![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গল্প কবিতা উপন্যাস লেখার চেষ্টা করছি। মন চাইলে কবি বা লেখক বলতে পারেন।
সেদিন সন্ধায় ব্যস্ত রাস্তার ফুটপাত ধরে হাঁটছি পকেটে মোবাইল,মেছেন্জারে টুন শব্দ হল। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি দেবী দুর্গার ছবি প্রোফাইলে, কোচবিহার পশ্চিম বঙ্গ থেকে। নাম টা একটু ভিন্ন ধাচের,কিঞ্চন সেন ইংরেজিতে লেখা,ঠিক উচ্চারণ করতে পারছিলাম না, বুঝতে পারছিলাম না ছেলে কি মেয়ে। ইদানিং ফেসবুকে অনেক ফ্রেন্ড হওয়াতে অনেকে মেছেজ করে, কথা বলতে চাই। কিন্তু ফেসবুকে কাওকে তেমন সময় দিতে ইচ্ছা করে না। সে বলল ফেসবুকে অামার কবিতা গুলি নাকি তার ভালো লাগে। অামার কবিতা কার পছন্দ হলে তার সাথে অাবার অাগ্রহ নিয়ে কথা বলি। যা হোক,একটু বথা বলার পরে সে অামাকে ভাই ডাকতে চাইল। অামার অাবার ফেসবুকের ভাই বন্ধু পছন্দ না,তাই তাকে অনাগ্রহে অনুমতি দিলাম। কথা প্রসঙ্গে জানতে পারলাম তার বাড়ি বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলাতে ছিল, কবি নির্মলেন্দু গুনের বাড়ির কাছে। সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় ওখানে চলে যায় এখন ও একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী, ওর প্রকৃত নাম তমালিকা সার্ণাল। সে অারও বলল হুমায়ুন অাহমেদ তার অনেক প্রিয়,উনার প্রায় সব নাটক সিনেমা ওর দেখা,বেস কিছু বই ও পড়েছে। এবার তার প্রতি কেমন এক মায়া চলে এল অপন মনে হতে লাগল। ওকে তুই সম্মোধন করলাম,অামাকে ও তুই বলতে অনুরোধ করলাম। তাকে প্রশ্ন করলাম তোর কি বাংলাদেশের জন্য মায়া লাগে? মেয়েটা লিখে পাঠাল কিন্তু সে অক্ষর গুলিতে কতটা অাবেগ জড়িত বুঝতে বাকি রইল না, বড় মায়া লাগেরে ভাই, ও যে অামার জন্মভূমি। অামি তাকে বললাম,জানিস অামার ও খুব খারাপ লাগে যখন শুনি কেও এ দেশ ছেড়ে ও দেশে বসবাস করছে। সে বলল ভাই তোর খারাপ লাগলেও সবার লাগেনা রে। নিষ্ঠুর সত্য কথাটা কে অরও একবার বড় নির্মম ভাবে অনুধাবন করলাম। ওদেশে নাকি এখনও তার তেমন বন্ধু হয়ে ওঠেনি এখনও সে বন্ধু বলতে বারহাটটা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের রুমানা দিলরুবা দিপা কে মানে। ওর বড় মনে পড়ে বাড়ির পাসের ছোট ভাই উৎসব কে, মনে পড়ে প্রেমনগর গ্রামের পুকুরে মাছ ধরা, ধান ক্ষেতের মাঝের মাটির পথে ধুলামাড়িয়ে স্কুলে যাওয়ার স্মৃতি। তাই তো প্রেমনগর গ্রাম এ দেশ,ওর বন্ধুদের খোজ খবর নিতেই ফেসবুক ব্যবহার করা। মেয়েটা একটু বেশী অাবেগ অাপ্লুত হয়ে পড়েছিল,তাই এ বিষয় টা এড়িয়ে অন্য প্রসঙ্গে যেতে চাইলাম। তার কাছে জানতে চাইলাম তোমার খেলাধুলার প্রতি অাগ্রহ কেমন। সে বলে, অামি খেলার পাগল টিভিতে খুব খেলা দেখি। অামাকে প্রশ্ন করল,তোর প্রিয় খেলোয়ার কে? অামি তাকে বললাম না কারণ মাশরাফি কে ওখানকার অনেকে চেনে না, মাশরাফির কথা বললে অনেকে বলে, কে সে?? তারা চেনে সাকিব মুস্তাফিজ কে, মাশরাফির বর্ণনা দিতে হয় বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক,এ সে ইত্যাদি। তাই তাকে উল্ট প্রশ্ন করলাম তোর প্রিয় খেলোয়ার কে। বোনটি অামাকে অবাক করে দিয়ে বলল,মাশরাফি তার প্রিয় খেলোয়ার ই শুধু না,প্রিয় মানুষও। সে অারও বলল,এখন বাংলাদেশ ভারত খেলা হলে বাংলাদেশের সমর্থন করি। কাওকে কিছু বলতে পারি না কিন্তু জানিস,বাংলাদেশ জিতলে মনে হয় অামি ই জিতে গেলাম। লেখাটুকু পড়ে অামি অার কিছু বলতে পারলাম না,মোবাইলের ডাটা কানেকসন অফ করে দিলাম। কখন যে চোখ ভিজেছে তা লক্ষ করিনি। এখনও ওর সাথে কথা হয়,বাংলাদেশর যে খেলাগুলি ওখানকার টিভিতে দেখায় না, সে খেলাগুলির স্কোর বার বার মেছেজ করে ও অামার থেকে জেনে নেয়। ওর চোখে অামি বাংলাদেশের মানচিত্র দেখি,বড় অাপন ভাই বোন হয়ে অামরা অাছি।।
©somewhere in net ltd.