নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।
২০০৩ সালের আগস্ট মাসের কোন এক দুপুর বেলা। কলেজে মাস্টারী শেষ করে গৃহে ফিরছি। বসে আছি মাওয়া চৌরাস্তায়। অপেক্ষায় আছি একটি বাস অথবা শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নসিমন টাইপের কোন গাড়ী আসে কিনা। এছাড়া যাবার আর কোন সুন্দর উপায় নেই।
গন্তব্য তখনো ঠিক করতে পারিনি।ভাবছি, সরাসরি ঢাকা চলে যাবো? নাকি বেজগাঁও নেমে শ্রীনগর হয়ে জয়পাড়া চলে যাবো। সেটা ঠিক করতে বেশ সময় নিয়ে নিল।
জয়পাড়ায় কয়েক টিউশনী আছে।এগুলো চালিয়ে নিতে হবে। টিউশনী জুগিয়ে দিয়েছে আমার বন্ধু মাসুদ। মাসুদ জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে মাস্টারী করে। ছাত্র ও অভিভাবক সমাজে সে খুবই জনপ্রিয় একজন শিক্ষক।
এক দিন তাকে কথাপ্রসঙ্গে বললাম- চাকরি বাকরির পরীক্ষায় অংক টংক তো পারি না। মান ইজ্জত তো থাকছে না।
সে আমাকে বলল- অঙ্ক পারতে হলে টিউশনী করতে হবে। টিউশনী কর কাল থেকে।
আমি বললাম- কোথায় পাবো টিউশনী? কে ঠিক করে দেবে?
সে বলল- আমি জোগাড় করে দিব।
সে সত্যি সত্যি টিউশনী জোগাড় করে দিল। তবে আমার যারা ছাত্র তারা ছাত্র বেশী ভালো না।
আমি বললাম- ভালো ছাত্র দরকার নেই। আমার দরকার অংক প্র্যাক্টিস করা। আমার অঙ্ক শেখা হলেই চলে।
আমি পুরোদমে টিউশনী করা চালিয়ে গেলাম। আমার সব অঙ্ক শেখা হয়ে গেল। এখান আর কোন চাকরির পরীক্ষায় আমার অঙ্ক ভুল হয় না।
দুপুরের কড়া রোদে বসে থাকতে থাকে সহসা অনুভব করলাম- আমার বোধ হয় খিদে লেগেছে। এখানে কী খাওয়া যায়। বাজেটও বিরাট একটা ব্যাপার। আমার বাজেট খুব বেশী হলে ১০/১৫ টাকা। এর বেশী দিলে আমার ঘাটতি বাজেট বয়ে বেড়াতে হতে পারে। সেটা খুব সহজ কাজ না।
তাই দোকানদার কে ১টি বনরুটি, একটি কলা আর এক কাপ চা দিতে বললাম। চাই সচরাচর খাই না। কিন্তু তখন ব্যাপক ঘুমঘুম লাগছিল। অনেকটা পথ যেতে হবে। বার বার ঘুমিয়ে পড়লে হবে না।
আরাম করে বনরুটি, কলা আর চা খেয়ে সামনে তাকাতেই দেখি একটা নসিমন এসে হাজির। ড্রাইভারের পাশে একটি সিট ফাঁকা। আমি দোকানীকে টাকা দিয়ে দ্রুত ড্রাইভারের পাশে গিয়ে বসে পরলাম।
মাওয়া চৌরাস্তা থেকে ঝড়ের বেগে বেজগাঁওয়ের দিকে ছুটে চলল আমাদের যান নসিমন। সামনে পিছনে অনেক গাড়ী। সবাই ঝড়ের বেগে ছুটে চলেছে ঢাকার পানে।
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৫৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
না, এটুকুই ।
কষ্টের কথা তো মাঝে মাঝে মনে পড়ে ।
তখন একটু আধটু লিখি।
২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:৪৮
কামাল১৮ বলেছেন: পুরনো দিনের কথা সবার ভালো লাগে।
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৫৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আসলেই তাই ।
আমার ঐ সময় এগুলো ছিল জীবনের অন্যতম কষ্টের কিছু দিন ।
অথচ এখন ভাবতে খারাপ লাগে না।
৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:৫৮
সোনাগাজী বলেছেন:
আপনার ১ম চাকুরী কি ছিলো?
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৫৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমি সত্যিকার অর্থে কখনোই বেকার ছিলাম না।
ছাত্র জীবন থেকে আমি পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করে আয় রোজগার করতাম।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে আসার পরে আমি একটি বেসরকারি সংস্থায় বছর খানেক কাজ করেছি ।
তারপর বিক্রমপুরের লৌহজং কলেজে মাস্টারি করেছি প্রায় আড়াই বছর ।
এখনো নানা ধরনের কাজ করে যাচ্ছি ।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করতে থাকবো।
৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:৩১
সোনাগাজী বলেছেন:
আমার হিসেবে উহা একটা স্নেক ছিলো।
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:১০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আপনার কথাই সঠিক।
আসলেই ওটাকে স্ন্যাক্স হিসেবেই খাওয়ার কথা ছিল।
বাংলাদেশের হিসাব মতে, দুপুরে সাধারণত ভাত তরি-তরকারি খাওয়া হয়।
কিন্তু মাওয়া চৌরাস্তায় খাওয়ার মত কোন রেস্টুরেন্ট ছিল না।
ভাত খেতে চাইলে মাওয়া চৌরাস্তা থেকে রিকশা নিয়ে অথবা হেঁটে মাওয়া ঘাটে যেতে হতো।
সেখানে ইলিশ ভাজা এবং সাথে অন্যান্য ব্যঞ্জন সহকারে খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল।
তবে আমার আর্থিক সচ্ছলতা সেখানে যেতে সাপোর্ট দিতো না।
৫| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৫৮
আলামিন১০৪ বলেছেন: ও ভাই্ও, প্রাইভেট পড়াইলে অঙ্ক বিদ্যায় জাহাজ হওয়া যায়, বিষয়ডা আগে জানা আছিল না। জানাবার জন্য বহুত শুকরিয়া
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:০১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আসলে জাহাজ হবার তো দরকার নেই।
পরীক্ষায় পাশ করার জন্য যেটুকু দরকার সেটা অনায়াসেই অর্জন করা যায়।
৬| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: শ্রীনগর গেলে আমাদের বাড়ি যাবেন।
কামারগাও আমাদের গ্রাম। ভাগ্যকুল, বালাসুর, তিন দোকান, এর পরেই কামার গাও। কামার গাওয়ের পরে পাবেন আলামিন বাজার। নিশ্চয়ই চিনেন?
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:০৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
লৌহজং থেকে শুরু করে শ্রীনগর হয়ে দোহার নবাবগঞ্জ কেরানীগঞ্জ এর সবগুলি বাস স্টপেজ আমার মুখস্ত ।
৭| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫
নূর আলম হিরণ বলেছেন: গ্রামের দোকানগুলিতে নাস্তার জন্য এগুলিই থাকে। তবে এসব চা খুব বেশি সুস্বাদু হয় না।
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:০৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
এগুলির খাদক হয় কম আয়ের লোকজন।
আর আমি ছিলাম সেই সময়ের বাংলাদেশের সবচেয়ে কম আয়ের লোকদের একজন।
আফসোস।
৮| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:৫২
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ওই সময় ১০ টাকাই অনেক টাকা ছিল।
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:০৫
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
সেটাই।
ওই সময় আমার প্রতিদিন যাতায়াতের পেছনে ব্যয় হতো ১০০ টাকার মতো ।
সেটা জোগাতেই আমি হিমশিম খেয়ে গিয়েছিলাম।
আফসোস।
৯| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ভোর ৪:১২
কালো যাদুকর বলেছেন: বাহ বেশ অভিজ্ঞতা। এটুকুই ? কোনো কিছু শিখতে টিউশনি সব থেকে উত্তমপন্থা। গ্রাম টিউশুনি তেবেশীপাওয়া যেত?
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:৫০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
টিউশনি যিনি জোগাড় করে দিয়েছিলেন তিনি আবার বিখ্যাত মাস্টার । তার জন্য ব্যাপারটা বেশ সহজ ছিল।
গ্রামাঞ্চলে টিউশনি পাওয়ার একটি শর্ত হচ্ছে নিজেকে ভালো একটি স্কুলের মাস্টার হিসেবে থাকতে হবে।
এছাড়া অন্য উপায়ে পাওয়াটা একটু কঠিন ।
কারণ সবাই চায় মাস্টার কিছু সুযোগ সুবিধা দিক ।
অন্য কারো পক্ষে সেই সুযোগ সুবিধা দেওয়া সম্ভব হয় না।
আর কোন স্কুলের প্রতিষ্ঠিত মাস্টার হলে যে পরিমাণ টাকা আয় করা সম্ভব অশিক্ষকদের পক্ষে সেটা সম্ভব হয় না।
১০| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:১০
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: লৌহজং থেকে শুরু করে শ্রীনগর হয়ে দোহার নবাবগঞ্জ কেরানীগঞ্জ এর সবগুলি বাস স্টপেজ আমার মুখস্ত ।
আমাদের গ্রামের বাড়ি যাবেন?
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:২৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
না। বাংলাদেশের সব গ্রাম একই রকম।
খুব একটা পার্থক্য নাই।
কোন গ্রামে হয়তো পুকুর আছে।
আর কোন গ্রামে পুকুর নাই ।
এই যা পার্থক্য
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:৪৫
মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্ বলেছেন: শেষ হয়ে গেল, না কি টু বি কন্টিনিউড? ভালইতো লিখছিলেন।