নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কখনো নিজের নাম লুকোই না। আকাইমা শব্দ দিয়ে বানানো ছন্ম নাম আমার পছন্দ নয়। মা-বাবা\'র দেয়া নাম দিয়েই প্রোফাইল খুলেছি।

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন

আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি ছিলাম সাহেব খালীর মাঝি ****************************

১৩ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১:৫৫

আমি খুব ভালো নৌকা বাইতে (চালাতে) পারি। আমি যখন টু থ্রি-তে পড়ি তখন থেকেই আমি ভালো নৌকা চালাই। নৌকা চালানোতে রয়েছে আমার দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা।

ঢাকা জেলার দোহর উপজেলার বটিয়া গ্রামের খালের পশ্চিম পাড়ে যেখানে আমাদের বাড়ি অবস্থিত সেটাকে আসলে একটা ছিট মহল হিসেবে ধরা চলতো সেই সময়। অর্থাৎ ওই জায়গা থেকে খাল পার হয়ে জয়পাড়া বাজার এবং বটিয়ার মূলগ্রামের সাথে সংযুক্ত হওয়ার কোন সুযোগ ছিল না ।

এজন্য আমাদের অনেক আগে থেকেই নৌকা ছিল। আর নিজেদের নৌকা থাকার সুবাদে নৌকা চালানোটা আমার শেখা হয়ে গেছে অনেক আগেই যেটা ছিল একটা দারুন অভিজ্ঞতা।
সেই সময় কত মানুষকে যে আমরা খালের এপার ওপার পার করে দিয়েছি বর্ষাকালে তার কোন লেখা জোকা নাই এবং এই কাজের জন্য আমাদেরকে কেউ কোন বকশিশও দিত না । অর্থাৎ মানুষ বিনা পয়সাই আমাদেরকে দিয়ে খাল পার হয়ে যেতে পারত।


আমি একটা হাতে বৈঠা নিয়ে একটানা ২/৩ ঘন্টা নৌকা বাইতে (চালাতে) পারতাম। নৌকা আমার খুব প্রিয় একটি বাহন।

স্কুল ছুটির পর বিকালে মাঝে মাঝে নৌকা নিয়ে বের হয়ে পড়তাম বিশেষ করে শুক্রবার দিন বিকেলবেলা নৌকা নিয়ে অনেক দূরে চলে যেতাম সর্বশেষ মনে আছে আমরা কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব মিলে নৌকা নিয়ে অনেক দূরে সদন মার্কেট বলে একটা জায়গা ছিল সেখানে গিয়েছিলাম।

আজ নৌকাকে খুব মিস করছি। ১৯ বছর হয় নৌকা বাওয়ার সুযোগ পাই না। বাড়ি পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট্ট একটা সুতো নদী। এটাকে বলে সাহেব খালির খাল। এই খালে আমার নৌকা বাওয়ার প্রথম পাঠ।

এখন নারিশা পার হয়ে যাবে জয়পাড়ার দিকে যেতে থাকলে অনেকগুলো ব্রিজ পাওয়া যায় । অথচ এক সময় সাহেব খালির খাল পার হওয়ার জন্য কোথাও কোন ব্রিজ ছিল না বললেই চলে । এই খালের মত বড় ব্রিজ গুলোর মধ্যে জয়পাড়া বাজারে একটা ব্রিজ ছিল । আরেকটা ব্রিজ ছিল মাঝির কান্দা হতে যে ব্রিজের উপর দিয়ে নবাবগঞ্জ যাওয়া যেত সেটা।

আমি যখন প্রথম নৌকা চালানো শুরু করি সেই সময় সাহেব খালিরখাল দিয়ে অনেক পাল তোলা নৌকা যেত । অনেক নৌকা আবার মাঝিরা গুণ টেনে নিয়ে যেত। এই বড় বড় নৌকাগুলো বিভিন্ন ধরনের মালামালে পরিপূর্ণ থাকতো । এইসব মালামালের মধ্যে ছিল চাল এবং আম কাঁঠাল ও নানা ধরনের ভুষি মাল।

The great boat, I miss you so much!

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ৮:৪৯

শেরজা তপন বলেছেন: কারো নৌকা চালাতে এত ভাল লাগে সেটা আগে জানা ছিল না।

১৩ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


নৌকা চালাতে আমার খুবই ভালো লাগে।
এখনো বাংলাদেশের কোন বিনোদন পার্ক জাতীয় জায়গায় গেলে নৌকায় উঠলে আমার খরচ কমে যায় । কেননা, আমি আলাদা কোন মাঝি নিই না। আমিই নৌকা চালাই। গত বছর বাংলাদেশ লোক শিল্প যাদুঘরে গিয়ে ওখানে গিয়ে নৌকায় উঠতে গিয়ে শুনি আলাদা মাঝির টাকাও দিতে হবে। আমি তো নিজেই মাঝি।

এক সময় আমি পেশা হিসাবে নৌকা চালনাকে নিতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু ইঞ্জিন এসে নৌকাকে ধ্বংস করে দিল।
আমার স্বপ্নও শেষ হয়ে গেল।
পাল তোলা নৌকা, বৈঠা দিয়ে চালানো নৌকা আর ইঞ্জিনের নৌকা এক নয়।
ইঞ্জিনের নৌকায় কোন আবেগ নেই।

২| ১৩ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:০০

সোনাগাজী বলেছেন:




আপনার পরিবারের লোকজন কি কাজে নৌকা ব্যবহার করতো?

১৩ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আমার বাবা ছিলেন কৃষক। বেশী জমি জমা ছিল না। তবু তিনি সংগ্রামী কৃষক ছিলেন। প্রচুর ফসল ফলাতেন। আমাদের জমিতে প্রচুর পরিমানে কাচা মরিচ উৎপাদিত হতো। সেই মরিচ জয়পাড়া বাজারে নিয়ে যেতে হতো বিক্রি করতে। কিন্তু আমাদের বাড়ি থেকে রিক্সা ভ্যানে করে এতো বেশী মরিচ নিয়ে যাবার কোন সুযোগ ছিল না। ফলে নৌকাই ছিল এক মাত্র অবলম্বন।

মরিচরে বস্তাগুলো নৌকায় তুলে এলাকার আরো কয়েক জন সাথে যেত। তাদেরও জিনিস পত্র থাকতো বিক্রির জন্য। আমি যেতাম মাঝি হিসাবে। জয়পাড়া বাজারের জলিল হাজী সাহেবের ঘাটে মরিচের বস্তাগুলো নামিয়ে দিয়ে একা একা নৌকা বাইতে বাইতে বাড়িতে চলে আসতাম।

আসার সময় স্রোতের উজানে আসতে হতো। তখন নৌকার গতি যেত কমে। পথে একটা কুম ( বড় ধরনের হ্রদের মতো) পড়তে। শুনেছি, সেটার গভীর পানিতে শেকল আছে। মানুষ পেলে টেনে পানির গভীরে নিয়ে যায়। কুমের উপর দিয়ে যখন যেতম তখন সত্যি সত্যি আমার ভয়ে গা ঝিম ঝিম করতে।

আজ এতো বছর পরে আমি বুঝতে পারি নাইনে টেনে পড়ুয়া একটা কিশোর বালক কি করে এটা ম্যানেজ করতো।

৩| ১৩ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৩৩

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


নৌকা চালানো নিয়ে অনেক লিখেছেন নাকি?

১৩ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:১০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

না। আগে কখনো লিখিনি।
তবে আজ কাল খুব মনে পড়ে।
শৈশব আর কৈশোরের স্মৃতি ভুলা যায় না।
মাঝে মাঝে মনের মাঝে জেগে উঠে।

তবে নৌকা আমাদের দেশের অনেক সাধারণ একটি বিষয়। আমরা যারা গ্রামে থাকতাম তারা নৌকা চালনোতে খুবই ওস্তাদ থাকতো।

৪| ১৩ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৫৯

আরইউ বলেছেন:



সাজ্জাদ, ভালো লেগেছে লেখা। “সুতো নদী“ একটা সুন্দর নাম।

নৌকা চালানো খুব কঠিন। সোজা থাকতে চায়না, গোলগোল ঘুরতে থাকে!

১৩ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:১৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

আমি নৌকায় বৈঠা হাতে বসলে নৌকা আমার কথা শুনতো।
সে এমন আচরণ করতো যেন সে আমার পোষাপ্রাণী।
নৌকা নিয়ে কবি রবি ঠাকুরের সেই কথাটি আমার খুব মনে ধরতোঃ


আমার যেতে ইচ্ছে করে
নদীটির ওই পারে
যেথায় ধারে ধারে
বাঁশের খোঁটায় ডিঙি নৌকো
বাঁধা সারে সারে৷
কৃষাণেরা পার হয়ে যায়
লাঙল কাঁধে ফেলে,
জাল টেনে নেয় জেলে,
গরু মহিষ সাঁতরে নিয়ে
যায় রাখালের ছেলে৷
সন্ধ্যে হলে যেখান থেকে
সবাই ফেরে ঘরে,
শুধু রাত দুপুরে
শেয়ালগুলো ডেকে ওঠে
ঝাউ ডাঙাটার পরে৷
মা, যদি হও রাজি,
বড় হলে আমি হব
খেয়াঘাটের মাঝি৷

৫| ১৩ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কর্মঠ মানূষ।
আমি শালা ভাঙ্গা কূলা। আফসোশ হয় খুব। আবার যদি মানব জনম পাই, তাহলে ভুল করবো না।

১৩ ই মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

আবার যদি আমার পুনর্জন্ম হয় বাংলাদেশে তাহলে আমার যেন কয়েকশো বিঘা জমি থাকে এবং আমাকে যেন চাকরি করতে না হয় । চাকরি করা একটা চাকর এর কাজ ।
এই কাজ আমি করতে চাই না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.