নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
[email protected] Facebook-selim anwarবেঁচে থাকা দারুন একটা ব্যাপার ।কিন্তু কয়জন বেঁচে থাকে। আমি বেঁচে থাকার চেষ্টা করি।সময় মূল্যবান ।জীবন তার চেয়েও অনেক বেশী মূল্যবান।আর সম্ভাবনাময়।সুন্দর।ঢাকাবিশ্বদ্যিালয়ের পাঠ চুকিয়ে নিরস চাকুরীজীবন। সুন্দরতর জীবনের প্রচেষ্টায় নিবেদিত আমি সেলিম আনোয়ার।
কত কথা বলে গেলে কবিতা গল্প গানের ছলে,
অবশেষে মরেও অমর তুমি!
শ্রদ্ধাভরে আজও তোমারে স্মরি- কতনা কৌতুহলে।
মনের হরষে গেয়ে ওঠি
তোমারি লেখা গান,
মানের শোকে স্বান্তনা মেলে
গাহিয়া তোমার গান।
তোমার গানে আনমনে-মোর প্রিয়ারে করিগো আহবান
সবার উপরে তুমি কবি আমিও লিখি তা-ই।
কবিতা লিখে মোর প্রিয়ারে ভালোবাসিয়া যাই।
নৈঃস্বর্গ থেকে শব্দ এনে-
গ্রামবাংলার সকল রূপে অপূর্ব ব্যাঞ্জণা দিয়েছো মেখে
তোমার তুল্য আর কেহ নাই।
হে কবি, বিশ্বকবি! আমারে তুমি করেছো ঋণী তাই,
শ্রদ্ধাবণত চিত্তে আজি স্মরিগো তোমায়।
০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:১৬
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সেজন্যই তো একটু সময় নিয়ে লিখলাম কবিতা। দুইদিন কবিতা লেখা বন্ধ থাকবে।বেঁচে থাকলে কবি গুরু ব্যাপারটি পছন্দ করতেন না ।
২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:০০
সনেট কবি বলেছেন: অনেক সুন্দর লিখেছেন।
০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:১৮
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কমেন্টে অশেষ কৃতজ্ঞতা। নিরন্তর শুভকামনা ।
৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:২২
চাঁদগাজী বলেছেন:
কবি কবিতা লিখে গেছেন, সব বাংগালী তাঁর কবিতা পড়তে পারবেন কিনা, সেটা নিয়ে মাথা ঘামাননি
০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:০৩
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কমেন্টের উত্তর মুছে ফেললাম।
কমেন্টে ধন্যবাদ।রিন্তর শুভকামনা ।
৪| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৪৮
রাকু হাসান বলেছেন: অনেক মনে করে ,কবিকে ,আমি ব্যক্তিগত ভাবে রবীন্দ্রনাথে কাছে বারবার ফিরে যাই ,পথ দেখায় ,একাকিত্বে পাশে পাই আর এমন কবিকে নিয়ে কবিতা অসম্ভব রকমের ভাল লাগা , গুরু
০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:১৮
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কবিগুরু বলেছেন:
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে।
একলা চলো, একলা চলো, একলা চলো, একলা চলো রে॥
যদি কেউ কথা না কয়, ওরে ওরে ও অভাগা,
যদি সবাই থাকে মুখ ফিরায়ে সবাই করে ভয়—
তবে পরান খুলে
ও তুই মুখ ফুটে তোর মনের কথা একলা বলো রে॥
যদি সবাই ফিরে যায় , ওরে ওরে ও অভাগা,
যদি গহন পথে যাবার কালে কেউ ফিরে না চায়—
তবে পথের কাঁটা
ও তুই রক্তমাখা চরণতলে একলা দলো রে॥
যদি আলো না ধরে, ওরে ওরে ও অভাগা,
যদি ঝড়-বাদলে আঁধার রাতে দুয়ার দেয় ঘরে—
তবে বজ্রানলে
আপন বুকের পাঁজর জ্বালিয়ে নিয়ে একলা জ্বলো রে॥
৫| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৫৫
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আহা!! দারুণ শব্দের ব্যাঞ্জনা। ভালো লাগলো।
শুভকামনা অফুরান।
০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:১৬
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কবি গুরুর লেখা গান...ভাললাগা অফুরান
তুমি কোন্ কাননের ফুল, কোন্ গগনের তারা।
তোমায় কোথায় দেখেছি যেন কোন্ স্বপনের পারা।।
কবে তুমি গেয়েছিলে, আঁখির পানে চেয়েছিলে
ভুলে গিয়েছি।
শুধু মনের মধ্যে জেগে আছে ওই নয়নের তারা।।
তুমি কথা কোয়ো না, তুমি চেয়ে চলে যাও।
এই চাঁদের আলোতে তুমি হেসে গ’লে যাও।
আমি ঘুমের ঘোরে চাঁদের পানে চেয়ে থাকি মধুর প্রাণে,
তোমার আঁখির মতন দুটি তারা ঢালুক কিরণধারা।
৬| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৫৭
প্রামানিক বলেছেন: বিশ্বকবিকে নিয়ে কবিতা ভালো লাগল। ধন্যবাদ
০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কবিগুরুর লেখা কবিতা ...।
যেদিন উদিলে তুমি, বিশ্বকবি, দূর সিন্ধুপারে
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর---বলাকা
যেদিন উদিলে তুমি, বিশ্বকবি, দূর সিন্ধুপারে,
ইংলণ্ডে দিকপ্রান্ত পেয়েছিল সেদিন তোমারে
আপন বক্ষের কাছে, ভেবেছিল বুঝি তারি তুমি
কেবল আপন ধন; উজ্জ্বল ললাট তব চুমি
রেখেছিল কিছুকাল অরণ্যশাখার বাহুজালে,
ঢেকেছিল কিছুকাল কুয়াশা-অঞ্চল-অন্তরালে
বনপুষ্প-বিকশিত তৃণঘন শিশির-উজ্জ্বল
পরীদের খেলার প্রাঙ্গণে। দ্বীপের নিকুঞ্জতল
তখনো ওঠে নি জেগে কবিসূর্য-বন্দনাসংগীতে।
তার পরে ধীরে ধীরে অনন্তের নিঃশব্দ ইঙ্গিতে
দিগন্তের কোল ছাড়ি শতাব্দীর প্রহরে প্রহরে
উঠিয়াছ দীপ্তজ্যোতি মাধ্যাহ্নের গগনের 'পরে;
নিয়েছ আসন তব সকল দিকের কেন্দ্রদেশে
বিশ্বচিত্ত উদ্ভাসিয়া; তাই হেরো যুগান্তর-শেষে
ভারতসমুদ্রতীরে কম্পমান শাখাপুঞ্জে আজি
নারিকেলকুঞ্জবনে জয়ধ্বনি উঠিতেছে বাজি।
শিলাইদহ, ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৩২২
৭| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৩৭
রঞ্জন রয় বলেছেন:
তিনি মরেও অমর হয়ে আছে।
০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:১০
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: পঞ্চম শ্রেণী শেষে বিদায় অনুষ্ঠানে বিদায়পত্র পাঠ করেছিলাম আমি । সেটির অংশ ছিলো যেতে নাহি দেব হায়..........সেটিও কবিগুরুর লেখা এভাবে কর্মের মাঝে কবি আজও বিরাজমান ।
যেতে নাহি দিব
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর---সোনার তরী
দুয়ারে প্রস্তুত গাড়ি; বেলা দ্বিপ্রহর;
হেমন্তের রৌদ্র ক্রমে হতেছে প্রখর।
জনশূন্য পল্লিপথে ধূলি উড়ে যায়
মধ্যাহ্ন-বাতাসে; স্নিগ্ধ অশত্থের ছায়
ক্লান্ত বৃদ্ধা ভিখারিণী জীর্ণ বস্ত্র পাতি
ঘুমায়ে পড়েছে; যেন রৌদ্রময়ী রাতি
ঝাঁ ঝাঁ করে চারি দিকে নিস্তব্ধ নিঃঝুম--
শুধু মোর ঘরে নাহি বিশ্রামের ঘুম।
গিয়েছে আশ্বিন-- পূজার ছুটির শেষে
ফিরে যেতে হবে আজি বহুদূরদেশে
সেই কর্মস্থানে। ভৃত্যগণ ব্যস্ত হয়ে
বাঁধিছে জিনিসপত্র দড়াদড়ি লয়ে,
হাঁকাহাঁকি ডাকাডাকি এ-ঘরে ও-ঘরে।
ঘরের গৃহিণী, চক্ষু ছলছল করে,
ব্যথিছে বক্ষের কাছে পাষাণের ভার,
তবুও সময় তার নাহি কাঁদিবার
একদণ্ড তরে; বিদায়ের আয়োজনে
ব্যস্ত হয়ে ফিরে; যথেষ্ট না হয় মনে
যত বাড়ে বোঝা। আমি বলি, "এ কী কাণ্ড!
এত ঘট এত পট হাঁড়ি সরা ভাণ্ড
বোতল বিছানা বাক্স রাজ্যের বোঝাই
কী করিব লয়ে কিছু এর রেখে যাই
কিছু লই সাথে।'
সে কথায় কর্ণপাত
নাহি করে কোনো জন। "কী জানি দৈবাৎ
এটা ওটা আবশ্যক যদি হয় শেষে
তখন কোথায় পাবে বিভুঁই বিদেশে?
সোনামুগ সরু চাল সুপারি ও পান;
ও হাঁড়িতে ঢাকা আছে দুই-চারিখান
গুড়ের পাটালি; কিছু ঝুনা নারিকেল;
দুই ভাণ্ড ভালো রাই-সরিষার তেল;
আমসত্ত্ব আমচুর; সের দুই দুধ--
এই-সব শিশি কৌটা ওষুধবিষুধ।
মিষ্টান্ন রহিল কিছু হাঁড়ির ভিতরে,
মাথা খাও, ভুলিয়ো না, খেয়ো মনে করে।'
বুঝিনু যুক্তির কথা বৃথা বাক্যব্যয়।
বোঝাই হইল উঁচু পর্বতের ন্যায়।
তাকানু ঘড়ির পানে, তার পরে ফিরে
চাহিনু প্রিয়ার মুখে; কহিলাম ধীরে,
"তবে আসি'। অমনি ফিরায়ে মুখখানি
নতশিরে চক্ষু-'পরে বস্ত্রাঞ্চল টানি
অমঙ্গল অশ্রুজল করিল গোপন।
বাহিরে দ্বারের কাছে বসি অন্যমন
কন্যা মোর চারি বছরের। এতক্ষণ
অন্য দিনে হয়ে যেত স্নান সমাপন,
দুটি অন্ন মুখে না তুলিতে আঁখিপাতা
মুদিয়া আসিত ঘুমে; আজি তার মাতা
দেখে নাই তারে; এত বেলা হয়ে যায়
নাই স্নানাহার। এতক্ষণ ছায়াপ্রায়
ফিরিতেছিল সে মোর কাছে কাছে ঘেঁষে,
চাহিয়া দেখিতেছিল মৌন নির্নিমেষে
বিদায়ের আয়োজন। শ্রান্তদেহে এবে
বাহিরের দ্বারপ্রান্তে কী জানি কী ভেবে
চুপিচাপি বসে ছিল। কহিনু যখন
"মা গো, আসি' সে কহিল বিষণ্ণ-নয়ন
ম্লান মুখে, "যেতে আমি দিব না তোমায়।'
যেখানে আছিল বসে রহিল সেথায়,
ধরিল না বাহু মোর, রুধিল না দ্বার,
শুধু নিজ হৃদয়ের স্নেহ-অধিকার
প্রচারিল--"যেতে আমি দিব না তোমায়'।
তবুও সময় হল শেষ, তবু হায়
যেতে দিতে হল।
ওরে মোর মূঢ় মেয়ে,
কে রে তুই, কোথা হতে কী শকতি পেয়ে
কহিলি এমন কথা, এত স্পর্ধাভরে--
"যেতে আমি দিব না তোমায়'? চরাচরে
কাহারে রাখিবি ধরে দুটি ছোটো হাতে
গরবিনী, সংগ্রাম করিবি কার সাথে
বসি গৃহদ্বারপ্রান্তে শ্রান্ত ক্ষুদ্র দেহ
শুধু লয়ে ওইটুকু বুকভরা স্নেহ।
ব্যথিত হৃদয় হতে বহু ভয়ে লাজে
মর্মের প্রার্থনা শুধু ব্যক্ত করা সাজে
এ জগতে, শুধু বলে রাখা "যেতে দিতে
ইচ্ছা নাহি'। হেন কথা কে পারে বলিতে
"যেতে নাহি দিব'! শুনি তোর শিশুমুখে
স্নেহের প্রবল গর্ববাণী, সকৌতুকে
হাসিয়া সংসার টেনে নিয়ে গেল মোরে,
তুই শুধু পরাভূত চোখে জল ভ'রে
দুয়ারে রহিলি বসে ছবির মতন,
আমি দেখে চলে এনু মুছিয়া নয়ন।
চলিতে চলিতে পথে হেরি দুই ধারে
শরতের শস্যক্ষেত্র নত শস্যভারে
রৌদ্র পোহাইছে। তরুশ্রেণী উদাসীন
রাজপথপাশে, চেয়ে আছে সারাদিন
আপন ছায়ার পানে। বহে খরবেগ
শরতের ভরা গঙ্গা। শুভ্র খণ্ডমেঘ
মাতৃদুগ্ধ পরিতৃপ্ত সুখনিদ্রারত
সদ্যোজাত সুকুমার গোবৎসের মতো
নীলাম্বরে শুয়ে। দীপ্ত রৌদ্রে অনাবৃত
যুগ-যুগান্তরক্লান্ত দিগন্তবিস্তৃত
ধরণীর পানে চেয়ে ফেলিনু নিশ্বাস।
কী গভীর দুঃখে মগ্ন সমস্ত আকাশ,
সমস্ত পৃথিবী। চলিতেছি যতদূর
শুনিতেছি একমাত্র মর্মান্তিক সুর
"যেতে আমি দিব না তোমায়'। ধরণীর
প্রান্ত হতে নীলাভ্রের সর্বপ্রান্ততীর
ধ্বনিতেছে চিরকাল অনাদ্যন্ত রবে,
"যেতে নাহি দিব। যেতে নাহি দিব।' সবে
কহে "যেতে নাহি দিব'। তৃণ ক্ষুদ্র অতি
তারেও বাঁধিয়া বক্ষে মাতা বসুমতী
কহিছেন প্রাণপণে "যেতে নাহি দিব'।
আয়ুক্ষীণ দীপমুখে শিখা নিব-নিব,
আঁধারের গ্রাস হতে কে টানিছে তারে
কহিতেছে শত বার "যেতে দিব না রে'।
এ অনন্ত চরাচরে স্বর্গমর্ত ছেয়ে
সব চেয়ে পুরাতন কথা, সব চেয়ে
গভীর ক্রন্দন--"যেতে নাহি দিব'। হায়,
তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়।
চলিতেছে এমনি অনাদি কাল হতে।
প্রলয়সমুদ্রবাহী সৃজনের স্রোতে
প্রসারিত-ব্যগ্র-বাহু জ্বলন্ত-আঁখিতে
"দিব না দিব না যেতে' ডাকিতে ডাকিতে
হু হু করে তীব্রবেগে চলে যায় সবে
পূর্ণ করি বিশ্বতট আর্ত কলরবে।
সম্মুখ-ঊর্মিরে ডাকে পশ্চাতের ঢেউ
"দিব না দিব না যেতে'-- নাহি শুনে কেউ
নাহি কোনো সাড়া।
চারি দিক হতে আজি
অবিশ্রাম কর্ণে মোর উঠিতেছে বাজি
সেই বিশ্ব-মর্মভেদী করুণ ক্রন্দন
মোর কন্যাকণ্ঠস্বরে; শিশুর মতন
বিশ্বের অবোধ বাণী। চিরকাল ধরে
যাহা পায় তাই সে হারায়, তবু তো রে
শিথিল হল না মুষ্টি, তবু অবিরত
সেই চারি বৎসরের কন্যাটির মতো
অক্ষুণ্ন প্রেমের গর্বে কহিছে সে ডাকি
"যেতে নাহি দিব'। ম্লান মুখ, অশ্রু-আঁখি,
দণ্ডে দণ্ডে পলে পলে টুটিছে গরব,
তবু প্রেম কিছুতে না মানে পরাভব,
তবু বিদ্রোহের ভাবে রুদ্ধ কণ্ঠে কয়
"যেতে নাহি দিব'। যত বার পরাজয়
তত বার কহে, "আমি ভালোবাসি যারে
সে কি কভু আমা হতে দূরে যেতে পারে।
আমার আকাঙক্ষা-সম এমন আকুল,
এমন সকল-বাড়া, এমন অকূল,
এমন প্রবল বিশ্বে কিছু আছে আর!'
এত বলি দর্পভরে করে সে প্রচার
"যেতে নাহি দিব'। তখনি দেখিতে পায়,
শুষ্ক তুচ্ছ ধূলি-সম উড়ে চলে যায়
একটি নিশ্বাসে তার আদরের ধন;
অশ্রুজলে ভেসে যায় দুইটি নয়ন,
ছিন্নমূল তরু-সম পড়ে পৃথ্বীতলে
হতগর্ব নতশির। তবু প্রেম বলে,
"সত্যভঙ্গ হবে না বিধির। আমি তাঁর
পেয়েছি স্বাক্ষর-দেওয়া মহা অঙ্গীকার
চির-অধিকার-লিপি।'-- তাই স্ফীত বুকে
সর্বশক্তি মরণের মুখের সম্মুখে
দাঁড়াইয়া সুকুমার ক্ষীণ তনুলতা
বলে, "মৃত্যু তুমি নাই।-- হেন গর্বকথা!
মৃত্যু হাসে বসি। মরণপীড়িত সেই
চিরজীবী প্রেম আচ্ছন্ন করেছে এই
অনন্ত সংসার, বিষণ্ণ নয়ন-'পরে
অশ্রুবাষ্প-সম, ব্যাকুল আশঙ্কাভরে
চির-কম্পমান। আশাহীন শ্রান্ত আশা
টানিয়া রেখেছে এক বিষাদ-কুয়াশা
বিশ্বময়। আজি যেন পড়িছে নয়নে--
দুখানি অবোধ বাহু বিফল বাঁধনে
জড়ায়ে পড়িয়া আছে নিখিলেরে ঘিরে,
স্তব্ধ সকাতর। চঞ্চল স্রোতের নীরে
পড়ে আছে একখানি অচঞ্চল ছায়া--
অশ্রুবৃষ্টিভরা কোন্ মেঘের সে মায়া।
তাই আজি শুনিতেছি তরুরক মর্মরে
এত ব্যাকুলতা; অলস ঔদাস্যভরে
মধ্যাহ্নের তপ্ত বায়ু মিছে খেলা করে
শুষ্ক পত্র লয়ে; বেলা ধীরে যায় চলে
ছায়া দীর্ঘতর করি অশত্থের তলে।
মেঠো সুরে কাঁদে যেন অনন্তের বাঁশি
বিশ্বের প্রান্তর-মাঝে; শুনিয়া উদাসী
বসুন্ধরা বসিয়া আছেন এলোচুলে
দূরব্যাপী শস্যক্ষেত্রে জাহ্নবীর কূলে
একখানি রৌদ্রপীত হিরণ্য-অঞ্চল
বক্ষে টানি দিয়া; স্থির নয়নযুগল
দূর নীলাম্বরে মগ্ন; মুখে নাহি বাণী।
দেখিলাম তাঁর সেই ম্লান মুখখানি
সেই দ্বারপ্রান্তে লীন, স্তব্ধ মর্মাহত
মোর চারি বৎসরের কন্যাটির মতো।
জোড়াসাঁকো, ১৪ কার্তিক, ১২৯৯
৮| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৩:৫৭
জাহিদ অনিক বলেছেন:
বাঙালি ছাড়া প্রায় অন্য সকল বিশ্ব তাকে সেইভাবে বলতে গেলে ভুলে গেছে--- সাহিত্য এগিয়ে চলে সময়ের আগে
০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:২৫
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কবি গুরু কহেন.....
যা দিয়েছ আমার এ প্রাণ ভরি
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর---গীতাঞ্জলি
যা দিয়েছ আমার এ প্রাণ ভরি
খেদ রবে না এখন যদি মরি।
রজনীদিন কত দুঃখে সুখে
কত যে সুর বেজেছে এই বুকে,
কত বেশে আমার ঘরে ঢুকে
কত রূপে নিয়েছ মন হরি,
খেদ রবে না এখন যদি মরি।
জানি তোমায় নিই নি প্রাণে বরি,
পাই নি আমার সকল পূর্ণ কবে।
যা পেয়েছি ভাগ্য বলে মানি,
দিয়েছ তো তব পরশখানি,
আছ তুমি এই জানা তো জানি--
যাব ধরি সেই ভরসার তরী।
খেদ রবে না এখন যদি মরি।
১৬ শ্রাবণ, ১৩১৭
ক
৯| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: মনোমুগ্ধকর।
০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৪
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর---গীতাঞ্জলি
আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে--
আসে বৃষ্টির সুবাস বাতাস বেয়ে।
এই পুরাতন হৃদয় আমার আজি
পুলকে দুলিয়া উঠিছে আবার বাজি
নূতন মেঘের ঘনিমার পানে চেয়ে
আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে।
রহিয়া রহিয়া বিপুল মাঠের 'পরে
নব তৃণদলে বাদলের ছায়া পড়ে।
এসেছে এসেছে এই কথা বলে প্রাণ,
এসেছে এসেছে উঠিতেছে এই গান,
নয়নে এসেছে, হৃদয়ে এসেছে ধেয়ে।
আবার আষাঢ় এসেছে আকাশ ছেয়ে।
১০ আষাঢ়, ১৩১৭
১০| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:২০
নীলপরি বলেছেন: খুব সুন্দর কবিতা ++++
০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৭
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর---গীতাঞ্জলি
আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে।
তব অবগুণ্ঠিত কুণ্ঠিত জীবনে
কোরো না বিড়ম্বিত তারে।
আজি খুলিয়ো হৃদয়দল খুলিয়ো,
আজি ভুলিয়ো আপনপর ভুলিয়ো,
এই সংগীত-মুখরিত গগনে
তব গন্ধ তরঙ্গিয়া তুলিয়ো।
এই বাহির ভুবনে দিশা হারায়ে
দিয়ো ছড়ায়ে মাধুরী ভারে ভারে।
অতি নিবিড় বেদনা বনমাঝে রে
আজি পল্লবে পল্লবে বাজে রে--
দূরে গগনে কাহার পথ চাহিয়া
আজি ব্যাকুল বসুন্ধরা সাজে রে।
মোর পরানে দখিন বায়ু লাগিছে,
কারে দ্বারে দ্বারে কর হানি মাগিছে,
এই সৌরভবিহ্বল রজনী
কার চরণে ধরণীতলে জাগিছে।
ওগো সুন্দর, বল্লভ, কান্ত,
তব গম্ভীর আহ্বান কারে।
বোলপুর, ২৬ চৈত্র, ১৩১৬
কমেন্টে এবং পাঠে অশেষ কৃতজ্ঞতাও নিরন্তর শুভকামনা ।
১১| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৪২
সাদাফ কামরুল হাসান বলেছেন: মনমুগ্ধকর সুন্দর একটি কবিতা।
০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৫২
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: হে নবাগত,
তোমাকে সুস্বাগত,
ভোরের রবির মতো
হয়গো উদিত,
লিখবে পড়বে
নতুন কিছু জানবে
তোমাদের আনাগোনায়
ব্লগের পাতা হাসবে
দিনের আলোর মতে।
আমরা এসেছি এতদূর
তোমরা এসেছো আরও দূরে নিয়ে যেতে
এভাবে নিত্য ছুটে চলা আমাদের পৃথিবীতে।
এটা আমার লেখা । আপনার আগমনে ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৫৭
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
কবির প্রতি শ্রদ্ধা! বিশ্বে বাংলার ঝান্ডাধারী কবির মৃত্যু ৭ আগষ্ট!