যে জাতির মূল্যবোধ আছে সে জাতির ধনি গরীবের মানসিকতার কোন পার্থক্য থাকে না। অনেক ধন্যবাদ কমেন্ট করার জন্য।

৫| ২৭ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৪

আঁধার রাত বলেছেন: কোন পার্থক্য নাই। দু’দলই মানসিক বিকারগ্রস্থ। কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করলে ঠিক হয়ে যাবে। আমরা বাঙ্গালীরা বাঁশ খাইতে দেখলে শুধরে যায়।

২৮ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১১:০৫

গরল বলেছেন: ভাই শুধু শাস্তি দিয়ে সবকিছু দুর করা সম্ভব না, এর জন্য দরকার প্রকৃত শিক্ষা।

৬| ২৮ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৩৯

করুণাধারা বলেছেন: ভরবেগের কারণে ছোট একটা পাথর ও মানুষকে কঠিন আঘাত করতে পারে। এর ফলে একজন নয়, বেশ কয়েক জন মারা গেছে।তারপরও এটা ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় নি। খুবই দুঃখজনক।

ধন্যবাদ, চমৎকার বিষয় লেখার জন্য।

২৮ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪

গরল বলেছেন: বলেছেন: থিক বলেছেন, যেমন একটা বুলেট অত্যান্ত ছোট হলেও ভরবেগের কারণে মানুষ মেরে ফেলে। ঠিক তেমনি ঘটে ট্রেনের ক্ষেত্রেও, আর ট্রেন ও পাথরের গতিপথ যদি বিপরীতমূখী হয় তাহলেতো সেটা আরো বেশি ক্ষতি করার সামর্থ রাখে। ভাল থাকবেন, শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

৭| ০৯ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:৫৩

তামান্না তাবাসসুম বলেছেন: খুব জরুরি এখটা লেখা।
আমি সবসময় বাচ্চাদের বিড়াল কুকুরকে ঢিল ছুড়তে দেখলে রেগে যাই। বলি তোমাকে কেউ এভাবে মারলে তোমার কেমন লাগবে।

০৯ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:১২

গরল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা, ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.