নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফেসবুকে আমি - রিয়াদুল রিয়াদ (শেষ রাতের আঁধার)

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার )

কিছু মানুষ অন্য মানুষকে মুগ্ধ করার অসীম ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। আর কিছু মানুষের ভিতর এই ক্ষমতা কখনই আসে না। আমি দ্বিতীয় দলের মানুষ। কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু কখনই করতে পারি না। কেউ অনেক সুন্দর গান গায়, আমি শুধু শুনে যাই। কেউ অনেক সুন্দর নাচে, আমি শুধু হাত তালি দিয়ে যাই। কেউ অনেক সুন্দর লেখে, আমি শুধু ভেবে যাই, কী করে এত ভালো লেখে কেউ? আমিও লিখি। তবে তা কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু না। আমার লেখায় আমার ভালোবাসা ছাড়া কিছুই নেই। পড়াশুনা শেষ, বুটেক্স থেকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হয়ে চাকরি, বিয়ে, পেশা পরিবর্তন সব হয়েছে। লেখালেখির ধারাবাহিকতায় চারখানা উপন্যাস অমর একুশে বইমেলায় বেরিয়েছে। টুকরো ছায়া টুকরো মায়া (২০১৫) – সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । একা আলো বাঁকা বিষাদ (২০১৬) – সামাজিক উপন্যাস । মধ্য বৃত্ত (২০১৮) – ডিটেকটিভ সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । অভিসন্ধি (২০২০) – ক্রাইম থ্রিলার । দেশটাকে ভালোবাসি অনেক। অনেক মায়া কাজ করে। মাঝে মাঝে ভাবি, সব বদলে দিতে পারতাম। স্বপ্নের মত না, বাস্তবের মত একটা দেশ গড়তে পারতাম …………………………

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: ছেচল্লিশ

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩


পরশের সন্ধ্যা মাসি আমার সাথে দেখা হলে মাঝে মাঝেই বলতেন, “তোর একটা মানুষ দরকার।”

সন্ধ্যা মাসিকে আমার ভয় করত, তার কথা আমি ঠিক বুঝতে পারতাম না। আরও বুঝতে পারতাম না, তিনি তার স্বামী সন্তান ছেড়ে কেন পরশদের এখানে এসে পড়ে আছেন। একদিন আমি পরশকে জিজ্ঞেসই করে ফেললাম, “আচ্ছা, তোর সন্ধ্যা মাসির স্বামী, সন্তান নাই?”

পরশ আনমনে উত্তর করে, “আছে, কিন্তু সন্ধ্যা মাসির মাথায় সমস্যা, অনেক পড়াশুনা করতে করতে মাথা নষ্ট হয়ে গেছে, তার সাথে থাকেন না কেউ। ভয় পায় সবাই।”
“তা তোরা ভয় পাস না?”
“আমরা কেন ভয় পাব? আমাদের তো সন্ধ্যা মাসি কিছু করেন না। বাবা বলেছে, মাসিকে বিরক্ত না করতে। তার সাথে কথা বেশি না বলতে। তিনি তার মতন থাকেন, আমরা খুব একটা আগেপিছে যাই না।”

আমি মুসলমান ছেলে, আমার হিন্দু বন্ধু পরশকে অনেকেই বন্ধু মহলের মেনে নিতে পারত না। আমার সাথে একটা অঘোষিত দূরত্ব সৃষ্টি করে ফেলল, বাকিরা সবাই। ছেলেবেলায় লাল পিঁপড়াদের যেমন হিন্দু পিঁপড়া এবং কালো পিঁপড়াদের মুসলমান পিঁপড়া বলতাম; মনের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা ছিলো, হিন্দু পিঁপড়া আমাকে কামড়ে দিবে, মুসলমান পিঁপড়া তা করবে না। ঠিক তেমনি পরশকে দেখেও সেই কিশোর বয়সে সদ্য পা রাখা ছেলেদের মনে আসত, পরশ ভয়ংকর ছেলে। যে কোনো সময় বিচ্ছিরি রকম কিছু ঘটিয়ে ফেলতে পারে। কিন্তু পরশ খুবই শান্তশিষ্ট এক ছেলে ছিলো। আমি জানতাম, পরশের মতন ছেলে হয় না, ভালো বন্ধু হয় না।

পরশের বাবা বাজারের একমাত্র হিন্দু কসাই। তার ওখান থেকে এলাকার হিন্দুরা গোশত কিনে নিয়ে যায়। সন্ধ্যা মাসি, পরশের বাবা না-কি মায়ের বোন তা নিয়ে আমার মাঝে যথেষ্ট দ্বিধাদ্বন্দ কাজ করত। মাসি, পিসি বরাবরই আমি গুলিয়ে ফেলতাম। একবার পরশের বাবার গোশতের দোকানে জিজ্ঞেস করে বসলাম, “আচ্ছা কাকা, সন্ধ্যা মাসি কি আপনার বোন না-কি কাকির?”
কাকা মৃদু হাসেন। হেসে হেসে বলেন, “মায়ের বোনকে মাসি বলে, পিতার বোনকে পিসি। তাহলে বল তো, তোর সন্ধ্যা মাসি কার বোন?”
আমি মাথা নেড়ে চলে আসি। এই যে আমি পরশের বাবাকে মাঝে মাঝে এসব কথা জিজ্ঞেস করি, পরশের মা আমাকে ভালো মন্দ রান্না করে খাওয়ান, এসবও এলাকার লোকজনের পছন্দ হয় না। তাই বলে কি আমি ওদের সাথে কথা বলা বাদ দিয়ে দিব? আমি তাদের পছন্দ করি। কে কী বলল, তাতে আমার কী?

আমি এলাকা ছেড়ে ঢাকায় আসি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে। আমার বাবা আমাকে হলে থাকতে দেয়ার ব্যাপারে একদমই আগ্রহী ছিলেন না। আমার বাবার টাকা পয়সা আছে যথেষ্ট। নিজের ব্যবসা এলাকায়, হাজী মানুষ, সবাই সম্মান করে। ঢাকাতেও তার চেনা পরিচিত লোকের অভাব নাই। তাছাড়া তিনি চাইলে, আমাকে আলাদা বাসাও নিয়ে দিতে পারেন। মা এসে থাকতে পারেন আমার সাথে, সময় সুযোগ পেলে বাবাও আসবে। কিন্তু আমার বাবা মাকে আমার পছন্দ না। তাদেরকে আমার বরাবরই ভন্ড বলে মনে হয়, মনে হয় এরা আমার সাথে ভালোবাসার একটা মেকি অভিনয় করে যাচ্ছে। আমি হলেই থাকার সিদ্ধান্ত নেই এবং তা বাস্তবায়ন করি।

হলে ওঠার প্রথম দিকে, ভার্সিটির বড় ভাইয়ের সালাম দেয়া, হাফ প্যান্ট পরে হলে ঘোরাঘুরি করা, সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়া ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন রকম নিষেধাজ্ঞা ছিলো। আমি সে নিষেধাজ্ঞা প্রায়ই অমান্য করতাম, আমার ডাক পড়ত গেস্ট রুমে। নানা কথা আমার শুনতে হতো, নানা শাস্তি আমাকে দেয়া হতো। আমি সেসবে চুপ থাকতাম, কিছুই বলতাম না।
ঠিক সে সময়ে আমার এক বড় ভাইয়ের সাথে পরিচয়, শাহেদ ভাই আমার এক ব্যাচ সিনিয়র। দারুণ মানুষ। অন্য সব সিনিয়র ও তার মাঝে প্রধান পার্থক্য ছিলো, তিনি এসব র‍্যাগিং বুলিং এর বিরোধী ছিলেন। এজন্য তাকে অন্যান্য বড় ভাইয়েরা দেখতে পারতেন না। তার রাজনৈতিক মতাদর্শও আমাকে মুগ্ধ করেছিলো। তার করা দলের নাম আমি জীবনে শুনিনি যদিও, তবু বুঝতে পারতাম, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, ঘুস, অনিয়ম, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কথা বলা রাজনৈতিক দলকে আমি যদি সাপোর্ট না দেই, তবে সেটা আমার নিজের সাথে অন্যায় হবে।
আমি তার রাজনৈতিক দলে যোগ দিলাম, তার সাথে সাথে ঘুরে বেড়াতাম। গোপনে করা মিটিং মিছিলে যোগ দিতাম, দেয়াল লিখন লিখতাম। রাত করে পুলিশের দৌড়ানি, বিপক্ষ মতাদর্শের মানুষদের হুমকি ধামকি, সব কিছু ছাপিয়ে আমি শাহেদ ভাইয়ের সাথে ছিলাম। শাহেদ ভাই সব অবস্থায় আমার পাশে থেকেছেন, আমার কী করা দরকার, কী করা দরকার না, তা বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। নিজে জেলে গিয়েছেন, তবু পুলিশের কাছে কখনও আমার নাম উচ্চারণ করেন নি। আমার জীবনে বড় ভাই না থাকার আফসোস তিনি মিটিয়ে দিয়েছিলেন।

আমার ভার্সিটি জীবন শেষে আমি যে প্রাইভেট ফার্মে চাকরিতে জয়েন করি, সেখানে ভালো টাকা বেতন পাই। আমাকে আমার বাবা যথেষ্ট টাকা পয়সা পাঠান প্রতি মাসে। চাকরি করাটা, শুধুমাত্র কিছু একটা করা দরকার তাই করা। আমার জন্য জরুরী কিছু না। কিন্তু এই চাকরি জীবনে এসে আমি দুটি বিষয় আবিষ্কার করি। এক, আমার কাছের কোনো বন্ধু নাই। দুই, আমার সম বয়সী প্রায় সকলে প্রেম ভালোবাসা করলেও আমার ভালোবাসার কোনো মানুষ নাই।

আমার অফিস সকাল নয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা, কিন্তু বেশির ভাগ দিনেই আমার বাসায় যেতে রাত নয়টা দশটা বেজে যায়। এরপর রান্না বান্না, খাওয়া দাওয়া, বিছানায় যাওয়া। ঢাকার এক ফ্ল্যাটে আমি একা থাকি। আমি চাকরিতে জয়েন করার পর ভেবেছিলাম, আমার মাঝে যে সমস্যাটা আছে তা কেটে যাবে। ঘুম! আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারব। আমি বহুদিন ঠিকঠাক ঘুমাই না। সারারাত বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকি, সিগারেট ফুঁকতে থাকি। বিছানায় শুয়ে চোখ বন্ধ করলেই আমি সন্ধ্যা মাসিকে দেখতে পাই। আমার আশেপাশে আমি সন্ধ্যা মাসিকে অনুভব করি। মনে হয় খাটের ঠিক কোণায় হাটু গেড়ে বসে আছেন, সন্ধ্যা মাসি। আমাকে ফিসফিস করে কিছু বলছেন। খুব অস্পষ্ট যে কথা, শুধু, “কবে?” এই শব্দটা ছাড়া আর কিছুই আমার কানে আসে না।

আমি জানি, আমি বুঝি, একটা মানুষের পরিমিত ঘুম প্রয়োজন। আমার দিনে এক দুই ঘন্টা ঘুম, মাথা এলোমেলো করে দিচ্ছে, আমি সন্ধ্যা মাসিকে তাই আশেপাশে অনুভব করছি।

স্বল্প ঘুম আমার অফিসের কাজে বিশাল ব্যাঘাত ঘটাতে লাগল। আমার সিনিয়র ম্যানেজার রহমান স্যার একবার একটা মেইল পাঠাতে বললেন, অ্যামেরিকান বায়ারের কাছে। আমি সে মেইল করে দিলাম, চাইনিজ সাপ্লায়ারদের কাছে। এ নিয়ে অফিসে বিশাল তুলকালাম কাণ্ড। সাপ্লায়ার আমাদের প্রাইস জেনে গেছে। বায়ারকে আমরা কত বেশি দামে জিনিস বিক্রি করি, আমরা কত বেশি লাভ করি, এসব ফাস হয়ে গেছে। আমার চাকরি যায় যায় অবস্থা। এম.ডি স্যারের রুমে আমার তলব পড়ে। আমার গুরুতর অপরাধের, ঘোরতর শাস্তির যখন সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন, ঠিক তখন দুজন ম্যানেজার ও একজন এসিসট্যান্ট ম্যানেজার আমার পক্ষে কথা বলা শুরু করেন। তাদের ভাষ্যমতে, নতুনদের কাজ শিখিয়ে তারপর এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হ্যান্ডেল করতে দেয়া উচিত। তাদের বিশাল সব অভিযোগের ঢালী রহমান স্যারের বিরুদ্ধে, তারা পেশ করা শুরু করেন এমডির সামনে। সিনিয়র ম্যানেজার সারাদিন মোবাইল চালান, নিজের কাজ নিয়েই শুধু ব্যস্ত থাকেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে কমিশন পান, সেসবে তিনি শুধু গুরুত্ব দেন। বাকি কাজ জুনিয়রদের উপর চাপিয়ে, নিশ্চিন্ত থাকতে চান। এসব তো ভালো জিনিস না।

আমি সে যাত্রায় বেঁচে যাই। পরে বুঝতে পারি, অফিসে তিন চারটা গ্রুপ আছে, সিন্ডিকেট আছে। আমার একটা সিন্ডিকেটের সাথে থাকতেই হবে। ম্যানেজার আশিষ স্যার ও মোস্তাফিজ স্যার, এসিসট্যান্ট ম্যানেজার দিনার ভাইয়ের সাথে আমার নিত্য চলাচল শুরু হয়। আমি অফিসের অনেক বিষয় সহজে বুঝতে পারি, আমাকে তারা সব কাজেই সাহায্য করেন, টুকটাক ভুল শুধরে দেন। আমার স্বল্প ঘুমেও কাজ করতে খুব একটা অসুবিধা হয় না। আমি ধরতে গেলে বসে বসেই মাসে হাজার পঞ্চাশেক টাকা উপার্জন করা শুরু করলাম। সিনিয়র ম্যানেজার রহমান স্যারের সাথে জেদ ধরে, আমার ভুলে ভরা কাজ সংশোধন করে, এম.ডি সাহেবের কাছে উপস্থাপন করা শুরু করলেন, তারা তিন জন। আমি বুঝতে পারি, এরা আমাকে স্নেহ করেন। আমি তাদের পছন্দ করি, তাদের ছাড়া আমার পক্ষে চলা সম্ভব ছিলো না সেসময়। তিন জন সিনিয়র মানুষ আমার প্রায় বন্ধুর মতনই হয়ে গেলেন।

বাসা থেকে আমার জন্য মেয়ে দেখা শুরু হলো। এখন বিয়ে সাদি করা দরকার, আমার একটা ভালোবাসার মানুষ থাকা দরকার। সর্বোপরি, ঘরে একটা মানুষ থাকলে সন্ধ্যা মাসির জ্বালাতনও কমবে বলে আমার মনে হতে লাগল।

আমার যে মেয়েটার সাথে বিয়ে হয়, ওর নাম নিতু। আমার থেকে বছর চারেকের ছোটো, ভার্সিটিতে পড়ে, জুলজিতে। প্রথম প্রথম আমার সাথে মেয়েটার মানিয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছিল, আমি বুঝতে পারতাম। আমি রাতের বেলা ঘুমাই না, হুটহাট বারান্দায় গিয়ে সিগারেট টানি। ঘুমের মাঝে আতকে উঠি। তবু চেষ্টা করি, এই প্রথম চেষ্টা করি, পৃথিবীতে নিজে থেকে কাউকে ভালোবাসার। আমি বরাবরই দেখা যায়, আমাকে যারা পছন্দ করে কিংবা আমাকে ভালোবেসে পাশে থাকে, তাদেরকেই আজন্মকাল ভালোবেসে গিয়েছি। কিন্তু এবার আমার নিজে থেকে নিতুকে ভালোবাসা প্রয়োজন।
নিতু শত বিরক্তিতেও ধীরে ধীরে আমাকে মেনে নিতে শুরু করে। আমার খেয়াল রাখা শুরু করে। আমার কেন ঘুম হয় না, জানতে চায়। আমি সন্ধ্যা মাসির কথা বলতে পারি না। বলি, “তুমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেই, আমার ঘুম চলে আসবে।”
নিতু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে ঘুমিয়ে যায়, আমি ঘুমের অভিনয় করি, আমার ঘুম আসে না। সন্ধ্যা মাসির কণ্ঠ কানের কাছে শুধু ভেসে আসে।

বিয়ের ছয় মাসে মাথায় আমি চাকরিটা ছেড়ে দেই। নিতু জানতে চায়, “কী হয়েছে?”
আমি বলি, “ভালো লাগছে না, অনেক মানসিক প্রেশার। আবার চাকরি পাবো।”

আমি বাবার টাকায় চলব, তা নিতু সহজভাবে নিতে পারে না। শত হোক নিজের একটা চাকরি ছিল, নিজের টাকায় চলতাম, বাবার কাছ থেকে ওভাবে টাকা পয়সা নিতে হত না। কিন্তু এখন? চাকরি ছাড়া পুরোটাই বাবার উপর আমার নির্ভরশীল থাকতে হবে।

নিতুর ভীষণ মন খারাপ থাকে অনেক গুলো দিন। আমার চাকরি ছেড়ে দেয়াটা কোনোভাবেই মানতে পারে না নিতু।

এর মাঝে এক ঘটনা ঘটে যায়, আমাদের অফিসে আগুন লাগে। আগুনে পুড়ে অফিসের আটজন মানুষ মারা যায়।

এ ঘটনা জেনে, নিতু কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে। আমি সেসময়ে অফিসে থাকলে, আমিও তো মারা যেতে পারতাম। কী অদ্ভুত! কারও পুড়ে মরে যাওয়া, কারও জন্য স্বস্তির বিষয়। আমি নিতুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করি। আশিষ স্যার, মোস্তাফিজ স্যার, দিনার ভাই তিনজনেই মারা গিয়েছেন। আমি সহ্য করতে পারি না। আমার কাছের মানুষগুলোর হারিয়ে যাওয়া আমি মানতে পারি না।

চাকরি ছাড়ার পর আমার ঘুমের সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। নতুন চাকরিতে গিয়েও ঘুমের সমস্যা হয় না বহুদিন। সন্ধ্যা মাসিকেও আমি আর দেখি না।

বিয়ের সাড়ে তিন বছরের মাথায় এসে আমার ঘুমের সমস্যা আবার ফিরে আসে। আমি আবার নির্ঘুম রাত কাটাই। প্রায় মাস চারেক একই সমস্যা নিয়ে চলি, আবার সন্ধ্যা মাসির দেখা পাই। আমার কষ্ট নিতু বুঝতে পারে। আমার হাত ধরে চুপচাপ বসে থাকে। আমাকে বলে, “তুমি চাকরিটা ছেড়ে দাও। আবার সব ঠিক হয়ে যাবে।”
আমি শূন্য দৃষ্টি ছুড়ে তাকাই নিতুর দিকে। নিতু বলে যায়, “তুমি এত অস্থির থাক কেন সবসময়? আমাকে তো বলতে পারো, তোমার খারাপ লাগা, কষ্ট, এসবের কথা।”
আমি অনেক হিসাব নিকাশ কষি মনে মনে। ধরে আসা গলায় বলি, “তুমি তো জুলজির ছাত্রী। আচ্ছা মানুষের ক্রোমোজোম কি ৪৬ টা?”
নিতু হাসে, “তুমি তো ইঞ্জিনিয়ার। তোমারও তো জানার কথা।”
“আরে বলো না।”
“হ্যাঁ ২৩ জোড়া, মানে ৪৬টা। একথা কেন হঠাৎ?”
আমি চুপচাপ কিছুক্ষণ বসে থাকি। কোনোভাবে কি ৫টা কম হতে পারে না? ধরো ৪১ টা?”
“না মানুষের ২৩ জোড়াই ক্রোমোজোম।”

আমি কিছু বলি না, কিংবা কিছু বলতে পারি না। আমি নিতুর ঠিক পাশে আবছায়া সন্ধ্যা মাসিকে দেখতে পাই। আমার কিশোর বেলায় ভয় পাওয়া সন্ধ্যা মাসি, যে জুলজির ছাত্রী ছিলেন, পড়তে পড়তে যার মাথা বিগড়ে গিয়েছিল। আমাকে দেখলেই বলতেন, “তোর একটা মানুষ দরকার।”
আমি একদিন সাহস করে জানতে চাই, “কীসের মানুষ মাসি?”
মাসি আমার দিকে ঝুঁকে বলেন, “তুই রাতে ঘুমাতে পারিস না, তাই না? মানুষ তোকে ঘুম পাড়াতে পারবে।”
আমি অবাক হয়ে মাসির কথা শুনি। আমার ছেলেবেলা থেকেই, ঘুম হয় না ঠিকঠাক। ডাক্তার কবিরাজে কাজ হয় না। আমি মাসিকে বলি, “হুম।”
সন্ধ্যা মাসি আমাকে আবার বলেন, “মানুষের ইন্দ্রিয় পাঁচটা। আরেকটা ইন্দ্রিয় মানুষের আছে, ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়, সে ইন্দ্রিয় তোকে শান্তি দিবে, তোকে বিপদ থেকে বাঁচাবে, তোকে ঘুম পাড়াবে নিশ্চিন্তে। তুই বায়োলজিতে পড়েছিস না, মানুষের ক্রোমোজোম ৪৬ টা, মানে ২৩ জোড়া? তুই যদি তোর পাঁচটা ইন্দ্রিয় বাদে আরও ৪০টা ইন্দ্রিয় নিজের করে নিতে পারিস, তবে ৬ নাম্বার ইন্দ্রিয়টা তুই পাবি। ৪৬ ক্রোমোজোমের জন্য ৪৬ ইন্দ্রিয় পেয়ে যাস যদি, তবে সব দেখবি সহজ। তুমি আরামে ঘুমাবি। তোর বিপদ দেখতে পারবি, শান্তি পাবি শান্তি।”
আমি জিজ্ঞেস করি সন্ধ্যা মাসিকে, কীভাবে তা সম্ভব হবে? যেন ঘোর লাগা অনুভবে, আমি সন্ধ্যা মাসিকে বিশ্বাস করতে শুরু করি। তিনি আমাকে পথ বাতলে দেন।

ভার্সিটি জীবনে পা রাখার আগে আমি জানি, আগুনে পুড়ে মরে গেছে পরশ, পরশের বাবা, মা। সন্ধ্যা মাসী সেদিন বাসায় ছিলেন না। সন্ধ্যা মাসী কোথায় ছিলেন কেউ জানে না। সবাই ভেবেই নেয়, মাথা খারাপ সন্ধ্যা মাসি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। কিংবা এলাকার মুসলমানেরা যারা দেখতে পেত না, পরশদের।

সন্ধ্যা মাসিকে খুঁজে পাওয়া যায় না আর। শুধু সন্ধ্যা মাসিকে আমি দেখতে পাই। আমাকে জ্বালাতন করে যায় সবসময়।

আমার ভার্সিটির তৃতীয় বর্ষে থাকতে, আমার সবচেয়ে কাছের শাহেদ ভাই মারা যায়। খাবারে কেউ বিষ মিশিয়ে দিয়েছিল। পুলিশ এসে অনেক জেরা চালিয়েছে, যারা বিপক্ষ রাজনৈতিক মতাদর্শের ছিলো শাহেদ ভাইয়ের, যারা সময়ে অসময়ে হুমকি ধামকি দিয়েছে তাকে।

আশিষ স্যার, মোস্তাফিজ স্যার, দিনার ভাই সহ আটজন যে মারা গিয়েছে অফিসে পুড়ে, সে ঘটনায় আমার অফিসের এম.ডি মামলা করেছেন, সিনিয়র ম্যানেজারের নামে, সেদিন রহমান স্যার ছাড়া সবাই অফিসে উপস্থিত ছিলেন। এম.ডি স্যার দেশের বাইরে থাকাতে বেঁচে গিয়েছেন। সে মামলা টেনে নিয়ে চলছেন, সিনিয়ন ম্যানেজার রহমান স্যার।

সন্ধ্যা মাসি বলেছিলো, প্রতি পাঁচ ইন্দ্রিয়র জন্য আমি বছর খানেক ঘুমাতে পারব ঠিকঠাক। আমি ঘুমাতে চেয়েছিলাম, শান্তি চেয়েছিলাম। আশিষ স্যার, মোস্তাফিজ স্যার, দিনার ভাইয়ের মৃত্যুর তিন বছর চার মাস হয়ে গিয়েছে। আমি গত চার মাস ধরে ঠিকঠাক ঘুমাতে পারি না। আমি সাত জন প্রিয় মানুষের পয়ত্রিশ ইন্দ্রিয় পেয়েছি। এখন আর মাত্র পঞ্চ ইন্দ্রিয় প্রয়োজন। আমার একমাত্র জীবিত প্রিয় মানুষ নিতু। ওর পঞ্চ ইন্দ্রিয় পেলেই আমি প্রিয় মানুষ গুলোর চল্লিশ ইন্দ্রিয় পাব, আমার পঞ্চ ইন্দ্রিয় মিলে ৪৫ ইন্দ্রিয়, আর যে ইন্দ্রিয়ের জন্য এত আয়োজন যে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ও পেয়ে যাব তবে। মোটে ২৩ জোড়া ইন্দ্রিয়, ৪৬টা ইন্দ্রিয়, ২৩ জোড়া ক্রোমোজোমের সমান।

নিতু বিছানার উপর ঘুমাচ্ছে। শীত পড়েছে বেশ। চারপাশ নীরব। ওর নিঃশ্বাসের শব্দও আমি টের পাচ্ছি। রান্না ঘরের গ্যাসের চুলাটা জ্বেলে আমি দরজা জানালা সব আটকে দিয়েছি। এখন শুধু একটা সিগারেট ধরাবার অপেক্ষা। আজ আমাদের বিয়ের ৪৬ মাস। ৪৬ মাসেই তবে, ৪৬ ইন্দ্রিয় পাওয়া যাক। আমার একটা শান্তির ঘুম দরকার, ঠিক নিতুর মতন শান্তির ঘুম।

আমি নিতুর পাশে বসলাম। মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম। নিতু ঘুমের ঘোরে, আমার হাত চেপে ধরল। আমি মায়াময় মুখটার দিকে তাকালাম। নিতুর ঠিক পাশে সন্ধ্যা মাসি। আমি একবার সন্ধ্যা মাসি, একবার নিতুর দিকে তাকালাম শান্ত অথচ বিভ্রান্ত দৃষ্টি নিয়ে। আমার মস্তিষ্কের দুটি ভাগ, দুটি সিদ্ধান্তের দোলাচলে দুলছে। আমি ঘুমাতে চাই না-কি একটা ভালোবাসার মানুষের সাথে ৪৬ মাসের পরিবর্তে আজন্ম কাল কাটিয়ে দিতে চাই, তা ভেবে যাচ্ছে। আমার কানে সন্ধ্যা মাসির কথাটা আবার বেজে ওঠে, “তোর একটা মানুষ দরকার।”

রিয়াদুল রিয়াদ

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:২৮

বিজন রয় বলেছেন: কিছুটা পড়লাম, পুরোটা পড়তে পারলে পরে কথা বলবো।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: অপেক্ষায় রইলাম দাদা, গল্পে, ভুল ত্রুটি শুধরে দেয়া বা নিজস্ব মতামতের।

২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫

মিরোরডডল বলেছেন:





ছেলেবেলায় লাল পিঁপড়াদের যেমন হিন্দু পিঁপড়া এবং কালো পিঁপড়াদের মুসলমান পিঁপড়া বলতাম; মনের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা ছিলো, হিন্দু পিঁপড়া আমাকে কামড়ে দিবে, মুসলমান পিঁপড়া তা করবে না।

কি বাজে কুসংস্কার!!!

শেষটা যেহেতু পাঠকের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে, ধরে নিচ্ছি নিতুকে মারবে না।
তার একটা মানুষ দরকার!


২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ছেলেবেলায় আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু হিন্দু হওয়াতে, অনেক মুসলমান ছেলে আমার সাথে বন্ধুত্ব করতে চাইত না। আবার এক হিন্দু ক্লাসমেটকে দেখেছি, ওরা ব্রাহ্মণ হওয়াতে নিচু প্রজাতির হিন্দু বন্ধুকে বাসায় যেতে দিত না। কী বিচ্ছিরি সব কুসংস্কারের আচ্ছন্ন মানুষ।

মানুষের ভালোলাগা, শান্তি সব আপেক্ষিক। আমার কী দরকার, আমি কীসে ভালো থাকব, সেসব খুঁজতেই আজন্মকাল চলে যায়।

৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:০৯

সোনাগাজী বলেছেন:



আপনার লেখাগুলো একটু বোরিং লাগছে।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: আপনি বিজ্ঞ মানুষ। আমি লেখক হিসাবে অত উঁচু পর্যায়ের কেউ না। চেষ্টা করি লেখার।
আশা করি, লেখায় কী ধরণের পরিবর্তন, বোরিং বিষয়গুলো কাটাবার জন্য কী করা যায়, তা জানাবেন। আপনার মতন জ্ঞানী মানুষের মতামত, লেখার মান উন্নয়নে আমাকে সাহায্য করবে।

৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: একটানা পড়া শেষ করলাম। ভালো লাগলো...

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৪২

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ধন্যবাদ। চেষ্ট করেছি। মন্তব্যের জন্য ভালোবাসা জানবেন।

৫| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:০৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: লেখাটায় শুরুর দিকটা কেমন যেন গতিহীন ছিল, তবে শেষের দিকে ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে। কেইসটা স্প্লিট পার্সোনালিটির একটা উদাহরন মনে হয়। একটা সত্ত্বা সন্ধ্যামাসির রুপ ধরে বলে, তোর একটা মানুষ দরকার। আরেকটা তার প্রিয় মানুষগুলোকে সুযোগ মতো মেরে ফেলে!!

বড়ই আচানক ঘটনা!!! :)

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:১০

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: লেখাটায় শুরুর দিকটা কেমন যেন গতিহীন ছিল


প্রথম দিকের বর্ণনায় তাহলে আরও ঘষামাজা করতে হবে। কাজ করতে হবে লেখা নিয়ে। ধন্যবাস বিষয়টা জানাবার জন্য।



কেইসটা স্প্লিট পার্সোনালিটির একটা উদাহরন মনে হয়


অনেকটা তেমন বলতে পারেন, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব তার প্রথম কারণ। নিদ্রাহীনতা মানুষের মাঝে কী কী অদ্ভুত বিষয়াদির সৃষ্টি করে, তা একবার টানা দিন পনেরো দেড়, দুই ঘন্টা ঘুমিয়ে টের পেয়েছি।

গল্প পাঠ ও দারুণ মতামতের জন্য ধন্যবাদ, আচানক ভাই।

৬| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:২৩

এম ডি মুসা বলেছেন: আমার গল্প বেশি পড়া হয়না তবুও কষ্ট করে পড়লাম তবে মন ভালো নেই যা পড়ছি মনের উপর জোর করে

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:০৩

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: গল্প বেশি পড়েন না, তাও আমার এই বড় লেখা পড়েছেন দেখে ভালো লাগল।

মন ভালো হয়ে যাক, মন ভালোর কোনো ঘটনায়।

ধন্যবাদ।

৭| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৩২

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: ছোট গল্প লিখবেন? বড় পোস্ট আসলে পড়া হয়না।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:০৫

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: বড় ছোটো মিলিয়েই তো লিখি। পরের গল্প যান, আপনাকে উদ্দেশ্য করে ছোট্ট মোট্ট করে লিখব। ধন্যবাদ।

৮| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৩৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব তার প্রথম কারণ। এই কথা বললে কিন্তু আপনার গল্পের রহস্যময়তা আর আকর্ষণ কমে সাদামাটা গল্প হয়ে যাবে। কারন বলছি,

আপনার গল্পে যে ভৌতিক বা রহস্যময় ফ্লেভার আছে; অর্থাৎ সব ক'টা মৃত্যু গল্পের নায়ক বা সেই মাসি ঘটিয়েছে মর্মে যেই ধারনা পাঠক পায়, সেটা নষ্ট হয়ে যাবে। এতোগুলো সমধর্মী মৃত্যুকে নিশ্চয়ই আপনি কাকতালীয় বলতে পারেন না!! আর যদি তেমনটা বলেনই, সেটা কিন্তু আপনার গল্পের থীমকে দূর্বল করে ফেলবে। আপনার গল্প লেখার লজিক্যাল ইনফারেন্স সেক্ষেত্রে তেমন একটা কাজ করবে না। বিষয়টা কি পরিস্কার করতে পারলাম?

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:১৮

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: বাহ, কী দারুণ বিশ্লেষণ করলেন। আমি নিজেও বোধহয় এতো ভেবে লিখি নি।

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবকে দাঁড় করালাম, গল্প কথকের ঘটনাগুলো ঘটানোর পিছনে কিংবা সন্ধ্যা মাসির উপস্থিতির কারণ হিসাবে। মৃত্যুগুলোকে কাকতালীয় হিসাবে দেখাতে চাই নি গল্পে এবং কাকতালীয় নয় ও।

আপনার মন্তব্য এই গল্পে দারুণ সংযোজন হলো। আশা করি, সময় সুযোগ পেলে অবশ্যই গল্প পড়ে যাবেন। এমন বিশ্লেষণধর্মী এক দুইটা কমেন্ট করে যাবেন। লেখালেখিতে শেখার কোনো শেষ নাই বলেই আমি মানি। রবীন্দ্রনাথ সারাজীবন সাহিত্য, মানব মন নিয়ে লেখালেখি করে শেষ বয়সে গিয়ে বিজ্ঞানের দিকে ঝুঁকে পড়েন। বিজ্ঞান নিয়ে প্রবন্ধ লিখেন।

৯| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর গল্প। চমক আছে। ভেরি গুড।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:০১

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই। আপনার ভালো লাগায় খুশি হলাম।

১০| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
এই গল্পটা ভালই লেগেছে বিশেষ করে সন্ধ্যা মাসির চিরত্রটা।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:০৫

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালোবাসা জানবেন।

সন্ধ্যা মাসি হয়ত গল্প কথকের মতন অনেকের জীবনেই থাকে, নিজের বিচ্ছিরি রকম ভাবনা কিংবা অসুস্থ বাসনা চরিতার্থ করার প্রভাবক হিসাবে।

১১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: পরিণত গল্প।

লাস্ট লাইনে একটা টুইস্ট ছুঁড়তে চেয়েছিলেন, ওটা ক্লিয়ার হয়ে গেছে সন্ধ্যা মাসীর কথাটা উল্লেখ করায় :)

২য় লাইনে 'সন্ধ্যা মাসীর মাথায় সমস্যা' না বললে আরো ভালো হয়, কারণ, এ কথাটা 'পরশ আনমনে উত্তর করে --- ' অংশে বললেই লেখা সাবলীল হয়।

আপনার গল্প লেখার হাত তো দারুণ। আগে কখনো পড়েছি বলে মনে হয় না, তবে, অল্প-সংখ্যক গল্পকারের মধ্যে আপনার নাম ভালো অবস্থানেই থাকবে।

আরেকটা কথা, সবাই সাহিত্য বোঝেন না। সবাই মার্জিত কমেন্ট করতেও পারেন না। এ নিয়ে বিরক্ত না হয়ে নিজের মনে লিখে যান। আপনি অবশ্যই ভালো লেখক। শুভেচ্ছা আপনার জন্য।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৪৩

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। আপনি আমার লেখা না পড়লেও, আমি আপনার লেখা নিয়মিত পড়ি, আপনার ইউটিউব চ্যানেলও আমার সাবস্ক্রাইব করা। নিয়মিত ঘুরে আসি।

লেখার চেষ্টা করি নিজের মতন। ভুল ত্রুটি তো থাকেই, চেষ্টা করি সেসব কাটিয়ে ওঠার।

২য় লাইনে 'সন্ধ্যা মাসীর মাথায় সমস্যা' না বললে আরো ভালো হয়, কারণ, এ কথাটা 'পরশ আনমনে উত্তর করে --- ' অংশে বললেই লেখা সাবলীল হয়।
আমি নিজেও জিনিসটা খেয়াল করলাম। ইডিট করে ফেললাম। এখন আসলেই আগের চেয়ে সাবলীল লাগছে। কৃতজ্ঞতা জানবেন।

সময় করে, সুযোগ পেলে, লেখায় ভালো মন্দ জানিয়ে যাবেন। আপনাদের মতন বিজ্ঞ মানুষদের কমেন্ট লেখায় উন্নতিতে আরও অনেক বড় নিয়ামক হিসাবে কাজ করে। আপনার পলাশুদ্দিন তমাল ও আঙ্গুরির গল্পটা আমার অনেক দিন মস্তিষ্কে গেঁথে থাকবে।

১২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:২৮

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: গল্পটা পড়লাম গল্পটাতে সন্ধা মাসি না থাকলে আমার ভাল লাগতো না। ইন্দ্রিয় নিয়ে আলোচনাটাও চমৎকার হয়েছে। প্রথম দিকটাকে আরো একটু সময় দিলে এই গল্প অসাধারণের চেয়েও বেশি কিছু হয়ে যাবে বলেই আমার বিশ্বাস।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:৩৬

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ, গল্প পাঠ ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য। গল্পটা আসলে ঘন্টা খানেকে লেখা, পরবর্তীতে আবার পড়ে প্রথম অংশটা নিয়ে অবশ্যই ভাবব, কী কী পরিবর্তন আনা যায় দেখব।

আমিও আপনার ধারাবাহিক গল্প পড়ছি।

১৩| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ২:৪৫

মোঃ রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: পুরো লেখাটি পড়লাম। শুরু থেকে শেষ খুব চমৎকার লেগেছে রহস্যময়তা ছিল। হুম দিন শেষে সবারই মানুষ দরকার।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:৩৪

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্যের জন্য। গল্প ভালো লেগেছে শুনে আমারও ভালো লাগল।

হুম দিন শেষে সবারই মানুষ দরকার।
এই মানুষটার দেখা সবাই পাক, এই কামনা।

১৪| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

সোনালি কাবিন বলেছেন: বাহ!

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৪৫

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ধন্যবাদ। B-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.