নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।
এই ঘটনাটির সম্ভবত ১৯৮২-৮৩ সালের পরের কোন এক সময়ের হবে ।
সময়টা আসলে সঠিক মনে নেই। তবে এই টুকু মনে আছে সেই সময় আমাদের জয়পাড়া বাজারে ১ টাকায় ১ কেজি লবণ পাওয়া যেত। সেই আমলে লবণে কোন আয়োডিন মেশানো থাকত না। ফলে লবণের কোন কোম্পানিও ছিল না।
বাড়িতে লবণ শেষ হয়ে গেছে। অথচ রান্নার কাজের জন্য লবণ খুবই জরুরী । সেই সময় এখনকার মতো গ্রামের আনাচে কানাচে চৌরাস্তায় আশেপাশে এত দোকানপাট ছিল না। কেনাকাটার জন্য যেতে হতো জয়পাড়া বাজারের ভিতরে।
সে যাই হোক এই ভয়াবহ অপদের সময় মা আমাকে পাঠালেন জয়পাড়া বাজারে। সাথে পাঁচ টাকার একটা নোট দিয়ে দিলেন । লবণ কেনার পরে ৪ টাকা দোকানদার ফেরত দিবে।
সেই মোতাবেক আমি জয়পাড়ার দিকে ছুটতে ছুটতে খুব দ্রুতই পৌঁছে গেলাম বাজারে। গিয়ে দেখি বাজারে তুমুল বেচাকেনা চলছে।
আমি যে দোকান থেকে গিয়েছিলাম সেই দোকানদারের নাম এখন আর মনে নাই। তবে দোকানটি জয়পাড়া বাজারের বড় ব্রিজ থেকে নামার পরে বাম দিকে নেমে গিয়ে মাছের বাজার পার হয়ে ডান দিকে ঢুকে বাম দিকের একটি দোকান ছিল।
আমি দোকানে গিয়েই দোকানদারের হাতে প্রথমে ৫ টাকা ধরিয়ে দিলাম এবং বললাম আমাকে তাড়াতাড়ি এক কেজি লবণ দিন।
দোকানদার টাকাটা নিয়ে তার বাক্সে রেখে দিলেন। ওইদিকে আরেকজন মুরুব্বি ধরনের ক্রেতা আসলেন। তিনি অনেকগুলো জিনিস কিনবেন।
দোকানদার তার মাল সামানা গুছানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।
সেই মুরুব্বী চলে যাবার পরে আরো দুইজন ক্রেতা আসলো। দোকানদার তাদের মালামাল গুছিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ল।
আমি অপেক্ষার পর অপেক্ষা করে চলেছি। দোকানদার আমাকে আমার লবণ দিচ্ছে না। আমি ক্রমশই হতাশ হয়ে পড়ছিলাম।
দোকানদার কি তাহলে আমার টাকার কথা ভুলে গেল! সেটা হলে তো দারুণ সর্বনাশের কথা!
সে যাই হোক আমার পরে আরো ৫-৬ জন কাস্টমারকে দোকানদার বিদায় করে দিল। আমার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না।
আমার প্রবল কান্না পাচ্ছিল। কোন রকমে নিজেকে সামলে বললামঃ আমাকে আমার লবণ দিবেন না?
দোকানদার বললঃ ওরে বাবা, আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম।
সে যাই হোক দোকানদার শেষ পর্যন্ত আমাকে এক কেজি লবণ প্যাকেট করে দিল সাথে 4 টাকা ফেরত দিয়ে দিল।
আমিও ভয়াবহ বিপদ থেকে বাচলাম। হাফ ছেড়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম।
আমি সম্ভবত টু অথবা থ্রিতে পড়তে পারি।
সেই দিনের এক টাকা দামের এক কেজি লবণ কেনার ওই ঘটনা থেকে আমি যেটা শিখতে পেরেছিলাম সেটা হচ্ছেঃ
১। জিনিস হাতে পাবার আগে দোকানে কে কখনোই টাকা দিতে হয় না।
২। দোকানদার অপেক্ষাকৃত দুর্বল কাস্টমারের টাকা হাতে পেলে জিনিসপত্র দিতে ভুলে যায়। কাস্টমার মনে করে না ।
৩। দুর্বল কাস্টমাররা নগদ টাকা পরিশোধ করলেও তাদের পণ্য একটু দেরিতেই দিতে হয়।
৪। দুর্বলরা উচ্চকন্ঠ না হলে তাদের অধিকার ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।
সেই দিনের ওই ঘটনাটি আমি কখনোই ভুলতে পারিনি। আজ সারাদিন ওই ঘটনাটির কথা বারবার মনে পড়ছিল। তাই এই পোস্ট লেখা।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:০২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
এক সময় আমাদেরও হবে।
দিন বদলাবে।
নতুন দিন আসবে।
সুদিন আসবে।
২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৪১
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: আফসোস!
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:০৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বড়ই আফসোস!!
৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৪৪
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
দূর্বল সবল হয়েছে?
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
ক্লাস টু থ্রী পড়ুয়া একটা বাচ্চা কতটাই বা সবল হতে পারে। শিশুদের উপর প্রতিটি মানুষের উচিত মানবিক আচরণ করা।
৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:১০
রাজীব নুর বলেছেন: বড় ভাই আমার জন্মের আগের ঘটনা।
মূলত যুদ্ধের পর হঠাত সব জিনিসের দাম বেড়ে যায়। একদম লাগামহীন ভাবে। এমনকি অনেক কিছু বাজারে পাওয়া যেতো না।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আমার যত টুকু মনে পড়ে সেই সময় দাম নিয়ে অতটা হাহাকার ছিল না।
মানুষ-জন সুখেই ছিল।
৫| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৪৩
কামাল১৮ বলেছেন: অসহায় একটা ছোট ছেলের কাহিনী।চিন্তায় তার অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:১৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
একমাত্র আপনার মন্তব্যই আমার মনের কথা ফেুটে উঠেছে।
এখনো অনেক দোকানদার ছোট্ট বাচ্চাদের সাথে এমন আচরণ করে।
কিন্ত এটা করা উচিত নয়।
৬| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: চমৎকার স্মৃতিচারণ। লেখাও সুন্দর। শুভ সকাল দাদা...
২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
অভিভাবকদের উচিত শিশুদেরকে একটা নির্দিষ্ট বয়স থেকেই আর্থিক লেনদেন শেখানো ।
এটা হতে পারে ছোটখাটো কেনাকাটা ।
এই সময় অভিভাবকেরা ইচ্ছা করলে পাশের দাঁড়িয়ে তার শিশুর লেনদেনের ব্যাপারটা দেখতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে পারেন।
যেমন দাম পঁচিশ টাকা হলে ৩০ টাকা দিয়ে কত ফেরত পাবে জিজ্ঞেস করতে পারেন এবং টাকাটা শিশুটির হাত দিয়ে পরিশোধ করাতে পারেন ।
খুচরা গুলো শিশুটির হাত দিয়ে নিতে পারেন ইত্যাদি।
শিশুদের প্রতি সুন্দর মানবিক আচরণ করা প্রত্যেকের দায়িত্ব।
৭| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬
মোগল সম্রাট বলেছেন:
যদ্দুর মনে পড়ে ৮৫/৮৬ সালের দিকে বাজারে গিয়ে আমি দেড়টাকা করে কেজি কিনতাম । দুই রকম লবন পাওয়া যেতে মোটা আর চিকন।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৩৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আমার ঘটনাটি ১৯৮৫ সালের ২/৩ বছর আগের হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
ওই সময় লবণের দাম ছিল এক টাকা করে কেজি।
৮| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২
হাসান রাজু বলেছেন: চাকরি জীবনের শুরু। ব্যাংকে টাকা জমা দিচ্ছি। ক্যাশিয়ার প্রথম টাকাটা রিসিভ করেই একটা নোট ভিতরের দিকে ঠেলে দিল। আমি দেখলাম সব গুণে বলল ৫০০ টাকা কম আছে। আমি কেন জানি রোবটের মত পকেট থেকে ৫০০ টাকা বের করে দিলাম। তবে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। আজো আমি আমার প্রতিক্রিয়াটা ব্যাখ্যা করতে পারি না।
আপনার যে ব্যাপারটা সেটা আমার সাথে কয়েকবার ঘটেছে। ৫০ টাকা ধরা খেয়েছি মনে আছে।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৩৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় আমি মনে করি বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সমাজরা এই দেশে সবচেয়ে অভিশপ্ত ও পাপী শ্রেণী ।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে সৎ লোকের সংখ্যা খুবই নগণ্য ।
বলতে গেলে হাতেগোনা ।
এদের মধ্যে অসততার পরিমাণ অতিরিক্ত বেশি।
এতই বেশি যে এরা কাস্টমারদের বদ দোয়া ছাড়া জীবনে আর কিছু কামাই করতে পারে বলে মনে হয় না।
অবশ্য যে জিনিসটা তারা কামাই করে সেটা হচ্ছে অঢেল টাকা।
৯| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৭
শেরজা তপন বলেছেন: এইজন্যই গুরুজন বলেছেন অধিকার আদায় করে নিতে হয়। যে বেশী হাঁকডাক করে বিক্রেতা তাকে পাত্তা দেয় বেশী
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৩৫
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
এখানে যিনি ক্রেতা ছিলেন তাঁর বয়স তখন খুব বেশি হলে ৯-১০ বছর হবে। এই বয়সের একজন ক্রেতার কাছ থেকে দোকানি কেজি লবণের দাম আগেই নিয়ে নিয়েছেন ।
কিন্তু তাকে এক কেজি লবণ প্যাকেট করে দিতে পারছেন না কিংবা ইচ্ছা করেই দিচ্ছেন না।
এখানে ছোট ছেলেটি নিজেকে অসহায় বোধ করবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
১০| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪
জনারণ্যে একজন বলেছেন: সোনাগাজী বলেছেন:
আমেরিকার কপিশপে (চেইন ) আগে পয়সা দিয়ে অপেক্ষা করতে হয়; রিচিপ্টে নম্বর ও দাম লেখা থাকে।
— ওরে খাইছে রে, তাই নাকি!
কি এক দেশ রে বাপু - পুরাই বেকুব হইয়া গেলাম জাইনা।এমন দেশ'ও দুনিয়ায় আছে জানতামই না।
এমন একখান দেশে যাইতাম মন চায়। অশিক্ষিত মানুষ আমি, যাইতাম পারুম নি, @ সোনা-দানা?
বাই দ্যা ওয়ে - “রিচিপ্ট” কি জিনিস গো, গোল্ড মিয়া?
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৫
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আপনি কি শুধু শুধুই নিক খুলে বসে আছেন?
পোস্ট দেন না কেন ??
পোস্ট দিলে তো আপনার হাতের সুন্দর সুন্দর লেখা পড়তে পারতাম।
পোস্ট না দিলে নিক খুলে রেখে লাভ কী!
আসুন, আজই শুরু করে দিন।
ভালো থাকুন সব সময়।
জীবন হোক আরো সুন্দর।
১১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:০৭
সোনালি কাবিন বলেছেন: "আমেরিকার কপিশপে" কী "কপি" দ্যায় - ফুলকপি নাকি ফটোকপি?
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৪২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
ভালো থাকবেন সব সময়।
১২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:১৬
এম ডি মুসা বলেছেন: সত্যি এই রকম পোস্ট আমার কাছে ভালো লাগে...
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৪৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
মানুষের জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা সুন্দরভাবে তুলে আনতে পারলে সেটা আসলেই খুব ভালো লাগে।
আমি এ জাতীয় ঘটনাগুলো পড়ার চেষ্টা করি।
১৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫
জনারণ্যে একজন বলেছেন: লেখক বলেছেন:
আপনি কি শুধু শুধুই নিক খুলে বসে আছে? —- হ্যাঁ।
পোস্ট দেন না কেন ?? —- আমার ইচ্ছা, তাই পোস্ট দেইনা।
পোস্ট না দিলে নেট খুলে রেখে লাভ কী!?! — - ঠিক কি বলতে বা বুঝাতে চেয়েছেন, বুঝিনি। নেট খুলে রাখা মানে?
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
না বুঝলে নাই।
তবে বুঝলে ভালো লাগতো।
বুঝা খুবই দরকার।
না বুঝলে মানুষ অবুঝ কিংবা
নাবোঝও বলতে পারে।
সেটা ঠিক কাজ হবে না।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:০২
সোনাগাজী বলেছেন:
আমেরিকার কপিশপে (চেইন ) আগে পয়সা দিয়ে অপেক্ষা করতে হয়; রিচিপ্টে নম্বর ও দাম লেখা থাকে।