নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছু মানুষ অন্য মানুষকে মুগ্ধ করার অসীম ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। আর কিছু মানুষের ভিতর এই ক্ষমতা কখনই আসে না। আমি দ্বিতীয় দলের মানুষ। কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু কখনই করতে পারি না। কেউ অনেক সুন্দর গান গায়, আমি শুধু শুনে যাই। কেউ অনেক সুন্দর নাচে, আমি শুধু হাত তালি দিয়ে যাই। কেউ অনেক সুন্দর লেখে, আমি শুধু ভেবে যাই, কী করে এত ভালো লেখে কেউ? আমিও লিখি। তবে তা কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু না। আমার লেখায় আমার ভালোবাসা ছাড়া কিছুই নেই। পড়াশুনা শেষ, বুটেক্স থেকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হয়ে চাকরি, বিয়ে, পেশা পরিবর্তন সব হয়েছে। লেখালেখির ধারাবাহিকতায় চারখানা উপন্যাস অমর একুশে বইমেলায় বেরিয়েছে। টুকরো ছায়া টুকরো মায়া (২০১৫) – সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । একা আলো বাঁকা বিষাদ (২০১৬) – সামাজিক উপন্যাস । মধ্য বৃত্ত (২০১৮) – ডিটেকটিভ সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । অভিসন্ধি (২০২০) – ক্রাইম থ্রিলার । দেশটাকে ভালোবাসি অনেক। অনেক মায়া কাজ করে। মাঝে মাঝে ভাবি, সব বদলে দিতে পারতাম। স্বপ্নের মত না, বাস্তবের মত একটা দেশ গড়তে পারতাম …………………………
একটা প্রেসার কুকার কিনে নিল নাহিদ। সবচেয়ে কম দামের নাকি দোকানে, তাও ৬০০ টাকা। টাকাটা নিজের না, মামীর দেয়া। খুব একটা ভালবেসে দিয়েছেন, এটা ভাবা ঠিক না। বরং বেশ বিরক্ত হয়েই দিয়েছেন। বিরক্ত হয়ে দিক আর যেভাবে দিক, দিয়েছে সেটাই অনেক। সব কিছু নিয়ে মন খারাপ করতে নেই। নাহিদ করেও না। এই যে কাল ডেকে মামী বললেন, তুমি কি রান্না বান্না কিছু পারো?
প্রশ্নটা শুনে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিল নাহিদ মামীর মুখের দিকে। নাহিদের খাওয়া দাওয়া করা হয়, মামার সংসারেই। এখন বাবুর্চি হিসেবে কাজে লাগিয়ে, খাবার টাকাটা উসুল করে নিতে চাচ্ছেন নাকি? নিতেই পারেন। এখানে খাবার জন্য নাহিদ আলাদা কোন টাকা দেয় না, টাকা দেয় না পাশের রুমে থাকে সে জন্যও। নাহিদ মাথা দু পাশে নেড়ে বলেছিল, না মামী।
- একটা প্রেসার কুকার কিনে নাও। রান্না করা খুব সহজ।
- জ্বি মামী।
- টাকা পয়সা আছে?
- জ্বি না।
মামী একটা ছোট নিঃশ্বাস ফেলে বলেছিলেন, তুমি না একটা টিউশনি করাও।
- এখনও টাকা পাই নি সেখান থেকে।
মামী তার পার্স থেকে ১০০০ টাকার একটা নোট দিয়ে বলেছিলেন, এটা দিয়ে কিনে নিও। বুঝতে পারো, বয়স হচ্ছে, এতো জনের রান্না করতে কষ্ট হয়।
- জ্বি মামী।
টাকাটা হাতে নিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে নাহিদ। মামী প্রেসার কুকার কিনতে বললেন মানে, আলাদা করে নিজে নিজে খেতে বললেন রান্না করে। এতো জনের রান্না করতে কষ্ট হয়, বলে বুঝাতে চাইলেন, নাহিদকে এভাবে খাওয়াতে কষ্ট হচ্ছে। মামী সংসারের চার জনের রান্না করেন। চার জনের রান্না করা যা, পাঁচ জনের রান্না করাও তা। তবুও বললেন।
মামার সংসারে থাকছে প্রায় তিন বছর ধরে। তিন বছর কম সময় না। এতো দিনে বিরক্তি আসতেই পারে। যদিও বিরক্তি এসেছে আরও অনেক আগে, সেটা মামী প্রকাশ করলেন আরও ভাল করে এতো দিনে।
- নাহিদ।
পিছন থেকে কেউ ডাকছে মনে হল নাহিদের। নিউ মার্কেটে ঘুরছে। অনেকের নামই নাহিদ হতে পারে। প্রেসার কুকার হাতের নাহিদকেই ডাকছে এমন নাও হতে পারে। এবার আরও স্পষ্ট ডাক।
- এই নাহিদ।
পাশে এসে দাঁড়িয়েছে যে, নাহিদ তাকে চিনে। খুব ভাল করেই চিনে। মেয়েটা ক্লাসমেট, ভার্সিটির। নাম সুমনা।
- আমাকে চিনতে পেরেছ?
নাহিদ মাথা নেড়ে বলল, হ্যাঁ।
- বলতো আমার নাম কি?
- সুমনা।
- চুল স্ট্রেট করেছি, ভেবেছিলাম চিনবে না।
নাহিদ কিছু বলল না। সুমনাকে শেষ দেখেছিল মনে হয় ছয় মাস আগে। সুমনা এতো কথা বলা মেয়ে না, তবুও নিজে থেকে এসে এতো কথা বলছে। প্রেসার কুকারটা পিছনে নিয়ে নাহিদ ছোট করে একটা হাসি দিল।
- শপিং করলে বুঝি?
- হ্যাঁ।
- কি কিনলে?
- প্রেসার কুকার।
- আর কিছু কিনবে?
- না।
- সময় হবে একটু? আজিজ মার্কেট যাব।
নাহিদ একটু ইতস্তত করল। এতো সহজ ভাবে মেয়েটা বলল, যেন প্রতি নিয়ত নাহিদের সাথে আজিজ মার্কেট যায়। হ্যাঁ কি বলবে? প্রেসার কুকার হাতে একটা মেয়ের সাথে হাঁটছে জিনিসটা কেমন দেখায়? খুব একটা ভাল না। কিছু ভাবার আগেই মাথাটা কিভাবে যেন এক পাশে কাঁত হয়ে গেল, মুখ থেকে বেড়িয়ে গেল, হবে।
সুমনা আর নাহিদ হাঁটছে, নিউ মার্কেট পাড় হয়ে নীলক্ষেতের পাশ দিয়ে। নীলক্ষেত থেকে টি এস সি, টি এস সি থেকে শাহবাগ আজিজ মার্কেট। নীলক্ষেত থেকে টি এস সি রাস্তাটা হাঁটবার জন্য বেশ ভাল।
- ভার্সিটিতে আসো না যে আর?
সুমনার কথায় তাকাল মুখের দিকে নাহিদ। ছোট করে জবাব দিল, আমাকে দিয়ে পড়াশুনা হবে না।
- এটা কেমন কথা? পড়াশুনা করবে না আর?
- না।
- কি করবে?
- কিছুই করব না। আমাকে দিয়ে পৃথিবীর কোন কিছুই সম্ভব না।
সুমনা একটু থেমে দাঁড়াল। দাঁড়াল সাথে নাহিদও। নাহিদের দিকে তাকিয়ে, গলার স্বরটা পরিবর্তন করে বলল, আসলেই সম্ভব না।
নাহিদ নিশ্চুপ হয়ে সে কথা শুনল। জবাব দিল না কোন। মামার বাসায় থাকা হয়, ভার্সিটিতে ভর্তির সময় থেকেই। ছাত্র খুব একটা ভাল ছিল না নাহিদ। ইন্টারে কোন মতে পাশ। জানা ছিল চান্স হবে না কোন পাবলিক ভার্সিটিতে। অবশেষে মামা ব্যবস্থা করে দিলেন এক প্রাইভেট ভার্সিটিতে। সেখানে তার পরিচিত লোক আছে। দরিদ্র কোঠায় ভর্তি হল। টাকা পয়সা কিছু লাগবে না, শুধু পরীক্ষার আগে দিতে হয় পরীক্ষার ফি। নাহিদের ঢাকায় থাকার জায়গা নেই। মা বলেছিলেন, তোর মামার বাসায়ই থাকতে পারবি। তুই গেলে তোর মামা কি তোকে ফিরিয়ে দিবে?
নাহিদ ব্যাগ গুছিয়ে তার পরদিন এসে উঠেছিল মামার বাসায়। মামা সত্যি ফিরিয়ে দেন নি, রাগ করেন নি, মুখের হাসি ম্লানও করেন নি। করেছিলেন মামী। খুব বিরক্তি নিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন, গেস্ট রুমটা। দুই দিন পরেই খাবার দেবার সময় বলেছিলেন, তোমার ভার্সিটির হোস্টেল নাই?
- না মামী, প্রাইভেট ভার্সিটি। ক্যাম্পাসই নাই ঠিক মত। নিচ তলায় শপিং সেন্টার উপরে ভার্সিটি।
- মেস টেস দেখেছ কিছু?
নাহিদ খাওয়া বাদ দিয়ে চুপ করে তাকিয়ে ছিল মামীর দিকে। এরপর থেকে মামীর সাথে জ্বি হ্যাঁ রকম কথা ছাড়া বেশ একটা কথা বলে না। মনে হয় , কথা বলতে গেলেই বলে দিবেন, তিন বছর হল। আর কত? একটা মেসের ব্যবস্থা তুমি এখনও করতে পার নি?
বড় অস্বস্তিতে কাটে বাসায় থাকায় পুরোটা সময়। মনে হয় নিজেকে বড় অবাঞ্ছিত। মাঝে মাঝেই মামী বড় চিৎকার চেঁচামেচি করেন কারণ ছাড়া। সাবান ফুরিয়ে গেল, এতো কারেন্ট বিল আসল, ঘর নোংরা হল, টাকা পয়সা নেই। মনে হয় নাহিদের সব গুলো কথাই নাহিদকে শুনাবার জন্যই। নাহিদ সে কথা শুনে। গায়ে লাগায় না। সব কিছু গায়ে লাগাতে নেই।
ভার্সিটিতে ক্লাস করতে গিয়েও নিজেকে খুব বেমানান লাগে। মনে হয় নাহিদের জায়গা এটা না। সবার থেকে নাহিদ কেমন যেন আলাদা। মা একটা শার্ট আর প্যান্ট বানিয়ে দিয়েছেন ভার্সিটিতে ক্লাস করতে যাবার জন্য। সে শার্ট প্যান্ট পরে ক্লাসে বসে থাকতে নিজেরই যেন কেমন অস্বস্তি বোধ হয়। একদিন নতুন এক টিচার ক্লাস নিচ্ছেন। নাহিদের আসতে একটু দেরী ক্লাসে। ক্লাসে ঢুকতে যাবে, তখন সে টিচার বলেন, এই এক গ্লাস পানি দিও তো আমাকে।
নাহিদ ঠায় দাঁড়িয়ে ছিল সেখানে গেটের কাছেই। নাহিদকে ভেবেছে সে টিচার ভার্সিটির কর্মচারী। পিছন থেকে খাতা বের করে সামনে আনতেই সে বলেছিলেন, তুমি কি স্টুডেন্ট?
নাহিদ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়েছিল। বলেনি কিছু। এক ছাত্র মাঝ থেকে বলেছিল, জ্বি স্যার, নাহিদ। আমাদের সাথেই পরে।
- স্টুডেন্টদের বেশ ভুষা এমন হয়? দেখে তো মনে হয়, কোথা থেকে কাজ করে আসছ। একটু পরিপাটি হয়ে চলা যায় না? যাও বস।
নাহিদের সেদিন বড় কান্না পাচ্ছিল। ক্লাস শেষে সবাই যখন চলে যাচ্ছিল, নাহিদ তখন মাথা নিচু করে অনেকটা সময় বসে ছিল। বসে বসে কাঁদছিল। বুকের ভিতর বড় ব্যথা করছিল সে সময়টায়। নাহিদ মাথা তুলে চোখ মুছতেই দেখল, ক্লাসে নাহিদ ছাড়াও আর একটা মেয়ে আছে। মেয়েটা কানে এয়ার ফোন লাগিয়ে তাকিয়েছিল নাহিদের দিকে। নাহিদ মাথা তুলতেই, মেয়েটা নিচের ঠোঁট বাহিরে বাড়িয়ে, দুই হাত দু দিকে ছড়িয়ে ইশারায় জানতে চাইল, কি হয়েছে?
নাহিদ, মাথা দু দিকে নেড়ে ইশারায়ই জবাব দিয়েছিল, কিছু না।
সে মেয়েটাই সুমনা। এরপর থেকেই সুমনার সামনে পড়লেই বড় লজ্জা লাগত। এতো বড় একটা ছেলে কাঁদছিল, সে দৃশ্য দেখে ফেলেছে একটা মেয়ে। ব্যাপারটা বড় লজ্জারই। আস্তে আস্তে যদিও অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল সবার সাথে। তবুও কিছু দূরত্ব থাকেই। বন্ধুরা যখন তখন পার্টি দেয়, এখানে সেখানে যায়। নাহিদ সে গুলোতে যেতে পারে না। যাওয়া হয় না। মামার কাছ থেকে বুঝে শুনে টাকা নিতে হয়। যখন তখন সব কিছুর জন্য টাকা চাওয়া যায় না। মাঝে মাঝে বই কেনার জন্য টাকা নেয়, তাতেই মামী বলেন, এতো কিসের কি বই লাগে বুঝিনা আমি। ভার্সিটিতে আবার কিসের বই?
নাহিদ এক বছর যাবার পর থেকে আর কখনও বই কেনার জন্যও টাকা চায় না। বই কিনে না। লাইব্রেরি থেকে মাঝে মাঝে পড়ে। সে পড়ায় পাশ করা হয় না। পাশ করা যায় না।
সুমনা মাঝে মাঝে দেখা হলে জানতে চাইত, কেমন আছ?
নাহিদ মাথা নিচু করে শুধু বলত, ভাল আছি।
এড়িয়ে চলেও মাঝে মাঝে আড় চোখে তাকাত সুমনার দিকে নাহিদ। কেন যেন মেয়েটাকে দেখতে বড় ভাল লাগত। বেশ হাসিখুশি। তবে কথা কম বলে। সবার কথা খুব মন দিয়ে শুনবে। আর কিছু হলেই হাসবে। হাসার কথাতেও হাসবে, খুব সিরিয়াস কথাতেও হাসবে। একদিন ক্লাসে এক টিচার বললেন, উনি একটা ইংলিশ কৌতুক বলবেন। সবাই খুব নড়ে চড়ে বসল সে কৌতুক শুনবার জন্য। তিনি বললেন, " Whenever your ex says, "You'll never find someone like me," the answer to that is, "That's the point."
বলে তিনি থেমে গেলেন। কৌতুক কোথায় শুরু হল, কোথায় শেষ হল, কেউ কিছুই বুঝল না। কিন্তু সুমনা হেসে হেসে গড়াগড়ি রকম অবস্থা। শব্দ করে হাসছে। অন্য সবাই চুপ করে বসে আছে। টিচার সুমনার হাসি দেখে খুবই খুশি হলেন, তিনি বললেন, তোমরা কি আর একটা কৌতুক শুনতে চাও?
সে প্রশ্নের উত্তর কেউ দিল না। অনাগ্রহ দেখে টিচার নিজেই বললেন, আচ্ছা এক দিনে দুই কৌতুক শোনা ঠিক না। আমরা বরং পড়ায় যাই।
সুমনা একবার এসে নাহিদকে ডেকে বলেছিল, নাহিদ, আজ আমার জন্মদিন। তুমি আসবে আজ সন্ধ্যায় , ঠিক আছে?
নাহিদ হ্যাঁ না কিছু বলে নি। সুমনার জন্মদিন, অন্তত উইশ করা দরকার। সেটাও করে নি। বোকার মত চুপচাপ দাঁড়িয়েছিল।
- কি আসবে না?
নাহিদ কি বলবে ভেবে পায় না। না বলতে ইচ্ছা করছে না। আবার হ্যাঁ বললেই গিফট নিয়ে যেতে হবে। গিফট কেনার টাকা হবে না নাহিদের।
সুমনা ছোট একটা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বলেছিল, ঠিকানা এটা। অবশ্যই চলে আসবে।
নাহিদ সে ঠিকানা পকেটে রেখে দিয়েছিল। সেদিন মামীর কাছে অনেক সাহস করে বলেছিল, মামী আমার কিছু টাকা দরকার ছিল।
- আবার কিসের টাকা?
- না মানে, এখন তো আর বই কেনার জন্য টাকা নেই না। একটা বই জরুরী কিনতে হবে।
- কি বই বই কর তুমি সারাদিন? একটা মানুষের পিছনে যদি এতো টাকা ঢালতে হলে, কিভাবে চলে সংসার?
- মামী আর চাইব না কখনও।
- আর চাইব না কখনও। এতো বড় ছেলে হয়েছ একটা টিউশনি তো করাতে পারো।
নাহিদ মাথা নিচু করে চলে আসে। মামী ডাক দিয়ে বলেন, কোথায় যাচ্ছ? টাকা নিয়ে যাও। কত টাকা লাগবে?
- লাগবে না মামী।
- লাগবে না মানে? এই না বললে।
- এখন আর লাগবে না।
- আমার সাথে জেদ করবে না বলে দিলাম। বল কত টাকা?
- ২০০ টাকা।
মামী ২০০ টাকা নাহিদের হাতে ধরিয়ে দেন। নিজের কাছে আছে ১০০ টাকা। ৩০০ টাকায় কি কেনা যায় মেয়েদের জানে না নাহিদ। অনেক ঘুরে ফিরে গিফটের দোকান গুলোও। সেখানে কিছুই নেই ৩০০ টাকার। একটা টেডি বিয়ার কিনতে ইচ্ছা করেছিল, ছোট রকম একটার দাম চায় ৭০০ টাকা। অনেক খুঁজে টুজে অবশেষে একটা ব্রেসলেট কিনল। ২৮০ টাকা দিয়ে। পকেটে দেখল ঠিকানাটা আছে এখনও। সন্ধ্যার পর পরই ঠিকানা মত গেল। বিশাল বড় বাড়ি। ছয় তলা। ছয় তলার চার তলাতে থাকে সুমনারা। বাসার সামনে কতক্ষণ ঘুর ঘুর করল। বাসার সামনে এসে কেন যেন মনে হচ্ছে ভিতরে যাওয়াটা ঠিক হবে না। কয়েকবার গেটের কাছে গিয়েও ফিরে আসল। একবার দারওয়ান জিজ্ঞেস করল, আপনি কি কাউকে চাচ্ছেন?
- জ্বি না।
বলে নাহিদ সরে এসেছিল। বাসার সামনের রাস্তায় হাঁটছিল, আর একটু পর পর চার তলার দিকে তাকাচ্ছিল। হাতের মধ্যে ব্রেসলেটটা নিয়ে বার বার দেখছিল। এ জিনিস হয়ত সুমনাকে দিলে পছন্দও করবে না। চার তলার দিকে তাকিয়ে একটা ছোট নিঃশ্বাস ফেলল নাহিদ। বাহির থেকে কিছু দেখা যাচ্ছে না। হয়ত সুমনা বন্ধুদের নিয়ে, পরিবার নিয়ে ব্যস্ত। নাহিদের মত কারও জন্য অপেক্ষা করছে না। করবার কথা না। হাতের মধ্যে লুকানো ব্রেসলেটটা আর একবার দেখে, পাশের লেকে ছুঁড়ে ফেলে দিল। কেন করল এটা জানে না। সত্যি জানে না। হীনমন্যতা বড় বিচ্ছিরী একটা জিনিস, ভিতরের সব কিছুকে ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়, গলা টিপে মেরে ফেলে দেয়।
- তুমি সেদিন আমার জন্মদিনে আমাদের বাসার সামনে গিয়েছিলে, তাই না?
নীলক্ষেত থেকে টি এস সি র রাস্তা ধরে হাঁটছে দুজন। সুমনার প্রশ্নে মুখ তুলে তাকিয়ে নাহিদ , আবার মুখ নামিয়ে নেয়।
- বললে না? গিয়েছিলে, তাই না?
- কে বলল তোমাকে?
- আমি জানি তুমি গিয়েছিলে।
নাহিদ মাথা নিচু করেই হাঁটতে লাগল। কিছু না বলে।
- আমি সেদিন শুধু তোমাকেই দাওয়াত দিয়েছিলাম। বাবা মাকে বলেছিলাম, আমার অনেক ভাল একটা বন্ধু আসবে। আমরা রাতে একসাথে ডিনার করব। বাবা মা আর আমি অনেকক্ষণ তোমার জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। তুমি আসলে না শেষ পর্যন্ত। আমার সেদিন খুব অপমান লাগছিল, লজ্জা হচ্ছিল। সেদিন রাতে না খেয়েই শুয়ে পড়ি। বাবা এসে বলেছিল, তোর বন্ধু মনে হয় রাস্তায় জ্যামে আটকা পড়েছে। একটা ফোন দিয়ে দেখ তো। তোমার মোবাইল ছিল না আমি জানতাম। তাই বাবাকে বললাম, না বাবা আসবে না ও।
- বাবা মার কাছে মিথ্যা বলেছিল কেন?
- কি মিথ্যা?
- আমি তোমার ভাল বন্ধু সেটা। তোমার সাথে আমার সারা ভার্সিটি জীবনে ভালভাবে কথা হয়েছে মাত্র ছয় থেকে সাত বার। তোমার সাথে আমার ওভাবে তো বন্ধুত্ব ছিল না। তাছাড়া তোমার জন্মদিনের পরে এসেও আমাকে কিছু বল নি।
- সব কিছু বলে কয়ে হয় না। তুমি সব কিছু বুঝতেও পারো না। আচ্ছা, সেদিন তুমিও কি আমার নাম লিখেছিলে?
- কোন দিন?
- ফোর্থ সেমিস্টারের ক্লাস পার্টির দিন?
নাহিদ সুমনার দিকে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ। ফোর্থ সেমিস্টারের ক্লাস পার্টির দিন একটা ছোট খাটো গেম শো ছিল। গেমটা ছিল এমন, ছোট একটা প্রশ্ন থাকবে, সে প্রশ্নের উত্তর লিখে সামনে জমা দিবে সবাই। নিজের নাম লিখতে হবে না। প্রশ্নটা ছিল এমন, ক্লাসের কোন ছেলেটা বা মেয়েটার প্রতি তোমার দুর্বলতা। সুযোগ পেলে প্রেম করবে অবশ্যই। কেন এ দুর্বলতা?
ক্লাসে ছেলে ৩২ টা, মেয়ে ১৩ টা। ছেলেদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী আসে নাফির নাম। দেখতে শুনতে বেশ ভাল। ১৩ টা মেয়ের মধ্যে ১০ জনই লিখেছে নাফির নাম। একেক জনের একেক রকম কারণ। ২ জন লিখেছে ফার্স্ট বয় মাহাবুবের নাম। মেয়েদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী নাম এসেছে সুমনার। ৩২ জনের মধ্যে ২৩ জনই সুমনার নাম লিখেছে। সুমনার লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা করছিল সেদিন। মেয়েদের মধ্যে একটা মেয়ে লিখেছে নাহিদের নাম। সেখানে লেখা, নাহিদ। ভালবাসি। কেন বাসি? ভালবাসি তাই ভালবাসি।
নাহিদ বড় অবাক হয়েছিল। নাহিদকে ভালবাসার কি আছে? না নাহিদ দেখতে সুন্দর। না ক্লাসের ভাল ছাত্রদের একজন। কে লিখেছিল জানে না নাহিদ। ক্লাসের কোন মেয়ের সাথেই নাহিদের খুব যে সখ্যতা তা না।
- তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করলে উত্তর দাও না কেন?
নাহিদ বলল, আমরা আজিজ মার্কেট চলে এসেছি। কি কিনবে তুমি?
- এটা কিন্তু উত্তর হল না।
আবার একটা ছোট নিঃশ্বাস ফেলে, নাহিদ বলল, জানি না।
- আমি কিন্তু জানি তোমার নাম কে লিখেছিল।
নাহিদ অবাক হয়ে তাকাল আবার সুমনার দিকে। ছোট করে প্রশ্ন করল, কে?
- ছেলেদের কিসে ভাল মানায়? পাঞ্জাবী না টি শার্ট?
নাহিদকে প্রশ্নের উত্তর দেয় নি সুমনা। কে লিখেছিল সেটা জানারও সেভাবে সুযোগ হয়ে উঠেনি আর নাহিদের। ঐ ফোর্থ সেমিস্টারের ক্লাস পার্টির পর থেকে আর কখনও যায় নি ভার্সিটিতে। তা প্রায় ছয় মাস হয়ে গেছে। নাহিদ পরীক্ষায় ফেল করল, জরিমানা দিয়ে আবার পরীক্ষা দিতে হবে। জরিমানার টাকা সাহস করে চাওয়া হয় নি আর মামার কাছে। পরীক্ষাও দেয়া হয় নি, হয় নি আর ক্লাসে যাওয়াও। সেই শেষ দেখা সুমনাকে। আর আজ আবার ছ মাস পর।
সুমনা একটা পাঞ্জাবী নাহিদের গায়ের সাথে মিলিয়ে নিয়ে বলল, পাঞ্জাবীতে সব ছেলেকেই সুন্দর লাগে, তাই না বল?
- হয়ত।
- তোমাকেও এটাতে অনেক মানাবে।
- আমাকে কিছুতেই মানায় না।
সুমনা ছোট চোখ করে তাকাল নাহিদের দিকে। পাঞ্জাবীটা পছন্দ হয়েছে।
- এটাই নিয়ে নেই কি বল?
- নাও।
পাঞ্জাবী হাতে নিয়ে নাহিদের কাছে এসে আবার জিজ্ঞেস করল, তুমিও লিখেছিলে, তাই না? আমি জানি তুমিও আমার নাম লিখেছিলে। সুযোগ পেলে করবে প্রেম?
প্রশ্নটায় একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় নাহিদ। একটু গলা ঝেড়ে কেশে স্বাভাবিক হবার চেষ্টা করে। সুমনা খুব স্বাভাবিক। সেই আগের মতই। খুব স্বাভাবিক ভাবেই পাঞ্জাবীটা নিয়ে কাউন্টারের দিকে গেল, টাকা দিয়ে প্যাকেট করে নিয়ে বলল নাহিদকে, চল কাজ শেষ।
নাহিদ খুব স্বাভাবিক হয়ে চাচ্ছে সুমনার পাশে হাঁটতে। কিন্তু কোথায় যেন একটা অস্বাভাবিক ভাব কাজ করছে, জানে না নাহিদ। একদম না।
- তুমি কোনদিকে যাবে নাহিদ?
- ঝিগাতলা।
- আচ্ছা। আমি এখান থেকে বাসে চড়ে তাহলে মিরপুর চলে যাই।
- ঠিক আছে।
- আমার একটা ছেলের সাথে বিয়ের কথা চলছে। আই বি এ থেকে পাশ করে, স্কলারশিপ নিয়ে আমেরিকা গিয়েছিল, ফিরেও এসেছে। আজ ওর জন্মদিন। তাই পাঞ্জাবীটা কিনলাম। কেমন হল? পছন্দ করবে না?
নাহিদ শুন্য চোখে তাকিয়ে রইল কিছুটা সময় সুমনার দিকে। কথা গুলো শুনে বুকের ভিতর কেমন যেন করছে। কেমন যেন করার কথা না। তবুও করছে। মনে হচ্ছে কিছু একটা নিঃশ্বাসের সাথে আঁটকে আছে ফুসফুসের ভিতর। খুব করে চাচ্ছে সে কিছু একটা ছাড়া পাক। নিঃশ্বাসের সাথে বেড়িয়ে যাক। চোখ তুলে তাকায় নাহিদ অন্যদিকে, হঠাৎ কিছু বলতে পারে না। মনের মধ্যে যে ঝড় চলছে, সে ঝড়কে শান্ত হবার একটু সুযোগ দেয়া দরকার।
একটু সময় নিয়ে তারপর বলে, হ্যাঁ সুন্দর। তুমি অনেক সুখী হবে।
সুমনা শান্তভাবে একটু হাসল। সে হাসিতে প্রাণ নেই। মিরপুরের বাস চলে এসেছে। চলে যাবে সুমনা। পাঞ্জাবীটা হাতের মুঠোয় খুব শক্ত করে ধরে বাসের দিকে পা বাড়াল সুমনা। পিছনে ঠায় দাঁড়িয়ে রইল নাহিদ। এক বিন্দুও নড়াচড়া ছাড়া। বাস এসে যখন থামল। পিছন থেকে নাহিদ শুধু বলল, আবার দেখা হবে আমাদের?
উদাসীন চোখে গাঢ় চোখগুলো নিয়ে মুখ ফিরিয়ে, সুমনা দু পাশে মাথা নেড়ে শুধু জানাল ইশারায়, না।
নাহিদ কিছু বলে না। সুমনার চোখের দৃষ্টি আরও গাঢ় থেকে গাঢ়তর হচ্ছে। চোখের কোণায় কখন যেন এক ফোঁটা জল এসেছে। সে জল এতো দূর থেকে দেখছে পারছে না নাহিদ, পারছে না বুঝতে। সুমনা মাথাটা ঘুরিয়ে বলল, সেদিন তোমার নামটা আমি লিখেছিলাম কাগজে। কারণ নেই সত্যি। ভালবাসি তাই ভালবাসি।
সুমনা আর কিছু শুনবার জন্য দাঁড়াল না। দ্রুত বাসে উঠে গেল। বাসের ভিতর কোন সিটটায় বসল সুমনা জানে না নাহিদ। দেখা যাচ্ছে না। বাস ছেড়ে দিল, বাতাসের সাথে মিশিয়ে চলে গেল। মাঝখান থেকে এলোমেলো করে দিয়ে গেল নাহিদকে। ধারালো একটা ব্যথা হচ্ছে বুকে। যে ব্যথা সত্যি বড় বেদনা দেয়। কষ্ট দেয়।
আকাশের দিকে তাকাল নাহিদ। মেঘের আনাগোনা আছে কিছুটা। সে মেঘে বৃষ্টি হবে না। জানে সব মেঘে হয় না বৃষ্টি। তেমনি সব আবেগের প্রকাশ গুলো পায় না দৃষ্টি, হয়ে উঠে না ভালবাসা। পায় না কখনও পরিণতি।
নাহিদ প্রেসার কুকারটা শক্ত করে ধরল। কিছু তরি তরকারি কিনতে হবে। নাহিদ কিছু রান্না পারে না। শুধু ডিম ভাজি আর আলু ভর্তা। ডিম ভাজি করতে প্রেসার কুকার লাগে না। তবুও কিনে নিল। প্রথম দিন ডিম ভাজি আর আলু ভর্তাই হোক। মামা মামীকে একটু আলু ভর্তা দিয়ে আসবে। প্রথম রান্না। দিবে মামার ছোট ছেলেটাকে, বড় মেয়েটাকেও। আস্তে আস্তে শিখে যাবে অন্য রান্নাও। শিখেই যায় মানুষ অনেক কিছুই শিখে যায় সময়ের সাথে।
ব্যস্ত শহরের মানুষ গুলো ব্যস্ততায় চলছে। চলছে নাহিদ হাতে প্রেসার কুকার নিয়ে, ছুটছে সুমনা হাতে হবু বরের জন্য উপহার নিয়ে। ব্যস্ততায় হারায় মানুষ। আবেগ গুলো, খুব গভীরের অনুভূতি গুলো। তবুও কিছু অনুভবেরা কখনও ম্লান হয় না, বড় বেশী ভাললাগা দেয়। কিছু ভালবাসা যেমন ভালবাসা হয়ে বেড়ে ওঠার সুযোগ না পেয়েও, হৃদয়ের গভীরের ভাবনায় বেঁচে রয়। জানে সে আমার না, আমি তার না। তবুও ভাবতে ভাল লাগে, কখনও ভালবাসারা ছিল খুব নীরবে দুজনার মাঝে।
- শেষ রাতের আঁধার (রিয়াদুল রিয়াদ)
০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:০০
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। চেষ্টা ছিল।
২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৯
ডি মুন বলেছেন: আপনার লেখার হাত চমৎকার।
এ গল্পটাও উপভোগ করলাম। কিছু কথা খুবই সত্যি - যেমন,
** হীনমন্যতা বড় বিচ্ছিরী একটা জিনিস, ভিতরের সব কিছুকে ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়, গলা টিপে মেরে ফেলে দেয়।
** কিছু ভালবাসা যেমন ভালবাসা হয়ে বেড়ে ওঠার সুযোগ না পেয়েও, হৃদয়ের গভীরের ভাবনায় বেঁচে রয়।
আরো সুন্দর লিখুন।
বৈচিত্রময় বিষয়বস্তু ও অনুভূতি নিয়ে লিখুন।
শুভেচ্ছা ++++
০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:০২
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ল্যাপটপ বিয়োগের কারণে বহুদিন ব্লগে লেখা হয় নি। শেষ পর্যন্ত মোবাইল দিয়েই পোস্ট দিয়ে ফেললাম।
অনেক ধন্যবাদ। লিখে যাচ্ছি। দোয়া করবেন। আর মন্তব্য পেলে লেখায় বেশ ভালই লাগে।
৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৫৮
অস্পষ্ট নিয়ন আলো বলেছেন: দারুন লিখেছেন ভাই......
০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২১
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্য ও পড়ার জন্য।
৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:৫০
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: জানে সে আমার না, আমি তার না। তবুও ভাবতে ভাল লাগে, কখনও ভালবাসারা ছিল খুব নীরবে দুজনার মাঝে।
গভীর অনেক গভীর
কোথাও যেনো মিল খু্ঁজে পাই পিছনে তাকিয়ে
আহা তিক্ত সময় তবু ভাবতে কতো মধুর
অনেক অনেক ধন্যবাদ মশাই
ভালো রেঁধেছেন.....ছারবেন্না.....নামী শেফ হবেন......এই করলুম ভবিষ্যতবানী
০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:০৮
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: কিছু তিক্ততা, কিছু মধুরতা, জীবন বয়ে যায় এভাবে। পিছনের স্মৃতি কাঁদায়, হাসায়, কিন্তু স্মৃতি নিয়ে বসে থাকলেহয় না। ভাল থাকতে হয়, দুঃখ ভুলে হাসতে হয়।
দোয়া করবেন। লিখে যাচ্ছি।
৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:৫৬
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: কিছু তিক্ততা, কিছু মধুরতা, জীবন বয়ে যায় এভাবে। পিছনের স্মৃতি কাঁদায়, হাসায়, কিন্তু স্মৃতি নিয়ে বসে থাকলেহয় না। ভাল থাকতে হয়, দুঃখ ভুলে হাসতে হয়।
দোয়া করবেন। লিখে যাচ্ছি।
৬| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৩৪
বন্ধু তুহিন প্রাঙ্গনেমোর বলেছেন: লিখুন লিখুন। ধার ধার ধার চাই।................... ভালো লাগল। শুভকামনা।
১৪ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০০
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ধন্যবাদ। দোয়া করবেন লিখে যাচ্ছি
৭| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:১৯
আমি মাধবীলতা বলেছেন: দারুণ ! কষ্ট কষ্ট ভালোলাগা !
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১৬
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ধন্যবাদ। কষ্ট ছুঁয়ে সুখ, ভালোলাগা ছুঁয়ে বিষাদ। এইতো জীবন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:২৩
আমি মুরগি বলেছেন: কিছু মনে করবেন না, গল্পটি একটু বেশি ভাল হয়ে গেছে। অনেক ভাল লেখেন আপনি।