নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।
পুত্রের স্কুলের ব্যাগ ছিঁড়ে যাওয়াতে নতুন একটি ব্যাগ কেনা খুবই জরুরী হয়ে উঠেছিল। সেই মোতাবেক খোঁজখবর করতে লাগলাম মোটামুটি ভালো মানের ব্যাগ কোথায় পাওয়া যাবে?
একেক জন একেক পরামর্শ দিতে লাগলো । এক জন বলল, মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজারে গেলেই পাবেন।
আর এক জন বলল ধানমন্ডি ২৭ এর প্রেসিডেন্ট যেতে পারেন।
আর এক জন বলল, বায়তুল মোকাররম যেতে পারেন।
তবে বেশিরভাগই বললেন - ভালো পাবেন নিউমার্কেটে ।
কিন্তু নিউমার্কেটে গেলে কেনাকাটা ও দামাদামি করা জানতে হবে । কেনাকাটা করার জন্য দামাদামিটা খুবই স্বাভাবিক। অর্থাৎ সেখানে কিনতে হবে দরদাম করে ।
সে যাই হোক , একদিন শুভদিন দেখে সকালবেলা চলে গেলাম ঢাকা নিউমার্কেটে । ব্যাগের দোকান গুলো দেখলাম , খুলে বসেছে । কেউ কেউ আবার আগরবাতি জ্বালিয়ে দোকানগুলিকে পবিত্র করে নিচ্ছে ।
সে যাই হোক প্রথম দোকানে গিয়ে ব্যাগের বর্ণনা দিতে সে কয়েকটি ব্যাগ আঙ্গুল দিয়ে দেখালো।
একটি ব্যাগ মোটামুটি পছন্দ হলো । সেটার দাম জিজ্ঞেস করলাম । দোকানদার বলল- এটার এক দাম ২৫০০ টাকা । তবে আপনার জন্য ২০০ টাকা কম, একদাম ২৩০০ টাকা মাত্র।
আমি বললাম- আমি কোন চ্যাটের বাল মে আমার জন্য ২০০ টাকা কম হবে? ২৫০০ হলে সবার জন্যই তো ২৫০০ টাকা!
সে বলল - না, আপনি আমাদের প্রথম কাস্টমার । সে কারণে আপনার জন্য ২৩০০ টাকা ।
এবার আপনার দাম বলেন ।
আমি বললাম - ৫০০ টাকা দিব দিয়ে দেন ।
আমার দাম শুনে দোকানদার এমনভাবে হেসে উঠল যেন জীবনেও এত মজার কথা সে আগে কখনো শুনে নাই ।
সে বলল- আপনি এমন ব্যাগ কিনতে পারবেন না । আপনি ফুটপাতে গিয়ে খুঁজতে থাকেন। হয়তো পেতেও পারেন। নিউমার্কেটে ব্যাগ পাবেন না।
আধা ঘন্টার মত আশেপাশের দোকানগুলোতে খুঁজলাম । সব দোকানদাররা দেখি একই রকম। কেউ সত্য কথা বলে না।
একটা কথা শুনেছিলাম। ব্যবসায়ীরা হালাল ব্যবসা করে উপার্জন করে । অন্যদিকে সুদ হচ্ছে হারাম ।
এখন দেখি এই হারামজাদা আরো বিরাট হারামজাদা । যাই হোক যে ব্যাগটা পছন্দ হয়েছিল সেই ব্যক্তির কাছে আবার গেলাম।
বললাম, ভাই, দিতে পারেন কিনা একটু বিবেচনা করে দেখেন।
সে বলল- কোন বিবেচনা করার সুযোগ নাই । তারপরও আপনি যেহেতু সকাল বেলা এসেছেন আপনার জন্য একদাম দুই হাজার টাকা ।
অনেক মুলামুলি করার পরে আমিও কিছুটা দাম বাড়িয়ে ফেললাম ।
আমি বললাম যে -ঠিক আছে, আপনার কথাও ঠিক থাক। আমার কথাও ঠিক। থাক । এক দাম ৭০০ টাকা রাখেন ।
আমার কথায় মনে হয় কোন রস কস নাই। তাই তার মন গললো না । সে আবারো অপেক্ষা করে সব কথা ফিরিয়ে দিল ।
এতটাই অবজ্ঞা করতে থাকলো যে শুনে মনে হল যেন আমি কোনো মানুষ না। হয়তো ভিক্ষা করে খাই।
শেষ পর্যন্ত একটি ফয়সালা হলো যে ৯০০ টাকা দামে সে বিক্রি করবে তাও আমি বউনির কাস্টমার এবং আমাকে তার খুবই পছন্দ হয়েছে।
ব্যাগটি মোটামুটি ঠিক আছে কিনা চেক করে শেষ পর্যন্ত দেখালাম । ৯০০ টাকা পরিশোধ করে ব্যাগটি নিয়ে শেষ পর্যন্ত বাসায় চলে এলাম।
যারা কেনাকাটায় খুবই ওস্তাদ এমনকি নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরাও তাদেরকে ঠকাতে পারে না তারা বলল- ভাই, আপনি ব্যাগ ভালই কিনেছেন। তবে ব্যাগটিতে আপনি কমপক্ষে চারশত টাকা ঠকেছেন!
এই ব্যাগ কোনক্রমেই ৫০০ টাকার বেশি টাকায় কেনা চলে না!
অথচ ভেবে দেখুন দোকানদার আমাকে এই ব্যাগ ২৫০০ টাকা দম হাঁকিয়ে ছিল এবং আমি যদি আরো মোটামুটি মানের ভোদাই হতাম এই ব্যাগ আমাকে ২০০০ টাকা দিয়েই কিনে আনতে হতো।
তাই সকলের উদ্দেশ্যে বলছি- বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আসলেই খুবই খারাপ মানুষ। অন্তত আমার মনে হয় ৮৫% ব্যবসায়ী খুবই খারাপ হবে ।
এই যে একটা ব্যাগ বেচতে আধা ঘন্টা ধরে নানান কথাবার্তা দামাদামি করে মানুষের সময় নষ্ট করার কোন মানে হয়!
নানান কথাবার্তা দামাদামির করে হয়রানি! শেষ পর্যন্ত সমস্যা কোথায় ছিল?
নাকি মানুষের গলা কাটতে খুব আরাম লাগে না??
আল্লাহ ব্যবসাকে করেছে হালাল আর সুদকে করেছেন হারাম । তাই বলে ব্যবসায়ের নামে মানুষের গলা কাটাটাকে নিশ্চয়ই হালাল করেননি। হালাল উপার্জনের নামে ছিনতাই আর ডাকাতি করাটাকে নিশ্চয়ই হালাল করেননি!
(ঢাকায় শপিং করার পূর্বে এই বিষয়ে ১ বছরের একটি ডিপ্লোমা কোর্স অবশ্যই করতে হবে। তবে এই ডিপ্লোমা কোর্সটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ে আছে নাকি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে করা যাবে সেই বিষয়ে আমার খুব কোন সুস্পষ্ট ধারণা নেই।)
০৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:২৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
ভাবছি কোর্টে গিয়ে এপিঠওপিঠ করে নিজের নামটাই এখন বদলে রাখবো কিনা।
ঠগা মিয়া, বাঁশখাদক মিয়া, বা এই জাতীয় ভালো একটা নাম বেছে নিয়ে করে ফেলতে হবে।
২| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:২৫
বিষাদ সময় বলেছেন: বাংলাদেশের ব্যাবসায়ীদের প্রধান পুজি হচ্ছে ক্রেতাদের মান সম্মান। ক্রেতাদের এই মান সম্মান কে জিম্মি করে ব্যাবসায়ীরা ব্যাবসা করে খাচ্ছে। আর দোকানীদের কি দোষ দেব। নুরজাহান মার্কেটের একদম ভিতরের দিকে আমার বন্ধুর বাধরুমের চেয়ে বড় দুটো দোকান আছে। সে দুটো দোকান থেকে সে ভাড়া পায় মাসে প্রায় এক লক্ষ টাকা আর সালামী ১২ লক্ষ টাকা। এর পর দোকানের নানা খরচ ধরলে যে দোকান করে তার মাসিক খরচ আছে অন্তত দেড় লক্ষ টাকা। স্বাভাবিক মাত্রার লাভ করতে হলে মাসে ঐ দােকানিকে অন্তত ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকার মাল বেচতে হবে অর্থাৎ পার ডে প্রায় ৫০-৭০ হাজার টাকার। কিন্তু তার বিক্রি এর ধারে কাছে না । তাই উপায় একটাই, ক্রেতার গলাকাটা।
০৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:২৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আপনার মন্তব্যটা গভীর চিন্তার খোরাক যোগায়।
এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের একটা উপায় আছে।
সেটা হচ্ছে অনলাইনে বিক্রি করা
সেটা অবশ্য করতে চাইলে সততা, সত্যবাদিতা ও অন্যকে উপকার করার ইচ্ছা এবং সর্বোপরি দেশপ্রেম থাকতে হবে।
তাহলে আপনার ঐ সমস্ত দোকান দোকান ভাড়া না নিয়েও ব্যবসা করাটা খুবই সহজ হয়ে যেতে পারে ১০০% নিশ্চিত থাকবে আপনি ঠকবেন না দোকান ভাড়া ৪ লক্ষ টাকা দিতে হবে না
৩| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৮:১৪
এম ডি মুসা বলেছেন: এটা বাংলাদেশ ভাই!
০৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বাংলাদেশকে খারাপ মনে করার কিছু নাই।
এটা পৃথিবীর অন্যান্য অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে।
কেবলমাত্র ব্যবসায়ীদেরকে সংশোধিত হতে হবে।
৪| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:০৮
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
পৃথিবীর সব উন্নত দেশে বেশিরভাগ ফিক্স রেটে কেনাকাটা হলেও অনেক অনেক জিনিষ দরাদরি করেই কিনতে হয়।
নতুন গাড়ী কিনতে গেলেও প্রচন্ড দরাদরি করতে হয়, এমনকি কম্পানীর ডিলার থেকে কিনলেও, ঔসধ কিনতেও দরাদরি করতে হয়, যদি আপনার হেলত ইনসিউরেন্স না থাকে।
০৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
তাদের একটা সিস্টেম আছে।
আমরা কোন সিস্টেমের মধ্যে নেই।
তাদের দরাদরি মানে হাতাহাতি না।
বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা ১০০% ফ্রি।
এটা আমেরিকাতেও নাই।
৫| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: ২৫ শ' টাকার ব্যাগ আপনি অনেক কমাতে পেরেছেন।
কেনাকাটার সময় মাথা ঠান্ড রাখবেন এবং অস্থিরতা পরিহার করবেন। সেই সাথে রাগ কন্টোল করবেন।
০৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আমি কখনোই রাগ করি না।
৬| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:০৮
আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: কেনা কাটার সময় ঠান্ডা মাথায় এবং হাসিখুশি থাকবেন। মনে রাখবেন, টাকা যতক্ষণ আপনার পকেটে ততক্ষণ আপনিই বস। যতটা পারেন দোকানদারের সময় নষ্ট করবেন, তাহলে সে কম লাভে হলেও বিক্রি করতে সচেষ্ট হবে (তাই বলে লসে তো আর দিবে না)। আর ফিক্সড প্রইসের বা ব্রান্ডের দোকান থেকে কিনলে সবচেয়ে ভালো হয়।
০৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আপনি সঠিক বলেছেন।
সমস্যা হচ্ছে আমরা তো আয় বুঝে ব্যয় করবো।
৭| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:১০
আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: বাংলাদেশে ক্রেতার অনুপাতে দোকানের সংখ্যা অনেক বেশী। তাই কাস্টোমারের গলা কাটা ছাড়া দোকানদারের উপায় নেই।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:১২
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আপনার জায়গায় আমি হলে আরও বড় বাঁশ খেতাম। আমি দামাদামি করতে পারি না।