![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যতখানি অনুবাদ করেছো- তার বেশী প্রশ্রয় দেবোনা!!
সেদিন পার্কের ঘটনা। দূর থেকে লক্ষ্য করছিলাম পুরো ব্যাপারটা। প্রায় ষাটোর্ধ একজন বৃদ্ধা বসে অাছেন একটা বেঞ্চিতে। পাশে তার হাতব্যাগটি। চোখে চশমা পড়েছেন সোনালী ফ্রেমের মোটা কাঁচের চশমা। বিড়বিড়িয়ে কি যেন বলছিল তিনি। দূর থেকে বোঝার চেষ্টা করলাম কিন্তু নাহ! কিছুই বুঝতে পারছি না। এগিয়ে গেলাম বেঞ্চটার দিকে। একটু একটু শব্দ পাচ্ছি তখন। মনে হচ্ছে তিনি গান গাইছেন। হাঁটতে হাঁটতে তার কাছে পৌঁছে গেলাম খানিক বাদেই।
হ্যাঁ বৃদ্ধা গাইছেন। চোখ বুজে মনের খুব ভেতর থেকে গাইছেন। "যদিও তখন অাকাশ থাকবে বৈরী, কদমও গুচ্ছ হাতে নিয়ে অামি তৈরী। উতলা অাকাশ মেঘে মেঘে হবে কালো, ঝলকে ঝলকে নাচিছে বিজলী অালো, তুমি চলে এসো, তুমি এসো, এক বরষায়..."
মুহুর্তের জন্য গানের মধ্যে হারিয়ে ফেলেছি নিজেকে। হঠাৎ গান থেমে গেল। আমার ঘোর কেটে গেল পলকেই। তবে মনের মধ্যে গানের তীব্র আবেগটা অনুরণন করে যাচ্ছে। বৃদ্ধা তাকিয়ে অাছেন অামার দিকে। কিছুটা ইতস্ততঃ বোধ করছি অামি। আমাকে কাছে ডাকলো সে। আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলাম। তারপর বৃদ্ধা ইশারায় অভয় দিলো, তার সামনে গিয়ে দাড়ালাম।
"কারো জন্য অপেক্ষা করছো?"
-বৃদ্ধা প্রশ্ন করলো। হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লাম। বৃদ্ধা বলতে শুরু করলো.....
জানো, আমার জন্য সেও অপেক্ষা করতো। তবে সবসময় যে সে আগে এসে অপেক্ষা করতো তা কিন্তু না। আমিও অনেকবার অাগে এসে অপেক্ষা করে থেকেছি। কি যে বিরক্ত লাগে একা দাঁড়িয়ে থাকতে। কিন্তু সব বিরক্তি উবে যেত নিমিষেই। ওর চোখজোড়াতে একটা অদ্ভুৎ টান ছিল। মায়ার টান, গভীর এক অাকর্ষন ছিল। আমি জানো তো, নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবতী মেয়ে ভাবতাম। ও একটু ভীতু ছিল, আমিও। কিন্তু আমি ওর থেকে বেশী সাহসী। বিশ্বাস হচ্ছে না? হুম, না হওয়ারই কথা। কিন্তু ও মেনে নিতো সব। আচ্ছা তোমার কথা তো কিছু বললে না!! আর কতক্ষণ অপেক্ষা করবে???
আমি উত্তর দিতে যাবো, এমন সময় তিনি আবার বলা শুরু করলেন....
যেদিন প্রথম ওর হাত ধরেছি, আমি বুঝতে পেরেছিলাম। এ হাত ছাড়তে পারবো না অার। ওর হাতের স্পর্শটাও অদ্ভুৎ। চরম তাপদাহে শীতলতার ছোঁয়া সে হাতে, আবার তীব্র শীতে সে হাত উষ্ণতা ছড়াতো অামার মাঝে। আমরা যেদিন প্রথম একসাথে বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম, সেদিন কি হয়েছে জানো? রোদ আর বৃষ্টি একই সাথে। অনেকটা অামরা দুজনের মতো। আমি রোদ হলে ও বৃষ্টি। আর অামি বৃষ্টি হলে ও রোদ। ওর রোদটাই বেশি বোধহয়। আমি রাগ করে থাকতে পারতাম না মোটেও, কিন্তু ও রাগ করা মানেই চুপচাপ। অসহ্য সে নীরবতা। নীরব থাকার মধ্যে যে এতো শক্তি ও না থাকলে বুঝতামই না। ওর কাছে অনেক কিছুই শিখেছি। কিন্তু অামার সাথে ও রাগ করে, এটা অামার একটুও ভালো লাগেনা। আরে রাগ করো, বারণ করলো কে!! কিন্তু অামার সাথেই কেন!? আবার বলি বেচারা, আর কার সাথেই বা রাগ করবে!! আমি তো সাহসী ছিলাম। কিন্তু তবুও কখনও সাহস হারিয়ে ফেললে ও একটা কথা বলতো অামাকে, "ভয় পেও না, অামি অাছি"
এটা শুনলে সব দুঃশ্চিন্তা দূর হয়ে যেতো। আর কিছুই তো চাইনা। শুধু প্রতিটা মুহুর্তে ও পাশে থাকবে, আগলে রাখবে। এটুকুর জন্যই তো বেঁচে থাকা। হঠাৎ বৃদ্ধার মোবাইলে ক্রিং ক্রিং শব্দ। হাতব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে মোটা চশমার ফাঁক দিয়ে মোবাইলের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলেন। তারপর মৃদু হেসে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন-
গাধাটা "স্যরি" লিখে মেসেজ দিয়েছে। আধঘন্টা লাগলো অাজকেও। দেখেছো কিরকম হার্টলেস? বুড়ো হয়েছে কিন্তু পার্ট কমেনি। আমি যাই, গিয়ে একটা কামড় দিতে হবে, শাস্তি। না জোরে কামড় দিবোনা তো, অাস্তে দিবো।
আমি ভ্রুঁ কুচকে তাকালাম তার দিকে। তা দেখে ওঠে যেতে যেতে বললেন-
"অপেক্ষা করো। অপেক্ষার ফল সুমিষ্ট হয়"
২২ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:০৩
সাজ্জাদ সংগ্রহ বলেছেন: ধন্যবাদ্
২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২৪
শামীম সরদার নিশু বলেছেন: "অপেক্ষা করো। অপেক্ষার ফল সুমিষ্ট হয়"
খুব ভালো লাগল।
২২ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:০৪
সাজ্জাদ সংগ্রহ বলেছেন: ধন্যবাদ্
৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৮
প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: ভাল লিখেছেন। ধন্যবাদ্
২২ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:০৪
সাজ্জাদ সংগ্রহ বলেছেন: ধন্যবাদ্
৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৮
শামীম সরদার নিশু বলেছেন: স্বাগতম
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১০
ভাবুক কবি বলেছেন: খুব খুব ভাল লাগলো